ইনসাইড পলিটিক্স

খালেদার এই পরিণতির জন্য দায়ী কে?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২৫ জানুয়ারী, ২০২০


Thumbnail

বেগম খালেদা জিয়ার রাজনীতি এক করুণ পরিণতির দিকে এগুচ্ছে। গতকাল বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার পরিবারের লোকজন সাক্ষাৎ করেছেন। সেখান থেকে বেরিয়ে তারা বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ হচ্ছে। তার ব্লাড সুগার ১৫ এবং তার এক হাত বেঁকে গেছে।

বেগম খালেদা জিয়া তাদের বিশেষ বিবেচনায় অর্থাৎ প্যারোলের মাধ্যমে আবেদন করার বিষয় নিয়ে কাজ শুরুর কথা বলেছেন। এর মাধ্যমে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে, বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নি:শেষ প্রায়। তার শারীরিক অবস্থাও উদ্বেগজনক বলে বিএনপির নেতৃবৃন্দরা প্রকাশ্যে স্বীকার করছেন।

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া অরফানেজ মামলায় দণ্ডিত হয়ে যখন জেলে যান তখন বাংলাদেশে এমন বিশ্বাস করার লোক কম ছিল যে, তিনি এতদিন জেলে থাকবেন। বরং বিএনপি নেতারা মনে করেছিলেন যে, বেগম খালেদা জিয়া মাত্র অল্প কিছু সময়ের জন্য কারাবরণ করছেন। শীঘ্রই তিনি আরো জনপ্রিয় হয়ে ফিরে আসবেন। রাজনৈতিক মহলে এমন আলোচনা হয়েছিল যে, রাজনৈতিক মহলে বেশিদিন বেগম খালেদা জিয়াকে কারান্তরীণ রাখা সম্ভব নয়।

বেগম জিয়ার আইনজীবিরা মনে করেছিলেন যে, খুব শিঘ্রই তাকে জামিন করিয়ে আনা যাবে। কিন্তু দুই বছর গড়াতে চললো; বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির ব্যাপারে বিএনপি কার্যত কিছুই করতে পারেনি।

উল্লেখ্য যে, ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার আগে বেগম জিয়া লন্ডন সফরে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি চোখ ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়েছিলেন। সেই সময় বেগম খালেদা জিয়া এই মামলা এড়ানোর জন্য আরো কিছুদিন থাকতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তারেক জিয়ার প্রলোভনের কারণেই তিনি সে সময় থাকেননি। তিনি দেশে ফিরে আসেন।

রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রশ্ন হলো বেগম খালেদা জিয়ার বর্তমান পরিণতির জন্য দায়ী কে? এই প্রশ্নের উত্তর বিশ্লেষণ করে ৫ জনকে দায়ী করা যায় এই পরিণতির পেছনে।

তারেক জিয়া

বেগম খালেদা জিয়ার বর্তমান অবস্থার জন্য সবথেকে বেশি দায়ী করা হয় তাঁর জেষ্ঠ্য পুত্র বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াকে। বিএনপির নেতারাই এখন মনে করেন, তারেকের কারণেই বেগম খালেদা জিয়ার আজকের এই পরিণতি। কারণ যে দুটি মামলায় বেগম খালেদা জিয়া দণ্ডিত হয়েছে, সেই মামলা দুটিতে যে অর্থ লোপাটের অভিযোগ, সেই অর্থ লোপাটের সাথে তারেক জিয়ার ঘনিষ্ঠ বন্ধু গিয়াস উদ্দিন আল মামুন এবং তারেক জিয়ার কিছু ব্যবসায়িক সহযোগিরা যুক্ত ছিল। এই থেকে স্পষ্ট হয় যে, বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আমলে যেসমস্ত অনিয়ম, দুর্ব্রিত্তায়ন এবং দুর্নীতিগুলো হয়েছে তা সবগুলোই হয়েছে তারেক জিয়ার মদদে। বিশেষ করে হাওয়া ভবনের মাধ্যমে তারেক জিয়া যে দুর্নীতির রাজত্ব কায়েম করেছিলেন, তাঁর দায়ভার বেগম খালেদা জিয়াকে নিতে হচ্ছে। বিএনপির অনেক নেতাই এই কথা বলেন যে, একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলা বিএনপি আর আওয়ামী লীগের মধ্যে একটি ‘পয়েন্ট অফ নো রিটার্ন’ সম্পর্ক তৈরি করে দিয়েছে এবং সেই একুশে আগস্ট হামলার প্রধান হোতা তারেক জিয়া। কাজেই বেগম খালেদা জিয়ার আজকের পরিণতির জন্য তারেক জিয়াই সবথেকে বেশি দায়ী- এটা বিএনপি এবং সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করে।

