নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৫৯ পিএম, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৯
আগামী ২০ ও ২১ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের ত্রি- বার্ষিক কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ২০ ডিসেম্বর উদ্ধোধনী অনুষ্ঠান হবে। সেখানে শোক প্রস্তাব, সাধারণ সম্পাদকের রিপোর্ট এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নীতি নির্ধারক ভাষণই হলো উল্লেখযোগ্য আলোচ্য বিষয়। এরপর সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে।
পরের দিন রুদ্ধদ্বার কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে শুধু মাত্র কাউন্সিলররাই উপস্থিত থাকবেন। আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুসারে কাউন্সিল অধিবেশনে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করা হয়। তবে আওয়ামী লীগের প্রায় সব নেতারাই বলেছেন, এই কাউন্সিল অধিবেশনে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলরা নতুন কমিটি গঠন করার সর্বময় ক্ষমতা আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অর্পণ করবেন। এটাই আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ঐ কাউন্সিলেই তাৎক্ষনিক ভাবে দলের একজন সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে পূণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয় এবং সেটি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।
তবে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলেছেন, এবার কাউন্সিল অধিবেশনে পুরো কমিটি না হলেও অন্তত্ব সম্পাদক মণ্ডলী বা গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো ২১ ডিসেম্বর কাউন্সিলেই আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করা হতে পারে।
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ এর আগেও কাউন্সিলে পূণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেছিল। বিশেষ করে ২০০১ সালে নির্বাচনের ফলাফলে বিপর্যয়ের পর অনুষ্ঠিত কাউন্সিল অধিবেশনে আব্দুল জলিলকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা হয়েছিল। সেখানে কমিটির সদস্যের অধিকাংশের নামই কাউন্সিল অধিবেশনে ঘোষণা করা হয়ছিল। এবারো এমন করা হতে পারে বলে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন কমিটি গঠন নিয়ে কাজ করছেন। যদিও আওয়ামী লীগে শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত এবং দলের নেতা কর্মীরা তার ওপরই সমস্ত ক্ষমতা অর্পণ করতে চান। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন নেতা কর্মীর সঙ্গে আলাপ আলোচনা করছেন বলে জানা গেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে গণভবনে বিভিন্ন স্থানীয় পর্যায়ের নেতা কর্মীদের আনাগোনা বেড়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি ধৈর্য সহকারে তাদের কথা শুনছেন। তাদের সুপারিশগুলো জানছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ সভাপতি যে বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়েছেন তা হলো;
১। বিভিন্ন সময় যারা দলের জন্য অবদান রেখেছেন, ত্যাগ স্বীকার করেছেন। বিশেষ করে দুঃসময়ে সংগঠনের জন্য কাজ করেছন।
২। বিভিন্ন সময় যারা দলের জন্য নিস্বার্থ ভাবে কাজ করার পরও বঞ্চিত হয়েছেন। যারা মন্ত্রী-এমপি হতে পারেননি বা সরকারের কোনো লাভজনক পদ পাননি।
৩। যাদের বিরুদ্ধে কোনো রকম দুর্নীতি, চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজী, সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসা বা অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ নেই।
৪। যারা সংগঠনে বিভক্তি গ্রুপিং ইত্যাদি করে না।
এই সমস্ত বিবেচনা করেই কাউন্সিলে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তৈরী করা হবে। একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে আগামী দিনের নেতৃত্বকে সুসংগঠিত করার জন্য তরুণরা যেন বেশি করে জায়গা পায় সে বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
