নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৫৯ পিএম, ৩১ মার্চ, ২০২০
বাংলাদেশে করোনা নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে আশাব্যঞ্জক খবর পাওয়া যাচ্ছে। বাংলাদেশে করোনার প্রকোপ যেভাবে বাড়বে বলে বিভিন্ন মহল আশা করেছিল, সেরকম এখনো বাড়েনি। বরং সামাজিক সংক্রমণ এখনো সীমিত রয়েছে। এর কারণ কি তা গবেষকদের বিষয়, কিন্তু গত চারদিনে বাংলাদেশে মোট ৩ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। এসময় পাঁচ শতাধিক ব্যক্তির উপর করোনা শনাক্তের পরীক্ষা করা হয়েছে। আজ ১৪০ জনের উপর পরীক্ষা করে মাত্র ২ জন শনাক্ত করা হয়েছে, গতকাল ১৫৩ জনের উপর পরীক্ষা করে ১ জনকে করোনা পজিটিভ পাওয়া গিয়েছিল।
কাজেই বাংলাদেশকে নিয়ে যারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল যে, বাংলাদেশে খুব দ্রুতই করোনা ছড়িয়ে পড়বে, সেই আশঙ্কা ক্রমশই ভুল প্রমাণিত হচ্ছে। যদি আইইডিসিআর-এর তরফ থেকে বলা হচ্ছে যে, এখনো আশ্বস্ত হবার মতো কিছু নেই, বরং আরো পর্যবেক্ষণ করতে হবে, আরো পরীক্ষানিরীক্ষা এবং সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখাসহ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্বাস্থ্যবিধিগুলো মেনে চলতে হবে। তবে বিভিন্ন দেশের উদাহরণ পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হবার ৩ সপ্তাহের মধ্যে যেভাবে মহামারী আকার ধারণ করেছিল, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সেটা হয়নি। আর এই কারণেই করোনা বাংলাদেশে মহামারী আকার ধারণ করবে- এই শঙ্কা ক্রমশ ফিকে হয়ে উঠছে। এটা অবশ্যই বাংলাদেশের জন্য আশা জাগানিয়া খবর, সুখবর অন্তত আশ্বস্ত হবার খবর। তবে এই খবরেও অনেকের মন খারাপ। যারা আশঙ্কা করেছিলেন যে, করোনা বাংলাদেশে মহামারী আকার ধারন করবে, মহামারী আকার ধারণ করে অর্থনৈতিক দুরবস্থা সৃষ্টি করবে, সামাজিক অস্থিরতা শুরু হবে- তাঁরা এখন মন খারাপ করে বসে আছে। এইসব মানুষের মন খারাপের কারণ হলো- বাংলাদেশে কেন করোনা মহামারী হলোনা। অবশ্য শুধু করোনা নয়, যেকোন সময় এরা বাংলাদেশের ভালো দেখলে এদের মন খারাপ হয়ে যায়। এর প্রধান কারণ হলো যে, বাংলাদেশ দুর্বল, বাংলাদেশ অক্ষম, বাংলাদেশ দরিদ্র- এসব দেখিয়ে তাঁরা বিদেশ থেকে অনেক কিছু আনতে পারেন এবং নিজদের আখের গোছাতেও পারেন।
বাংলাদেশে করোনা মহামারী রূপ ধারণ করবে এই আশঙ্কা দেখিয়ে যারা ‘উল্লসিত’ হয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন শান্তিতে নোবেল জয়ী ড. মোহাম্মদ ইউনুস। ড. মোহাম্মদ ইউনুস বাংলাদেশে করোনা শনাক্ত হবার পরপরই দীর্ঘদিনের নিদ্রা ভঙ্গ করে একটি কলাম লিখেছিলেন, যে কলামটি দেশের অনেকগুলো শীর্ষস্থানীয় পত্রিকাতে প্রকাশিত হয়েছিল। সেই কলামে তিনি ইনিয়ে বিনিয়ে করোনা মহামারী আকার ধারণ করবে, বাংলাদেশ দেরি করে ফেলছে ইত্যাদি নানা রকম আশঙ্কা করেছিলেন। ড. মোহাম্মদ ইউনুসের জন্য বাংলাদেশকে নিয়ে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করা অবশ্য নতুন নয়। এর আগে বিশ্বব্যাংককে পদ্মাসেতুতে অর্থায়ন বন্ধের জন্য সুপারিশ করেছিলেন। বিভিন্ন স্থানে গিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কথা বলা তাঁর প্রধান পেশা। কাজেই করোনা বাংলাদেশে মহামারী আকার ধারন না করায় তিনি যে মন খারাপ করবেন তা স্বাভাবিক।