বেগম জিয়ার পরিবার

বেগম খালেদা জিয়ার ভাই-বোন আত্মীয়-স্বজনকেও বিএনপির লোকজন কম দায়ী করেনা। কারণ তাদের বেসুমার দুর্নীতি এবং অতি লোভ বেগম খালেদা জিয়াকে কঠোর হতে দেয়নি এবং বেগম খালেদা জিয়াকে দুর্নীতির পথে নিমজ্জিত করেছে। ভাই-বোনদের ক্ষমতার লোভের কাছে বেগম খালেদা জিয়া পরাজিত হয়েছেন এবং তিনি নিরবেই এসব সহ্য করেছেন। যার কারণে আজকে এসবের মাশুল দিতে হচ্ছে। 

বিএনপির নেতৃবৃন্দ

বেগম খালেদা জিয়ার দুর্ভাগ্য তার আস্থাভাজন ও বিশ্বাসযোগ্য নেতৃত্ব বিএনপিতে তৈরি করতে পারেননি। বরং নেতৃবৃন্দ একদিকে যেমন লোভী তেমনি কাপুরুচিত। এই বিএনপির নেতৃবৃন্দর যেমন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে লড়াই করার সাহস নেই। তেমনি বিভিন্ন প্রলোভনের কাছে তারা পরাভূত হয়েছেন।

বিএনপির নেতৃবৃন্দই প্রকাশ্যে বলেন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য বিএনপির আন্দোলনই যথেষ্ট ছিল কিন্তু বিএনপি একটি সফল আন্দোলন খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য করতে পারেনি। আর এজন্য বিএনপির মহাসচিবসহ দলটির নেতৃবৃন্দকে তৃনমূলের নেতাকর্মীরা কম দায়ী করে না।

আইনজীবীরা

বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের নিষ্ক্রিয় ভূমিকা বিশেষ শীর্ষ পর্যায়ের আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদসহ সিনিয়র আইনজীবীরা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির ব্যাপারে এক রকম নির্লিপ্ত ভূমিকা পালন করেছিলেন। তাদের নিষ্ক্রিয়তা এবং নির্লিপ্ততার জন্যই বেগম খালেদা জিয়ার পরিণতি এমন হয়েছে বিএনপির নেতাদের অনেক মনে করেন।

বিশেষ করে যে দুইটি মামলায় বেগম খালেদা জিয়া দণ্ডিত হয়েছেন এই দুটি মামলা বিভিন্ন ধাপে ধাপে উচ্চ আদালতে যাওয়া হয়েছে। আর উচ্চ আদালতে মামলাটিতে দীর্ঘায়িত করা এবং কালক্ষেপণের নীতি পরে বুমেরাং হয়েছে বিএনপির জন্য।

এখন পরিস্থিতি হয়েছে যে উচ্চ আদালতে বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে কোনো যুক্তি নেই। আর এটাও বেগম খালেদা জিয়ার এই পরিণতির জন্য কম দায়ী না।

