নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন আগামী ২৯ মার্চ। ইতিমধ্যেই আওয়ামী লীগ রেজাউল করিমকে তাদের প্রার্থী হিসেবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে। তবে বিএনপি এখনো তাদের প্রার্থী ঘোষণা করেনি। প্রার্থী ঘোষণা না করলেও এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিপক্ষ যে বিএনপি নয় তা মোটামুটি নিশ্চিত হয়েছে।
এবার সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন রেকর্ড ১৯জন প্রার্থী। এদের মধ্যে অন্তত তিনজন ছিলেন হেভিওয়েট প্রার্থী। তারা হলেন বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির, সাবেক চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম এবং বিএনপির টিকেটে জেতা সাবেক মেয়র মনজুর আলম। এই তিন জনেরই নিজস্ব কর্মী বাহিনী, নেটওয়ার্ক এবং ভোট ব্যাংক রয়েছে।
এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো আওয়ামী লীগের যে বিদ্যমান কোন্দল সেই কোন্দল মিটিয়ে দলের প্রার্থীর পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা। সেটা রেজাউল করিম পারবেন কিনা বা চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে রেজাউল করিমের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হবেন কিনা সেটিই এখন দেখার বিষয়।
এবারের সিটি নির্বাচনে বিএনপি এখনো মনোনয়ন চূড়ান্ত না করলেও দলটি থেকে শাহদাত হোসেন মনোনয়ন পেতে পারেন বলে বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। চট্টগ্রামে বিএনপির অবস্থা এমনিতেই নাজুক। আর চট্টগ্রামে বিএনপির যারা মূল সক্রিয় নেতৃবৃন্দ ছিল তারা এখন কেউই রাজনীতিতে সক্রিয় নন। যার কারণে চট্টগ্রাম নির্বাচনকে বিএনপি সংগঠন গোছানোর নির্বাচন হিসেবে বেছে নিচ্ছেন।
কিন্তু আওয়ামী লীগ যদি নিজেদের কোন্দল মেটাতে না পারে এবং যদি নির্বাচনে রেজাউল করিমকে তাঁর পক্ষের লোকজনকে নিয়ে নির্বাচনী মাঠে নামতে হয় তাহলে এই নির্বাচনের লড়াই বিএনপি জমিয়ে তুলতে পারে। জানা গেছে যে, রেজাউল করিমকে প্রত্যেক্ষভাবে সহযোগিতা দিয়েছেন প্রয়াত মহিউদ্দিন আহমেদের ছেলে নওফেল চৌধুরী। নওফেল এবং মহিউদ্দিনপন্থীরা রেজাউল করিমের পক্ষে সবথেকে বড় শক্তি। কিন্তু গত ১০ বছর চট্টগ্রামের রাজনীতিতে আ জ ম নাছির একটি বড় ফ্যাক্টর হিসেবে দাঁড়িয়ে গেছেন, বিশেষ করে ছাত্রলীগ-যুবলীগহ তরুণ ক্যাডারদের মাঝে আ জ ম নাছিরের প্রভাব অত্যন্ত বেশি। আর গত পাঁচ বছর নাছির মেয়রের দায়িত্ব পালন করার কারণে ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন মহলে তাঁর প্রভাব বলয় বা নেটওয়ার্ক রয়েছে। আর একারণেই তাঁর ভূমিকা কি হবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। আ জ ম নাছির মনোনয়ন না পাবার পর চুপচাপ বসে থাকেননি, বরং তিনি মুখ খুলেছেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন। তিনি চট্টগ্রামের নেতাবৃন্দদের দিকে ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, তাকে মনোনয়ন বঞ্চিত করার পেছনে চট্টগ্রামের কিছু নেতারা দায়ী। আর এই বক্তব্যে যদি তিনি অটল থাকেন তাহলে নিশ্চিতভাবে আ জ ম নাছিরের কর্মীরা রেজাউল করিমের পক্ষে কাজ করবেন না এবং তারা যদি গোপনে বিএনপির প্রার্থী বা তৃতীয় কোন প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেন তাহলে সেটা আওয়ামী লীগের প্রার্থীর জন্য একটি বড় রকম শঙ্কার কারণ হিসেবে দাঁড়াতে পারে। সেই বিবেচনায় আব্দুচ ছালামের তেমন কোন রাজনৈতিক ভিত্তি নেই, তবুও তাঁর একটি নিজস্ব কর্মীবাহিনী এবং ব্যবসায়িক মহলে একটি নিজস্ব নেটওয়ার্ক রয়েছে। এদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। এরাও যদি শেষ পর্যন্ত রেজাউল করিমের পক্ষে কাজ না করেন, তাহলে সেটাও আরেকটি আঘাত হিসেবে বিবেচিত হবে। তবে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বলছেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা যদি সবগুলো পক্ষকে ডেকে কঠোর ভাষায় নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার নির্দেশ দেন, তাহলে কারো পক্ষেই শেখ হাসিনার নির্দেশ অমান্য করে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া সম্ভব হবে না। আর একমাত্র শেখ হাসিনাই পারবেন বিভক্ত আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ করতে। আর সেটা যদি না করা হয় তাহলে এই নির্বাচন আওয়ামী লীগের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জের হতে পারে।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক
পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনদের
মধ্যে যারা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেনি তাদের বিষয়ে সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দলীয়
নির্দেশনা অমান্য করলে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশনের ব্যাপারে চিন্তা করা হবে। সময়মতো অবশ্যই
এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আজ বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে ধানমন্ডিতে
আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, পার্টির যারা মন্ত্রী-এমপি
এমন পর্যায়ে আছেন তাদের জন্য নির্দেশনা রয়েছে, তাদের সন্তান ও স্বজনরা যেন উপজেলা নির্বাচনে
না আসে। প্রথম পর্যায়ের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় চলে গেছে। কেউ কেউ বলেছেন আমরা
বিষয়টি আরও আগে অবহিত হলে সিদ্ধান্ত নিতে আমাদের সুবিধা হতো। তারপরেও কেউ কেউ প্রত্যাহার
করেছেন, কেউ কেউ করেননি। আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচন কমিশনের যে সময়সীমা তারপরেও ইচ্ছা
করলে করতে পারবেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন,
‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও দলীয় সিদ্ধান্ত যারা অমান্য করেছে তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা
নেওয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাচনেও কিন্তু দলের সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয় আছে। দল যার যার
কর্মকাণ্ড বিচার করবে। চূড়ান্ত পর্যায় পর্যন্ত যারা প্রত্যাহার করবে না সময়মতো দল ব্যবস্থা
নেবে’।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি একতরফা কোনো
সমাবেশ করতে গেলে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিষয়টি এসে যায়। আওয়ামী লীগও একই সময়ে সমাবেশের
ডাক দেয়। তবে এটা পাল্টাপাল্টি নয়।
ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক
কার্যালয়ে হওয়া উক্ত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি
এম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, সুজিত
রায় নন্দী, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক
আমিনুল ইসলাম আমিন প্রমুখ।
মন্ত্রী-এমপি প্রার্থিতা প্রত্যাহার ওবায়দুল কাদের
মন্তব্য করুন
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনদের মধ্যে যারা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেনি তাদের বিষয়ে সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দলীয় নির্দেশনা অমান্য করলে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশনের ব্যাপারে চিন্তা করা হবে। সময়মতো অবশ্যই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।