ইনসাইড পলিটিক্স

দর্জিতন্ত্রেই সর্বনাশ!

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ০৫ এপ্রিল, ২০২০


Thumbnail

বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্প নিয়ে অনেকে অনেক আশাবাদ করেন। বলা হয় যে, আমাদের অর্থনীতির অন্যতম মেরুদণ্ড আমাদের গার্মেন্টস শিল্প এবং বিদেশ থেকে যে রপ্তানি আয় আসে তাঁর একটি বড় অংশ আসে গার্মেন্টস শিল্পের মাধ্যমে।

তবে দুষ্ট অর্থনীতিবিদরা বলেন অন্য কথা। তাঁরা বলেন যে, আমাদের যেটাকে গার্মেন্টস শিল্প বলা হয় সেটা আসলে টেইলারিং ইন্ড্রাস্টি বা সহজ বাংলায় দর্জিশিল্প। আমাদের গার্মেন্টস শিল্পের অধিকাংশ ফ্যাব্রিকস, কাপড়, সুতো এমনকি বোতামটি পর্যন্ত বিদেশ থেকে আমদানি করি এবং এই আমদানি ব্যয় এবং রপ্তানি ব্যয় যদি আমরা হিসেবনিকেশ করি তাহলে এই শিল্প থেকে আমাদের কি পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আসে বা আমাদের অর্থনীতিতে কি পরিমাণ ভূমিকা রাখে সেটা ভাববার বিষয় এবং তা নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক রয়েছে। সে বিতর্কে আমরা যাচ্ছি না।

আমাদের গার্মেন্টস শিল্প যে অবদান রাখছে সেই কৃতিত্বের আসল দাবিদার শ্রমিকরা। যারা নূন্যতম মজুরীতে তাঁদের সমস্ত কিছু উজাড় করে দিয়ে এই গার্মেন্টস সামগ্রীগুলো টেইলারিং করছে এবং তার বিনিময়ে আমরা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছি। আমাদের গার্মেন্টস মালিকরা যাদেরকে এই দর্জিদের সর্দারও বলা যেতে পারে, তাঁরা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে দামি পাজেরো গাড়ি আর দামী বাড়ি বানিয়ে এই গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি না দিয়ে নিজেদের আরাম-আয়েশের জীবন যাপন করছেন এবং ইদানীং রাজনীতিতে এসেও খায়েস মেটাচ্ছেন। সাম্প্রতিককালে সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’ এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, রাজনীতি দখল করে নিচ্ছে গার্মেন্টস মালিকরা এবং সেই প্রতিবেদনে এটাও দেখানো হয়েছে যে গার্মেন্টস মালিকরা কারা কারা মন্ত্রী-এমপি হয়েছেন। সেই বিতর্কেও যেতে চাইনা, তবে বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে এই দর্জিতন্ত্রের উদ্ভব হয়েছে। গণতন্ত্র বলতে আমরা বুঝি জনগনের শাষণ, যেখানে জনগনের ইচ্ছাই শেষ কথা এবং প্রজাতন্ত্রের মালিক হয় জনগন। কিন্তু যখন জনগনের ইচ্ছা এবং আকাঙ্খা পদদলিত হয় একটি বিশেষ পেশা গোষ্ঠীর ইচ্ছা অনিচ্ছাতে সিদ্ধান্তগুলো প্রতিফলিত হয় তখন সেটাকে আর গণতন্ত্র বলা যায় না।

সাম্প্রতিক সময় বাংলাদেশে তাদের প্রভাব প্রতিপত্তি এবং সরকারে তাদের ভূমিকা লক্ষণীয়। আর এজন্যই আমরা এই ব্যবস্থাকে দর্জিতন্ত্র বলতে পারি। বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময় যে এই দর্জি সর্দাররা প্রচণ্ড প্রভাবশালী হয়ে উঠেছে তাঁর প্রমাণ পাওয়া যায় ধানমন্ডি আসনে উপনির্বাচনের মনোনয়ন দেখে। ধানমন্ডি খুব স্পর্শকাতর আসন একারণে যে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাসভবন ‘বঙ্গবন্ধু ভবন’ সেখানে। এছাড়া আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবন ‘সুধা সদন’-ও সেখানে। সেই বিবেচনা থেকে ধানমন্ডি আওয়ামী লীগের জন্য একটি স্পর্শকাতর জায়গা। এমন জায়গা থেকে যখন একজন গার্মেন্টস মালিক মনোনয়ন পান, তখন সেটা অবাক করা বিষয় হয়। তাছাড়া ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন যেন গার্মেন্টস মালিকদের দখলে। প্রথমে যিনি মেয়র ছিলেন এবং তাঁর অকাল প্রয়াণে যিনি মেয়র হয়েছেন- তাঁদের সবার মূল পরিচয় তাঁরা গার্মেন্টস শিল্পের মালিক।