করোনা মহামারী আকার ধারণ না করায় মন খারাপ করেছেন আরেকজন। তিনি হচ্ছেন সিপিডির সমানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি তো অর্থনৈতিক মন্দার জন্য এক ফিরিস্তি নিয়ে বসেছিলেন এবং অপেক্ষায় ছিলেন যে কখন করোনা নিয়ে বাংলাদেশ বিপদে পড়তে যাচ্ছে, সেটা নিয়ে জ্বালাময়ী এক বক্তব্য রাখবেন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে যে, যখন ১৫শ রোগী পরীক্ষা করেও মাত্র ৫১ জন শনাক্ত হয়েছেন, তখন তিনি তো একটু মন খারাপ করবেনই। এই দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যরা বাংলাদেশের কোন উন্নয়ন দেখেন না, সব উন্নয়নের মাঝেই তিনি প্রশ্ন তুলতে পছন্দ করেন। এখন করোনা মহামারী না হওয়ায় তাঁর তো মন খারাপ হবারই কথা।
বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় দুটি পত্রিকা, যারা আবার সরকারের কাছে গেছেন করোনার কারণে গণমাধ্যমের জন্য প্রণোদনা চাইতে। যারা আবার এই করোনার সময়েও বিজ্ঞাপন ব্যবসা বন্ধ করেননি, পত্রিকার মাঝেই আকার-ইঙ্গিতে বিজ্ঞাপন ব্যবসাও করছেন। যাদের নিজস্ব মালিকানাধীন একটি ফার্মাসিটিক্যাল কোম্পানী রয়েছে, যারা কখনো বিয়ের উৎসব আয়োজন করেন, কখনো বা রান্নার উৎসব আয়োজন করেন, কিন্তু দেশের এই ক্রান্তিকালে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ১০ টি টাকাও দান করেননি কিংবা কোন প্রকার সাহায্য করায় এগিয়ে আসতেও দেখা যায়নি। তাঁরা পত্রিকা জুড়ে এমনভাবে করোনা ভীতি ছড়িয়েছিলেন যে এখন পর্যন্ত সরকার কোন পদক্ষেপই নেয়নি। কিন্তু ৩ সপ্তাহ পেরোনের পরেও যখন করোনা রোগীর সংখ্যা তেমনভাবে বাড়ছে না, তখন তাঁদেরও কি মন খারাপ?
এছাড়া স্বাধীনতাবিরোধী রাজনৈতিক সংগঠন জামায়াত-শিবিরগোষ্ঠী, যারা করোনা শনাক্তের পরেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানারকম গুজব, মিথ্যাচার আর অপপ্রচার করেছে। বাংলাদেশে মহামারী হবে, কয়েক লক্ষ মানুষ মারা যাবে ইত্যাদি নানারকম অপপ্রচার চালিয়েছে। তাঁরা এতদিন দাবি করেছে যে, তথ্য গোপন করা হচ্ছে। কিন্তু ১৫শ ব্যক্তির রক্ত পরীক্ষার পড়ে যখন মাত্র ৫১ জন শনাক্ত হয়েছেন কিংবা বিশ্ব সাস্থ্য সংস্থাও বাংলাদেশের তথ্য-উপাত্তের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করছেন না- তখন তাঁরাও মন খারাপ করেছে।
এদের মন খারাপ কেন? এদের মন খারাপ এই জন্য যে, বাংলাদেশে করোনা মহামারী আকার ধারণ করলে শেখ হাসিনা বিপদে পড়তেন। এদের মূল ক্ষোভ শেখ হাসিনার ওপর, শেখ হাসিনাকে গণতান্ত্রিক উপায়ে সরাতে ব্যর্থ হয়েছে, ষড়যন্ত্র করেও পরাজিত হয়েছে- তাই এখন তাঁরা কোন একটি উপলক্ষ্যে যদি শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা কমে, শেখ হাসিনার যদি জনআস্থা কমে সেই প্রত্যাশাই করে। সে কারণে করোনাকে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে প্রচার করায় ব্যস্ত ছিলেন এরা সকলেই। কিন্তু এখন পর্যন্ত করোণার ব্যপ্তি না বাড়ায় তাঁদের মন খারাপ বটে। আমরাও আশা করি করোনার মহামারী না হোক এবং প্রত্যেকটি মানুষই মনে করেন যে, যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের যে পর্যবেক্ষণ সময়কাল অর্থাৎ আরো ৭-১০ দি্ সেই পর্যবেক্ষণ সময়ে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দিকনির্দেশনা মেনে চললে নিশ্চয়ই বাংলাদেশ করোনা মোকাবেলা করতে সক্ষম হবে।
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।
উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।