সরকারের কৌশল

বেগম খালেদা জিয়ার এই পরিণতির জন্য সরকারের রাজনৈতিক কৌশলগুলো বিএনপির নেতৃবৃন্দ এবং সরকারের নেতৃবৃন্দ মনে করেন। আওয়ামী লীগের মনে বিএনপির ভুল রাজনীতিকে কাজে লাগিয়েছে সরকার। সরকার এই মামলার ব্যাপারে তাড়াহুড়ো নীতি গ্রহণ না করে আইনী প্রক্রিয়ায় ধাপে ধাপে গেছে। আর আস্তে আস্তে পরিস্থিতিটাকে এমন করেছে এট সরকারের কোনো বিষয় নয় বরং বিচার বিভাগ এবং খালেদা জিয়ার মামলার বিষয়। আর যে কারণে এই মামলাগুলোতে সরকার একটা নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখেছে। পাশাপাশি সরকার তাদের বার বার বলছে খালেদা জিয়ার বিষয়ে তাদের কিছুই করার নেই, তা আদালতের বিষয়। আর সরকারের কৌশলের কাছেই বিএনপির পরাজিত হয়েছে।

বেগম খালেদা জিয়ার এই পরিণতির জন্য দায়ী যেই হোক না কেনো, এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য আজ তার পাশে কেউ নেই।

বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

কেন কিংস পার্টিকে সমর্থন দিল না সরকার

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ১৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

অনেকেই মনে করে যে, সরকারের পৃষ্টপোষকতায় কিংস পার্টিগুলো গঠিত হয়েছিল। তৃণমূল বিএনপি এবং বিএনএম গঠনের পিছনে সরকারের মদদ এবং সমর্থন ছিল বলে বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন। কিন্তু সেই মদদ এবং সমর্থন শেষ পর্যন্ত টেকেনি। কিংস পার্টি গঠনের ব্যাপারে শুরুতে সরকারের লোকজন যেভাবে আগ্রহী ছিল, পরবর্তীতে তাদের মধ্যে সে আগ্রহ থাকেনি। বিএনএম এবং তৃণমূল বিএনপির অনেক নেতাই ব্যক্তিগত আলাপ চারিতায় বলেছে, সরকার গাছে তুলে মই সরিয়ে নিয়েছে। 

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলে, নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করার জন্য সরকার কিংস পার্টি গঠনের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল। বিএনএম, তৃণমূল বিএনপির মতো দলগুলোকে সংগঠিত করা হয়েছিল সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং এ দলগুলোতে মেজর হাফিজ, কর্নেল অলি আহমেদ সহ বিএনপির একাধিক বর্তমান এবং প্রাক্তন নেতাকে এনে একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের পথ খোঁজা হচ্ছিল। কিন্তু বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, সরকার নিজেই পরে এই কিংস পার্টির পরিকল্পনা থেকে সরে আসে। সরে আসার পিছনে একাধিক কারণ ছিল। 

প্রথমত, সরকার দেখে যে, দলচ্যুত বা দলত্যাগী এসকল নেতারা জনগণের কাছে ধিকৃত হিসেবে চিহ্নিত হন, ভোটের মাঠে এদের তেমন কোন গুরুত্ব থাকে না এবং এরা নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করে তুলতে পারবে এমনটি মাঠের জরিপে প্রমাণিত হয়নি। ফলে তাদেরকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে সরকার আরেকটি সাজানো, পাতানো নির্বাচনের কলঙ্ক মাথায় নিতে চায়নি। বরং সরকারের কাছে সহজ উপায় ছিল যে, আওয়ামী লীগের প্রচুর বিদ্রোহী প্রার্থীরা রয়েছে তারা জয়ী হওয়ার জন্য জীবন-প্রাণ উৎসর্গ করে দিবেন। কাজেই তাদেরকে যদি নির্বাচনের মাঠে নামানো যায় সেটিই হবে আওয়ামী লীগের জন্য ইতিবাচক। আর আওয়ামী লীগ দ্বিতীয় পদ্ধতিতেই যায়।  