আওয়ামী লীগের একাধিক নেতৃবৃন্দ বলেছে, কেন্দ্রীয় কমিটিতে নারীদের সংখ্যা বাড়তে পারে। তবে আওয়ামী লীগ সভাপতি একাই যে পুরো কমিটি করছেন তেমনটি নয়। এই কমিটি করার ক্ষেত্রে তিনি তৃণমূলের ত্যাগী এবং বর্ষীয়ান নেতাদের যেমন পরামর্শ নিচ্ছেন তেমনি কেন্দ্রীয় অনেক প্রভাবশালী নেতার সঙ্গেও আলাপ আলোচনা করছেন। যে সমস্ত নেতার সঙ্গে কমিটি নিয়ে শেখ হাসিনা আলাপ করছেন বলে জানা গেছে তাদের মধ্যে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তো রয়েছেনই এছাড়াও প্রেসিডিয়ামের সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ, কর্ণেল (অব: ) ফারুক খান, ড. আব্দুর রাজ্জাকরা রয়েছেন।
এছাড়াও আওয়ামী লীগের বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির দুজন সদস্যর সঙ্গে কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন নিয়ে পরামর্শ করছেন বলে জানা গেছে। বিভিন্ন অঙ্গ সহযোগি সংগঠনের কয়েকজন নেতৃবৃন্দর সঙ্গেও আওয়ামী লীগ সভাপতি নতুন কমিটি নিয়ে কথা বলছেন বলে জানা গেছে।
বিশেষ করে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগে যারা থাকবেন না তাদের মধ্যে কাউকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে আনা যায় কিনা। কার কি পারফর্মেন্স তা বিচার বিশ্লেষণ করার জন্য তিনি কথা বলছেন। তবে আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন যে, আওয়ামী লীগ সভাপতি বিভিন্ন নেতার সঙ্গেই পরামর্শ করেন। অনেকেই তার কাছে গিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটিতে থাকার আগ্রহ ব্যক্ত করেন, অনেকেই তাদের ত্যাগ এবং অবদানের কথা বলে বায়োডাটাও জমা দেন। শেখ হাসিনাও বিভিন্ন নেতৃবৃন্দর সঙ্গে কথা বলেন এবং নেতৃবৃন্দর পছন্দের ব্যক্তিদের নামও শোনেন। তবে চূড়ান্তভাবে তিনি সার্বিক বিষয়ে বিচার বিশ্লেষন করে কমিটির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন।
তবে আওয়ামী লীগের সব নেতাই মনে করছেন, এবার আওয়ামী লীগ সভাপতি কমিটি গঠনের ব্যপারে অনেকবেশি মনোযোগি। অনেক খুঁটিনাটি ব্যাপারে বিচার বিশ্লেষন করছেন। মুজিববর্ষের আগে তিনি এমন একটি কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করতে চান যেটা রাজনীতির একটা উদাহরণ হবে। নিষ্কলুষ বিতর্কমুক্ত ব্যক্তিদের দিয়ে এই কমিটি গঠন করে আওয়ামী লীগ তার নবযাত্রা সূচনা করবে।
মন্তব্য করুন
ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি সভাপতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়া শামীম ইস্কান্দার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য নতুন করে তৎপরতা শুরু করেছে তার পরিবারের সদস্যরা। বিশেষ করে বেগম জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার ইতোমধ্যে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য সরকারের বিভিন্ন মহলের সঙ্গে নতুন করে যোগাযোগ শুরু করেছেন। বেগম জিয়া আর ভবিষ্যতে রাজনীতি করবেন না, রাজনীতি থেকে অবসর নেবেন এ রকম একটি বক্তব্য সামনে নিয়ে আসছেন শামীম ইস্কান্দার।
আওয়ামী লীগের তৃণমূল ক্রমশ ভেঙ্গে পড়ছে। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের তৃণমূল সংগঠিত করা এবং বিভেদ-বিভক্তির দূর করার জন্য যে ডাক দেওয়া হয়েছিল তারপর একটু পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছিল বলে বটে। কিন্তু এখন আবার উপজেলা নির্বাচনের প্রাক্কালে সারাদেশে তৃণমূল বিভক্ত হয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগের তৃণমূলকে সামাল দেওয়াই এখন কঠিন হয়ে পড়ছে। একদিকে নির্বাচন কেন্দ্রীক বিরোধ অন্যদিকে দলের চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে যাওয়া আর কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তদারকির অভাবে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ এখন সবচেয়ে সঙ্কটের মুখে পড়েছেন বলেই মনে করছেন আওয়ামী লীগের নেতারাই।