শুধু তাই নয়, এখন যদি মন্ত্রিসভার দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, সেখানে বেশ কয়েকজন গার্মেন্টস মালিকদের দেখা যাবে। এছাড়া এমপিদের তালিকায় গার্মেন্টস মালিকদের সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। আর এই বিবেচনায় অনেকে মনে করেন যে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে এই দর্জিবাড়ির সর্দাররা বড় কর্তৃত্ব দখল করেছেন। আর এই কারণে দেখা যাচ্ছে যে, সরকারের বেশকিছু সিদ্ধান্তে তাঁরা প্রভাব বিস্তার করছেন।

বাংলাদেশে অনেক বড় বড় শিল্প পরিবার গড়ে উঠেছে এবং তাঁরা বিভিন্ন দুর্যোগ-দুর্বিপাকে সরকারের পাশে দাঁড়াচ্ছে। আমরা বসুন্ধরা গ্রুপের কথা বলতে পারি, আমরা স্কয়ার গ্রুপের কথা বলতে পারি, আমরা বেক্সিমকো গ্রুপের কথা বলতে পারি, আমরা বলতে পারি মেঘনা গ্রুপের কথাও। কিন্তু আমাদের গার্মেন্টস মালিকরা যেকোন দুর্যোগে প্রণোদনা ভিক্ষার জন্য আর্তনাদ করে ওঠেন এবং রাষ্ট্রের কৃপা এবং প্রণোদনা ছাড়া যেন তাঁদের কোন সহায়সম্বল নেই- এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি করে আহাজারি করতে থাকেন। করোনাভাইরাস শুরুই হলো না, তাতেই গার্মেন্টস মালিকরা আর্তনাদ করে উঠেছে। এমন অবস্থা যেন তাঁদেরকেও ত্রাণ সরবরাহ করতে হবে, তাঁদের বাড়িতে চাল, ডাল, রসুন, পেঁয়াজ পৌঁছে দিতে হবে। এই গার্মেন্টস মালিকরা এত ক্ষমতাবান হয়ে উঠেছেন যে, সরকার যখন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেন, তারপরেও তাঁরা তাঁদের গার্মেন্টস বন্ধ দেননা। তাঁরা যেন আলাদা রাজত্ব, আলাদা সরকার এবং এমন একটি পরিস্থিতি তাঁরা তৈরি করলো যখন সরকার সারাদেশে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনী নামালেন, তখন সেই গার্মেন্টস মালিকরা শ্রমিকদেরকে ঢাকায় ফেরার জন্য টেলিফোন করলেন এবং ৫ এপ্রিল গার্মেন্টস খোলার সিদ্ধান্ত নিলেন।

আবার দেখুন, এই সিদ্ধান্ত যখন তীব্র জনরোষের মুখে পড়লো, তখন দর্জিবাড়ির প্রধান বিজিএমইএ- এর সভাপতি অডিও বার্তার মাধ্যমে গার্মেন্টস বন্ধ রাখার আহ্বান জানালেন। তাহলে কি দেশের প্রচলিত আইন বিধিবিধান তাঁদের জন্য প্রযোজ্য নয়? এটা অবশ্য নতুন নয়। কারণ এই বিজিএমইএ-এর ভবন তাঁরা গড়ে তুলেছিলেন অবৈধভাবে, হাতিরঝিলের লেক দখল করে। যেটা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত অবৈধ ঘোষণা দিয়েছেন এবং দীর্ঘদিন টালবাহানা করে তাঁরা সেটা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন। বাংলাদেশে এই এক শ্রেনীর ব্যবসায়ী তৈরি হয়েছে, যারা শ্রমিকদের প্রাপ্য মজুরি না দিয়ে নিজেদের বিত্তের পাহাড় গড়েছেন এবং সেই পাহাড় দিয়ে তাঁরা মন্ত্রী-এমপি হচ্ছেন। তাঁদের জন্য যেন দেশের প্রচলিত আইনকানুন প্রযোজ্য নয়। বরং তাঁরা নিত্য নতুন আইন নিজেদের সুবিধামতো সৃষ্টি করছে, রাষ্ট্রের কাছে থেকে প্রণোদনার নামে ভিক্ষা নিচ্ছেন, আবার সেই ভিক্ষার টাকা যাঁদেরকে দেখিয়ে নিচ্ছেন অর্থাৎ সেই শ্রমিকদেরকেও ঠকাচ্ছেন।

