নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের বাণিজ্যিক সম্পর্ক সবচেয়ে বেশি। গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যে কাঁচামাল আমদানি করে তার একটি অংশ আসে চীন থেকে। শুধু কাঁচামাল নয়, কৃষিজাত পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ চীনের একটি বড় বাজার। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে এখন চীন থেকে কাঁচামাল আমদানি বন্ধ হয়েছে।
ব্যবসায়ীরা বলছে, চীনা নববর্ষের কারণে প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ ছিল। এখন পর্যন্ত অনেক কারখানাই খোলেনি। ফলে কাঁচামাল আমদানিতে একটি সংকট তৈরির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এজন্য গার্মেন্ট, ঔষধ শিল্প এবং খাদ্যজাত পণ্যের জন্য বিকল্প বাজার খোঁজা হচ্ছে। এজন্য ইতিমধ্যেই বিজেএমইএ থেকে ভারত এবং পাকিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। এই দুটি দেশ গার্মেন্টেসের কাঁচামাল যেমন সুতা, বোতামসহ বিভিন্ন এক্সেসরিজ তৈরি করে। একই সঙ্গে আদা রসুন ও মসলা জাতীয় পণ্য আমদানির জন্য ভারত এবং পাকিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগ করছে ব্যবসায়ীরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বাংলাদেশের বাজার দখল করতে এখন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হয়েছে। দুই দেশই বাংলাদেশে চীনের যে বাজারের অংশ সেটি দখল করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে।
বাংলাদেশের ও পাকিস্তানের মধ্যকার সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরে টানাপোড়েনের মধ্যে ছিল। কিন্তু ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এই সম্পর্ক উন্নয়নে নানা রকম উদ্যোগ নিয়েছেন। আর সেই উদ্যোগের অংশ হিসেবে কিছুদিন আগে ভারত যখন বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছিল তখন পাকিস্তান বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছিল। এর পাশাপাশি বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে তারা অনেকগুলো উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলেও পাকিস্তানের কুটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে।
অন্যদিকে নাগরিকত্ব আইন ও নাগরিক পঞ্জি নিয়ে বাংলাদেশের ও ভারতের মধ্যে সম্পর্কে শীতলতা বিরাজ করছে। বিশেষ করে বিজেপি নেতাদের লাগামহীন বক্তব্য দুদেশের সম্পর্কের মধ্যে একটা স্পষ্ট টানাপোড়েন সৃষ্টি করেছে। অন্যদিকে বিভিন্ন সীমান্তে অনভিপ্রেত ঘটনা, বাংলাদেশিদের আটক, নির্যাতন, হত্যায় দুদেশের সম্পর্কে ভাটার টান পড়েছে। এই সুযোগটিই নিতে চাইছে পাকিস্তান। তারা মনে করছে যে, ছাড় দিয়ে হলেও যদি বাংলাদেশের বাজার নিয়ন্ত্রণে নেওয়া যায়, তাহলে পাকিস্তানের ভঙ্গুর এবং ক্ষয়িষ্ণু অর্থনীতির জন্য সেটি ইতিবাচক হবে। এজন্যই পাকিস্তান থেকে ব্যবসায়ী এবং বাণিজ্যিক কর্মকর্তারা এখন ঘন ঘন ঢাকায় আসছেন।
এই বিষয়টির দৃষ্টি এড়াইনি ভারতের। আর তাই ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক নতুন মাত্রায় নিয়ে যাওয়ার জন্য বিশেষ করে সীমান্ত এলাকাগুলোতে হত্যা যেন দ্রুত বন্ধ হয় সে ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সম্প্রতি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সীমান্তে উত্তেজনা কমানোর জন্য বিএসএফকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সহনশীল আচরণ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, গার্মেন্টেসের কাঁচামাল যদি ভারত বাংলাদেশে রপ্তানি করতে পারে, তাহলে ভারতের অর্থনীতির ক্ষেত্রেও তা বিরাট অবদান রাখতে পারে। কারণ গার্মেন্টস রপ্তানিতে বাংলাদেশ দ্বিতীয় বৃহত্তম রাষ্ট্র। দ্বিতীয় বৃহত্তম রাষ্ট্র হলেও বাংলাদেশে গার্মেন্টস এর কাঁচামাল এক্সেসরিজের জন্য পুরোপুরি চীনের ওপর নির্ভরশীল ছিল। সেখানে বিরাট একটা বাজার রয়েছে।
আর এ কারণেই বাংলাদেশের বাজার দখলের জন্য ভারত পাকিস্তানের বাণিজ্য যুদ্ধ এখন চলছে। এই বাণিজ্য যুদ্ধে শেষ পর্যন্ত কে জয়ী হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।