নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২০ জানুয়ারী, ২০২০
এবারের নির্বাচনে বিএনপির সবচেয়ে বড় মাথা ব্যথার কারণ হলো তারেক জিয়া। এখন পর্যন্ত তারেক জিয়াকে এরিয়ে নির্বাচন পরিচালনা করছে বিএনপি। আর নির্বাচনে কর্মীরা ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে প্রচার-প্রচারণায় অংশগ্রহণ করছে।
কিন্তু বিএনপির নেতারাই মনে করছে, তারেকের মতলব বোঝা দায় এবং শেষ পর্যন্ত তারেক কি করবেন সেটা নিয়ে বিএনপির নেতারাই অনিশ্চয়তায় ভুগছে এবং চিন্তিত। বিএনপির একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেছেন, তারেক নির্বাচনের মাঝপথে গিয়ে নির্বাচন থেকে সরে যেতে বলতে পারেন, এটা তাঁর পুরনো অভ্যাস। তাছাড়া নির্বাচনের আগেও তারেক নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দিতে পারেন। অতীতের নির্বাচনগুলোতে এভাবেই বিএনপির ভরাডুবি হয়েছে। এবারও তারেক সেরকম কিছু করবে কিনা, তা নিয়ে ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা চলছে বিএনপিতে।
বিএনপির আরেকজন নেতা বলেছে, তারেক নিজেই চাননা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তাবিথ বা ইশরাক মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হোক। কারণ তাহলে দলে তাঁর আধিপত্য এবং নেতৃত্ব ক্ষুণ্ণ হতে পারে। দলের কেউ জনপ্রিয় হোক এটা তারেক চাননা। তারেকের হিসেবনিকেশগুলো বিএনপির নেতৃবৃন্দ ঠিকভাবে বুঝতে পারে না। তারেক কোন মতলবে কখন কি করে-সেটা একটি ভূতুড়ে ব্যাপার এবং ২০১৫ সালের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তারেকের বার্তা আসে নির্বাচন থেকে সরে আসার জন্য। সেসময় বিএনপি নির্বাচনে ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলে সরে আসে। কিন্তু তখন পর্যন্ত নির্বাচনে ভোট কারচুপির কোন আলামত ছিলনা। বিএনপির নেতারাও তাদের ঘরোয়া আলাপচারিতায় স্বীকার করে যে, ২০১৫ এর নির্বাচনে ঐভাবে সরে দাঁড়ানোটা ছিল ভুল সিদ্ধান্ত।
এবারও কি তারেক জিয়া সেরকম নর্দেশনা দিবেন? বিএনপির একজন নেতা বলে, নির্বাচনে জেতা বা সংগঠনকে শক্তিশালী করাটা মূল লক্ষ্য না, তারেকের মূল লক্ষ্য যেকোন মূল্যে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া। আর অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর কোন বার্তা দিবেন কিনা তা নিয়ে দলটির মাঝে জল্পনা-কল্পনা চলছে।
আর এই প্রেক্ষাপটে বিএনপির নেতৃবৃন্দ সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, এই নির্বাচনে তারেক জিয়া যদি কোন নির্দেশনা দেয়, তাহলে তারা তা মানবেন না। সিটি নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত বিএনপির দুই প্রার্থী স্পষ্টভাবে বুঝতে পেরেছেন যে, তারেক জিয়ার ইমেজ সাধারণ মানুষের কাছে কতটা খারাপ। আর এইকারণেই তাঁরা নির্বাচনী প্রচারণায় তারেকের কথা বলছেন না এবং তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, এবার যদি তারেক জিয়া নির্বাচন বর্জনের কোন নির্দেশনা দেন, সেই নির্দেশনা তাঁরা শুনবেন না।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।