নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:০৩ পিএম, ১৯ জানুয়ারী, ২০২০
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস রাজধানীবাসীর কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট কালরাতে সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে বাবা-মা হারানো তাপস মানুষের ভালোবাসাকে পুঁজি করেই, স্বপ্নের উন্নত ঢাকার পথ চলায় ঢাকাবাসীর আস্থা ও সমর্থন প্রত্যাশা করেছেন। নির্বাচিত হলে নাগরিক সব মৌলিক সেবা ৯০ দিনের মধ্যেই নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করে মেয়র পদে নৌকা মার্কায় ভোট চেয়েছেন তিনি।
‘আমাদের ঢাকা আমাদের ঐতিহ্য’ শীর্ষক খোলা চিঠিটি হুবহু তুলে ধরা হল-
প্রিয় ঢাকাবাসী,
আসসালামু আলাইকুম। প্রথমেই আল্লাহ্ রাব্বুল আল-আমীনের শুকরিয়া আদায় করি। যে ঢাকাতে হারিয়েছি আমার পিতা-মাতাকে, কাটিয়েছি শৈশব এবং কৈশোরের দিনগুলো, পড়াশুনা, খেলাধুলা, আর আড্ডায় মেতেছি বন্ধুদের নিয়ে-বেড়ে উঠেছি, আবদ্ধ হয়েছি বিবাহ বন্ধনে-আজ বৃহৎ পরিসরে সেই ঢাকাবাসীর সেবার লক্ষ্যে মেয়র পদে প্রার্থী হয়েছি।
আমার রাজনৈতিক জীবনের শুরুতেই ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমি ঢাকা ১০ (ধানমন্ডি-হাজারীবাগ-কলাবাগান-নিউমার্কেট) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করি। এখানকার জনগণ অনেক ভালোবাসা-আদর-স্নেহে আমাকে আলিঙ্গন করে গত তিন মেয়াদের ১১ বছরে নির্বাচিত সংসদ সদস্য হিসেবে দলমত নির্বিশেষে সকলের জন্য কাজ করার সুযোগ দিয়েছিল। রাজধানী ঢাকায় নাগরিকদের মৌলিক সুবিধা ও উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে কাজ করতে গিয়ে আমার মনে হয়েছে এই ঐতিহ্যবাহী ঢাকাবাসীর জন্যে বৃহৎ পরিসরে কাজ করা ও দৃঢ় পদক্ষেপ নেয়া জরুরী। সেই তাগিদেই ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
আমাদের প্রাণের ঢাকা-কে নিয়ে আমার কিছু পরিকল্পনা:
ঐতিহ্যের ঢাকা : চার শ বছরের পুরনো আমাদের এই ঢাকার রয়েছে নিজস্ব ইতিহাসের উজ্জ্বল ছবি ও ঐতিহ্যের গভীর শেকড়, প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্ব। এখানে ঐতিহ্যবাহী খাবারের স্বাদও অনন্য। সাংস্কৃতিক ধারায় রয়েছে ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহা, পহেলা বৈশাখ, ঘুড়ি উৎসব, চৈত্রসংক্রান্তিসহ অজয় উৎসব। আমি নির্বাচিত হলে সকলকে নিয়ে সমন্বিত প্রয়াসে মহাপরিকল্পনা ও সুব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যকে পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ করে ঢাকাকে তার গৌরবে সাজিয়ে তুলে ধরবে বিশ্বদরবারে।’
সুন্দর ঢাকা : ‘বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যা নদীর অববাহিকায় পত্তন হওয়া এমন শহর পৃথিবীতে বিরল। সুন্দর ঢাকা গড়ে তুলতে দরকার সবুজায়ন, পরিবেশবান্ধব স্থাপনা বৃদ্ধি ও বায়ুদূষণ রোধ, বজ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, প্রতিটি ওয়ার্ডে খেলার মাঠ নিশ্চিত করা, নারী-শিশু ও প্রবীণদের জন্য হাঁটার উন্মুক্ত স্থান, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যার পার ঘিরে বনায়ন, বিনোদনকেন্দ্র স্থাপনসহ ব্যাপক সৌন্দর্যবর্ধনের মাধ্যেমে সুন্দর ঢাকা গড়তে চাই।’
সচল ঢাকা : যনজটের কারণে রাস্তায় চলাচল হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ। বিশেষ করে কর্মজীবী নারীদের বিড়ম্বনা অপরিসীম। আমরা গণপরিবহনের সুব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কিছু রাস্তায় দ্রুতগতির যানবাহন, কিছু রাস্তায় ধীরগতির যানবাহন, আবার কিছু রাস্তায় শুধু মানুষ হাঁটার ব্যবস্থা করব। নদীর পারে থাকবে সুপ্রশস্ত রাস্তা, যেখানে পায়ে হেঁটে চলা যাবে। চালানো যাবে সাইকেল, রিকশা ও ঘোড়ার গাড়ি। দ্রুতগামী যানবাহনের জন্য থাকবে আলাদা পথ, থাকবে নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থা। এভাবে গড়ে তুলব আমাদের সচল ঢাকা।’
সুশাসিত ঢাকা : ঢাকায় একসময় পঞ্চায়েতব্যবস্থা ছিল। আমরা মাদক নির্মূলসহ, এলাকাভিত্তিক সুশাসন প্রতিষ্ঠায় পঞ্চায়েত ব্যবস্থা কার্যকর করব। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন হবে সম্পূর্ণ দুর্নীতিমুক্ত সংস্থা। বছরের ৩৬৫ দিন, সপ্তাহের সাত দিন, ২৪ ঘণ্টা নাগরিকসেবা প্রদানের জন্য খোলা থাকবে। মশকের প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস, মশক নিধন ও ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কারে দৈনন্দিন ভিত্তিতে কার্যকরব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইন, বিধি ও নীতিমালার কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমে ঢাকার উন্নয়ন ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে সিটি করপোরেশনের নিকট সমন্বিতভাবে দায়বদ্ধ করা হবে।’
উন্নত ঢাকা : এ বিষয়ে ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘আমদের এই ঢাকা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতির আলিঙ্গনে, নানা গোত্র-বর্ণের সাংস্কৃতিক গৌরবময়তায় ও ঐতিহ্যমণ্ডিত ঢাকা। এই ঢাকাতে জন্মেছি, বড় হয়েছি, সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়েও স্বপ্ন দেখি এই ঢাকাকে ঘিরে। ঢাকা বলতে আমার বেড়ে ওঠা এই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকাকেই বুঝি। ব্যথাতুর হীম বুকে তাকিয়ে দেখি, এখানেই পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট কালরাতে সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে হারিয়েছি আমার বাবা-মাকে। কিন্তু বিগত দিনে এখানেই পেয়েছি ভালোবাসার বন্ধন। এই ভালোবাসাকে পুঁজি করেই, স্বপ্নের উন্নত ঢাকার পথ চলায় আপনার আস্থা ও সমর্থনই আমার পাথেয়। আপনদের সমর্থনে নির্বাচিত হলে নাগরিক সব মৌলিক সেবা ৯০ দিনের মধ্যেই নিশ্চিত করব ইনশাআল্লাহ। এই ঢাকা আমাদের সবার প্রাণের ঢাকা। আমি আশা করি, আগামী ৩০ জানুয়ারি ২০২০ (পরিবর্তিত তারিখ ১ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে আমাকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে উন্নত ঢাকা গড়ে তুলতে সুযোগ দিবেন।’
বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।
উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।