নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
টানা ১১ বছরের বেশি সময় ক্ষমতায় থাকার ফলে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই ফুলেফেঁপে উঠেছেন, বিত্তশালী হয়েছেন, হয়েছেন অঢেল সম্পত্তির মালিক। অথচ তাঁদের বৈধ আয়ের উৎস বলতে তেমন কিছু নেই। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন প্রভাবশালী নেতাদের অর্থবিত্তের বৈভবের বিবরণ সম্বলিত একটা গোপন প্রতিবেদন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দেয়া হয়েছে। এই প্রতিবেদন দেখে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই বিস্মিত। বিস্ময়ে প্রশ্ন করেছেন, ‘একটা মানুষের বেঁচে থাকতে কত টাকা লাগে? এরা কি টাকা কবরে নিয়ে যাবে? কেন তাঁরা এসব করে?’
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, প্রধানমন্ত্রী এই সমস্ত অবৈধ অর্থবিত্তশালীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন এবং এদের ব্যাপারে কোন প্রকার করুণা বা মার্জনা না দেখানোর নির্দেশনা দিয়েছেন। জানা গেছে, শুধুমাত্র তৃণমূল কিংবা অঙ্গসহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরাই নয়, অনেক বড় বড় কেন্দ্রীয় নেতার বিরুদ্ধেও বিপুল সম্পদ এবং অর্থবিত্তের মালিক হওয়ার তথ্য এখন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে।
আওয়ামী লীগের এবারের কাউন্সিলের মাধ্যমে প্রেসিডিয়াম সদস্য হওয়া একজন নেতা, যিনি ঋণখেলাপিও বটে। তাঁর বিপুল পরিমাণ বিত্তসম্পদের খবর পাওয়া গেছে। অথচ তিনি রাজনীতি ছাড়া অন্য কিছু করেন না। তাঁর স্ত্রী সম্প্রতি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেছেন। অথচ তিনি রাজকীয় জীবনযাপন করেন, কিভাবে? এই প্রশ্ন উঠেছে।
আওয়ামী লীগের আরেক কেন্দ্রীয় নেতা। তাঁরও কোন বৈধ আয় নেই। কিন্তু তিনি বিলাসবহুল অফিস পরিচালনা করেন। তাঁর বিত্তসম্পদ প্রতিদিন জ্যামিতিক হারে বাড়ে। কিন্তু ২০০৮-এ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে ঐ নেতা যেমন আলোচিত ছিলেন না, তেমনি তাঁর অর্থবিত্তও তেমন কিছু ছিলনা। এখন তাঁর অফিস কক্ষে গেলেই মানুষের পিলে চমকে ওঠার অবস্থা হয়।
আওয়ামী লীগের আরেকজন কেন্দ্রীয় নেতা। যিনি তেমন কিছুই করেন না। তবে অনুসন্ধানে বাংলাদেশের বাইরে অন্তত তিনটি দেশে তাঁর বাড়ির খবর পাওয়া গেছে। শুধুমাত্র রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করেই ইয়িনি ধনাঢ্য হয়েছেন এবং এসব বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে জানা গেছে।
প্রধানমন্ত্রীর কাছে দেয়া প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে যে, মন্ত্রিসভার অনেক সদস্যই মন্ত্রী হওয়ার পরে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। মন্ত্রিসভার একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্যের পুত্রের বিরুদ্ধে দূর্নীতি দমন কমিশন অনুসন্ধান চালাচ্ছে এবং তিনি সিঙ্গাপুরে একটি কোম্পানি করেছেন, মন্ত্রনালয়ে তিনি প্রভাব বিস্তার করে বিভিন্ন কাজ পাইয়ে দেয়ার বিনিময়ে বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়েছেন।
এরকম একটি ঘটনা নয়, বহু ঘটনাই রয়েছে। তবে আশার কথা এই যে, যারা দুর্বত্তায়ন করছেন, যারা হঠাত করে ফুলেফেঁপে উঠেছেন, যারা আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন- তাঁদের সংখ্যা খুবই কম। আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতা এখনও রাজনীতিকে ধ্যান-জ্ঞান মনে করেন, আদর্শের চর্চা করেন এবং রাজনীতিকে মানুষের সেবা করার মাধ্যম হিসেবে মনে করেন। এধরনের আওয়ামী লীগের সংখ্যাই বেশি। একারণেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারো কঠোর অবস্থানে চলে যাচ্ছেন। যেসমস্ত প্রভাবশালী নেতাদের বিরুদ্ধে অনৈতিকভাবে বিত্তশালী হবার তথ্য-প্রমাণ রয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত করা এবং তদন্তে যদি প্রমাণিত হয় যে তাঁদের সম্পত্তি বৈধ নয়, বরং তাঁরা রাজনীতিকে হাতিয়ার বানিয়ে এসমস্ত সম্পদের মালিক হয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে যেন ব্যবস্থা গ্রহণে যেন কোন কার্পণ্য না করা হয় সে ব্যাপারে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, আওয়ামী লীগ সভাপতি বারবার করে বলছেন যে, রাজনীতি একটি পবিত্র জিনিস, রাজনীতি মানুষের সেবা করার বিষয়। রাজনীতিকে কেউ যদি বিত্তশালী হবার সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করে তবে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেই হবে। কারণ রাজনীতি কলুষিত হলে, সবথেকে বেশি কলুষিত হবে আওয়ামী লীগ।
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।