দ্বিতীয়ত, কিংস পার্টি গঠনের জন্য যেসকল নেতারা আগ্রহী ছিলেন যারা সরকারের সাথে যোগাযোগ করেছিলেন, তাদের চাহিদার ফর্দ ছিল বিশাল। একেক জন শত কোটি টাকা, নির্বাচনে জয়ী হওয়ার গ্যারান্টি, নানা রকম ব্যবসা, ঋণ খেলাপি মওকুফ সহ নানা সুযোগ সুবিধার দীর্ঘ তালিকা নিয়ে সরকারের কাছে উপস্থিত হয়েছিলেন। সরকার তাদের এই চাহিদার ফর্দকে অগ্রহণযোগ্য হিসেবেই বিবেচনা করে তাদের ব্যাপারে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। উদহারণ হিসেবে বলা যায় যে, তৃণমূল বিএনপি গঠন করা হয়েছিল দু’জন সাবেক বিএনপি নেতার তত্বাবধানে। এখানে এদের একজন ছিলেন শমসের মবিন চৌধুরী, অন্যজন ছিলেন তৈমুর আলম খন্দকার। এরা সরকারের বিভিন্ন মহলের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং বিপুল পরিমাণ অর্থ দাবি করে। 

একটি সূত্র বলছে, তৃণমূল বিএনপি নির্বাচন করার জন্য পাঁচশ কোটি টাকার তহবিল চেয়েছিল। যেটি সরকারের কোন মহল থেকে শেষ পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। কারণ এই বিপুল অর্থ দিয়ে তারা নির্বাচন করবেন এটি বিশ্বাসযোগ্য ছিল না। বরং এই টাকা তারা তাদের আখের গোছানোর জন্য খরচ করবেন, এমনটি মনে করা যথেষ্ট যুক্তিসঙ্গত কারণ ছিল সরকারি মহলে। 

এরপর আসে বিএনএম। বিএনএম এর চেয়ারপার্সন হওয়ার জন্য মেজর (অবঃ) হাফিজ মুখিয়ে ছিলেন। এজন্য তিনি সরকারের কাছে একশ কোটি টাকার তহবিল চেয়েছিলেন বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। কিন্তু এই বিপুল টাকা দিয়ে মেজর হাফিজের মত একজন পরিত্যাক্ত নেতাকে নির্বাচনের মঠে দেওয়াকে অপ্রয়োজনীয় মনে করে সরকারের বিভিন্ন মহল। আর একারণেই শেষ পর্যন্ত মেজর হাফিজের পরিকল্পনা থেকে সরকারি মহল সরে আসে। এদের টাকার চাহিদা এতো বিপুল এবং অন্যান্য চাহিদা এতো বেশি ছিল যে, তাদের এ চাহিদা মেটানো সরকারের পক্ষে সহজ ছিলো না।  আর একারণেই সরকার এসমস্ত চাহিদার থেকে বরং যেসমস্ত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচন করতে আগ্রহী তাদেরকে নির্বাচনে দাঁড় করানোটাকে সহজ হিসেবে মনে করেছিল। একারণে কিংস পার্টির থেকে সরকার সরে এসেছিল।  

কিংস পার্টি   সরকার   শমসের মবিন চৌধুরী   মেজর হাফিজ   বিএনপি   তৈমুর আলম খন্দকার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপির আর কারা ছিলেন কিংস পার্টির ষড়যন্ত্রে

প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ১৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

মেজর হাফিজ এবং সাকিব আল হাসানের ভাইরাল ছবির মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে নির্বাচনের আগে বিএনপির অনেকেই নির্বাচনে যাওয়ার জন্য উদগ্রীব ছিল। তারা বিএনএম বা কিংস পার্টি গঠনেও তৎপর ছিলেন। মেজর হাফিজ সুবিধা করতে না পেরে শেষ পর্যন্ত বিএনএমে যোগ দেননি। এখন তিনি আবার সাচ্চা বিএনপির সাজার একটি নাটক করছেন। তবে সুযোগ সুবিধা পেলে কে কি করতে পারে তার একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রকাশিত হয়েছে সাম্প্রতিক সময়ে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে মেজর অবসরপ্রাপ্ত হাফিজ উদ্দিনের ছবিতে।

