নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০৬ পিএম, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটসহ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার ক্যাসিনোকাণ্ডের রেশ কাটতে না কাটতেই দলটির স্থানীয় পর্যায়ের নেতবৃন্দর নতুন কেলেঙ্কারি জনসম্মুখে এসেছে। বাংলাদেশ মহিলা যুবলীগের এক স্থানীয় পর্যায়ের নেত্রীর অপকর্মের খবর আজ সারাদেশে তোলপাড় ফেলেছে। র্যাব তাকে গতকাল আটক করেছে। গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দলের ভিতর শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছে। এই সময় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা মতিঝিল ক্লাব পাড়ায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ক্যাসিনো সামগ্রী উদ্ধার করেছে। এর পরপরই যুবলীগ নেতা খালেদ হোসেন ভুইয়া, ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটসহ বেশ কয়েকজন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল যুবলীগের চেয়ারম্যান, স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ বেশ কিচু গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে। আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে শুদ্ধি অভিযানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিল। যারা দলের বিতর্কিত, দলের পরিচয় ব্যবহার করে নানা রকম অপকর্ম করছে তাদেরকে দলে স্থান না দেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতি কঠোর বার্তা দিয়েছিলেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময় শামীমা নূর পাপিয়া ওরফে পিউর ঘটনায় আবার দেখা গেছে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার ফলে আওয়ামী লীগের মধ্যে যে বিভিন্ন অপকর্মকারী- অপরাধীরা ঘাপটি মেরে আছে তারা দলটিকে কতটা কলংকিত করতে তা বের হয়ে আসছে। আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে তারা। পাপিয়ার এই ঘটনা নিয়ে এখন আওয়ামী লীগের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা চলছে। আওয়ামী লীগের অনেক নেতা বলছেন, যে শুদ্ধি অভিযান শুরু হয়েছে সেই শুদ্ধি অভিযান বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর এখন আবার দুর্বিত্তরা দলটিকে অভয়ারন্যে পরিণত করছে। সরকার দলীয় দলটির পরিচয় ব্যবহার করে সমাজের বিভিন্ন অনিয়ম স্বেচ্চাচারিতা করছে। এগুলো যদি বন্ধ না করা হয় তাহলে আওয়ামী লীগের জন্য আদর্শিক মান ধরে রাখা কঠিন হয়ে যাবে।
আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন, দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার ফলে বিভিন্ন স্তরের অনুপ্রবেশকারীরা ঢুকে গেছে এবং এরা দলীয় পরিচয় ব্যবহার করে নানারকম অপপ্রচার করছে। আওয়ামী লীগের আদর্শিক মান নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত দলের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে। আর একারণে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখা হাসিনা বারবার নির্দেশনা দেবার পরেও নির্দেশনা প্রতিফলিত হচ্ছেনা কেন সে ব্যাপারে আওয়ামী লীগের মধ্যে প্রশ্ন উঠছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, পাপিয়ার ঘটনার পর আওয়ামী লীগে নতুন করে শুদ্ধি অভিযানের দাবি উঠেছে। বিশেষ করে যারা আওয়ামী লীগের প্রতি নিবেদিত প্রাণ, দুঃসময়ের নেতাকর্মী তাঁরা মনে করছে, জাতির পিতার আদর্শে গড়া যে সংগঠনটি, সেই সংগঠনটি কিছু মানুষের কারণে বদনামের ভাগিদার হতে পারেনা।
বিশেষ করে, আওয়ামী লীগ যখন মুজিববর্ষ উদযাপন করছে, তাঁর প্রাক্বালে কিছু নেতাকর্মীর এধরণের ন্যাক্কারজনক ঘটনা দেশের সাধারণ মানুষের কাছে আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। আর এখানেই আওয়ামী লীগকে এখনই ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিৎ। আওয়ামী লীগের নেতারা প্রশ্ন তুলেছে যে, কেন আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা গ্রেপ্তারের পর বা ধরা পড়ার পর এইসমস্ত দুর্বিত্ত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে? আগে কেন দলের শীর্ষ নেতারা যারা দল পরিচালনা করেন তাঁরা কেন জানছেন না? নিশ্চয়ই দলের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের মাঝে বড় একটা ফাক রয়েছে, যেই ফাকগোলে এরা থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে এবং খুব শীঘ্রই আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা এই ব্যাপারটা নিয়ে বসবেন বলেও জানা গেছে এবং এইরকম যারা দলের পরিচয় ব্যবহার করে অপকর্ম করছে তাদেরকে আইনপ্রয়োকারী সংস্থা ব্যবস্থা গ্রহণের আগেই কিভাবে দলের ভেতর থেকে ব্যবস্থা নেয়া যায় এই চিন্তা আওয়ামী লীগের ভেতরে বড় হয়ে উঠেছে।
আওয়ামী লীগের নেতারা বলছে যে, এখনই যদি এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া না হয়, তাহলে আওয়ামী লীগের ভাল মানুষের জন্য জায়গা ক্রমশ সংকুচিত হয়ে যাবে এবং এই দলটি একটি দুর্বিত্তদের দলে পরিণত হবে। সেখান থেকে পরিত্রানের জন্য এখনই পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিৎ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টরা।
মন্তব্য করুন
সদ্যই রাজনীতিতে প্রবেশ করেছেন দেশসেরা অলরাউন্ডার, বাংলাদেশ ক্রিকেটের রত্ন সাকিব আল হাসান। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নমিনেশন নিয়ে হয়েছেন মাগুরা-১ আসনের এমপি। তবে এরই মাঝে ভিন্ন এক সমালোচনার জন্ম নিয়েছে সাকিব আল হাসানকে নিয়ে।
গুঞ্জন উঠেছে, দ্বাদশ নির্বাচনের পূর্বে ‘কিংস পার্টি’ খ্যাত বিএনএমে যোগ দিয়েছিলেন। সম্প্রতি গণমাধ্যমে এমন একটি ছবিও প্রকাশিত হয়েছে। সাবিকের এমন কাণ্ডে দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) রাজধানীর ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউর দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাকিব আওয়ামী লীগের টিকিটে মাগুরা থেকে নির্বাচন করে জয় লাভ করেছে। এর আগে সে কোনো দল করেছে কি না সেটা আওয়ামী লীগের কাছে বিবেচ্য নয়।
কাদের আরও বলেন, নমিনেশন চাওয়ার আগে সাকিব আমাদের পার্টির কেউ ছিল না। নমিনেশন যখন নেয় তাকে প্রাইমারি সদস্য পদ নিতে হয়। সে শর্ত পূরণ করা দরকার সেটা সে করেছে।
তিনি বলেন, সরকারি দল কিংস পার্টি করতে যাবে কেন? নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনীতিতে অনেক ফুল ফোটে। কোনটা কিংস পার্টি, কোনটা প্রজা পার্টি এটা সম্পর্কে আমার জানা নেই।
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, আমাদের গণতন্ত্র ঠিক আছে। আমাদের নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচন ছাড়া সরকারে কেউ ক্ষমতা বসাতে পারবে না।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দপ্তর সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী, আনিসুল ইসলামসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া বিএনপি আইনমন্ত্রী আনিসুল হক শামীম ইস্কান্দার
মন্তব্য করুন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি বাংলাদেশের নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মেজর হাফিজ সাকিব আল হাসান কিংস পার্টি ড. মঈন খান বিএনপি
মন্তব্য করুন
মো. সিদ্দিকুর রহমান আওয়ামী লীগ বিপ্লব বড়ুয়া সুজিত রায় নন্দী
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার জন্য নতুন করে আবেদন করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তার ভাই শামীম ইস্কান্দারের করা এই আবেদন এখন আইন মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন যে, সচিব তাকে ফাইলটি পাঠিয়েছেন। এটি তিনি দেখছেন। আগামীকাল তিনি এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। আইনমন্ত্রী এও বলেছেন যে, এ ব্যাপারে পূর্বের সিদ্ধান্ত থেকে তিনি খুব একটা সরে আসবেন না।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপিকে কি ধোঁকা দিয়েছে—এরকম একটি প্রশ্ন এখন বিএনপির মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। বিএনপি নেতারা নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনায় এই প্রসঙ্গটি বারবার আনছেন। বিএনপির একাধিক নেতা মনে করে, বিএনপি যে আগ্রাসী অবস্থান গ্রহণ করেছিল, সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে বিএনপি কর্মীদের মধ্যে যে তেজি ভাব এসেছিল, তার প্রধান কারণ ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব এবং আগ্রহ। তাছাড়া বিভিন্ন সময় মার্কিন রাষ্ট্রদূত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা কূটনীতিকরা বিএনপি নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যে ভাষায় যে ভাবে কথা বলেছেন তাতে বিএনপির নেতাদের মধ্যে স্থির বিশ্বাস জন্মগ্রহণ করেছিল যে, তারা আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখতে চায় না। আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম এজেন্ডা। আর এ কারণেই বিএনপি নেতারা এই বক্তব্যটিকে তাদের কর্মীদের কাছে সঞ্চারিত করেছিল এবং কর্মীরা উৎসাহিত হয়েছিল।
টানা ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় রয়েছে। ১৬ বছরে পা দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করা আওয়ামী লীগ। টানা ক্ষমতায় থাকলেও আওয়ামী লীগের মধ্যে ক্ষমতার কেন্দ্রে একটা ভারসাম্য লক্ষ্য করা যায়। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রীদেরকে বিভিন্ন সময় পরিবর্তন করে একেক মেয়াদে একেক জনকে মন্ত্রী করেন এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে পরিবর্তন করে নেতাদের যেমন যোগ্যতা পরিমাপ করেন, ঠিক তেমনি তাদেরকে ক্ষমতাবান করেন।