নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:৫৯ পিএম, ১৭ জানুয়ারী, ২০২০
ঢাকা শহরজুড়ে যখন সিটি নির্বাচনের উত্তাপ। তখন বেগম খালেদা জিয়াকে ভুলে গেছে বিএনপির নেতৃবৃন্দ। নির্বাচনী প্রচারণায় এখন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি তেমন উচ্চারণ হচ্ছে না। প্রথম দুয়েকদিন বিএনপির দুই মেয়রপ্রার্থী খালেদা জিয়ার মুক্তির প্রসঙ্গটি উচ্চারণ করলেও এখন নির্বাচনের ডামাডোলে তারা বেগম খালেদা জিয়াকে ভুলেই গেছেন। তবে এই সময়ে একটি ঘটনা নীরবে ঘটছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের দৃষ্টি সেদিকে নিবন্ধিত হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়ার প্রধান কৌশলী খন্দকার মাহবুব হোসেন তৎপর হয়েছেন এবং তিনি বিশেষ বিবেচনায় বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে কাজ করছেন বলে বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতা বাংলা ইনসাইডারকে নিশ্চিত করেছেন।
এ ব্যাপারে খন্দকার মাহবুব হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মামলাটা যেমন রাজনৈতিক, তেমন তার মুক্তির বিষয়টির সঙ্গেও রাজনীতি জড়িত। রাজনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমেই বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি হতে পারে বলে তিনি মনে করেন। একাধিক রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলছেন, বেগম খালেদা জিয়ার বিশেষ বিবেচনায় মুক্তির যে আইনী ব্যখ্যা তা নিয়ে তার আইনজীবিরা কাজ করছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, বিশেষ বিবেচনায় মুক্তি পেতে হলে খালেদা জিয়াকে ৩টি কাজ করতে হবে। প্রথমত; তার আদালতের রায় মেনে নিতে হবে। দুটি মামলায় আদালত তাকে একটিতে দশ বছর এবং আরেকটিতে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। কাজেই আদালত যে রায় দিয়েছে তা মেনে নিতে হবে। অর্থাৎ বিশেষ বিবেচনায় মুক্তি চাইতে গেলে বেগম খালেদা জিয়া এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে মামলা চালিয়ে যেতে পারবেন না।
দ্বিতীয়ত; তাকে অপরাধ স্বীকার করতে হবে। অপরাধের জন্য ক্ষমা প্রার্থণা করতে হবে। জিয়া অরফানেজ এবং চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বেগম খালেদা জিয়া দণ্ডিত হয়েছেন। এবং তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট দুর্নীতি এবং অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ প্রমানিত হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়া যদি বিশেষ বিবেচনায় মুক্তি পেতে চান তাহলে তাকে এই অপরাধ স্বীকার পেতে হবে। এই অপরাধের জন্য তিনি অনুতপ্ত এবং ক্ষমাপ্রার্থী এই বক্তব্যটি উপস্থাপন করতে হবে।
তৃতীয়ত; বিশেষ বিবেচনায় মুক্তি পেতে গেলে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিতে হবে। কারণ তিনি একজন দণ্ডিত অপরাধী। শুধুমাত্র চিকিৎসার কারণে বিশেষ বিবেচনায় মুক্তি চাচ্ছেন। এই সময় তিনি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।
একাধিক আইনজীবি সূত্রে জানা গেছে যে, বিশেষ বিবেচনায় মুক্তির বিষয়টি দুই ভাগে সম্পন্ন হতে পারে। প্রথমত; চিকিৎসার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে বেগম খালেদা জিয়া প্যারোলের আবেদন করতে পারেন। প্যারোলের আবেদন করলেও তাকে এই তিনটি বিষয়ের কথা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। দ্বিতীয়ত; তার মুক্তির জন্য বেগম খালেদা জিয়া দণ্ড মওকুফ এবং হ্রাসের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করতে পারেন। রাষ্ট্রপতি যদি সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে তাহলে তাকে দণ্ড হ্রাস বা মওকুফ করতে পারেন। ইতিমধ্যে বেগম খালেদা জিয়া প্রায় দুই বছর কারাদণ্ডে রয়েছেন। আইনজীবিরা মনে করছেন, বেগম খালেদা জিয়ার যথেষ্ট সাজা হয়েছে। এখন যদি তিনি আবেদন করেন তাহলে সরকার তার দণ্ড হ্রাস করে মুক্তি দিতে পারেন। কিন্তু প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, এ ধরণের বিশেষ বিবেচনায় মুক্তির জন্য বেগম খালেদা জিয়ার সম্মতি প্রয়োজন এবং তিনি জেনে বুঝে এ ব্যাপারে সম্মতি দেবেন কিনা তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রশ্ন উঠেছে। বেগম খালেদা জিয়া যদি তার অপরাধ স্বীকার করেন এবং অপরাধের জন্য তিনি যদি মার্জণা প্রার্থণা করেন এবং তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে যদি সে বিরত থাকেন তাহলে রাজনৈতিক জীবনের ইতি ঘটবে। সারাজীবনের যে তার রাজনৈতিক অর্জন, তা নি:শোষিত হয়ে যাবে। বেগম খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য তার রাজনীতি বিসর্জন দেবেন কিনা সেটি একটি বড় প্রশ্ন।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।
উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।