নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ২৯ জানুয়ারী, ২০২০
আগামী ১ ফেব্রুয়ারি সিটি করপোরেশন নির্বাচন। আগামীকাল মধ্যরাত থেকে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কার্যত ২০০৮ এর পর ঢাকায় প্রথমবারের মতো উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটগ্রহণ হচ্ছে। বিএনপি যদিও শুরু থেকে এই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে নানারকম বক্তব্য-বিবৃতি দিচ্ছে। কিন্তু তারপরেও এই নির্বাচনে জিততে মরিয়া বিএনপি। বিএনপি নেতারা প্রকাশ্যেই স্বীকার করেছেন যে, এই নির্বাচন তাদের অস্তিত্ব রক্ষার নির্বাচন। এই নির্বাচনে অন্তত একটি সিটি করপোরেশনে না জিতলে তাদের সাংগঠনিক অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে। আর একারণেই এই নির্বাচনে বিএনপির নেতাকর্মীরা মরণপণ প্রচারণায় দেখা গেছে। আর বিএনপির একাধিক সূত্রে জানা গেছে যে, এবারের ভোটে জিততে বিএনপি পাঁচটি কৌশল গ্রহণ করছে।
১. রাত থেকে প্রতিটি নির্বাচনী কেন্দ্রের আশেপাশে কর্মীদের অবস্থান
বিএনপি মনে করেছে যে, ৩০শে ডিসেম্বরের নির্বাচনে তাঁরা মস্তবড় ভুল করেছিল। তাঁরা ভোটের দিনের জন্য ভোটকেন্দ্রে যাবার পরিকল্পনা করেছিল। তবে এবার তাঁরা তাদের পরিকল্পনা বদলেছে। এবার তাঁরা ভোটের আগের দিন অর্থাৎ ৩১শে জানুয়ারি রাত থেকেই ভোটকেন্দ্র এবং তার আশেপাশে অবস্থান গ্রহণের পরিকল্পনা নিয়েছে। ইতিমধ্যে ঢাকার বাইরে থেকে তাদের ২০ হাজার নেতাকর্মী ঢাকায় প্রবেশ করেছে এবং ভোটকেন্দ্রে তাদের শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে তাদের অবস্থান জানান দিয়ে বিএনপির ভোটাররা যেন ভোটকেন্দ্রে যায় সেটা নিশ্চিত করার কৌশল নিয়েছে।
২. ভোটারদের উপস্থিতির উদ্যোগ
ভোটারদের উপস্থিতির জন্য বিএনপি একটা বিশেষ টিম গঠন করেছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে টিম, যেই টিমের কাজ হচ্ছে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া। কারণ বিএনপির সাম্প্রতিক কয়েকটি নির্বাচনের অভিজ্ঞতা হচ্ছে, ভোটারদের ভোটের উপর একটি অনীহা সৃষ্টি হয়েছে। ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে যেতে আগ্রহী হননা। এইকারণে ভোটার উপস্থিতি কম হওয়া মানেই বিএনপির জন্য বিপদের কারণ। এইজন্য বিএনপি চায় যত বেশি সংখ্যক ভোটাররা যেন ভোটকেন্দ্রে আসে। আর এটা নিশ্চিতের জন্য ভোটের দিন ভোটারদের উপস্থতিতি নিশ্চিত করার পরিকল্পনা নিয়েছে।
৩.ইভিএমের কারচুপি
বিএনপি এখনো মনে করে যে ইভিএম দিয়ে কারচুপি করা সম্ভব। আর এজন্য ইভিএম নিয়ে তাঁরা আলাদা নজরদারি করেছে। ইভিএম নিয়ে তাঁরা আলাদা একটি আইটি টিম গঠন করেছে এবং ইভিএমের ভোটগুলো যেন নিখুঁতভাবে হয় সেজন্য তাদের এজেন্টদেরকে প্রশিক্ষণও দেয়া হচ্ছে। ইভিএম নজরদারিতে রাখতে পারলে বিএনপি অন্যরকম ফলাফল করতে পারে বলে ধারণা করছে বিএনপির একাধিক নেতা।
৪. কূটনৈতিকদের পক্ষে আনা
এবারের সিটি নির্বাচনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেনসহ একাধিক প্রভাবশালি দেশগুলো সরাসরি বিএনপির পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করছে। কূটনৈতিকরা অনানুষ্ঠানিক আলাপচারিতায় বলেছেন যে, তাঁরা একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন চান এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডে যেন নির্বাচনটি হয় সেটা তাঁরা দেখতে চান। আর একারণেই ৬৮ জন কূটনীতিক এবারের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন। আর এই কূটনৈতিকদের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ বিএনপির পক্ষে যাবে বলেই বিএনপির নেতৃবৃন্দরা আশা করছে।
৫. নির্বাচন কমিশনে বিভক্তি সৃষ্টি
নির্বাচন কমিশন যেন সবকিছু সরকারের ইচ্ছামতো করতে না পারে, সেজন্য নির্বাচন কমিশনের মধ্যে বিএনপির অনুপ্রবেশ ঘটেছে। একজন নির্বাচন কমিশনার সরাসরি বিএনপির পক্ষে অবস্থান করছেন এবং বিএনপি যেসমস্ত দাবিদাওয়াগুলো বলছে, সেই দাবিদাওয়ার সাথে একাত্মতা প্রকাশ করছেন ঐ নির্বাচন কমিশনার। নির্বাচন কমিশনের এই পৃথক অবস্থান নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য যথেষ্ট। ঐ নির্বাচন কমিশনারের মাধ্যমে বিএনপি নির্বাচনে বিভক্তি সৃষ্টি করছে। বিএনপি আশা করছে যে, এর ফলে অন্যান্য নির্বাচন কমিশনাররা সতর্ক হবেন এবং তাঁরা নির্বাচনে সরকারের পক্ষে কোনকিছু করার প্রক্রিয়া থেকে বিরত থাকবে।
বিএনপি মনে করছে এই ৫ কৌশল অবলম্বন করলে সিটি নির্বাচনে একটি অন্যরকম ফলাফল বিএনপি লাভ করলেও করতে পারে।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন মন্ত্রী-এমপি আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বিএনপি বিদ্রোহ উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
ঢাকার বনানীর বাসায় ফেরার পথে গাড়িচালক
আনসার আলীসহ ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল নিখোঁজ হন বিএনপির তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট
জেলা বিএনপির সভাপতি এম ইলিয়াস আলী। এক যুগ পার হলেও ইলিয়াস আলী জীবিত না মৃত সে খবর
কেউ দিতে পারেনি দীর্ঘ এই সময়ে।
তবে সিলেটের বিএনপি নেতারা মনে করেন,
ইলিয়াস সরকারের হেফাজতে অক্ষতই আছেন। তাকে ফিরে পেতে কেবল সরকারের সদিচ্ছার প্রয়োজন।
নিখোঁজের ১২ বছর পূর্তিতে তাকে ফিরে পেতে গতকাল নানা কর্মসূচি পালন করেছে সিলেট বিএনপি
ও অঙ্গ সংগঠন। ইলিয়াস আলী ‘নিখোঁজ’র পর সিলেটে গঠন করা হয় ‘ইলিয়াস মুক্তি সংগ্রাম
পরিষদ’। এ বছর ‘ইলিয়াস মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ’র কোনো কর্মসূচি না থাকলেও সমাবেশ, স্মারকলিপি
প্রদান এবং দোয়া ও মিলাদ মাহফিল করেছে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠন। এক যুগেও ইলিয়াসের সন্ধান
না মিললেও হাল ছাড়েননি বিএনপি নেতারা।
তাদের ধারণা, ইলিয়াস আলী এখনো জীবিত
আছেন। ইলিয়াসের অবস্থান সম্পর্কে সরকার জ্ঞাত আছে। কিন্তু সরকারের সদিচ্ছার অভাবে ইলিয়াস
আলীর সন্ধান মিলছে না। ইলিয়াস আলী নিখোঁজের এক যুগপূর্তির দিন গতকাল জেলা প্রশাসকের
মাধ্যমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে সিলেট বিএনপি। এ ছাড়া বাদ আসর জেলা
বিএনপির উদ্যোগে হজরত শাহজালাল (রহ.) দরগাহ মসজিদে ইলিয়াস আলীর সন্ধান কামনায় দোয়া
ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া ইলিয়াসকে ফিরে পেতে বাদ জোহর একই মসজিদে দোয়া ও
মিলাদের আয়োজন করে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল। স্মারকলিপি প্রদানের আগে গতকাল দুপুরে জেলা
প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করে বিএনপি।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, দীর্ঘ ১২ বছর
ধরে ইলিয়াস আলী ফেরার অপেক্ষায় আছেন সিলেটবাসী। ইলিয়াসের জনপ্রিয়তায় আতঙ্কিত হয়ে সরকার
তাকে গুম করেছে।
ইলিয়াস নিখোঁজ প্রসঙ্গে জেলা বিএনপির
সিনিয়র সহসভাপতি অ্যাডভোকেট আশিক উদ্দিন বলেন, ইলিয়াস আলীর সন্ধান পেতে তার সহধর্মিণী
হাই কোর্টে রিট করেছিলেন। কিন্তু সরকারের অদৃশ্য হস্তক্ষেপে এক যুগেও সেই রিটের শুনানি
হয়নি। এতে প্রমাণিত হয় ইলিয়াস নিখোঁজের পেছনে সরকার জড়িত।
মন্তব্য করুন