নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৫৯ পিএম, ১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনমনীয় অবস্থানের কারণে হেরে গেলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গতকাল আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠক বসেছিল। এই বৈঠকে চট্টগ্রামের মেয়র পদে মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানাচ্ছে যে, এই মেয়র পদের জন্য আ জ ম নাছিরের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আ জ ম নাছিরকে কেন আরেকবার মেয়র পদের জন্য মনোনয়ন দেওয়া উচিৎ, এ বিষয়ে অনেক যুক্তিও তিনি উপস্থাপন করেছিলেন। সেই সঙ্গে তার পক্ষে ছিলেন মনোনয়ন বোর্ডের অনেক সদস্যও। শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনা এ ব্যাপারে অনমনীয় অবস্থান গ্রহণ করেন। মনোনয়ন বোর্ডের সভায় তিনি বলেন যে, ‘নাছিরকে মনোনয়ন দেওয়া হবে না, তার বদলে অন্য কারো নাম বলো।’
এ নিয়ে বিভিন্ন বিভিন্ন যুক্তি উপস্থাপন করা হলেও শেখ হাসিনা তার অবস্থানে অনড় ছিলেন। শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার দৃঢ়তার কাছে পরাজিত হতে হয় ওবায়দুল কাদেরসহ কয়েকজনকে।
আরেকটি পক্ষ ছিল যারা আবদুচ ছালামের পক্ষে। কিন্তু যেহেতু আবদুচ ছালাম টানা দশ বছর চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব ছিলেন, তার বিরুদ্ধেও নানারকম অনিয়ম এবং দুর্নীতির অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। সেই প্রেক্ষিতে তিনিও আর আলোচনায় আসেননি। শেষ পর্যন্ত নাটকীয়ভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রেজাউল করিমের নাম উচ্চারণ করেন এবং তাকে মনোনয়ন দেওয়ার কথা বলেন। পরিস্থিতি তখন এমন ছিল যে, শেখ হাসিনার এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানানো ছাড়া অন্য কারো কোনো উপায় ছিল না।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক দূরদৃষ্টি এবং চমক সৃষ্টির ক্ষেত্রে শেখ হাসিনা এক অসামান্য উচ্চতায় নিজেকে প্রতিস্থাপিত করেছেন। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মনোনয়ন বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সেটাই আরেক ঝলক দেখলো আওয়ামী লীগ। এমনকি চট্টগ্রামের নেতাকর্মীরাও চিন্তাও করতে পারেনি যে প্রায় আনকোরা প্রার্থী রেজাউল করিম আওয়ামী লীগের মেয়র পদের জন্য মনোনয়ন পাবেন। কারণ কয়দিন আগেই তিনি জাতীয় নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৮ আসনের জন্য মনোনয়ন চেয়েছিলেন। সেই মনোনয়ন চেয়ে তিনি ব্যর্থ হন। এবারও তিনি মনোনয়ন পাবেন না ভেবেই তিনি মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন বলে তার ঘনিষ্ঠদের জানিয়েছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনীতি এমনই, একজন মানুষ যখন দীর্ঘদিন ধরে দলের জন্য নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেন তাকে তিনি এক না এক সময় পুরস্কৃত করেন। শুধু প্রয়োজন ধৈর্য্য ধরে থাকা। রেজাউল করিম ধৈর্য্য ধরে ছিলেন বলেই এই পুরস্কার তিনি পেলেন। আরেকটি বিষয় আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক বৈশিষ্ট্য, তা হলো তিনি সবসময় বিভিন্ন পুরস্কার প্রদানের ক্ষেত্রে খোঁজ করেন যে তিনি কখনো কিছু পেয়েছেন কিনা। রেজাউল করিম গত ১১ বছরের ক্ষমতার মেয়াদে তিনি না পেয়েছেন মনোনয়ন, না পেয়েছেন রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় উচ্চ পদ। এ কারণেই তিনি মনোনয়ণ পেয়েছেন।
শেখ হাসিনা যে সবসময় ত্যাগী পরীক্ষিত রাজনৈতিক কর্মীদের পক্ষে, এই মনোনয়নের ক্ষেত্রে তিনি সেটি আরেকবার প্রমাণ করলেন। আওয়ামী লীগ সভাপতির এই সিদ্ধান্তের ফলে তৃণমূলে যারা কিছুটা হলেও হতাশ হয়ে পড়েছিল, তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কি হবে? আওয়ামী লীগের জন্য ত্যাগ স্বীকার করে কি হবে তারা আশার আলো দেখছেন। কারণ তাদের মধ্যে একটি বদ্ধমূল ধারণা এই মনোনয়নের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হলো, দলের জন্য যদি নিবেদিতভাবে কাজ করা যায় তা আওয়ামী লীগ সভাপতির দৃষ্টি এড়ায় না। দল অবশ্যই তাকে একদিন মূল্যায়ন করবে। রেজাউল করিমের মেয়র মনোনয়ন পদ তার একটি নতুন উদাহরণ।
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দেশবিরোধী একটি অপশক্তি নানা ভাবে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। তারা নির্বাচন, শান্তি ও উন্নয়নের বিরোধীতায় লিপ্ত। সারাদেশে তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকালে গুলিস্তানের ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটি আয়োজিত প্রচারপত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, গণতন্ত্র, শান্তি, উন্নয়ন নির্বাচনবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বান মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের ও প্রগতিশীল শক্তির কাছে, দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব বিরোধী অপশক্তি আমাদের ভিত্তিমূলে আঘাত করতে যাচ্ছে। তাদের আমাদের প্রতিহত করতে হবে, সেজন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
উপজেলা নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটের মাধ্যমে সাংবিধানিক অধিকার প্রয়োগের জন্য জনগণকে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা আহ্বান জানিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ভোট দিয়ে আপনার নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করুন। আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে জনগণ সব শক্তির উৎস।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, দেশবিরোধী অপশক্তি জাতির পিতার পরিবারকে হত্যা করে জনগণকে সামরিক স্বৈরশাসনের জাঁতাকলে দীর্ঘকাল পিষ্ঠ করেছে। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে হত্যার রাজনীতি বন্ধ করেছেন।
