নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০২ পিএম, ১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্যারোল কিংবা মুক্তি নিয়ে এখনো ধুম্রজাল চলছে। বিএনপির পক্ষ থেকে কার্যত বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য সরকারের সহানুভূতি ভিক্ষা করা হচ্ছে। অন্যদিকে সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট বলে দেয়া হয়েছে যে, যদি সরকারের কাছে জামিন চায় তাহলে একটা সুনির্দিষ্ট আবেদনের মাধ্যমে এই মুক্তির প্রার্থনা করতে হবে। মুক্তির জন্য সরকারের দুটি ক্ষমতা আছে।
একটি হচ্ছে, বিশেষ বিবেচনায়। সেই বিশেষ বিবেচনার জন্য দণ্ড মওকুফ করতে হবে এবং দণ্ড মওকুফের জন্য তাকে আবেদন করতে হবে এবং এই আবেদনের জন্য তাকে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে। আর দ্বিতীয় উপায় হলো প্যারোলের জন্য। সেখানে তাকে সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে যে, অসুস্থতার জন্য তিনি প্যারোলের আবেদন করছেন।
কিন্তু বেগম খালেদা জিয়ার পরিবার বা বিএনপির পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত প্যারোল বা বিশেষ বিবেচনার জন্য কোন আবেদন দেয়া হয়নি এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এটা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন যে, সরকারের হাতে বেগম খালেদা জিয়ার প্যারোল সংক্রান্ত কোন আবেদন দেয়া হয়নি এবং এরকম আবেদন আসলে সরকার সেটা বিবেচনা করবে।
তবে বিএনপির একাধিক সূত্রে জানা গেছে যে, সরকারের সঙ্গে প্যারোলের আবেদনের আগে আগামীকাল জামিনের জন্য শেষ চেষ্টা করতে চায় বিএনপির নেতৃবৃন্দ। আগামীকাল বেগম খালেদা জিয়ার জন্য জামিনের আবেদন করা হবে, যেখানে তার সবশেষ স্বাস্থ্যের অবস্থা, শারীরিক পরিস্থিতি ইত্যাদি উল্লেখ করে পুনরায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তার জামিনের আবেদন করা হবে। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে, বেগম খালেদা জিয়ার অন্যতম কুশলীভ খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, আপিল বিভাগ জামিনের আবেদন নাকচ করে দিয়েছিলেন, সেটা ছিল ভিন্ন প্রেক্ষাপট।
এখন নতুন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এখন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা আগের থেকে অনেক অবনতি ঘটেছে। বিএসএমইউ এর ডাক্তাররা তার বিশেষায়িত চিকিৎসার কথা বলেছেন, আর যেটি বিএসএমইউ’তে সম্ভব না। এ কারণেই আমরা হাইকোর্টে আবেদন করছি।
তিনি মনে করেন হাইকোর্টের এখতিয়ার রয়েছে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য জামিন দিতে।
বিএনপি নেতারা মনে করছে, যদি আদালতের মাধ্যমে জামিন হয়ে যায় তাহলে তা বিএনপি এবং বেগম খালেদা জিয়ার জন্য সম্মানজনক হবে। তাহলে তাদেরকে অসম্মানজনক প্যারোল বা বিশেষ বিবেচনার আবেদন করতে হবে না।
বিএনপির একজন নেতা বলেছেন, এমনকি আদালত যদি কিছু শর্তও আরোপ করে সেটিও সম্মানজনক হবে। কারণ আদালত যে কোনো শর্ত দিতে পারে।
কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় যদি কোনো শর্ত আরোপ করে তাহলে সেটি বেগম খালেদা জিয়ার জন্য অসম্মানজনক হওয়ার পাশাপাশি বিএনপির জন্যও অপমানজনক হবে। কাজেই তারা চেষ্টা করছে আদালতের মাধ্যমে আগে বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের বিষয়টি সুরাহা করা যায় কিনা?
যদি দেখা যায় আদালতে জামিনের বিষয়টি ঝুলে যাচ্ছে, সুরহা হচ্ছে না বা আদালত জামিন দিচ্ছে না সেক্ষেত্রে তাদের সামনে প্যারোল ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প থাকবে না। এখন দেখার বিষয় আগামীকাল আদালতে বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের আবেদন পড়লে আদালত কি বলে। তার ওপর নির্ভর করছে মুক্তি প্রক্রিয়ার পরবর্তী ধাপ।
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে
শোকজ করা হয়েছে।
বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর
রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল
প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর
নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির
সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে
আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের
প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য
আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা
হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর
নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ
দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের
ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর
বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার
একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া
নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং
নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে
কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।