নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০০ পিএম, ৩১ মার্চ, ২০২০
করোনাভাইরাসের কারণে দেশে সাধারণ ছুটি চলছে। মন্ত্রীদেরও কাজকর্ম এখন সীমিত। তবে এই সীমিত কাজকর্মের মাঝে মন্ত্রীরা ঘরে বসে নানারকম দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন, জনগণকে অভয় বানী এবং আশ্বাস বানী শোনাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আজ প্রধানমন্ত্রী একযোগে ৬৪ টি জেলার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। বিভিন্ন মন্ত্রীরা যেমন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সেতু মন্ত্রী প্রতিদিনই কিছু কিছু উপদেশ এবং পরামর্শ দিচ্ছেন। অন্যান্য মন্ত্রীরাও তাঁদের নিজ নিজ বিষয়ে কথা বলছেন। তবে এই সময়ে কয়েকজন মন্ত্রী বেখবর। তাঁদের কথাবার্তা জাতি শুনছে না। অথচ বিভিন্ন কারণে তাঁদের বক্তব্য এবং অবস্থান জনগণের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং কিছু কিছু সিদ্ধান্তের জন্য জনগণ তাঁদের দিকে তাকিয়ে আছে। অথচ গুরুত্বপূর্ণ এই সময়ে তাঁরা বেখবর। এদের মধ্যে রয়েছেন-
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল
প্রথমেই যে নামটি আসে তিনি হচ্ছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। যখন বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হয় তখন তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, করোনা মোকাবেলার জন্য নতুন হাসপাতাল নির্মাণের জন্য যে অর্থ প্রয়োজন সেই অর্থ দিতে প্রস্তুত অর্থ মন্ত্রণালয়। কিন্তু এরপর থেকে তাঁর কোন গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বিশেষ করে এখন যে বিভিন্ন গ্রুপ প্রণোদনার মিছিল বের করেছে, যেমন গার্মেন্টসের প্রণোদনা ঘোষণার পর এখন গণমাধ্যম মালিকরা তথ্য মন্ত্রীর সাথে দেখা করে প্রণোদনা চেয়েছেন এবং অন্যান্য শিল্প মালিকরাও সরকারের কাছে প্রণোদনা চাইছেন, কেউ ব্যাংক ঋণ মওকূফ করছেন। অথচ এই সময়ে এ সমস্ত ব্যাপারে অর্থমন্ত্রীর কোন সুস্পষ্ট বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে অর্থ মন্ত্রণালয় বলছে যে, অর্থমন্ত্রী এবং অর্থ মন্ত্রণালয় করোনাভাইরাসের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে কাজ করছেন এবং খুব শীঘ্রই একটি পূর্ণাঙ্গ প্রণোদনা প্যাকেজ নিয়ে জাতির সামনে হাজির হবেন।
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার
করোনাভাইরাসের অন্যতম ইস্যু হচ্ছে খাদ্য। খাদ্য সঙ্কট হবে কিনা, খাদ্য প্রবাহ স্বাভাবিক থাকবে কিনা কিংবা দ্রব্যমূল্য বাড়বে কিনা- এই সমস্ত বিষয় নিয়ে জনগণের মাঝে উদ্বেগ, আতঙ্ক কাজ করছে। যদিও প্রধানমন্ত্রীর তরফ থেকে সুনির্দিষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, দেশে কোন খাদ্য ঘাটতি নেই, পর্যাপ্ত খাদ্য রয়েছে এবং এখন কেউ যেন বাড়তি খাবার মজুদ করে খাদ্যের দাম বাড়িয়ে না দেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর এই ব্যাপারে বার্তা না পাওয়াতে অনেকে হতাশাজনক মনে করছেন।
পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য
করোনাভাইরাস মোকাবেলার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর ‘ঘরে ফেরা কর্মসূচী’ সহ পল্লী উন্নয়ন কর্মসূচীগুলো বেশ গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে সমবায় মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘আমার বাড়ি, আমার খামার’ এর মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প রয়েছে। এই প্রকল্পের অধীনে এই সময়ে কিভাবে গরীব মানুষদের ভালো রাখা যায়, কিভাবে তাঁদের কাছে খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করা যায়- এই ব্যাপারে পল্লী উন্নয়ন এবং সমবায় বিভাগের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। অথচ এই ব্যাপারে আমরা এখনো উক্ত মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর কোন বক্তব্য পাইনি।
বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনসি
করোনা মোকাবেলার ক্ষেত্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে বিদেশ থেকে যেসমস্ত আমদানি নির্ভর পণ্য, সেই পন্যগুলোর সরবরাহ স্বাভাবিক থাকবে কিনা, দ্রব্যমূল্য বাড়বে কিনা, সামনে রোযা- এসব বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রীর পূর্নাঙ্গ এবং সামগ্রিক বক্তব্য জনগণ প্রত্যাশা করে। কিন্তু বাণিজ্য মন্ত্রী এখন পর্যন্ত করোনার কারণে যে ক্ষতি, সেই ক্ষতির প্রেক্ষাপটে সুর্নিদিষ্ট করণীয় নিয়ে জাতির সামনে উপস্থিত হননি। আজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তিনি শ্রমিকদের বাড়িভাড়া মওকুফের জন্য আবেদন জানিয়েছেন। কিন্তু শুধু বাড়িভাড়া মওকুফ নয়, তার সামগ্রিক বাণিজ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে করণীয় নিয়ে তার সুনির্দিষ্ট দিক নির্দেশনা প্রত্যাশা করে জনগন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন যে, প্রত্যেকটি মন্ত্রণালয়-ই প্রত্যেক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে করোনার সাথে সংস্লিষ্ট। কাজেই প্রত্যেকটি মন্ত্রণালয় এই ছুটির মাঝে একটি পরিকল্পনা করা উচিত, যে এই করোনা সঙ্কটে তাঁদের মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কার্যক্রমের কি কি ক্ষতি হবে এবং এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তাঁরা কি কি পদক্ষেপ নিবেন, কি ধরণের কার্যক্রম নিবেন। আর এটা যদি না হয়, তাহলে করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে সমন্বিতভাবে এগিয়ে নেয়ার কার্যক্রম ব্যহত হবে বলে অনেকেই মনে করছেন।
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে
শোকজ করা হয়েছে।
বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর
রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল
প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর
নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির
সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে
আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের
প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য
আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা
হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর
নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ
দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের
ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর
বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার
একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া
নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং
নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে
কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।