নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
মন্ত্রিসভার রদবদল নিয়ে গুঞ্জন চলছে অনেকদিন ধরেই। কিন্তু রদবদল হচ্ছে হচ্ছে করে শেষ পর্যন্ত আকস্মিকভাবে আজকে মন্ত্রিসভার একটা ছোট রদবদল হয়েছে। এখানে ৩ জন মন্ত্রীর দপ্তর পরিবর্তন হয়েছে। দীর্ঘদিন আলোচনায় ছিলো, যারা ব্যর্থ মন্ত্রী তাদের সরিয়ে অন্য দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। এমনকি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও বলেছিলেন যেসব মন্ত্রীরা নন-পারফর্মিং তাদেরকে অন্য মন্ত্রণালয়ে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে।
কিন্তু এবার মন্ত্রিসভার রদবদলে মূল চমক ছিল গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের শ ম রেজাউল করিম। তাকে অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ মৎস্য ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আলী খান খসরুকে দেওয়া হয়েছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। আর সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদকে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে মন্ত্রিসভার রদবদলে যাদের নিয়ে আলোচনা ছিল, বিশেষ করে বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশীর কার্যক্রম নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে নানারকম হতাশা এবং অস্বস্তি ছিল। দলের মধ্যেও তাকে নিয়ে অস্থিরতা এবং বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। বিশেষ করে পেঁয়াজের লাগামহীন উর্ধ্বগতিতে বাণিজ্য মন্ত্রী নিজেই বলেছিলেন যে পদত্যাগ এক মিনিটের ব্যাপার।
মন্ত্রিসভায় বাণিজ্যমন্ত্রীর কোনো পরিবর্তন না দেখে সাধারণ মানুষ অনেকটা অবাকই হয়েছেন। পাশাপাশি একের পর এক রেল দুর্ঘটনায় জর্জরিত রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনের ব্যাপারেও সাধারণ মানুষের নেতিবাচক মনোভাব ছিল। বর্তমান সরকারের একবছরের বেশি সময় যাদেরকে ব্যর্থ মন্ত্রী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, তাদের মধ্যে রেলমন্ত্রী অন্যতম। কিন্তু সেই মন্ত্রণালয়েও কোন পরিবর্তন দেখা যায়নি। বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর রহমানকে নিয়েও নানা রকম প্রশ্ন ছিল। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময় করোনা ভাইরাস নিয়ে একটি বক্তব্য বিতর্ক তৈরী করেছিল। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আইডিআরসির পরিচালক আনুষ্ঠানিকভাবে সংবাদ সম্মেলন করে বিমান প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যকে খণ্ডন করেছিলেন। বলেছিলেন যে, এই ধরণের বক্তব্যের কোন ভিত্তি নেই। তারপরও বিমান মন্ত্রণালয়েরও কোন পরিবর্তন হয়নি।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ আব্দুল্লাহ মিয়া গত ঈদে চাঁদ দেখা নিয়ে এক বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছিলেন।তিনিও স্বপদে বহাল রয়েছেন। এছাড়া আরো কয়েকজন মন্ত্রীর ব্যর্থতা নিয়ে নানা রকম আলাপ আলোচনা আওয়ামী লীগের ভিতরে এবং বাইরে ছিল। মন্ত্রিসভার পরিবর্তনে তাদের গায়েও আচড় লাগেনি। তাহলে এই পরিবর্তন কেন সেই প্রশ্ন উঠেছে।
একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, সম্ভবত গৃহায়ন পূর্তমন্ত্রী শ.ম. রেজাউল করিমকে সরিয়ে দেওয়ার জন্যই এইা পরিবর্তন হয়েছে। অন্য একটি সূত্র বলছে, এটি একটি ছোট পরিবর্তন। খুব শীঘ্রই আরো কিছু মন্ত্রীর পদ পরিবর্তন হতে পারে। তবে কবে কিভাবে হবে সে সম্পর্কে কেন সুনির্দিষ্ট ধারণা পাওয়া যায়নি। আওয়ামী লীগের একটি সূত্র বলছে যে, মন্ত্রিসভায় আরো কয়েকজন নতুন মুখ অন্তর্ভুক্তির জন্য আলোচনায় ছিলেন। বিশেষ করে তারা বিগতি নির্বাচনে মনোনয়ন পাননি। দলের জন্য কাজ করেছেন এমন দুয়েকজনকে মন্ত্রী করা বা যারা দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা পাননি এমন কয়েকজনকে মন্ত্রী করার বিষয়টি নিয়েও গুঞ্জন ছিল। কিন্তু এ সমস্ত গুঞ্জন কোনটাই সত্যি হয়নি। যে ছোট রদবদল হয়েছে সেই রদবদলের ফলে মন্ত্রিসভার কার্যক্রমের গতি বাড়বে কিনা নিয়েও অনেক তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এই রদবদল কেনো তা নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে। অবশ্য আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা নিশ্চয় কোনো বিবেচনা করেই এই রদবদল করেছেন।
একটি সূত্র বলছে, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রীর ব্যাপারে কিছু কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছিল। সে কারণে হয়তো তাকে ঐ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্যই অন্যান্যদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তবে এই রদবদলই শেষ রদবদল কিনা নাকি খুব শ্রীঘ্রই আবার একটি রদবদল হবে তা নিয়েও আওয়ামী লীগের মধ্যে আলোচনা আছে।
আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র মনে করছে, এই রদবদলের ধারায় খুব শ্রীঘই মন্ত্রিসভায় একটি পূর্ণাঙ্গ রদবদল হতে পারে।
বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে
শোকজ করা হয়েছে।
বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর
রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল
প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর
নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির
সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে
আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের
প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য
আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা
হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর
নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ
দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের
ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর
বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার
একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া
নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং
নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে
কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।