বিএনপির বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, মেজর হাফিজ একা না, বিএনপির অনেক নেতাই কিংস পার্টিতে যোগ দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। তারা সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। অনেকে বিভিন্ন মোটা অঙ্কের টাকাও চেয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কিংস পার্টিতে যেতে পারেননি। কারণ লাভ ক্ষতির হিসেব মিলিয়ে বা যে পরিমাণ টাকা পয়সা তারা দাবি করেছিলেন, সেই পরিমাণ টাকা পয়সা না পাওয়ার কারণে তারা কিংস পার্টির মিশন থেকে সরে এসেছেন। এরকম তালিকায় বেশ কিছু বিএনপির শীর্ষনেতার নাম রয়েছে। 

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, মেজর হাফিজ এর যেমন কিংস পার্টি বিএনএম এর চেয়ারপার্সন হওয়ার কথা ছিল ঠিক তেমনই ভাবে তৃণমূল বিএনপিতে যাওয়ার কথা ছিল বিএনপির আরেকজন স্থায়ী কমিটির গুরুত্বপূর্ণ সদস্য নজরুল ইসলামের। তাকেও এ নিয়ে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তিনিও প্রস্তাবটি ভেবে দেখবেন বলে জানিয়েছিলেন। পরবর্তীতে তিনি সেখান থেকে সরে আসেন। 

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির আরও কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতারও তৃণমূল বিএনপিতে যোগদানের তথ্য ছিল। তবে একাধিক সূত্র বলছে, শাহজাহান ওমর যেমন আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন, বিএনপিতে দুই রকমের মতামত ছিল। তার মধ্যে একটি মতামত ছিল তারা নতুন একটি মোর্চা করবেন। এই মোর্চা গঠনের ক্ষেত্রে তাদের প্রথম পছন্দ ছিল ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার গঠিত দল তৃণমূল বিএনপি। এই দলে যাওয়ার জন্য বিএনপির একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নেতা প্রায় মুখিয়ে ছিলেন বলে জানা গেছে। তাদের মধ্যে নজরুল ইসলাম খান ছাড়াও বিএনপির সাবেক ছাত্রদল নেতা এবং বিএনপির নেতা আমান উল্লাহ আমানের নাম পাওয়া গেছে। এছাড়া আসাদুজ্জামান খান রিপনের তৃণমূল বিএনপিতে যোগদানের কথা প্রায় চূড়ান্ত হয়েছিল বলে বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে। 

তবে এরা প্রত্যেকেই এ ধরনের যোগদানের খবর অস্বীকার করেছেন। অন্যদিকে বিএনএমে মেজর অবসরপ্রাপ্ত হাফিজ উদ্দিন, বিএনপির সাবেক নেতা শওকত মাহমুদের যোগ দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত ছিল। এ ছাড়াও বিএনপির আরেক নেতা এহসানুল হক মিলন বিএনএমে যোগ দেবেন বলে গুঞ্জন ছিল এবং তাদের সাথে কথাবার্তাও প্রায় চূড়ান্ত হয়েছিল। এ ছাড়াও বিএনপির আরেকজন নেতা শামসুজ্জামান দুদুর বিএনএমে যোগদানের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। দুদুর সঙ্গে মেজর অবসর প্রাপ্ত হাফিজের বৈঠকের কথাও এখন বাজারে চাউর হয়েছে। তবে মেজর হাফিজ যেমন এই ঘটনাকে এখন অন্য খাতে ধামাচাপা দিচ্ছেন, তাকে নিয়ে কুৎসা রটানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ঠিক তেমনই যেসমস্ত নেতাদের বিএনএমে যোগ দেওয়ার কথা ছিল তারা বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। 