বাংলাদেশে যে দর্জিতন্ত্র সৃষ্টি হয়েছে, সেই দর্জিতন্ত্র যে কতটা ভয়াবহ হতে পারে তাঁর প্রমাণ সাম্প্রতিক সময়ে করোনা সঙ্কটের মাঝে গার্মেন্টস মালিকদের অমানবিক এবং গণবিরোধী আচরণ। আর এই কারণে বাংলাদেশে করোনা মহামারি হবার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আর তাই আমাদের উৎসে যেতে হবে, বাংলাদেশে তথাকথিত যে দর্জি শিল্প সেই দর্জি শিল্পের যে হোতা তাঁদেরকে এখনই আইনের আওতায় আনতে হবে এবং আমাদের সংবিধানের যে মূল সুর- আইন সবার জন্য সমান, সেই সমান আইন তাঁদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য করতে হবে। একই সাথে তাঁরা যে রাষ্ট্রযন্ত্রের ঘাড় চেপে ধরেছে, সেই ঘাড় থেকে তাঁদেরকে নামাতে হবে। নাহলে আমাদের সামনে আরো বড় বিপর্যয় অপেক্ষা করছে।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপিতে গণ বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত

প্রকাশ: ১০:৩০ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। 

অবশ্য এসব প্রার্থীর অনেকে এটি ‘দলীয় নির্বাচন নয়’ বলে দাবি করছেন, আবার কেউ কেউ ‘জনগণ তাদের চাচ্ছে’– এমন অজুহাত দেখাচ্ছেন। এমনকি দল থেকে বহিষ্কার হতে পারেন– সেই ভয় উপেক্ষা করেই নিজেদের এ অবস্থান জানান দিচ্ছেন তারা। আবার অনেকের দলে কোনো পদপদবিও নেই। অনেকে বহিষ্কৃত। এর পরও যারা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন, তাদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিএনপি হাইকমান্ড। শিগগির এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে বলেও জানা গেছে।

বিএনপির সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এ সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না বিএনপি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের মতো দলের এমন সিদ্ধান্ত স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও বাস্তবায়ন করছে দলটি। এ জন্য দফায় দফায় তৃণমূল নেতাকর্মী ছাড়াও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গেও দফায় দফায় বৈঠক করেন নেতারা। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে নেতারা এই নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে মত তুলে ধরেন। সেখানে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ইচ্ছুকদের প্রথমে কাউন্সেলিং, নির্বাচনে না যাওয়ার আহ্বানের পাশাপাশি দলের কঠোর অবস্থানের বিষয়টি তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নেন নেতারা। এর পরও যারা সিদ্ধান্ত অমান্য করবেন, তাদের বিষয়ে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি আগেই উচ্চারণ করেছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। 

এদিকে গত সোমবার রাতে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়। সেখানে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীদের বহিষ্কারের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়। তবে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী নেতারা বলছেন, স্থানীয় জনগণের চাপে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে বাধ্য হয়েছেন। তাছাড়া যেহেতু এবার দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হচ্ছে না তাই তারা স্বতন্ত্র ভাবে নির্বাচন করছেন। আর তাই বহিষ্কারের বিষয়টি তারা আমলে নিচ্ছে না। তবে দল তাদের ব্যাপারে নমনীয় সিদ্ধান্ত নেবেন এমনটাও প্রত্যাশা নেতাকর্মীদের।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দিনাজপুর জেলার একটি উপজেলার বিএনপির প্রার্থী বলেন, মনোনয়নপত্র দাখিল করার পরে দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে নির্বাচনে না যাওয়ার। সে ক্ষেত্রে নির্বাচন করব, দল যদি কোনো সিদ্ধান্ত নেয় নেবে।

বিএনপি   গণ বহিষ্কার   উপজেলা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ওবায়দুল কাদেরের পদত্যাগ চাওয়ায় থানায় জিডি

প্রকাশ: ০৮:৪০ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের পদত্যাগ চাওয়ায় যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের সভাপতি মোহাম্মদ হানিফ ওরফে খোকন এ জিডি করেন।

জিডিতে বলা হয়েছে, গত ২০ এপ্রিল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ঈদ যাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এই সংবাদ সম্মেলনে সাংগঠনটির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেছেন, ‘সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ২০ বছর যাবৎ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু তিনি পরিবহন সেক্টরে কোনো কাজ করেন নাই।’ 

একপর্যায়ে মোজাম্মেল হক চৌধুরী আরও বলেন, ‘যেহেতু আমাদের দেশে পদত্যাগের সংস্কৃতি নেই। সেহেতু মন্ত্রী ইচ্ছা করলে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে পদত্যাগ করতে পারেন।’

জিডিতে শ্রমিক লীগের ওই নেতা আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি যাত্রীদের কল্যাণ করবে এটাই তাদের কাজ। কিন্তু সুপরিকল্পিতভাবে মোজাম্মেল হক চৌধুরী সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। এতে মন্ত্রীর সম্মান ক্ষুণ্ন হয়েছে। কারণ বর্তমান সরকার টানা চতুর্থবারের মতো রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আছেন। এখন সরকারের ক্ষমতা থাকার বয়স ১৫ বছর ৩ মাস। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী সেখানে ২০ বছর মন্ত্রী থাকেন কীভাবে? মোজাম্মেল হক চৌধুরী সুপরিকল্পিতভাবে মন্ত্রী ও সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেছেন। এই মিথ্যাচারের বক্তব্যগুলো দেশের স্যাটেলাইট টেলিভিশনসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে। তার এই মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্যে সরকারের সুনাম ক্ষুণ্ন ও মন্ত্রীর মানহানি হয়েছে। তাই বিষয়টি ভবিষ্যতের জন্য জিডি করে রাখা একান্ত প্রয়োজন।’

ওবায়দুল কাদের  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

‘আপনি কখনোই কোনো কথা শোনেন না, এটা ঠিক না’

প্রকাশ: ০৭:৪০ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের। 

গতকাল সন্ধ্যার পর ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে দেখা করতে তার কক্ষে যান শাজাহান খান। এ সময় তার উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আপনি তো কথা শুনলেন না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তও মানলেন না।’

এ সময় সেখানে উপস্থিত কেন্দ্রীয় নেতারা তিরস্কার করেন শাজাহান খানকে।

জানা গেছে, শাজাহান খান এক পর্যায়ে দলের সাধারণ সম্পাদকের উদ্দেশে বলেন, রাজনীতির ধারাবাহিকতায় ছেলে আসিবুর রাজনীতিতে এসেছে। এ জন্যই সে প্রার্থী হয়েছে। জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী ও এমপির স্বজনের নির্বাচন না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। প্রতিউত্তরে শাজাহান খান বলেন, অনেকেরই নিকটাত্মীয় রাজনীতিতে আছেন।

ওবায়দুল কাদের এ সময় শাজাহান খানকে বলেন, ‘আপনি কখনোই কোনো কথা শোনেন না। এটা ঠিক না।’ এর জবাবে শাজাহান খান বলেন, ‘আপনার সিদ্ধান্ত দেরিতে জানিয়েছেন। আগে জানালে ভালো হতো।’ তখন ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সিদ্ধান্তটি আমার নয়। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) কোন সিদ্ধান্ত কখন দেবেন, সেটা কি আমাদের জিজ্ঞাসা করে দেবেন?’

শাজাহান খানের উচ্চস্বরে কথা বলা নিয়ে উপস্থিত নেতাকর্মীরা বিস্ময় প্রকাশ করেন। এ নিয়ে বিরক্ত হন ওবায়দুল কাদেরও। তিনি শাজাহান খানের উদ্দেশে বলেন, ‘এখানে দলের অনেক নেতাকর্মী রয়েছেন। এর পরও আপনি সবার সামনে এসব অপ্রিয় কথা কেন বলছেন?

এ সময় নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দুই সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, কার্যনির্বাহী সংসদের দুই সদস্য আনিসুর রহমান ও সাহাবুদ্দিন ফরাজী, মশিউর রহমান হুমায়ুন, মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী লোটন, বলরাম পোদ্দার এবং শাহজাদা মহিউদ্দিন।

ওবায়দুল কাদের   শাজাহান খান  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ভিডিও ভাইরাল হওয়া সেই চামেলীকে অব্যাহতি

