নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ১৯ জানুয়ারী, ২০২০
সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এখন পর্যন্ত যেভাবে প্রচারণা হচ্ছে তাতে সন্তুষ্ট আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ মনে করছে, তাদের বিরুদ্ধে অতীতে নির্বাচনগুলোতে যেরকম অভিযোগ উঠেছিল, সেধরনের অভিযোগ থেকে আওয়ামী লীগ মুক্ত হয়েছে। বিশেষ করে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি নির্বাচনে জোরেশোরে প্রচারণা করছে এবং বাধাবিঘ্নহীন এই প্রচারণার ফলে আওয়ামী লীগ যে অবাধ-সুষ্ঠ এবং নিরপেক্ষ একটা নির্বাচন চায়, সেই বার্তাটা সুস্পষ্ট করতে পেরেছে। এটা আওয়ামী লীগের জন্য একটা বিরাট প্লাস পয়েন্ট বলে মনে করছে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা।
সিটি করপোরেশন নির্বাচনটাকে আওয়ামী লীগ একদিকে যেমন গুরুত্বপূর্ণভাবে নিচ্ছে, অন্যদিকে এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ কোন রকমের অভিযোগের গ্লানি বহন করতে রাজি নয় এবং এ ব্যাপারে হাইকমান্ড থেকে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা বলছে, সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দুইভাবেই লাভবান হতে পারে। এইজন্যই আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে কোনপ্রকার পক্ষপাত প্রভাব বা কোনরকম অভিযোগের কলঙ্ক মাথায় নিতে রাজি নয়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছে, সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তিন ধরণের ফলাফল হতে পারে।
এক হলো, দুই আসনেই আওয়ামী লীগের প্রার্থী জয়ী হতে পারে। সেরকম ফলাফল হলে আওয়ামী লীগের জন্য ইতিবাচক। কারণ যেভাবে নির্বাচনী প্রচারণা হচ্ছে এবং বিরোধী দল যেভাবে সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে। বিশেষ করে নির্বাচন কমিশনের বিধিনিষেধের কারণে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিসহ হেভিওয়েট নেতারা নিজেদের প্রচারণা থেকে সরে দাঁড়িয়েছে এবং আওয়ামী লীগের তরফ থেকে নির্বাচনের আচরণ বিধি মানা হচ্ছে। ফলে শেষ পর্যন্ত যদি উৎসবমুখর একটি নির্বাচন হয় এবং জনগণ যদি ভোট দিতে যায় তাহলে আওয়ামী লীগের জন্য একটা বড় অর্জন হিসেবে বিবেচিত হবে। কারণ আওয়ামী লীগ গত ১০ বছর ধরে উন্নয়নের যে বার্তা দিচ্ছে সেটা জনগণের মধ্যে পতিত হয়েছে বলেই নির্বাচনে জয়ের মাধ্যমে প্রমাণিত হবে। আর জনগণ যে উন্নয়নের পক্ষে সেটা আরেকবার প্রমাণিত হবে।
দ্বিতীয়ত, এই নির্বাচনের যে ফলাফল হতে পারে সেটা হলো আওয়ামী লীগ একটি সিটিতে বিজয়ী হবে আর আরেকটি সিটিতে বিএনপি বিজয়ী হবে। এরকম ফলাফল হলেও আওয়ামী লীগের ক্ষতি নেই। কারণ আওয়ামী লীগ দেখাতে পারবে ইভিএম নিয়ে বিরোধী দল যে প্রচারণা করছে সেই প্রচারণাগুলো অসত্য। আর একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করেছে। যেখানে বিরোধী পক্ষ ঢাকার মতো গুরুত্বপূর্ণ সিটি কর্পোরেশনে বিজয়ী হওয়ার পরেও ফলাফল বদলে দেওয়া হয়নি। এটা জনগণের মধ্যে একটা ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করবে। বিশেষ করে ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে যে অস্বস্তি তৈরি হয়েছিল সেই অস্বস্তি দূর করার ক্ষেত্রে এরকম ফলাফল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
আওয়ামী লীগের একজন শীর্ষ স্থানীয় নেতা বলেছেন, এ রকম ফলাফল হলে ইভিএম নিয়ে সমস্ত বিতর্কের অবসান হয়ে যাবে।
তৃতীয় ফলাফল হতে পারে যেটা অপ্রত্যাশিত এবং যেটা কেউই বাস্তব সম্মত মনে করেন না। কিন্তু নির্বাচন এমন একটি বিষয় যেখানে সবকিছুই হতে পারে। আর সেটি হলো এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দুই সিটিতেই পরাজিত হলো।
দলটির এক নেতা বলছেন, দুই সিটিতেই আওয়ামী লীগ পারাজিত হলে তাতেও ক্ষতি নেই।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ইতোমধ্যেই বলেছেন সিটি নির্বাচন হারলে সরকার পরিবর্তন হবে না বা আওয়ামী লীগের মাথার উপর আকাশও ভেঙে মাথায় পড়বে না। কারণ এই নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার প্রমাণ করতে পারবে দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব।
আওয়ামী লীগ প্রমাণ করতে পারবে বিএনপির নির্বাচন নিয়ে এতদিন ধরে যে অপপ্রচার, মিথ্যচারের পাশিপাশি যে অভিযোগগুলো করেছে তার সবই ভিত্তিহীন এবং বানোয়াট। আর আওয়ামী লীগ দেখাতে পারবে আধুনিক প্রযুক্তির ভোট ব্যবস্থা নিয়ে বিএনপি যে সমালোচনা সেই সমালোচনাগুলো যুক্তিনিষ্ঠ নয় মনগড়া এবং অবাস্তব।
কাজেই আওয়ামী লীগ মনে করছে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন আওয়মী লীগের হয়ে তার জনপ্রিয়তা যাচাই এবং তাদের উন্নয়ন কর্মসূচীর প্রতি জনগণের আস্থার নির্বাচন। আর এই নির্বাচনে জনগণ যদি তাদের ভোট দেয় তাহলে আওয়ামী লীগ আরো শক্তিশালী হবে। যদি জনগণ এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ভোট নাও দেয় তাহলেও তাদের রাজনৈতিক লাভ কম নয়। এই উইন উইন একটি পরিস্থিতির কারণে আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনের জন্য রাজি হয়েছে বলে আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকরা মনে করছেন।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।