নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ২৬ জানুয়ারী, ২০২০
ঢাকা উত্তরে ২০১৫ সালের সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় চমক ছিল মেয়র হিসেবে আনিসুল হককে মনোনয়ন দেওয়া। টেলিভিশনের তুখোড় উপস্থাপক, ব্যবসায় সফল এবং সুদর্শন আনিসুল হককে মনোনয়ন দিয়ে আওয়ামী লীগ চমক সৃষ্টি করেছিল।
আনিসুল হকও নির্বাচনী প্রচারণায় এনেছিলেন নানা বৈচিত্র্য এবং তিনি যে ঢাকাকে আসলে পরিবর্তন করতে চান এরকম একটি বিশ্বাস জনগনের মধ্যে তৈরী করতে সক্ষম হয়েছিলেন। মেয়র হিসেবে বিজয়ী হওয়ার পর তিনি দৃশ্যমান কিছু কর্মসূচী গ্রহণ করেছিলেন, যাতে মানুষ আশায় বুক বেধেছিল এবং তার প্রতি আস্থা বেড়েছিল। কিন্তু অকালেই চলে গেলেন আনিসুল হক। তার চলে যাওয়ায় শুধু যে আওয়ামী লীগের লোকজন দু:খ পেয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন তা নয়, পুরো ঢাকাবাসী তার মৃত্যুতে কষ্ট পেয়েছিলেন। তার পরই আওয়ামী লীগের জন্য চ্যালেঞ্জ ছিল আনিসুল হকের পর কাকে মেয়র হিসেবে তারা মনোনিত করবে। বিশেষ করে আনিসুল হক জনগনের মধ্যে যে আশা এবং প্রত্যাশার বেলুন ফুলিয়েছিলেন, তা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য একজন লোক পাওয়া ছিল কষ্টকর এবং প্রায় অসম্ভব। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখানে একটি নাটকীয় সিদ্ধান্ত নেন। একবছর আগে যখন আনিসুল হকের শুন্য পদে গার্মেন্টস ব্যবসায়ী আতিকুল ইসলামকে মনোনয়ন দেওয়া হয়, তখন অনেকেই অবাক হয়েছিলেন। আনিসুল হকের মতো আতিকুল ইসলাম সুদর্শন নন। আনিসুল হকের মতো আতিকুল সুবক্তাও নন। আনিসুল হকের মতো স্বপ্নচারীও নন। কিন্তু আতিকুল ইসলামকে মনোনয়ন দেওয়ার পর প্রায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তিনি মেয়র পদে নির্বাচিত হন। মেয়র হিসেবে প্রায় সাড়ে নয় মাস তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন। এ সময় তিনি তেমন আলোচিত হননি বরং আনিসুল হক যেপথে ঢাকাকে নিয়ে যাচ্ছিলেন, সে পথে নিয়ে যেতে পারছেন না, আনিসুল হকের মতো পরিকল্পিত মহানগরী তৈরীর স্বপ্নপূরণের দিকে হাঁটতে পারছেন না, এমন কথাবার্তাও বলা হয়েছিল। কিন্তু তারপরও এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি আতিকুল ইসলামের প্রতি আস্থা রাখলেন।
আতিকুল ইসলাম নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছিলেন পেছন থেকেই। সবাই মনে করেছিলেন তাবিথ আউয়ালই হবেন ঢাকা উত্তরের ফেবারিট। কিন্তু আতিকুল ইসলাম ক্রমশ নিজেকে যোগ্য প্রার্থী হিসেবে প্রমাণ করছেন। আর নির্বাচনের তারিখ যতই এগিয়ে আসছে ততই একজন ভদ্রলোক এবং একজন ভালো মানুষ হিসেবে ভোটারদের কাছে পরিচিত হচ্ছেন।
ভোটাররা এখন অকপটে স্বীকার করছেন আতিকুল ইসলাম আনিসুল হক নন। আনিসুল হকের মতো তিনি হয়তো ঢাকাকে আধুনিক করার ক্ষেত্রে সফল নাও হতে পারেন। কিন্তু আতিকুল ইসলাম একজন ভালো মানুষ। সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করছেন তিনি। এই বিবেচনা থেকেই আতিকুল ইসলাম ভালো কাজ করতে চান। তার চেষ্টা আছে। আর সীমাবদ্ধতা সত্বেও তিনি তার পরিশ্রম দিয়ে ঢাকা উত্তরের সমস্যাগুলোকে সমাধাণ করবেন। এমন একটি বিশ্বাস জনগণের মধ্যে তৈরী করতে সক্ষম হয়েছেন।
আতিকুল ইসলাম একটি জিনিস প্রমাণ করেছেন আর সেটা হলো ভালো রাজনীতিবিদ না হয়ে, ভালো সুবক্তা না হয়ে শুধুমাত্র চেষ্টা পরিশ্রম আর আন্তরিকতা দিয়ে জনগণের মন জয় করা যায়। আর নির্বাচন পরিচালনা করার সময় তিনি অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে প্রতিপক্ষের উস্কানিগুলোকে সামাল দিয়েছেন।
তাবিথ আউয়ালের যে সমস্ত অভিযোগ সেই অভিযোগগুলোর পাল্টা জবাব দিতে গিয়ে তিনি যে রাজনৈতিক শিষ্ঠাচার দেখিয়েছেন তা এই সময়ে বিরল প্রায়। যেমন যখন তাবিথ আউয়াল অভিযোগ করেছেন তার নির্বাচনী পোস্টার ছিড়ে ফেলা হচ্ছে তার জবাবে আতিকুল বলেছেন, কত পোস্টার লাগাতে হবে আমার কর্মীরা লাগিয়ে দেবে। তিনি তাবিথ আউয়ালকে নিজের বাসায় চায়ের নিমন্ত্রণ দিয়েছেন। তাবিথ আউয়ালের উপর হামলার বিষয়টি নিয়েও সংযত ও পরিমার্জিত রাজনৈতিক শিষ্টাচার মূলক বক্তব্য দিয়েছেন।