তবে এদের কারও ব্যাপারে সরকারের খুব একটা আগ্রহ ছিল না। সরকারের আগ্রহ ছিল মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ব্যাপারে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে আলাদা একটি বিএনপি করার ব্যাপারে সরকারের আগ্রহ ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই প্রস্তাবে রাজি হয়নি। আর  মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে না পাওয়ার পর ক্ষমতাসীন সরকারও বিএনএম বা তৃণমূল বিএনপি নিয়ে খুব একটা আগ্রহী হননি। ফলে তাদেরকে পৃষ্টপোষকতা করা থেকেও সরে আসে। হালুয়া রুটির ভাগ পাবেন না এটা জানার পর মেজর হাফিজ সহ অন্যান্য বিএনপি নেতারা কিংস পার্টির ষড়যন্ত্র থেকে নিজেদেরকে সরিয়ে নেন। তবে এই ষড়যন্ত্রের সব তথ্যই এখন ফাঁস হয়ে গেছে। এই ষড়যন্ত্রকারীরাই কি বিএনপিতে আগামী দিনে সরকার বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিবে—এটিই এখন কর্মীদের সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।

বিএনপি   কিংস পার্টি   মেজর হাফিজ   সাকিব আল হাসান   নজরুল ইসলাম খান  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ইফতার পার্টির নামে গিবত পার্টি করছে বিএনপি: সেতুমন্ত্রী

প্রকাশ: ০৩:০০ পিএম, ১৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

সংযমের এই রমজান মাসে ইফতার পার্টির নামে বিএনপি গিবত পার্টি করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ শ্রমিক লীগ এবং কৃষক লীগের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের সঙ্গে তিনি এ কথা বলেন।

বিএনপির সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বর্তমানে বিএনপির নেতারা ক্লান্ত, কর্মীরা হতাশ। এ অবস্থায় গালিগালাজ করা ছাড়া তাদের করার কিছু নেই। দলটি এখন ইফতার পার্টির নামে সরকারের অন্ধ সমালোচনা করছে।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি ইফতার পার্টি করে, এটাকে ইফতার পার্টি বলবো নাকি গিবত পার্টি বলবো। আওয়ামী লীগের গিবত করার জন্যই ইফতার পার্টি। স্রষ্টার প্রশংসার জন্য নয়, ইফতার পার্টির নামে ঢালাওভাবে সরকারের সমালোচনা করে।

সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খানসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।


ওবায়দুল কাদের   রাজনীতি   সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনএম ও সাকিব আল হাসানের ব্যাপারে মুখ খুললেন মেজর হাফিজ

প্রকাশ: ০২:৫০ পিএম, ১৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদের বাসায় গিয়ে কিংস পার্টিতে যোগ দেওয়ার ফরম পূরণ করেছিলেন ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান-এমন একটি সংবাদ ও ছবি তোলপাড় সৃষ্টি করেছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। এবার এ নিয়ে মুখ খুলেছেন মেজর হাফিজ নিজেই।

তিনি বলেন, সাকিব আল হাসান আমার কাছে এসে রাজনীতিতে যোগ দেয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন। আমার কাছে উৎসাহ না পেয়ে তিনি চলে যান। 

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বেলা ১২টার দিকে বনানীতে নিজ বাড়িতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন মেজর (অব.) হাফিজ।

মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, নির্বাচনের ৪ থেকে ৫ মাস আগে আমার কাছে আসেন সাকিব। সেসময় তার সঙ্গে কয়েকজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা ছিলেন।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিটি নিয়ে তিনি বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যম মাঝে মাঝে বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশ করে। সাকিবের সঙ্গে আমার ছবিটি নিয়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে, তা জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে নিতে ব্যবহার করা হয়েছে। আমি এমন কিছু করিনি যার জন্য লজ্জ্বিত হতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমি ৩২ বছর ধরে বিএনপির সঙ্গে রয়েছি। আমার পক্ষে দল ত্যাগ করা সম্ভব নয়। বয়স হয়েছে আমি আর কিছুদিনের মধ্যে অবসরে যাবো। সামরিক বাহিনীর কয়েকজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমার কাছে আসে নতুন একটি দল খোলার জন্য। তারা হয়তো ভেবেছে আমি বিএনপি ত্যাগ করতে পারি। কারণ বিএনপির সঙ্গে মাঝে মাঝে আমার দ্বিমত থাকে। কিন্তু এ ধরনের কোনো বিষয় নেই। আমি বিএনপির সঙ্গেই আছি। আমি বিএনএমে যোগ দেইনি।

সামরিক বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কয়েকজন পরিচিত কর্মকর্তা নতুন দল গঠনের পরামর্শ দিয়েছিলেন উল্লেখ করে হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘তাদের বলেছি, রাজনীতিতে কোনো শর্টকাট নেই।’

দেশে গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাস ছয়েক আগে থেকেই সরকারি দল করা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা যোগাযোগ করা শুরু করে জানিয়ে হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘তারা দেখেছে বিএনপির নীতিনির্ধারণী বিষয়ে আমার মাঝে মাঝে দ্বিমত থাকে। তারা ধরে রেখেছিল যে বিএনপি ত্যাগ করার জন্য আমি উন্মুখ।’ তিনি বলেন, ‘আমি তাদের বলেছিলাম, আমার পক্ষে ৩২ বছর পর দলত্যাগ করা সম্ভব নয়। আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ। শিগগিরই রাজনীতি থেকে অবসর নেব।’

বিএনএম   সাকিব আল হাসান   মেজর হাফিজ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

সাকিবের বিএনএমে যোগ দেওয়া প্রসঙ্গে যা বললেন কাদের

প্রকাশ: ১২:৫৮ পিএম, ১৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

সদ্যই রাজনীতিতে প্রবেশ করেছেন দেশসেরা অলরাউন্ডার, বাংলাদেশ ক্রিকেটের রত্ন সাকিব আল হাসান। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নমিনেশন নিয়ে হয়েছেন মাগুরা-১ আসনের এমপি। তবে এরই মাঝে ভিন্ন এক সমালোচনার জন্ম নিয়েছে সাকিব আল হাসানকে নিয়ে।

গুঞ্জন উঠেছে, দ্বাদশ নির্বাচনের পূর্বে ‘কিংস পার্টি’ খ্যাত বিএনএমে যোগ দিয়েছিলেন। সম্প্রতি গণমাধ্যমে এমন একটি ছবিও প্রকাশিত হয়েছে। সাবিকের এমন কাণ্ডে দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) রাজধানীর ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউর দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাকিব আওয়ামী লীগের টিকিটে মাগুরা থেকে নির্বাচন করে জয় লাভ করেছে। এর আগে সে কোনো দল করেছে কি না সেটা আওয়ামী লীগের কাছে বিবেচ্য নয়।

কাদের আরও বলেন, নমিনেশন চাওয়ার আগে সাকিব আমাদের পার্টির কেউ ছিল না। নমিনেশন যখন নেয় তাকে প্রাইমারি সদস্য পদ নিতে হয়। সে শর্ত পূরণ করা দরকার সেটা সে করেছে।

তিনি বলেন, সরকারি দল কিংস পার্টি করতে যাবে কেন? নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনীতিতে অনেক ফুল ফোটে। কোনটা কিংস পার্টি, কোনটা প্রজা পার্টি এটা সম্পর্কে আমার জানা নেই।

আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, আমাদের গণতন্ত্র ঠিক আছে। আমাদের নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচন ছাড়া সরকারে কেউ ক্ষমতা বসাতে পারবে না।

সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দপ্তর সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী, আনিসুল ইসলামসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।


সাকিব   ওবায়দুল কাদের   রাজনীতি  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন