নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:৫৯ পিএম, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে এখন রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলাপ-আলোচনা এবং গুঞ্জন চলছে। যদিও বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্পূর্ণরূপে সরকারের ওপর নির্ভর করছে। কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা যায় যে, খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি আসলে সরকারের বিষয়ই নয়। বরং সুনির্দিষ্ঠভাবে বললে তারেক জিয়াই খালেদা জিয়ার মুক্তির পথে বড় বাধা। কারণ বিএনপি নেতারাই মনে করেন যে তারেক জিয়া চাইলে খালেদা জিয়ার মুক্তি ন্যূনতম সময়ের মধ্যেই সম্ভব। কারণ সরকারের সঙ্গে যদি একটা সম্মানজনক সমঝোতা করা যায়, তাহলে খালেদা জিয়ার মুক্তি সময়ের ব্যাপার মাত্র। কিন্তু এই সম্মানজনক সমাধানের পথ তারেকের কারণে রুদ্ধ হয়ে গেছে। তারেক যেমন খালেদা জিয়ার মুক্তি চাইছে না, খালেদা জিয়ার মুক্তির পক্ষে বড় ধরনের আন্দোলন গড়ে উঠুক, এটাও চাইছে না তারেক। এজন্যই খালেদা জিয়ার মুক্তি বিলম্বিত হচ্ছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
প্রশ্ন হচ্ছে যে, খালেদা জিয়ার বড় ছেলে কেন তার মায়ের মুক্তি চান না। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এর পিছনে রয়েছে ৫টি কারণ।
বিএনপির কর্তৃত্ব নিরঙ্কুশ করা
এখনো বিএনপির প্রধান নেতা খালেদা জিয়া। এমনকি ২ বছরের বেশি সময় কারাগারে থাকার পরেও দলের ভেতর খালেদা জিয়া এখনো নিরঙ্কুশ জনপ্রিয়। জনপ্রিয়তার দিক থেকে তারেক বেগম খালেদা জিয়ার ধারেকাছেও নেই। এটাই তারেকের বড় একটি ব্যর্থতা। খালেদা জিয়ার এই জনপ্রিয়তার কারণেই তারেক বিএনপিতে তার নেতৃত্ব নিরঙ্কুশ করতে পারছে না। তারেকের অনুসারীরা মনে করছেন যে, বেগম জিয়া যদি জেলে আরও কিছুদিন থাকেন, তাহলে তারেকের কর্তৃত্ব বিএনপিতে নিরঙ্কুশ হবে।
খালেদাপন্থীদের দল থেকে বিদায় করা
২০০১ সালের নির্বাচনের পর থেকে তারেক জিয়া ক্রমাগতভাবে খালেদাপন্থীদের দলে কোনঠাসা করছেন। এমনকি পারলে দল থেকে তাদের বিদায় করেছন। তারেকের কারণে মোসাদ্দেক আলী ফালু দলে কোনঠাসা হয়ে পড়েছিলেন। খালেদা জিয়ার অনেক ঘনিষ্ঠ নেতৃবৃন্দ ২০০১ সালের নির্বাচনে মনোনয়ন পাননি, যাদের মধ্যে ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়াসহ আরো অনেকে ছিলেন। এই যাত্রায় বেগম খালেদা জিয়া গ্রেফতার হওয়ার পর দলে আস্তে আস্তে তার অনুসারীদের কোণঠাসা করা হচ্ছে। এদের অনেকেই মারা গেছেন। যেমন তরিকুল ইসলাম, সাদেক হোসেন খোকাসহ প্রমুখ। আর বাকিরা যারা আছেন তাদের কোণঠাসা করা হয়েছে। আর আস্তে আস্তে তারা যেন দল থেকে বিতারিত হয় সেই চেষ্ঠা চলছে, আর খালেদা জিয়ার মুক্তিতে যত বিলম্ব হয় ততই এদের দল থেকে বিতারিত করা সহজ হবে।
খালেদার ইস্যুতে আন্দোলন গড়ে তোলা
ভবিষ্যতে বিএনপি যেন একটা আন্দোলনের ইস্যু পায় সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে খালেদা জিয়ার বিষয়টি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হতে পারে। সেই বিবেচনায় খালেদাকে বন্দী রেখে ভবিষ্যতে একটি আন্দোলন গড়ে তোলার ফর্মুলা তারেকের জন্য একটি বড় সুযোগ হতে পারে বলে মনে করেন তারেকপন্থীরা।
খালেদার কিছু হলে তাকে পুঁজি করে আন্দোলন
জেলে থাকা অবস্থায় খালেদা জিয়া যদি বার্ধক্যজনিত বা অসুস্থ্যতার কারণে মৃত্যুবরণ করে তাহলে সেটি বিএনপির জন্য সাপে বর হতে পারে মনে করনে তারেক। আর এ ব্যাপারে সে বিএনপি নেতৃবৃন্দর কাছে স্পষ্ট বার্তাও দিয়েছেন। কাজেই খালেদা জিয়াকে বাইরে রাখার চেয়ে জেলে রেখে তিল তিল করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে তারেকের জন্য অত্যন্ত লাভজনক।
খালেদার সম্পদ দখল করা
খালেদা জিয়া বিপুল সম্পদের অধিকারী এবং এই সম্পদের মালিক কে হবেন তার আইনি সুরহা এখনো হয়নি। তারেক জিয়ার লোভ এই সম্পদের দিকে। খালেদা জিয়াকে যদি এভাবেই জেলে মৃত্যুবরণ করেন তাহলে তার সকল সম্পদের কর্তৃত্ব তারেকের হাতে চলে আসবে। আর খালেদা জিয়াকে আটকে রাখার এটিও একটি বড় কারণ।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।