রাজনীতিকে যখন শিষ্টাচারের অভাব তখন প্রতিপক্ষকে ঘায়েল না করেও প্রতিপক্ষকে পরাজিত করার এক নতুন কৌশলের জন্ম দিয়েছেন আতিকুল ইসলাম। আর এই নির্বাচনে তিনি জিতবেন কি জিতবেন না সেটা ভোটের দিন নির্ধারিত হবে। কিন্তু রাজনীতিতে যে একজন ভদ্রলোক আওয়ামী লীগ উপহার দিলো এই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আতিকুল ইসলাম সেটা প্রমাণ করেছেন।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
বিএনপি জনপ্রিয় নেতা কর্নেল অলি আহমদ মেজর অবসরপ্রাপ্ত হাফিজ উদ্দিন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ আগাম কাউন্সিল দলীয় কোন্দল
মন্তব্য করুন
এমভি আবদুল্লাহ কবির গ্রুপ সোমালিয়া উপকূল
মন্তব্য করুন
ভারত বিরোধী বিএনপি রুহুল কবির রিজভী
মন্তব্য করুন
বিএনপি নেতারা জিয়াউর রহমানকে নিয়ে যেসব কথা বলে তা শুনলে জিয়াউর
রহমানও কবরে শুয়ে লজ্জা পেয়ে যেতেন বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
শুক্রবার (২৯ মার্চ) রাজধানীর প্রেসক্লাবে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
এ সময় তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান জীবদ্দশায় কখনো শুনেননি তিনি স্বাধীনতার ঘোষক।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, স্কুল ঘণ্টা যেমন দপ্তরি বাজায়, তেমনি জিয়াউর
রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেছিলেন বঙ্গবন্ধুর পক্ষে। আজকে বিএনপি নেতা আব্দুল মঈন
খান অনেক কথা বলেন। মঈন খানের বাবা আব্দুল মোমেন খান ৭৪ সালে খাদ্য সচিব ছিলেন। তিনি
ষড়যন্ত্র করে মার্কিন খাদ্যবাহী জাহাজ ফেরত পাঠিয়েছিলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমান আব্দুল মোমেন খানকে মন্ত্রী
বানিয়েছিল। মঈন খান নিজেও সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছিল, দরকার পড়লে দেশ বিক্রি করে দেব।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান
মাহমুদ বলেন, দেশ সমৃদ্ধির দিকে যখনই এগিয়ে যাচ্ছিল তখনই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়।
বিএনপি জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক বানানোর জন্য যেভাবে দাবি করে জিয়াও সেভাবে
কখনো দাবি করেনি। জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের ছত্রছায়া পাকিস্তানিদের পক্ষে কাজ করেছে।
জিয়াউর রহমান আওয়ামী লীগের অধীনেই মুক্তিযুদ্ধের সময় বেতন ভুক্ত কর্মচারী ছিলেন।
তিনি বলেন, বিএনপি নেতাদের কথা হাস্যরসের সৃষ্টি করে। বিএনপির নেতা মঈন খানের বক্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, যার বাবার জন্য এদেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছে তার মুখে এসব কথা মানায় না। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর থেকে ইতিহাস বিকৃতি করে বিএনপি নেতারা বিশদকার বিষোদগার করছে কিন্তু এখন সঠিক ইতিহাস জনগনের সামনে আসার পর তাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। বিএনপির ইতিহাস বিকৃতির পাশাপাশি দেশের জনগণকেও বিভ্রান্তি করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
বিএনপি ড. হাছান মাহমুদ আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষ হয়েছে। নতুন মন্ত্রিসভা গঠন হয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল কমেনি। কোন্দল ক্রমশ বেড়েই চলেছে। সামনে উপজেলা নির্বাচন, উপজেলা নির্বাচন নিয়ে সারা দেশে এখন আওয়ামী লীগ নানা ভাগ উপভাগে বিভক্ত। শুধুমাত্র সংঘাত হানাহানির উপলক্ষ খুঁজছে পরস্পরবিরোধী আওয়ামী লীগের শিবিরগুলো। এরকম বাস্তবতার দলের সঙ্কট নিরসনে এবং অভ্যন্তরীণ কোন্দল দূর করার জন্য আওয়ামী লীগ আগাম কাউন্সিল অধিবেশনে যেতে পারে বলে বিভিন্ন সূত্র ইঙ্গিত দিচ্ছে।