নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৫৯ পিএম, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৯
নাগরিকত্ব বিল এবং নাগরিকপঞ্জি নিয়ে বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যকার অস্বস্থির খবর নতুন নয়। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের স্পষ্ট ভাবে বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার বিষয়টি গভীর ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। অন্যদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে মোমেন বলেছেন, একজন ভারতীয় নাগরিককেও বাংলাদেশে পুশইন করতে দেওয়া হবে না।
এ রকম একটি পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ও ভারত সম্পর্ক যখন টানাপোড়েনের মধ্যে তখন রাজনীতিতে ভারতের সঙ্গে একটি মহলের যোগাযোগ বেড়েছে। ভারতীয় কুটনৈতিকদের সঙ্গে তাদের একাধিক বৈঠকের খবর পাওয়া গেছে। বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের ভারতীয় দূতাবাসের যোগাযোগেরও খবর পাওয়া গেছে।
এই রাজনৈতিক ব্যক্তিরা এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে নাগরিকত্ব বিল এবং নাগরিকপঞ্জি নিয়ে কোনো বক্তব্য রাখেননি। এমনকি কোনো মন্তব্যও করেননি। যদিও কথায় কথায় তার দেশ প্রেমের কথা বলেন। দেশের স্বাধীনত এবং সার্বভৌমত্বের কথা বলেন। এদের মধ্যে রয়েছেন;
ড. কামাল হোসেন
ড. কামাল হোসেন গণফোরামের সভাপতি এবং জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের আহ্বায়ক। তার সাথে বিভিন্ন সময় ভারতের সক্ষাতের খবর পাওয়া যায়। নাগরিকত্ব বিল এবং নাগরিকপঞ্জি নিয়ে ড. কামাল হোসেন কোনো বক্তব্য রাখেননি। এমনকি বাংলাদেশে এই বিলটি মানবাধিকার লঙ্ঘন কিনা বা এই বিলের ফলে সারাবিশ্বে যে অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির যে সংকট তৈরি হবে সেটি নিয়েও তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।
অথচ বিভিন্ন সূত্রের খবরে জানা গেছে যে, ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের বিভিন্ন থিঙ্ক ট্যাঙ্কের যোগাযোগ হয়েছে। তাদের সঙ্গে তিনি কথাবার্তা বলছেন। কেন এই কথাবার্তা বা কিসের জন্য এই যোগাযোগ তো নিয়ে কোনো তথ্য অবশ্য পাওয়া যায়নি।
মাহমুদুর রহমান মান্না
মাহমুদুর রহমান মান্না জাতীয় নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা। তিনি কথায় কথায় দেশ প্রেমের কথা বলেন এবং সরকারের সমালোচনা করেন। কিন্তু ভারতের নাগরিকত্ব বিল এবং আসামের নাগরিকপঞ্জি নিয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি। সাম্প্রতিক সময়ে তার সঙ্গে ভারতীয় দূতাবাস এবং ভারতের বিভিন্ন মহলের যোগাযোগ বেড়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
আ স ম আব্দুর রব
আ স ম আব্দুর রব বিভিন্ন সময় সরকারের সমালোচনা করেন কিন্তু রাজনীতিতে তিনি একজন ভারতপন্থি হিসেবে বিবেচিত। তার সঙ্গেও ভারতের বিভিন্ন মহলের যোগাযোগের খবর পাওয়া যাচ্ছে। তিনিও ভারতের সাম্প্রতিক পদক্ষেপ নিয়ে কোন মন্তব্য করেননি।
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের লুকোছাপা কিছু নেই। তিন সবসময় ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা নিজেই বলেন। সাম্প্রতিক সময় ভারতের নাগরিকত্ব বিল এবং নাগরিকপঞ্জি নিয়ে কাদের সিদ্দীকীকে কোন বক্তব্য বা বিবৃতি দিতে দেখা যায়নি। কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে অবশ্য সব সময় ভারতের বিভিন্ন মহলের যোগাযোগের খবর পাওয়া যায়। তিনি নিজেও সেটা অস্বীকার করেন না।
বাংলাদেশ ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটা প্রশ্নবোধক চিহ্ন যখন দেখা দিয়েছে এবং যখন নাগরিকত্ব বিল এবং নাগরিকপঞ্জি সুস্পষ্টভাবে বাংলাদেশের ওপর একটি চাপ সৃষ্টি হতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে তখন এই সমস্ত রাজনীতিবীদদের প্রকাশ্য এবং গোপন যোগাযোগ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে
শোকজ করা হয়েছে।
বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর
রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল
প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর
নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির
সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে
আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের
প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য
আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা
হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর
নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ
দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের
ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর
বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার
একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া
নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং
নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে
কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।