আওয়ামী লীগ ওবায়দুল কাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোটে আগামী ৮ মে। গতকাল সোমবার (২২ এপ্রিল) ছিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। এদিন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা সরে দাঁড়ানোয় তিন উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ কয়েকজন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।
জানা গেছে, নোয়াখালীর হাতিয়া ও ফেনীর পরশুরাম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। এ ছাড়া বান্দরবানে উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপে রোয়াংছড়ি উপজেলায় আওয়ামী লীগের সমর্থিত প্রার্থী চহ্লামং মারমা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হচ্ছেন। সোমবার ( ২২ এপ্রিল ) মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা সরে দাঁড়ানোয় তিন উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ বেশ কয়েকজন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।
হাতিয়া উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে তিনজন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। তাঁরা হলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলীর ছেলে আশিক আলী, স্ত্রী আয়েশা ফেরদাউস ও জাতীয় পার্টির নেতা মুশফিকুর রহমান। গতকাল আশিক আলী ছাড়া বাকি দুজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন। হাতিয়া উপজেলা পরিষদের বাকি দুটি পদে একজন করে প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন।
জানতে চাইলে মুশফিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর রাজনীতির হাতেখড়ি সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলীর হাতে। তিনি ওই পরিবারের একজন সদস্যের মতো। মাঝখানে কিছু ভুল–বোঝাবুঝির কারণে দূরত্ব থাকলেও তা ঘুচে গেছে। আশিক আলীর সমর্থনে তিনি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন।
স্থানীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জোড় করাতে তাঁর ছেলে প্রার্থী হয়েছেন। দলের অন্য কেউ আগ্রহ দেখাননি। ছেলের প্রতিদ্বন্দ্বীরা নিজ থেকেই প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন।
ফেনীর পরশুরাম উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রার্থীর মধ্যে দুজন গতকাল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন। এতে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন কেবল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ফিরোজ আহমেদ মজুমদার। প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন উপজেলা পরিষদের তিনবারের চেয়ারম্যান ও পরশুরাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল উদ্দিন মজুমদার ও উপজেলার বক্সমাহমুদ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান আবুল হাসেম চৌধুরী।
ভাইস চেয়ারম্যান পদের চারজনের মধ্যে তিনজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন। বর্তমানে একক প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন পরশুরাম উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক নুর মোহাম্মদ শফিকুল হোসেন। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন ইকরামুল করিম মজুমদার, নজরুল ইসলাম ও আবদুল রসুল মজুমদার।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেত্রী শামসুন নাহার পাপিয়া। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন নিলুফা ইয়াসমিন।
এদিকে বান্দরবানে উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপে রোয়াংছড়ি উপজেলায় আওয়ামী লীগের সমর্থিত প্রার্থী চহ্লামং মারমা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। গতকাল চারজন প্রার্থীর মধ্যে তিনজন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করায় চহ্লামং মারমা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন বলে রিটার্নিং এস এম কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন জানিয়েছেন।
তবে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা চেয়ারম্যান প্রার্থীরা বলেছেন, আওয়ামী লীগ নেতাদের অনুরোধ ও প্রচ্ছন্ন চাপে তাঁরা প্রার্থিতা প্রত্যাহারে সম্মত হয়েছেন। রোয়াংছড়ি উপজেলা থেকে আওয়ামী লীগের তিনজন ও জনসংহতি সমিতির সাবেক এক নেতা চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। চারজনের মনোনয়নই রিটার্নিং কর্মকর্তা বৈধ ঘোষণা করেছিলেন। প্রার্থীরা নিজেদের মতো করে প্রস্তুতিও নিয়েছেন। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পর প্রার্থীরা জানিয়েছেন, গতকাল প্রত্যাহারের শেষ দিনে হঠাৎ করে আওয়ামী লীগের নেতারা তৎপর হয়ে ওঠেন। প্রার্থিতা তুলে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করে এবং প্রচ্ছন্নভাবে চাপ দিতে থাকেন।
মন্তব্য করুন
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জুনাইদ আহমেদ পলক নাটোর তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দেশবিরোধী একটি অপশক্তি নানা ভাবে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। তারা নির্বাচন, শান্তি ও উন্নয়নের বিরোধীতায় লিপ্ত। সারাদেশে তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকালে গুলিস্তানের ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটি আয়োজিত প্রচারপত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
জুনাইদ আহমেদ পলক টানা তিনবারের প্রতিমন্ত্রী। কিন্তু রাজনীতিতে তার পদ পদবী তেমন নেই। রাজনীতিতে এখনও তিনি তরুণ এবং পিছনের সারির নেতা হিসেবে পরিচিত। স্থানীয় পর্যায়ের নেতৃত্ব এবং প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে তিনি বিভিন্ন সময়ে সুনাম কুড়িয়েছেন। কখনও বিতর্কিত হয়েছেন। তবে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে তার পরীক্ষা হলো এবার এবং সেই পরীক্ষায় তিনি শুধু কৃতকার্যই হননি, এ প্লাস পেয়েছেন বলেও অনেকে মনে করছেন।