নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৫৮ পিএম, ০২ এপ্রিল, ২০২০
আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ করোনা মোকাবেলার ক্ষেত্রে কিছু যুগান্তকারী এবং দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নির্দেশনা দিয়েছেন। তাঁর এই নির্দেশনা সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত করতে পেরেছে এবং করোনা মোকাবেলায় এটাই সর্বোত্তম পন্থা বলে সাধারণ মানুষ থেকে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে, প্রতিটি উপজেলায় অন্তত দুজন করে সন্দেহভাজনের করোনা শনাক্তের পরীক্ষা করতে হবে। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই নির্দেশনা দিয়েছেন যে, প্রতিদিন অন্তত ১ হাজার করোনা শনাক্তের পরীক্ষা করতে হবে। করোনা আতঙ্ক নিয়ে গত কিছুদিন ধরেই জনমনে অস্থিরতা, উৎকণ্ঠা এবং অস্বস্তি ছিল। বিশেষ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যে ধীরগতির পরীক্ষা এবং ঢাকাকেন্দ্রিক পরীক্ষার ফলে সাধারণ মানুষের মনে নানারকম অবিশ্বাস এবং আস্থার সঙ্কট তৈরি হচ্ছিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মনে করছে যে অন্ধ হলেই মনে হয় প্রলয় বন্ধ হয়ে যাবে। এজন্য তাঁরা সীমিত পরীক্ষার মাধ্যমে করোনার বাস্তব পরিস্থিতি উপলব্ধি করতে দিচ্ছিল না বা নিজেরাও উপলব্ধি করতে চাচ্ছিল না। তাঁরা যেন উটপাখির মতো মরু ঝড়ের সময় বালিতে মুখ গুঁজে ছিল এবং তাঁরা মনে করছিল যে, তাঁরা যদি ঝড় উপলব্ধি করতে না পারে, তাহলে বোধ হয় সারাদেশের মানুষও ঝড় উপলব্ধি করতে পারবে না।
কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এটা বুঝছিল না যে পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে এবং পরিস্থিতি বোঝার মতো তথ্য-উপাত্ত আমাদের হাতে নেই। আর এই বাস্তবতায় সাধারণ মানুষের মধ্যে নানা রকম গুজব ভর করছিল। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সঠিক নির্দেশনা দিলেন। প্রশ্ন হচ্ছে যে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গত ১ মাস ধরে কাজ করেও কেন বুঝতে পারছে না যে সারা বাংলাদেশে এখন বিদেশফেরতরা ছড়িয়ে পড়েছে।
দ্বিতীয়ত; যত কড়াকড়ি আরোপ করাই হোক না কেন, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা আমরা কার্যকর করতে পারিনি।
তৃতীয়ত; ২৬শে মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণার সাথে সাথে মানুষ প্রত্যন্ত অঞ্চলে নিজেদের গ্রামের বাড়িতে চলে গেছে। এই বাস্তবতায় সারাদেশে করোনা শনাক্ত পরীক্ষার বিকল্পের কিছু নেই এবং এই পরীক্ষায় আমরা প্রকৃত অবস্থান ধারণা করতে পারবো।
কিন্তু প্রতিদিন দুপুর ১২ টায় কখনো স্বাস্থ্য মন্ত্রী, কখনো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কিংবা কখনো স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যে ১৫২, ১৫৩ জনের রক্ত পরীক্ষার ফলাফল দিচ্ছেন, তাতে আশ্বস্ত হবার মতো কোন উপাদান পাওয়া যাচ্ছেনা। বরং এতে সারাদেশের পরিস্থিতি আদতে কি সে সম্পর্কে আমরা যাচাইবাছাই করতেও পারছিনা। একটি সমস্যাকে মোকাবেলা করতে হলে সমস্যার প্রকৃত ধরণ এবং এটা মোকাবেলার উপায় সম্পর্কে জানতে হবে এবং করোনা মোকাবেলার ক্ষেত্রে সেটা আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই করোনার প্রকৃত অবস্থা কি সেটা জানার জন্য সারাদেশ থেকে নমুনা পরীক্ষা করে আসল অবস্থা জানার বিকল্প নেই।
উপযুক্ত তথ্য না থাকলে কোন সমস্যাই মোকাবেলা করা সম্ভব না। আর আর একারণেই করোনা মোকাবেলার ক্ষেত্রে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বারবার বলছে, ‘টেস্ট, টেস্ট এবনফ টেস্ট’। কিন্তু স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় যেন ধীর গতিতে চলা মালবাহী এক ট্রেনের মতো পরীক্ষা করায় যত রকম বিলম্ব করা যায়, তত রকম বিলম্ব করছে। কার নির্দেশে, কার পরামর্শে এবং কোন লক্ষ্যে তাঁরা এমন করছেন- সেটা তারাই ভালো বলতে পারবে। কিন্তু এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই এই নির্দেশনা দিয়ে প্রমাণ করলেন যে, সরকার আসলে কোন তথ্য গোপন করতে চায় না, বরং প্রকৃত তথ্য নিয়ে ভবিষ্যতের করণীয় নির্ধারণ করতে চায়।
আমাদের প্রশ্ন হলো, প্রধানমন্ত্রী যদি বোঝেন তাহলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এত বড় বড় কর্মকর্তারা আছেন- তাঁরা কেন বোঝেন না? কেন এই ব্যাপারেও প্রধানমন্ত্রীকে নির্দেশনা দিতে হয়? আমরা লক্ষ্য করেছি যে, গত কিছুদিন ধরে কিছু বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ ছাড়া কিছুই হয়না। সেই বিষয়গুলো ছোটখাটো সমস্যা থেকে হতে পারে বড় কোন সমস্যা। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যেন ঘুম ভাঙছে না, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যেন সচল হচ্ছেনা। তাহলে এই সবকিছুই যদি প্রধানমন্ত্রীকেই করতে হবে, তাহলে এত মন্ত্রী এবং এত আমলাদের প্রয়োজন আছে কিনা- সেই প্রশ্ন উঠতেই পারে।
মন্তব্য করুন
ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি সভাপতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়া শামীম ইস্কান্দার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য নতুন করে তৎপরতা শুরু করেছে তার পরিবারের সদস্যরা। বিশেষ করে বেগম জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার ইতোমধ্যে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য সরকারের বিভিন্ন মহলের সঙ্গে নতুন করে যোগাযোগ শুরু করেছেন। বেগম জিয়া আর ভবিষ্যতে রাজনীতি করবেন না, রাজনীতি থেকে অবসর নেবেন এ রকম একটি বক্তব্য সামনে নিয়ে আসছেন শামীম ইস্কান্দার।
আওয়ামী লীগের তৃণমূল ক্রমশ ভেঙ্গে পড়ছে। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের তৃণমূল সংগঠিত করা এবং বিভেদ-বিভক্তির দূর করার জন্য যে ডাক দেওয়া হয়েছিল তারপর একটু পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছিল বলে বটে। কিন্তু এখন আবার উপজেলা নির্বাচনের প্রাক্কালে সারাদেশে তৃণমূল বিভক্ত হয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগের তৃণমূলকে সামাল দেওয়াই এখন কঠিন হয়ে পড়ছে। একদিকে নির্বাচন কেন্দ্রীক বিরোধ অন্যদিকে দলের চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে যাওয়া আর কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তদারকির অভাবে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ এখন সবচেয়ে সঙ্কটের মুখে পড়েছেন বলেই মনে করছেন আওয়ামী লীগের নেতারাই।