প্রকাশ: ০৭:৩১ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর শৃঙ্খলার পরিপন্থি কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ২০ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের নারী কাউন্সিলর ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য সৈয়দা রোকসানা ইসলাম চামেলীকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজের স্বাক্ষর করা এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়েছে, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ একটি সুসংগঠিত ও সুশৃঙ্খল সংগঠন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী ও সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির গঠনতন্ত্রের ৪৭(৯) ধারা মোতাবেক ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য সৈয়দা রোকসানা ইসলাম চামেলীকে সংগঠনের শৃঙ্খলার পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার কারণে পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন।
 
এর আগে ওই নারী কাউন্সিলরের একটি নগ্ন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। কয়েকদিন ধরে নগর আওয়ামী লীগ ও কেন্দ্রীয় নেতাদের হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিওটি ঘুরপাক খায়। যা নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

আওয়ামী লীগ   ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন   রাজনীতি  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

ভুল কৌশলের মাশুল গুনছে আওয়ামী লীগ?

প্রকাশ: ০৬:২৬ পিএম, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আওয়ামী লীগের অতীতে নেয়া কিছু সিদ্ধান্ত বা ঘটনা এর জন্য দায়ী হতে পারে। উদাহরণ দিয়ে কেউ কেউ বলছেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে একাধিকবার দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছিল। কিন্তু পরে আবার তাকে দলে ফিরিয়ে আনা হয়। জাহাঙ্গীর আলমকে প্রথমবার বহিষ্কার করার পর যখন দলে ফিরিয়ে আনা হয় পরে দ্বিতীয়বার তিনি আবার একই ভুল করলেও তাকে সাধারণ ক্ষমা দিয়ে দলে ফেরত আনা হয়। বিষয়টি সে সময় আওয়ামী লীগের অনেক তৃণমূল নেতাকর্মীই ভালো ভাবে নেয়নি। 

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মেয়র জাহাঙ্গীরের মতো একাধিক ঘটনা অতীতে আওয়ামী লীগে ঘটেছে। ফলে নেতাকর্মীদের মধ্যে এক ধরনের ধারণা তৈরি হয়েছে যে, প্রথমে দল তাদেরকে বহিষ্কার করলেও পরে তারা সাধারণ ক্ষমা পেয়ে আবার দলে ফেরত আসার সুযোগ পাবেন। আর সে কারণেই দলের নির্দেশনা থাকলেও সেটা অমান্য করে তারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি বলে মনে করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাছাড়া স্থানীয় রাজনীতিও নিয়ন্ত্রণ করে এমপিরা। সেখানে এমপিরাই যখন তাদের পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের মনোনয়ন দিচ্ছেন তাহলে তো কোন কথাই নাই। অতীতে আওয়ামী লীগ শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য কঠোর পদক্ষেপ নিলে দলের চেইন অব কমান্ড এভাবে ভেঙে পড়ত না। আওয়ামী লীগকে এখন ভুল কৌশলের মাশুল গুনছে হচ্ছে।

এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বাংলা ইনসাইডারকে বলেন, দলীয় নির্দেশনার পরও যেসব এমপি-মন্ত্রীর আত্মীয়স্বজনরা নিজেদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি, তাদের নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার সময় কিন্তু এখনো শেষ হয়ে যায়নি। আমরা বিশ্বাস করি, দলীয় নির্দেশনা মেনে তারা নিজেদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেবেন। তবে কেউ যদি শেষ পর্যন্ত দলীয় নির্দেশনা না মানেন তাহলে অবশ্যই দল তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। দলের নিয়মনীতি ও গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাদের (এমপি-মন্ত্রীদের আত্মীয়দের) বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটাই আওয়ামী লীগের দলীয় সিদ্ধান্ত।

তিনি আরও বলেন, কেউ যদি জাহাঙ্গীর আলমের বিষয়টি থেকে অনুপ্রাণিত হন তাহলে তিনি ভুল করছেন। এরা অচিরেই রাজনীতিতে হারিয়ে যাবে। দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে বা গঠনতন্ত্র উপেক্ষা করে কেউই এখন পর্যন্ত রাজনীতির চরম শিখরে পৌঁছাতে পারেনি। বরং যিনি দলের প্রতি অবিচল থেকেছেন, দলের সিদ্ধান্তকে মান্য করেছেন, দলের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি তারা ধাপের ধাপে রাজনীতিতে উন্নতি করেছেন দেশের জন্য অবদান রাখতে পেরেছেন, জনগণের নেতাতে পরিণত হয়েছেন, রাজনীতিতে অমরত্ব লাভ করেছেন। 

আওয়ামী লীগ   উপজেলা নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন