ইনসাইড পলিটিক্স

বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে বিএনপির ১০ মিথ্যাচার

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭:০১ পিএম, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২০


Thumbnail

আজ আদালতে বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা অসত্য তথ্য দিয়েছেন। হাইকোর্ট বিভাগ যখন জানতে চান যে গত ১২ ডিসেম্বর যে খালেদা জিয়ার যে স্বাস্থ্য প্রতিবেদন ছিল, তাতে উল্লেখ করা হয়েছিল যে বেগম খালেদা জিয়ার সম্মতির ভিত্তিতে উন্নততর চিকিৎসা দরকার। সেই প্রেক্ষিতেই হাইকোর্ট বিভাগ জানতে চান যে তার সেই উন্নততর চিকিৎসার ব্যাপারে কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এসময় খালেদা জিয়ার পক্ষের আইনজীবীরা বলেন, তিনি উন্নততর চিকিৎসার ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছেন। এই সম্মতির ভিত্তিতে তাকে উন্নততর চিকিৎসা দেওয়া হলেও তার অবস্থার উন্নতি হচ্ছে না।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) এর উপাচার্য ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেছেন যে, এটা ডাহা অসত্য তথ্য। বেগম খালেদা জিয়াকে বার বার উন্নত চিকিৎসার কথা বলে হলেও তিনি অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তার অসম্মতির কারণেই তাকে উন্নত চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে বিএনপির মিথ্যাচার এটিই প্রথম নয়। বেগম জিয়া রাজনীতিতে আসার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে বিভিন্ন মিথ্যাচার হয়েছে। আসুন দেখে নেওয়া যাক বেগম জিয়াকে নিয়ে বিএনপির মিথ্যাচারগুলো-

সহায় সম্বলহীন অসহায় নারী খালেদা

১৯৮১ সালে জিয়াউর রহমান মারা যাওয়ার পর বেগম জিয়াকে সহায় সম্বলহীন অসহায় নারী হিসেবে চিহ্নিত করেন। তখনকার বিএনপির নেতৃবৃন্দ বলেন, দুই সন্তানকে নিয়ে চলার মতো অবস্থা তার নেই। জিয়াউর রহমান ছেড়া গেঞ্জি এবং ভাঙা স্যুটকেস ছাড়া কিছুই রেখে যাননি। আর এ কারণেই ১ টাকা মূল্যমানে ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি দেওয়া হয়েছিল, তার দুই ছেলের চিকিৎসা ও শিক্ষার সমস্ত খরচ রাষ্ট্র বহন করবে বলে জানানো হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে জানা যায় যে খালেদার নামে এসব মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছিলেন নেতাকর্মীরা। জিয়াউর রহমান সেসময়ই বেগম খালেদা জিয়ার জন্য প্রায় ৪০ কোটি টাকার সম্পদ রেখে গিয়েছিলেন। এছাড়া শতাধিক কোটি টাকার জমিজমাও খালেদার জন্য রেখে গিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান।

এরশাদের অধীনে নির্বাচন

১৯৮৬ সালে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয় বেগম খালেদা জিয়া এরশাদ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না। এটি ছিল পুরোই অসত্য। সেসময় ১৫ দলীয় জোটের সঙ্গে ৭ দলীয় জোটের বৈঠকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে এরশাদকে ক্ষমতায় রাখার জন্যই বেগম জিয়া নির্বাচন থেকে সরে দাড়িয়েছিলেন।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে নিয়ে বক্তব্য

১৯৯৪ সালে বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল যে তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে আজগুবি এবং অবাস্তব বলেছেন। পাগল এবং উন্মাদ ছাড়া কেউই নিরপেক্ষ নয় বলে বেগম জিয়া মন্তব্য করেন। পরবর্তীতে দেখা যায় যে এটা পুরোই মিথ্যে ছিল। বেগম খালেদা জিয়া পরে তত্ত্বাবধায়ক সংক্রান্ত সংবিধান সংশোধন করতে বাধ্য হন।

নির্বাচনে কারচুপি তত্ত্ব

১৯৯৬ এর নির্বাচনের পরপরই বেগম জিয়া সংবাদ সম্মেলন করে বলেন যে ওই নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা ছিল যে, ১৯৯৬ এর নির্বাচন ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন।

১৫ আগস্ট জন্মদিন

খালেদা জিয়ার পক্ষে বিএনপির আরেকটি বড় মিথ্যাচার ছিল ১৫ আগস্ট ভুয়া জন্মদিন পালন করা। যদিও কোনো কাগজপত্রে বেগম জিয়ার জন্মদিন ১৫ আগস্ট উল্লেখ ছিল না। শুধুমাত্র জাতির পিতার হত্যাকারীদেরকে সমর্থন করার জন্যই ১৫ আগস্ট ভুয়া জন্মদিন পালন করা হয়েছিল।

যুদ্ধাপরাধীদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা দেয়া

২০০১ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে বিএনপি সরকার দুই যুদ্ধাপরাধীকে জাতীর মন্ত্রীত্ব দেয় এবং তাদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়তে থাকে। এসময় সমালোচনার জবাবে বিএনপি জানায় যে, বিএনপি যুদ্ধাপরাধীদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা দেয়নি। এটা ছিল আরেকটি চরম মিথ্যাচার, আসলে বিএনপি ছিল স্বাধীনতাবিরোধীদের পৃষ্ঠপোষকতা দানকারী প্রথম রাজনৈতিক দল। জিয়াউর রহমানই গোলাম আজমকে দেশে এনেছিলেন এবং আইন করে যুদ্ধাপরাধীদের ছেড়ে দিয়েছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় বেগম খালেদা জিয়া যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রীত্ব দিয়েছিলেন।

২০০৮ সালে সৌদি আরবে যাওয়া নিয়ে

২০০৮ সালে বেগম খালেদা জিয়া ওয়ান ইলেভেন সরকারের সঙ্গে একটি আপোস সমাঝোতায় পৌঁছেছিলেন এবং এই কারনে বেগম খালেদা জিয়ার ৮৬টি স্যুটকেস বিমানবন্দরে পৌঁছান হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওয়ান ইলেভেন সরকার তারেকের মুক্তি দিতে অস্বীকৃতি জানালে বেগম খালেদা জিয়া একা সৌদি আরবে যেতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল। অথচ বিএনপি নেতৃবৃন্দরা বলে, বেগম খালেদা জিয়া দেশেই থাকতে চান, দেশেই রাজনীতি করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো, বেগম খালেদা জিয়া তাঁর পুত্রকে নিয়ে সৌদি আরব যেতে চেয়েছিলেন।

ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি নিয়ে মিথ্যাচার

বেগম খালেদা জিয়ার যখন ক্যান্টনমেন্টের বাড়িটি যে ১ টাকা মূল্যে লিজ দেয়া হয়েছিল, সেই লিজটি ছিল প্রতারণাপূর্ন এবং মিথ্যাচার। একইসঙ্গে তিনি গুলশানের একটি বাড়িও তাকে দেয়া হয়েছিল, অথচ সেই বাড়ির তথ্য গোপন করা হয়েছিল। এই নিয়ে যখন ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের পক্ষ থেকে আদালতে মামলা করা হয় তখন বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আবার মিথাচার আশ্রয় নিয়েছিলেন। 

প্রণব মূখার্জীর সঙ্গে সাক্ষাৎ না করা নিয়ে

প্রণব মুখার্জী যখন বাংলাদেশে এসেছিলেন তখন জামায়াতের হরতালের আজুহাতে বেগম খালেদা জিয়া তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি। পরবর্তীতে যখন এই নিয়ে কূটনৈতিক মহলে উত্তেজনা এবং কূটনৈতিক শিষ্টাচারবিরোধী তৎপরতা হিসেবে এটিকে চিহ্নিত করা হয়েছিল, তখন বিএনপি নেতৃবৃন্দ আবার মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়েছিল। তাঁরা বলেছিল যে, নিরাপত্তার কারণে বেগম খালেদা জিয়া প্রণব মুখার্জীর সঙ্গে দেখা করেননি।

২০১৪ সালে জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতি নিয়ে মিথ্যাচার

২০১৪ সালে নির্বাচন প্রতিরোধের জন্য বেগম খালেদা জিয়া জ্বালাও-পোড়াও, অগ্নিসংযোগের নির্দেশ দিয়েছিলেন এবং জনজীবনকে দুর্বিষহ করার জন্য যা যা করা দরকার তাই করা জন্য কর্মীদের বলেছিলেন, কিন্তু পরবর্তীতে বিএনপি এটা অস্বীকার করে এবং বলে যে, বেগম খালেদা জিয়া এমন নির্দেশনা দেননি। যদিও এই জ্বালাও-পোড়াও নিয়ে জনগণের মাঝে নেতিবাচক মনোভাব দেখা গেলে পরবর্তীতে তাদের জ্বালাও-পোড়াও কর্মসুচী প্রতাখ্যান করতে বাধ্য হয়।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

সাকিবের বিএনএমে যোগ দেওয়া প্রসঙ্গে যা বললেন কাদের

প্রকাশ: ১২:৫৮ পিএম, ১৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

সদ্যই রাজনীতিতে প্রবেশ করেছেন দেশসেরা অলরাউন্ডার, বাংলাদেশ ক্রিকেটের রত্ন সাকিব আল হাসান। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নমিনেশন নিয়ে হয়েছেন মাগুরা-১ আসনের এমপি। তবে এরই মাঝে ভিন্ন এক সমালোচনার জন্ম নিয়েছে সাকিব আল হাসানকে নিয়ে।

গুঞ্জন উঠেছে, দ্বাদশ নির্বাচনের পূর্বে ‘কিংস পার্টি’ খ্যাত বিএনএমে যোগ দিয়েছিলেন। সম্প্রতি গণমাধ্যমে এমন একটি ছবিও প্রকাশিত হয়েছে। সাবিকের এমন কাণ্ডে দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) রাজধানীর ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউর দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাকিব আওয়ামী লীগের টিকিটে মাগুরা থেকে নির্বাচন করে জয় লাভ করেছে। এর আগে সে কোনো দল করেছে কি না সেটা আওয়ামী লীগের কাছে বিবেচ্য নয়।

কাদের আরও বলেন, নমিনেশন চাওয়ার আগে সাকিব আমাদের পার্টির কেউ ছিল না। নমিনেশন যখন নেয় তাকে প্রাইমারি সদস্য পদ নিতে হয়। সে শর্ত পূরণ করা দরকার সেটা সে করেছে।

তিনি বলেন, সরকারি দল কিংস পার্টি করতে যাবে কেন? নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনীতিতে অনেক ফুল ফোটে। কোনটা কিংস পার্টি, কোনটা প্রজা পার্টি এটা সম্পর্কে আমার জানা নেই।

আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, আমাদের গণতন্ত্র ঠিক আছে। আমাদের নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচন ছাড়া সরকারে কেউ ক্ষমতা বসাতে পারবে না।

সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দপ্তর সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী, আনিসুল ইসলামসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।


সাকিব   ওবায়দুল কাদের   রাজনীতি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিদেশ যাওয়ার জন্য রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার মুচলেকা দেবেন বেগম জিয়া?

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ১৮ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার জন্য নতুন করে আবেদন করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তার ভাই শামীম ইস্কান্দারের করা এই আবেদন এখন আইন মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন যে, সচিব তাকে ফাইলটি পাঠিয়েছেন। এটি তিনি দেখছেন। আগামীকাল তিনি এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। আইনমন্ত্রী এও বলেছেন যে, এ ব্যাপারে পূর্বের সিদ্ধান্ত থেকে তিনি খুব একটা সরে আসবেন না। 

স্থায়ী স্থায়ী জামিন বলতে কি বোঝানো হয়েছে—এই প্রশ্ন করলে আইনমন্ত্রী বলেছেন যে, তার বিদেশ যাওয়ার ব্যাপারে আগের যে অবস্থান সেই অবস্থানের কোন পরিবর্তন হবে না। অর্থাৎ শামীম ইস্কান্দার যে আবেদন করেছেন, সেই আবেদনের মাধ্যমে বেগম জিয়ার বিদেশ যাওয়া সম্ভব নয়। এটা সুস্পষ্ট ভাবে বোঝা যাচ্ছে। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার ব্যাপারে এখন তার পরিবার অন্য কৌশল গ্রহণ করেছে। বেগম খালেদা জিয়া ভবিষ্যতে আর কখনও রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকবেন না, বিএনপির সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই—এরকম একটি পৃথক আবেদন দেওয়ার প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে। যদিও এ নিয়ে বিএনপি নেতাদের প্রবল বাধা রয়েছে। কিন্তু তার পরিবারের সদস্যরা মনে করছেন যে, বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে এটি একমাত্র উপায়। তিনি বিএনপির চেয়ারপার্সন এই কারণে সরকার তাকে বিদেশ যাওয়ার ব্যাপারে অনুমতি দিচ্ছে না। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, বেগম খালেদা জিয়া যেন বিদেশ যেতে পারেন এ জন্য আবার শামীম ইস্কান্দার এবং তার বোন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আগ্রহী। তবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এখন পর্যন্ত তিনি সাক্ষাতের সময় পাননি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদনের আগেই শামীম ইস্কান্দার বিএনপির সঙ্গে বেগম খালেদা জিয়ার সম্পর্কচ্ছেদের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিতে পারেন। এই ঘোষণার মাধ্যমে বেগম জিয়ার রাজনৈতিক অধ্যায়ের অবসান ঘটতে পারে। এ বিষয়টি নিয়ে শামীম ইস্কান্দার বিএনপির কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলেছেন। 

তবে বিএনপির সকল নেতাই এ ব্যাপারে ঘোর আপত্তি জানিয়েছেন। বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনকে এ ব্যাপারে একটি খসড়া তৈরি করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলেন শামীম ইস্কান্দার। এই তথ্যটি একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। কিন্তু মাহবুব উদ্দিন খোকন বেগম খালেদা জিয়ার এই ধরনের মুচলেকা দেওয়া বা দল থেকে পদত্যাগের ঘোর বিরোধিতা করেছেন। 

খোকন বলেছেন, এটি ফলে বেগম জিয়ার রাজনৈতিক অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটবে এবং সারা জীবনের অর্জন বিসর্জন হবে। কিন্তু তারপরও শামীম ইস্কান্দার এই বিষয়টি নিয়ে গোঁ ধরে আছেন। তিনি আরও কয়েকজন নেতার সঙ্গেও এ বিষয়ে পরামর্শ করছেন। 

বেগম জিয়ার পরিবারের সদস্যরা মনে করেন যে, বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে যেতে দেওয়া হচ্ছে না কারণ তিনি বিএনপির চেয়ারপার্সন। বিদেশে গেলে বিএনপি নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করবে। কিন্তু বাস্তবে বেগম খালেদা জিয়া এখন অসুস্থ এবং রাজনীতি, ক্ষমতা ইত্যাদি বিষয়ে তার মোটেও মনোযোগ নাই। এমনটি বলছেন তার ভাই শামীম ইস্কান্দার। তাছাড়া শামীম ইস্কান্দারের মতো বিদেশে যেতে না দেওয়ার পিছনে একটি যৌক্তিক কারণ ছিল। আর সেই কারণ হল তখন নির্বাচন ছিল। এখন সেরকম নির্বাচনের প্রসঙ্গ নেই। সরকার নতুন নির্বাচন করেছে এবং এই নির্বাচনের বিএনপিও কোন আন্দোলন সংগ্রাম করছে না। খালেদা জিয়া তার শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে ব্যস্ত। এ রকম সময়ে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ পাঠালে সরকারের ক্ষতি হবে না। আর এজন্যই তারা আরেকবার প্রধানমন্ত্রীর করুণা প্রার্থী। তারা গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতেরও চেষ্টা করছেন বলে একাধিক সূত্র নিম্চিত করেছে। তবে বেগম খালেদা জিয়ার রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা বিএনপিতে কি প্রতিক্রিয়া তৈরি করবে এবং বিএনপির কি পরিণতি বয়ে আনবে সেটি নিয়ে অনেকে চিহ্নিত।


খালেদা জিয়া   বিএনপি   আইনমন্ত্রী আনিসুল হক   শামীম ইস্কান্দার  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

যুক্তরাষ্ট্র কি বিএনপিকে ধোঁকা দিয়েছে?

প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ১৮ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপিকে কি ধোঁকা দিয়েছে—এরকম একটি প্রশ্ন এখন বিএনপির মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। বিএনপি নেতারা নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনায় এই প্রসঙ্গটি বারবার আনছেন। বিএনপির একাধিক নেতা মনে করে, বিএনপি যে আগ্রাসী অবস্থান গ্রহণ করেছিল, সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে বিএনপি কর্মীদের মধ্যে যে তেজি ভাব এসেছিল, তার প্রধান কারণ ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব এবং আগ্রহ। তাছাড়া বিভিন্ন সময় মার্কিন রাষ্ট্রদূত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা কূটনীতিকরা বিএনপি নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যে ভাষায় যে ভাবে কথা বলেছেন তাতে বিএনপির নেতাদের মধ্যে স্থির বিশ্বাস জন্মগ্রহণ করেছিল যে, তারা আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখতে চায় না। আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম এজেন্ডা। আর এ কারণেই বিএনপি নেতারা এই বক্তব্যটিকে তাদের কর্মীদের কাছে সঞ্চারিত করেছিল এবং কর্মীরা উৎসাহিত হয়েছিল। 

তাছাড়া প্রকাশ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বক্তব্য, বিবৃতি এবং অবস্থান বিএনপিকে আরও চাঙ্গা করা ছিল। কিন্তু এ সবই কি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আন্তরিক অবস্থান ছিল নাকি বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ভারতের পক্ষ হয়ে বিএনপিকে ধোঁকা দিয়েছিল এই প্রশ্নটি এখন প্রধান হয়ে উঠেছে। 

কোন কোন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মনে করেন যে, এবার নির্বাচনে যদি বিএনপি অংশগ্রহণ করত তাহলে এই নির্বাচনটি অন্যরকম নির্বাচন হত। প্রথমত, এ বারের নির্বাচনে কারচুপি, ভোট ডাকাতি বা অন্য কোন কিছু করার বিষয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির একটি কঠোর নেতিবাচক অবস্থান ছিল। তিনি সবাইকে বারবার একটি কথা স্পষ্ট ভাবে জানিয়েছিলেন যে, নির্বাচনে কোনরকম কারচুপি করা যাবে না। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন ছিল তার কমিটমেন্ট। এ কারণে এই নির্বাচনে যদি বিএনপি নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি পূরণ ছাড়াও অংশগ্রহণ করত তাহলে নির্বাচনে নাটকীয় ভালো ফলাফল করতো। সবচেয়ে খারাপ ফলাফল হলেও বিএনপি ৫০ থেকে ৭০টি আসন পেত। 

জাতীয় সংসদে যদি বিএনপির ৫০ থেকে ৭০টি আসন থাকে তাহলে বিএনপি একটি অত্যন্ত শক্তিশালী বিরোধী দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করত এবং সরকারকে চাপের ওপর রাখতে সক্ষম হত। এর ফলে আগামী পাঁচ বছরে আওয়ামী লীগ একটি শক্তিশালী বিরোধী দলকে মোকাবেলা করে কোণঠাসা অবস্থায় দেশ পরিচালনা করত এবং বিএনপি সারাদেশে তার সংগঠন গুছিয়ে আরও চাঙ্গা হতে পারত। কিন্তু বিএনপি সেটি করেনি। বিএনপিকে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মুলা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল এবং মুলা দেখে বিএনপি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে যায়নি। 

বিএনপি নির্বাচনে না যাওয়াটা কি রাজনৈতিক আন্দোলন না ধোঁকা—এই প্রশ্নই এখন বড় হয়ে এসেছে। অনেকেই মনে করছেন যে, যারা আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখতে চায় এবং আগামী পাঁচ বছর নিরবচ্ছিন্নভাবে আওয়ামী লীগ চাপহীনভাবে দেশ পরিচালনা করুক এটা চায়। তারা চাইনি বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। সেই মাস্টার প্ল্যানের অংশ হিসেবেই বিএনপিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির পক্ষে তাতিয়ে তোলা হয়েছে। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন দু বছর আগে থেকে বাংলাদেশে নির্বাচন অর্থবহ অংশগ্রহণমূলক হতে হবে ইত্যাদি বক্তব্যগুলো দিয়েছে তখন বিএনপির কাছে এরকম বার্তা গেছে যে, বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে তাহলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেই নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্যতা দিবেনা, স্বীকৃতি দেবে না। ফলে সরকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আসবে। ভিসা নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণার পর এটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কোন অবস্থাতেই বিএনপি ছাড়া নির্বাচন মেনে নেবে না। এতে আত্মহারা হয়ে বিএনপি নির্বাচনের পরিকল্পনা থেকে নিজেদেরকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছিল। 

তারা মনে করেছিল যে, সরকারের পতন হবেই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অতিমাত্রা নির্ভরশীল হয়ে তারা সরকার পতনের খোয়াব দেখেছিল। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই কৌশলটা কি ছিল বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখা কৌশল? বিএনপিকে ধোঁকা দেওয়ার কৌশল? সেটি এখন বিভিন্ন মহলে চর্চা হচ্ছে। এই ধোঁকা যদি সত্যি হয় তাহলে বিএনপির নির্বাচন বর্জন এবং নির্বাচন করার ধোঁকার হ্যাটট্রিক পূর্ণ হল। ২০১৪ সালে বিএনপিকে বলা হয়েছিল যে, তোমরা নির্বাচনে যেও না, তাহলে পরে সরকারের পতন ঘটবে। বিএনপি সে আশায় নির্বাচন বর্জন করেছিল। ওই নির্বাচনে যদি বিএনপি অংশগ্রহণ করতো তাহলেও বিএনপির পরিণতি আজকের মতো হত না। কিন্তু সে সময় বিএনপি পাঁচটি সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরও ওই নির্বাচন বর্জন করে। ২০১৮ সালে বিএনপি কোন দাবি দাওয়া ছাড়াই ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে গিয়ে নির্বাচন করে দ্বিতীয় ধোঁকা খায়। আর এবার আমেরিকা সরকারকে ক্ষমতা থেকে হটিয়ে দেবে—এমন একটি সাজানো ফাঁদে পা দিয়ে বিএনপি ধোঁকার হ্যাটট্রিক পূর্ণ করল। এখন প্রশ্ন হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কেন বিএনপিকে ধোঁকা দিল?


মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র   বিএনপি   বাংলাদেশের নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

‘মেজর হাফিজ-সাকিবের কিংস পার্টিতে যোগ’ প্রসঙ্গে যা বললেন মঈন খান

প্রকাশ: ০৭:২০ পিএম, ১৮ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদের বাসায় গিয়ে কিংস পার্টিতে যোগ দেওয়ার ফরম পূরণ করেছিলেন ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান-এমন একটি সংবাদ ও ছবি তোলপাড় সৃষ্টি করেছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। এ নিয়ে এবার মুখ খুলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান।

তিনি বলেন, সরকার এই নির্বাচনের আগে একটি প্রকল্প নিয়েছিল, তারপর সে প্রকল্পে ব্যর্থ হয়ে আরও প্রকল্প নিয়েছিল। হাফিজ সাহেবকে (মেজর অবসরপ্রাপ্ত হাফিজ উদ্দিন আহমেদ) নিয়ে গণমাধ্যমে যেটি এসেছে সেটি সরকারে ব্যর্থ প্রকল্পের বহিঃপ্রকাশ।

সোমবার (১৮ মার্চ) সদ্য কারামুক্ত বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ রবিউল আলম রবির বাসায় গিয়ে খোঁজখবর নিয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে তিনি এসব কথা বলেন।

এর আগে তিনি সদ্য কারামুক্ত ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ারের বাসায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের শুভেচ্ছা পৌঁছে দেন। সেই সাথে তার পরিবারের খোঁজখবর নেন।

মঈন খান বলেন, সরকার একটা প্রহসনের করে, একটা নির্বাচনের নাটক মঞ্চায়িত করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে আত্মস্বীকৃত নির্বাচন বলে প্রমাণ হয়ে গেলো।

আমাদের বন্ধু রাষ্ট্রের সহায়তা তো আমরাও চাই- এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যদি আমাদের বন্ধু রাষ্ট্রের সহায়তা চায় একটি এক দলীয় শাসনের জন্য, আমরা কিন্তু বন্ধু রাষ্ট্রের সহায়তা চাই একটি ভিন্ন কারণে, সেটি হলো বাংলাদেশে একটি গণতান্ত্রিক সরকার গঠনের জন্য। আমরা তো কারো সাথে কোনো শত্রুতা চাই না।

বাংলাদেশের মানুষের একটি আকাঙ্ক্ষা হলো গণতন্ত্র, এছাড়া দ্বিতীয় কোনো আকাঙ্ক্ষা নেই জানিয়ে তিনি বলেন, সে কথা সরকার স্বীকার করুক আর নাই করুক।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর অব: হাফিজ উদ্দিন আহমেদ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকার যে অপচেষ্টা করেছিল সেটি সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। সেটি প্রমাণিত হয়েছে। সরকার এই নির্বাচনের আগে একটি প্রকল্প নিয়েছিল, তারপর সে প্রকল্পে ফেল করলে আরো একটি প্রকল্প নিয়েছিল। হাফিজ সাহেবকে নিয়ে গণমাধ্যমে যেটি এসেছে সেটি সরকারের ব্যর্থ প্রকল্পের বহিঃপ্রকাশ।

সদ্য কারামুক্ত ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ারের বাসায় মঈন খান বলেন, সরকার যদি মনে করে থাকে এভাবে চিরদিন বন্দুক, টিয়ারগ্যাস, গ্রেনেড দিয়ে ক্ষমতায় থাকবে। এটা একটা দুরাশা মাত্র। মরীচিকার স্বপ্ন নিয়ে সরকার বাংলাদেশে টিকে থাকতে পারবে না। এ দেশের গণতন্ত্রকামি মানুষ গণতন্ত্র ফিরে আনবে, ইনশা আল্লাহ।

কারাগারে চিত্র তুলে ধরে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য রবিউল ইসলাম রবি বলেন, আমি এই সরকারের আমলে নয়বার কারাগারে গিয়েছি। তবে এবারের বিষয়টা ব্যতিক্রম। কারাগারে আইসলোশন ছিল ২৪ ঘণ্টা। লকাপে রাখা হয়েছে, সেলের বাহিরে কাউকে যেতে দেয়া হয়নি। এবারের মতো কারাবাস আমি কখনো করিনি আর পৃথিবীর এমন কোথাও আছে কি না, আমার জানা নেই।

মেজর হাফিজ   সাকিব আল হাসান   কিংস পার্টি   ড. মঈন খান   বিএনপি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

মন্ত্রী নন-এমপি নন, তবু তারা ক্ষমতাবান

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ১৮ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

টানা ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় রয়েছে। ১৬ বছরে পা দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করা আওয়ামী লীগ। টানা ক্ষমতায় থাকলেও আওয়ামী লীগের মধ্যে ক্ষমতার কেন্দ্রে একটা ভারসাম্য লক্ষ্য করা যায়। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রীদেরকে বিভিন্ন সময় পরিবর্তন করে একেক মেয়াদে একেক জনকে মন্ত্রী করেন এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে পরিবর্তন করে নেতাদের যেমন যোগ্যতা পরিমাপ করেন, ঠিক তেমনি তাদেরকে ক্ষমতাবান করেন। 

তবে টানা ক্ষমতায় থাকার কারণে এখন দলের নেতা হওয়ার চেয়ে মন্ত্রী হওয়া অনেক লাভজনক বলেই মনে করেন নেতাকর্মীরা। দলের নেতা হয়ে তেমন লাভ নেই। ক্ষমতা হল শুধুমাত্র মন্ত্রী-এমপি হলেই। এই জন্য মন্ত্রী-এমপি হওয়ার ক্ষেত্রে একধরনের হিড়িক পড়ে যায়। কেন্দ্রীয় কমিটির অধিকাংশ নেতাই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন লাভের জন্য দৌড়ঝাঁপ করেন। কয়েকজন মনোনয়ন পান, কয়েকজন পান না। আর মনোনয়ন না পেলে তারা আওয়ামী লীগের যত বড় নেতাই হোন না কেন ক্ষমতা থেকে অনেকটা দূরে বলে নিজেরাই হতাশা প্রকাশ করেন। কিন্তু এর মধ্যে ব্যতিক্রম আছেন কয়েকজন, যারা মন্ত্রী নন, এমপি নন, দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা এবং নিজ যোগ্যতায় তারা ক্ষমতাবানও।

আওয়ামী লীগের যারা এই ধরনের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ রয়েছেন তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন;

সুজিত রায় নন্দী: সুজিত রায় নন্দী আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। আওয়ামী লীগের গত কাউন্সিলের যে মুষ্টি হাতে গোনা  দু একজনের পদোন্নতি হয়েছিল তার মধ্যে সুজিত নন্দী অন্যতম। পদোন্নতি পেয়ে তিনি সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি তার নির্বাচনী এলাকা চাঁদপুরে ব্যাপক জনপ্রিয় হওয়ার পরও গত নির্বাচনে মনোনয়ন পাননি। আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশনা তিনি মেনে নিয়েছেন। স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি। কিন্তু এখন আওয়ামী লীগের অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং ক্ষমতাবান সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে তিনি আবির্ভূত হয়েছেন। আওয়ামী লীগে যারা সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে নির্বাচন করে বিজয়ী হয়েছেন, তারা কেউ মন্ত্রী হতে পারেনি। তাদের মধ্যে এক ধরনের হতাশা। অন্যদিকে সুজিত নন্দী যেহেতু নির্বাচন করেননি, সার্বক্ষণিকভাবে দলের দলের জন্য এবং সংগঠনের জন্য সময় দিয়েছেন, তার মধ্যে সেই হতাশা নেই। ফলে তিনি এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি সক্রিয় এবং ক্ষমতাবান। 

মো. সিদ্দিকুর রহমান: মো. সিদ্দিকুর রহমান আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক। বিজিএমইএ অন্যতম নেতা। তিনি প্রধানমন্ত্রীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। মন্ত্রী বা এমপি না হয়েও তিনি সরকারের অন্যতম নীতিনির্ধারক। বিশেষ করে বিজিএমইএ এর নির্বাচন, বাংলাদেশের শ্রম আইন এবং শ্রমিক বিষয়ক বিভিন্ন ইস্যুগুলোকে দেখভাল করার ক্ষেত্রে মো. সিদ্দিকুর রহমান প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত।

বিপ্লব বড়ুয়া: বিপ্লব বড়ুয়া দপ্তর সম্পাদক হলেও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী হিসেবে অধিক পরিচিত। মিষ্টভাষী এবং বিনয় এই তরুণ আওয়ামী লীগ মহলেও জনপ্রিয়। বিপ্লব বড়ুয়া প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী এবং দপ্তর সম্পাদক হওয়ার কারণে অত্যন্ত ক্ষমতাবান। বিপ্লব বড়ুয়াও আওয়ামী লীগের সেই সমস্ত নেতৃবৃন্দের একজন যারা নির্বাচন করেননি এবং নির্বাচনের জন্য মনোনয়নও চাননি। নির্বাচন না করার কারণে দলে তার অবস্থান আরও শক্ত হয়েছে। বিশেষ করে সাংগঠনিক বিষয়ে তার ওপর নির্ভরতা বেড়েছে দলের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের। এ কারণে তিনি দলে একজন বিশ্বস্ত দপ্তর সম্পাদক হিসেবে ক্রমশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন।

আমিনুল ইসলাম: আমিনুল ইসলাম আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক। তিনি গত কাউন্সিলে পদোন্নতি পেয়ে পূর্ণ সম্পাদক হয়েছেন। তবে বিভিন্ন টকশো-তে অংশগ্রহণ করার কারণে তিনি জনপ্রিয় এবং আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক মহলের আস্থাভাজন হয়েছেন। কাজেই আওয়ামী লীগে ক্ষমতাবান হতে গেলে শুধু মন্ত্রী বা এমপি হতে হয় এমন ধারণা ভুল প্রমাণ করে এরকম আরও কিছু নেতা এগিয়ে আসছেন সামনের সারিতে।

মো. সিদ্দিকুর রহমান   আওয়ামী লীগ   বিপ্লব বড়ুয়া   সুজিত রায় নন্দী  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন