নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০১ পিএম, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে অনেক বিতর্কিত নেতৃত্ব আছে সাধারণ জনগনের কাছে যাদের ইমেজ অত্যন্ত নেতিবাচক। কিন্তু রাজনীতির দুর্দিনে অবদান এবং আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অবিচল থাকার কারণে তারা শেখ হাসিনার কাছে প্রিয়ভাজন, আস্থাভাজন। অনেকের সাংগঠনিক যোগ্যতা এবং দক্ষতার কারণে শেখ হাসিনা তাদেরকে পছন্দ করে। কেউ কেউ দু:সময়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির পাশে দাড়িয়েছিলেন; এজন্য তাদেরকে দূরে ফেলে দেননি আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এরকম কয়েকজনকে নিয়েই এই প্রতিবেদন।
জয়নাল হাজারি
আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ইতিহাসে বিতর্কিত রাজনীতিবিদদের মধ্যে ফেনীর জয়নাল হাজারী অন্যতম। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালে আওয়ামী লীগের যে বদনামগুলো হয়েছিল, সেই বদনামগুলোর একটি বড় কারণ ছিল ফেনীতে জয়নাল হাজারীর আলাদা রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করা। এরপর থেকেই জয়নাল হাজারীর রাজনৈতিক জীবন ফিকে হয়ে আসতে থাকে। আস্তে আস্তে রাজনীতি থেকে সরে যান জয়নাল হাজারী। কিন্তু সাম্প্রতিক সময় অসুস্থতার কারণে আবার শেখ হাসিনার কাছে আসেন। চিকিৎসার জন্য টাকা দেন শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য হিসেবেও তাকে জায়গা দিয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে নানা রকম বিতর্কে জড়ালেও বঙ্গবন্ধুর আদর্শচ্যুত হননি কখনো। তারই পুরস্কার আওয়ামী লীগ সভাপতি তাকে দিয়েছেন। এ কারণেই জয়নাল হাজারী শেখ হাসিনার আস্থাভাজন হিসেবে নিজেকে আবার প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
শামীম ওসমান
নারায়নগঞ্জে সাধারণ মানুষের কাছে শামীম ওসমান একটা বিতর্কিত চরিত্র। বিশেষ করে ত্বকী হত্যকাণ্ড এবং নারায়ণগঞ্জের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর সঙ্গে প্রকাশ্য দ্বন্দ্বে জড়িয়ে তিনি আলোচিত সমালোচিত। কিন্তু সাধারণ মানুষের কাছে তিনি যে পরিচয়ে পরিচিত হোন না কেন শেখ হাসিনার আস্থাভাজন এবং প্রিয়ভাজন নেতা হিসেবেই তিনি পরিচিত। এর প্রধান কারণ হলো শামীম ওসমানের বাবা আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহচর ছিলেন। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পর এই পরিবারটি বঙ্গবন্ধু হত্যায় বিচারের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সেটি ভুলেননি। এ কারণেই শামীম ওসমানের অনেককিছুই উপেক্ষা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি তার প্রিয় কর্মী হিসেবে স্থান দিয়েছেন।
সোহেল তাজ
প্রয়াত শহীদ তাজ উদ্দীন আহমেদের পুত্র। আওয়ামী লীগ সভাপতির আপাত স্নেহে যারা বেড়ে উঠেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম সোহেল তাজ। সোহেল তাজ শুধুমাত্র তাজউদ্দীন আহমেদের পুত্র হিসেবে নয়, শেখ হাসিনা তাকে সন্তানতুল্য হিসেবেই সবসময় দেখেন এবং সেরকমভাবেই স্নেহ করেন। আর এ কারণেই অনেক বিতর্কিত ও নেতিবাচক ব্যাপারকেও আওয়ামী লীগ সভাপতি উপেক্ষা করেছেন। ’৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর যে ৪ নেতা খুনীদের প্রস্তাব ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন, তাদের মধ্যে সোহেল তাজের পিতা ছিলেন অন্যতম।
আব্দুল মান্নান খান
আব্দুল মান্নান খান কমিউনিস্ট পার্টি থেকে আসা আওয়ামী লীগ নেতা। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সভাপতি তাকে মনোনয়ন দিয়েছিলেন ঢাকা-১ আসন থেকে, সেই সঙ্গে মন্ত্রীত্ব দিয়েছিলেন। কিন্তু নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে তিনি পরবর্তীতে আর মনোনয়ন পাননি। কিন্তু আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে শেখ হাসিনা তাকে রেখেছেন, এবারেও তিনি কেন্দ্রীয় কমিটিতে রয়েছেন। দলীয় কর্মকাণ্ডে তাকে দেখা যায় না। আওয়ামী লীগের মধ্যেই তিনি কমিউনিস্ট হিসেবে সমালোচিত। কিন্তু তারপরেও ওয়ান ইলেভেনের সময়ে শেখ হাসিনার পক্ষে দৃঢ় অবস্থানের কারণে এখনও তিনি শেখ হাসিনার আস্থাভাজন।
শাজাহান খান
এবার আওয়ামী লীগের কমিটিতে সবচেয়ে বড় চমক ছিল প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে শাজাহান খানের অন্তর্ভূক্তি। নিরাপদ সড়ক আন্দোলনসহ নানারকম ঘটনায় শাজাহান খান বিতর্কিত এবং সাধারণ জনগণ তাকে দুর্বৃত্ত চালকদের প্রতিনিধি মনে করে। কিন্তু তারপরেও তার বিশাল শ্রমিক বাহিনী, শ্রমিকদের মধ্যে তার নিরঙ্কুশ জনপ্রিয়তার প্রিয়ভাজন এই নেতা। যতই বিতর্কিত হোক না কেন, শেখ হাসিনার আস্থাভাজন হিসেবে তিনি পরিচিত।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
কিংস পার্টি সরকার শমসের মবিন চৌধুরী মেজর হাফিজ বিএনপি তৈমুর আলম খন্দকার
মন্তব্য করুন
বিএনপি কিংস পার্টি মেজর হাফিজ সাকিব আল হাসান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
সংযমের এই রমজান মাসে ইফতার পার্টির নামে বিএনপি গিবত পার্টি করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ শ্রমিক লীগ এবং কৃষক লীগের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের সঙ্গে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপির সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বর্তমানে বিএনপির নেতারা ক্লান্ত, কর্মীরা হতাশ। এ অবস্থায় গালিগালাজ করা ছাড়া তাদের করার কিছু নেই। দলটি এখন ইফতার পার্টির নামে সরকারের অন্ধ সমালোচনা করছে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি ইফতার পার্টি করে, এটাকে ইফতার পার্টি বলবো নাকি গিবত পার্টি বলবো। আওয়ামী লীগের গিবত করার জন্যই ইফতার পার্টি। স্রষ্টার প্রশংসার জন্য নয়, ইফতার পার্টির নামে ঢালাওভাবে সরকারের সমালোচনা করে।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খানসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ওবায়দুল কাদের রাজনীতি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী
মন্তব্য করুন
বিএনএম সাকিব আল হাসান মেজর হাফিজ
মন্তব্য করুন
সদ্যই রাজনীতিতে প্রবেশ করেছেন দেশসেরা অলরাউন্ডার, বাংলাদেশ ক্রিকেটের রত্ন সাকিব আল হাসান। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নমিনেশন নিয়ে হয়েছেন মাগুরা-১ আসনের এমপি। তবে এরই মাঝে ভিন্ন এক সমালোচনার জন্ম নিয়েছে সাকিব আল হাসানকে নিয়ে।
গুঞ্জন উঠেছে, দ্বাদশ নির্বাচনের পূর্বে ‘কিংস পার্টি’ খ্যাত বিএনএমে যোগ দিয়েছিলেন। সম্প্রতি গণমাধ্যমে এমন একটি ছবিও প্রকাশিত হয়েছে। সাবিকের এমন কাণ্ডে দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) রাজধানীর ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউর দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাকিব আওয়ামী লীগের টিকিটে মাগুরা থেকে নির্বাচন করে জয় লাভ করেছে। এর আগে সে কোনো দল করেছে কি না সেটা আওয়ামী লীগের কাছে বিবেচ্য নয়।
কাদের আরও বলেন, নমিনেশন চাওয়ার আগে সাকিব আমাদের পার্টির কেউ ছিল না। নমিনেশন যখন নেয় তাকে প্রাইমারি সদস্য পদ নিতে হয়। সে শর্ত পূরণ করা দরকার সেটা সে করেছে।
তিনি বলেন, সরকারি দল কিংস পার্টি করতে যাবে কেন? নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনীতিতে অনেক ফুল ফোটে। কোনটা কিংস পার্টি, কোনটা প্রজা পার্টি এটা সম্পর্কে আমার জানা নেই।
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, আমাদের গণতন্ত্র ঠিক আছে। আমাদের নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচন ছাড়া সরকারে কেউ ক্ষমতা বসাতে পারবে না।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দপ্তর সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী, আনিসুল ইসলামসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন
অনেকেই মনে করে যে, সরকারের পৃষ্টপোষকতায় কিংস পার্টিগুলো গঠিত হয়েছিল। তৃণমূল বিএনপি এবং বিএনএম গঠনের পিছনে সরকারের মদদ এবং সমর্থন ছিল বলে বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন। কিন্তু সেই মদদ এবং সমর্থন শেষ পর্যন্ত টেকেনি। কিংস পার্টি গঠনের ব্যাপারে শুরুতে সরকারের লোকজন যেভাবে আগ্রহী ছিল, পরবর্তীতে তাদের মধ্যে সে আগ্রহ থাকেনি। বিএনএম এবং তৃণমূল বিএনপির অনেক নেতাই ব্যক্তিগত আলাপ চারিতায় বলেছে, সরকার গাছে তুলে মই সরিয়ে নিয়েছে।
মেজর হাফিজ এবং সাকিব আল হাসানের ভাইরাল ছবির মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে নির্বাচনের আগে বিএনপির অনেকেই নির্বাচনে যাওয়ার জন্য উদগ্রীব ছিল। তারা বিএনএম বা কিংস পার্টি গঠনেও তৎপর ছিলেন। মেজর হাফিজ সুবিধা করতে না পেরে শেষ পর্যন্ত বিএনএমে যোগ দেননি। এখন তিনি আবার সাচ্চা বিএনপির সাজার একটি নাটক করছেন। তবে সুযোগ সুবিধা পেলে কে কি করতে পারে তার একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রকাশিত হয়েছে সাম্প্রতিক সময়ে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে মেজর অবসরপ্রাপ্ত হাফিজ উদ্দিনের ছবিতে।