নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
আজ ৫টি সংসদীয় আসনের উপনির্বাচন এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়রপদে মনোনয়ন চুড়ান্ত করতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক বসেছে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে যে, বৈঠকে ৫টি আসনে মনোনয়ন ও মেয়র পদের মনোনয়নের পাশাপাশি খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং সে বিষয়ে করণীয় কি তা নিয়ে খোলামেলা আলাপ আলোচনা হয়েছে। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে এই বৈঠকে স্থায়ী কমিটির অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ সূত্রগুলো বলছে, বৈঠকে ৫টি সংসদীয় আসনের উপনির্বাচনে কাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে এ বিষয়ে তারেকের ওপর সিদ্ধান্ত গ্রহণের ভার ছেড়ে দেওয়া হয়। বিষয়টি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া দেখছেন বলে মন্তব্য করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। চট্টগ্রাম মেয়রের ক্ষেত্রেও সিদ্ধান্ত তারেকের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয় বলে বৈঠক সূত্র প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে।
তবে বৈঠকে খালেদা জিয়ার মুক্তি প্রসঙ্গে বিএনপি নেতৃবৃন্দ শেখ হাসিনার বন্দনায় মুখর হয়ে ওঠেন। তারা মনে করেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির একটি পথ খোলা আছে তা হলো শেখ হাসিনার অনুকম্পা, তার দয়া। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য তিনি বলেছেন, আমি শেখ হাসিনাকে দীর্ঘদিন ধরে চিনি। আমার স্ত্রীর সঙ্গে তার দীর্ঘদিনের সুসম্পর্ক রয়েছে। উনি অনেক মানবিক মানুষ। আপনারা এই সমস্ত স্টান্টবাজি বাদ দিয়ে সরাসরি তার সঙ্গে দেখা করুন। আমাদের উচিত তাঁর সাথে অনুনয়-বিনয় করে হলেও খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি দেখা।
বিএনপির আরেকজন স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, শেখ হাসিনা খালেদা জিয়ার প্রতি যথেষ্ট সংবেদনশীল এবং তাকে হয়তো সঠিক তথ্য জানানো হচ্ছেনা, তাকে যদি বেগম জিয়ার সঠিক তথ্য জানানো হয় তাহলে অবশ্যই তিনি বেগম জিয়ার উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন। এই প্রসঙ্গে স্থায়ী কমিটির অন্য একজন সদস্য বলেন যে, ওয়ান ইলেভেনের সময় দুই নেত্রী কারাগারে ছিলেন এবং তখন আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জন্য খাবারও পাঠাতেন। তিনি একজন মানবিক মানুষ এবং অসহায় মানুষের জন্য তাঁর সবসময় সহানুভূতি থাকে।
কিন্তু এই বৈঠকেই দলের আরেকজন কট্টরপন্থী হিসেবে পরিচিত স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন যে, শেখ হাসিনা ২১ শে আগস্টের গ্রেনেড হামলার প্রতিশোধ হিসেবে বেগম জিয়াকে আটকে রেখেছেন এবং তাঁর কাছে ধর্ণা দিয়ে কোন লাভ হবেনা। কিন্তু বিএনপির স্থায়ী কমিটির উপস্থিত অধিকাংশ সদস্য তাঁর বিরোধিতা করেন, তাঁরা মনে করেন যে, আমরা যদি নির্বাচনের জন্য শেখ হাসিনার সঙ্গে সংলাপ করতে পারি, তাহলে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য কেন তাঁর কাছে ধরনা দিতে পারবো না? বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা এই ব্যাপারে তাদের যে সংসদ সদস্যদের চ্যানেল, সেই চ্যানেলকে ব্যবহার করার প্রস্তাব দেন। হারুন অর রশিদের নেতৃত্বে একটি দল যেন আওয়ামী লীগ সভাপতির সঙ্গে সংসদে দেখা করেন এবং খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি উত্থাপন করেন। তবে বিএনপির অন্য একজন স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে শেখ হাসিনার সঙ্গে যোগাযোগ করার কথা বলেছেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তিনি সরাসরি যোগাযোগ করলে এটা হিতে বিপরীত হবে কিনা বা শেষ পর্যন্ত কি ফলাফল হবে সেটা ভেবে দেখা দরকার। আর এ নিয়ে লন্ডনে কথা বলা যায় কিনা এ প্রস্তাব করেছেন।
তবে স্থায়ী কমিটির সকলে একমত হয়েছেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয় নিয়ে লন্ডনে কোনো আলাপ আলোচনা করলে খালেদা জিয়ার মুক্তির অগ্রগতি হবে না।
তারা বলেন, আমাদেরকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমরা বেগম জিয়ার মুক্তি চাই কিনা? যদি বেগম জিয়ার মুক্তি চাই তাহলে পড়ে আমাদেরকেই করণীয় বের করতে হবে। আর এই মুক্তির জন্য শেখ হাসিনার কাছেই আমাদেরকে যেতে হবে।
তারা মনে করেন শেখ হাসিনার যে মহানুভবতা, তিনি যদি একটু সদয় হোন তাহলে খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব। আর এ কারণে রাজনীতিতে গলাবাজি, আন্দোলনের মাধ্যমে মুক্ত করব কিংবা বড় বড় কথা না বলে শেখ হাসিনার করুণা ভিক্ষার পথ খোঁজার প্রস্তাব দেন অনেক বিএনপি নেতা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কি সিদ্ধান্ত হয়েছে তা এখন পর্যন্ত জানা যায়নি।
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।
উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।