নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:৫৯ পিএম, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
গতকাল বৃহস্পতিবার বেগম খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ নাকচ করে দিয়েছেন। বিএনপির পক্ষ থেকে বিএনপির আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেছিলেন, বেগম জিয়াকে যদি জামিন না দেওয়া হয়, এবং তার যদি উন্নততর চিকিৎসা না হয় তাকে বাঁচিয়ে রাখাই মুশকিল হয়ে যাবে। তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়বেন। প্রশ্ন উঠেছে যে। বেগপম খালেদা জিয়া যদি এতই অসুস্থ হন, তিনি যদি জীবন-মৃত্যুর সন্দিক্ষণেই থাকেন তাহলে তাঁর প্যারোল কিংবা রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করতে অসুবিধা কোথায়।
বিশ্বে রাজনীতির ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, অনেক দুর্নীতিবাজ, স্বৈরশাসক, অপশাসক এভাবে গ্রেপ্তার হয়েছেন। শেষ পর্যন্ত বাঁচার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন, মার্জনা পেয়েছেন। বলা হচ্ছে যে, মানবিক কারণে খালেদার মুক্তি চাওয়া হচ্ছে। কিন্তু মানবিক কারণেই যদি বেগম জিয়ার মুক্তির প্রসঙ্গটি আসে, তাহলে কেন তার জন্য প্যারোল আবেদন করা হচ্ছে না? কেন বিশেষ বিবেচনায় রাষ্ট্রপতির কাছে তিনি দণ্ড মওকুফের জন্য আবেদন করছেন না? বিএনপি নেতাদের ভাষ্য অনুযায়ী খালেদাকে বাঁচিয়ে রাখাই যদি মুখ্য হয়, তাহলে তো যেকোনো মূল্যেই তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করা উচিৎ। কারণ খালেদা জিয়ার প্যারোল কিংবা রাষ্ট্রপতির কাছে দণ্ড মওকুফের আবেদন করা ছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে সরকারের করণীয় তেমন কিছুই নেই। কারণ এটি এমন একটি মামলা যেটি দায়ের করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন। একটি মামলায় নিম্ন আদালতে দণ্ড হয়েছে এবং উচ্চ আদালত সেই দণ্ড বাড়িয়ে দিয়েছে। দ্বিতীয় মামলায় নিম্ন আদালতে খালেদা জিয়ার দণ্ড হয়েছে।
১৭ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত একজন মানুষ কেমন করে জামিনের আবেদন করেন? তাও আবার জামিন নিয়ে বিদেশে যাওয়ার কথা বলেন, এটা নিয়ে বিএনপির অনেক আইনজীবীরাই নীরবে মুখ টিপে হাসেন। কাজেই বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা এবং তিনি যে রোগে-শোকে মৃত্যু পথযাত্রী এই বক্তব্যের পেছনে বস্তুনিষ্ঠ এবং যুক্তিনিষ্ঠ তথ্য প্রমাণ হাজির করতে পারেননি বিএনপির আইনজীবীরা। প্রশ্ন উঠেছে যে, বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে মারা যান, (সব মানুষকেই একসময় মারা যেতে হবে) তাহলে কার কী লাভ হবে?
বেগম খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে বা জেলে অন্তরীণ থাকা অবস্থায় যদি মারা যান তবে সরকারের কোনো লাভ হবে না। বরং সাধারণ মানুষ, যারা একটু আবেগি, তারা মনে করবে যে, সরকার চাইলেই একটু অনুকম্পা দেখাতে পারতো বা সরকার খালেদা জিয়ার প্রতি অমাণবিক আচরণ করেছে ইত্যাদি। ফলে বেগম জিয়া যদি কারান্তরীণ অবস্থায় বা দণ্ডিত থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন সরকারের কোনো লাভ নেই। এরকম পরিস্থিতিতে খালেদা জিয়ার মৃত্যু হলে আওয়ামী লীগেরও কোনো লাভ নেই। কারণ আওয়ামী লীগ কখনই প্রতিহিংসার রাজনীতি করে না। একজন রাজনীতিবিদকে আওয়ামী লীগের কারণে যদি জেলে থেকে মরতে হয়, সেটা আওয়ামী লীগের জন্য কোনো ইতিবচক ফলাফল বয়ে আনবে না। আওয়ামী লীগের নেতারাও এটা সম্পর্কে ভালো জানেন। তাহলে কারাগারে খালেদার মৃত্যু হলে কার লাভ হবে?
দেখা যায় যে, বেগম জিয়ার কারাগারে মৃত্যু হলে সবচেয়ে লাভবান হবেন যে ব্যক্তিটি তিনি হলেন তারেক জিয়া। কারণ তারেক জিয়া এর ফলে সারা জীবনের জন্য একটা এফডিআর পাবেন। সারা জীবণের জন্য তিনি একটি অস্ত্র পাবেন, যেটি তিনি তার রাজনীতিতে ব্যবহার করতে পারবেন। তিনি আবেগী এই জাতিকে সবসময় বলতে পারবেন যে, তার মা খালেদা জিয়া কারান্তরীণ অবস্থায় মারা গেছেন। এটা তার কালীমালিপ্ত, কলংকিত রাজনৈতিক জীবনে একটু হলেও হিমেল বাতাস বইয়ে দেবে,
যদি কারাগারে খালেদা জিয়ার মৃত্যু হয়, তাহলে বিএনপিরও কিছুটা লাভ হবে। কারণ, এই মৃত্যুকে ইস্যু করে বিধ্বস্ত, বিপর্যস্ত বিএনপি কিছুটা সংগঠিত হওয়ার সুযোগ পাবে। তবে বেগম জিয়ার যদি কারাগারেই মুক্তি হয়, তাহলে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে অবশ্যই তারেক জিয়া। কারণ প্রথমত, মায়ের মৃত্যুতে তারেক জিয়া দলের একচ্ছত্র নেতৃত্ব পাবে।
দ্বিতীয়ত, তারেক রাজনীতি করার একটি বিষয়বস্তু পাবে।
তৃতীয়ত, তারেকের প্রতি অনেকের একটি সহানুভূতি তৈরি হবে।
এসব কারণেই কি বেগম জিয়া যেন কারাগার থেকে বের হতে না পারেন, তিনি যেন প্যারোল বা বিশেষ বিবেচনায় মুক্তি না নেন সেজন্য তারেক জিয়া লন্ডন থেকে কলকাঠি নাড়াচ্ছে? কারণ শেষ পর্যন্ত সবাি নিজের লাভটাই ভালো বোঝে।
বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।
উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।