নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০০ পিএম, ০৫ এপ্রিল, ২০২০
বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্প নিয়ে অনেকে অনেক আশাবাদ করেন। বলা হয় যে, আমাদের অর্থনীতির অন্যতম মেরুদণ্ড আমাদের গার্মেন্টস শিল্প এবং বিদেশ থেকে যে রপ্তানি আয় আসে তাঁর একটি বড় অংশ আসে গার্মেন্টস শিল্পের মাধ্যমে।
তবে দুষ্ট অর্থনীতিবিদরা বলেন অন্য কথা। তাঁরা বলেন যে, আমাদের যেটাকে গার্মেন্টস শিল্প বলা হয় সেটা আসলে টেইলারিং ইন্ড্রাস্টি বা সহজ বাংলায় দর্জিশিল্প। আমাদের গার্মেন্টস শিল্পের অধিকাংশ ফ্যাব্রিকস, কাপড়, সুতো এমনকি বোতামটি পর্যন্ত বিদেশ থেকে আমদানি করি এবং এই আমদানি ব্যয় এবং রপ্তানি ব্যয় যদি আমরা হিসেবনিকেশ করি তাহলে এই শিল্প থেকে আমাদের কি পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আসে বা আমাদের অর্থনীতিতে কি পরিমাণ ভূমিকা রাখে সেটা ভাববার বিষয় এবং তা নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক রয়েছে। সে বিতর্কে আমরা যাচ্ছি না।
আমাদের গার্মেন্টস শিল্প যে অবদান রাখছে সেই কৃতিত্বের আসল দাবিদার শ্রমিকরা। যারা নূন্যতম মজুরীতে তাঁদের সমস্ত কিছু উজাড় করে দিয়ে এই গার্মেন্টস সামগ্রীগুলো টেইলারিং করছে এবং তার বিনিময়ে আমরা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছি। আমাদের গার্মেন্টস মালিকরা যাদেরকে এই দর্জিদের সর্দারও বলা যেতে পারে, তাঁরা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে দামি পাজেরো গাড়ি আর দামী বাড়ি বানিয়ে এই গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি না দিয়ে নিজেদের আরাম-আয়েশের জীবন যাপন করছেন এবং ইদানীং রাজনীতিতে এসেও খায়েস মেটাচ্ছেন। সাম্প্রতিককালে সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’ এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, রাজনীতি দখল করে নিচ্ছে গার্মেন্টস মালিকরা এবং সেই প্রতিবেদনে এটাও দেখানো হয়েছে যে গার্মেন্টস মালিকরা কারা কারা মন্ত্রী-এমপি হয়েছেন। সেই বিতর্কেও যেতে চাইনা, তবে বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে এই দর্জিতন্ত্রের উদ্ভব হয়েছে। গণতন্ত্র বলতে আমরা বুঝি জনগনের শাষণ, যেখানে জনগনের ইচ্ছাই শেষ কথা এবং প্রজাতন্ত্রের মালিক হয় জনগন। কিন্তু যখন জনগনের ইচ্ছা এবং আকাঙ্খা পদদলিত হয় একটি বিশেষ পেশা গোষ্ঠীর ইচ্ছা অনিচ্ছাতে সিদ্ধান্তগুলো প্রতিফলিত হয় তখন সেটাকে আর গণতন্ত্র বলা যায় না।
সাম্প্রতিক সময় বাংলাদেশে তাদের প্রভাব প্রতিপত্তি এবং সরকারে তাদের ভূমিকা লক্ষণীয়। আর এজন্যই আমরা এই ব্যবস্থাকে দর্জিতন্ত্র বলতে পারি। বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময় যে এই দর্জি সর্দাররা প্রচণ্ড প্রভাবশালী হয়ে উঠেছে তাঁর প্রমাণ পাওয়া যায় ধানমন্ডি আসনে উপনির্বাচনের মনোনয়ন দেখে। ধানমন্ডি খুব স্পর্শকাতর আসন একারণে যে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাসভবন ‘বঙ্গবন্ধু ভবন’ সেখানে। এছাড়া আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবন ‘সুধা সদন’-ও সেখানে। সেই বিবেচনা থেকে ধানমন্ডি আওয়ামী লীগের জন্য একটি স্পর্শকাতর জায়গা। এমন জায়গা থেকে যখন একজন গার্মেন্টস মালিক মনোনয়ন পান, তখন সেটা অবাক করা বিষয় হয়। তাছাড়া ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন যেন গার্মেন্টস মালিকদের দখলে। প্রথমে যিনি মেয়র ছিলেন এবং তাঁর অকাল প্রয়াণে যিনি মেয়র হয়েছেন- তাঁদের সবার মূল পরিচয় তাঁরা গার্মেন্টস শিল্পের মালিক।
শুধু তাই নয়, এখন যদি মন্ত্রিসভার দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, সেখানে বেশ কয়েকজন গার্মেন্টস মালিকদের দেখা যাবে। এছাড়া এমপিদের তালিকায় গার্মেন্টস মালিকদের সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। আর এই বিবেচনায় অনেকে মনে করেন যে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে এই দর্জিবাড়ির সর্দাররা বড় কর্তৃত্ব দখল করেছেন। আর এই কারণে দেখা যাচ্ছে যে, সরকারের বেশকিছু সিদ্ধান্তে তাঁরা প্রভাব বিস্তার করছেন।
বাংলাদেশে অনেক বড় বড় শিল্প পরিবার গড়ে উঠেছে এবং তাঁরা বিভিন্ন দুর্যোগ-দুর্বিপাকে সরকারের পাশে দাঁড়াচ্ছে। আমরা বসুন্ধরা গ্রুপের কথা বলতে পারি, আমরা স্কয়ার গ্রুপের কথা বলতে পারি, আমরা বেক্সিমকো গ্রুপের কথা বলতে পারি, আমরা বলতে পারি মেঘনা গ্রুপের কথাও। কিন্তু আমাদের গার্মেন্টস মালিকরা যেকোন দুর্যোগে প্রণোদনা ভিক্ষার জন্য আর্তনাদ করে ওঠেন এবং রাষ্ট্রের কৃপা এবং প্রণোদনা ছাড়া যেন তাঁদের কোন সহায়সম্বল নেই- এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি করে আহাজারি করতে থাকেন। করোনাভাইরাস শুরুই হলো না, তাতেই গার্মেন্টস মালিকরা আর্তনাদ করে উঠেছে। এমন অবস্থা যেন তাঁদেরকেও ত্রাণ সরবরাহ করতে হবে, তাঁদের বাড়িতে চাল, ডাল, রসুন, পেঁয়াজ পৌঁছে দিতে হবে। এই গার্মেন্টস মালিকরা এত ক্ষমতাবান হয়ে উঠেছেন যে, সরকার যখন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেন, তারপরেও তাঁরা তাঁদের গার্মেন্টস বন্ধ দেননা। তাঁরা যেন আলাদা রাজত্ব, আলাদা সরকার এবং এমন একটি পরিস্থিতি তাঁরা তৈরি করলো যখন সরকার সারাদেশে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনী নামালেন, তখন সেই গার্মেন্টস মালিকরা শ্রমিকদেরকে ঢাকায় ফেরার জন্য টেলিফোন করলেন এবং ৫ এপ্রিল গার্মেন্টস খোলার সিদ্ধান্ত নিলেন।
আবার দেখুন, এই সিদ্ধান্ত যখন তীব্র জনরোষের মুখে পড়লো, তখন দর্জিবাড়ির প্রধান বিজিএমইএ- এর সভাপতি অডিও বার্তার মাধ্যমে গার্মেন্টস বন্ধ রাখার আহ্বান জানালেন। তাহলে কি দেশের প্রচলিত আইন বিধিবিধান তাঁদের জন্য প্রযোজ্য নয়? এটা অবশ্য নতুন নয়। কারণ এই বিজিএমইএ-এর ভবন তাঁরা গড়ে তুলেছিলেন অবৈধভাবে, হাতিরঝিলের লেক দখল করে। যেটা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত অবৈধ ঘোষণা দিয়েছেন এবং দীর্ঘদিন টালবাহানা করে তাঁরা সেটা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন। বাংলাদেশে এই এক শ্রেনীর ব্যবসায়ী তৈরি হয়েছে, যারা শ্রমিকদের প্রাপ্য মজুরি না দিয়ে নিজেদের বিত্তের পাহাড় গড়েছেন এবং সেই পাহাড় দিয়ে তাঁরা মন্ত্রী-এমপি হচ্ছেন। তাঁদের জন্য যেন দেশের প্রচলিত আইনকানুন প্রযোজ্য নয়। বরং তাঁরা নিত্য নতুন আইন নিজেদের সুবিধামতো সৃষ্টি করছে, রাষ্ট্রের কাছে থেকে প্রণোদনার নামে ভিক্ষা নিচ্ছেন, আবার সেই ভিক্ষার টাকা যাঁদেরকে দেখিয়ে নিচ্ছেন অর্থাৎ সেই শ্রমিকদেরকেও ঠকাচ্ছেন।
বাংলাদেশে যে দর্জিতন্ত্র সৃষ্টি হয়েছে, সেই দর্জিতন্ত্র যে কতটা ভয়াবহ হতে পারে তাঁর প্রমাণ সাম্প্রতিক সময়ে করোনা সঙ্কটের মাঝে গার্মেন্টস মালিকদের অমানবিক এবং গণবিরোধী আচরণ। আর এই কারণে বাংলাদেশে করোনা মহামারি হবার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আর তাই আমাদের উৎসে যেতে হবে, বাংলাদেশে তথাকথিত যে দর্জি শিল্প সেই দর্জি শিল্পের যে হোতা তাঁদেরকে এখনই আইনের আওতায় আনতে হবে এবং আমাদের সংবিধানের যে মূল সুর- আইন সবার জন্য সমান, সেই সমান আইন তাঁদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য করতে হবে। একই সাথে তাঁরা যে রাষ্ট্রযন্ত্রের ঘাড় চেপে ধরেছে, সেই ঘাড় থেকে তাঁদেরকে নামাতে হবে। নাহলে আমাদের সামনে আরো বড় বিপর্যয় অপেক্ষা করছে।
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি যেকোনো উপায়ে ক্ষমতায় আসার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাদের নেতারা হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খানের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। বিবৃতিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিবৃতির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের কাতারে দাঁড়িয়ে রাজনীতি করে; জনকল্যাণে পরিকল্পনা গ্রহণ ও কর্মসূচি নির্ধারণ করে। আমরা সর্বদা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ। অন্যদিকে বিএনপি গণবিরোধী রাজনীতি করে আসছে। রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকাকালে তারা জনগণকে শত্রুজ্ঞান করে শাসন-শোষণ ও অত্যাচারের স্টিম রোলার চালিয়েছিল। সন্ত্রাস ও উগ্র-জঙ্গিবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করে সারাদেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। আর এখন সাংবিধানিকভাবে বৈধ ও গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগারের মাধ্যমে বিভ্রান্তি ও নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা করে জনগণকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ক্ষমতায় যাওয়ার অপচেষ্টা করছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি গণবিরোধী রাজনীতি করে আসছে। রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকাকালে তারা জনগণকে শত্রুজ্ঞান করে শাসন-শোষণ ও অত্যাচারের স্টিম রোলার চালিয়েছিল। সন্ত্রাস ও উগ্র-জঙ্গিবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে সারা দেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। আর এখন সাংবিধানিকভাবে বৈধ ও গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগারের মাধ্যমে বিভ্রান্তি ও নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা করে জনগণকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ক্ষমতায় যাওয়ার অপচেষ্টা করছে।
বিএনপি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে সরকারবিরোধী তথাকথিত আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস-সহিংসতার পথ বেছে নেয় বলে দাবি করে কাদের বলেন, বিএনপি ও তার দোসরদের সন্ত্রাসী ও ক্যাডারবাহিনী সরকারের সুসমৃণ পথচলা এবং দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত করার লক্ষ্যে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের মাধ্যমে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। তাদের প্রধান লক্ষ্যবস্তু দেশের জনগণ ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা প্রত্যক্ষ করেছি, পূর্বের ধারাবাহিকতায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের নামেও তারা অগ্নি সন্ত্রাসের মাধ্যমে নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করেছে। আর দেশের আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী ও মহামান্য আদালত জনগণের নিরাপত্তা ও শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় পদক্ষেপ গ্রহণ করলে বিএনপি নেতারা সেটাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা চালায়।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি প্রকৃতপক্ষে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন, সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়া তাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত। বিএনপি ক্ষমতায় থেকে নিজেদের সন্ত্রাসী ও ক্যাডারবাহিনীর পাশাপাশি বাংলা ভাইয়ের মতো দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীর সৃষ্টি করেছিল এবং তাকে রক্ষা করার জন্য’ বাংলা ভাই মিডিয়ার সৃষ্টি’ বলে উড়িয়ে দিয়েছিল। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিচালিত সরকার জনগণের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নিতে বদ্ধপরিকর।
বিবৃতিতে কাদের বলেন, শেখ হাসিনা জগদ্দল পাথরের মতো জেঁকে বসা বিচারহীনতার সংস্কৃতির অর্গল ভেঙে বিচারের সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। সন্ত্রাসী বা অপরাধী যে-ই হোক তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। রাজনৈতিক বক্তব্যের আড়ালে সন্ত্রাসীদের রক্ষার অপকৌশল সফল হবে না।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ক্ষমতা বিএনপি
মন্তব্য করুন
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তকে
উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে উপজেলার বিএনপিপন্থি দুই প্রার্থীকে
শোকজ করা হয়েছে।
বিএনপি থেকে শোকজ করা দুই প্রার্থী হলেন, চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর
রহমান তুষার (কাপ পিরিচ প্রতীক) ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসা (চশমা প্রতীক)।
গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র অফিসিয়াল
প্যাডে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর
নোটিশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির
সভায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিএনপি নেতা হিসেবে
আপনি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। নির্বাচনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার এহেন মনোবৃত্তি সম্পূর্ণরূপে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং দলের
প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে জালিয়াতির নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য
আপনার বিরুদ্ধে কেন দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা
হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যকোনো মাধ্যমে পত্র প্রাপ্তির কিংবা ফোনে অবহিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার
মধ্যে যথাযথ কারণ দর্শিয়ে একটি লিখিত জবাব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় বরাবর
নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাচনে
চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নং বয়ড়া ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান মো. জাহিদুর রহমান তুষার বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলীয়ভাবে কারণ
দর্শানোর নোটিশ হাতে পেয়েছি। যথাযথ সময়ে আমি নোটিশের জবাবও দেব। তবে ৮ মে উপজেলা পরিষদ
নির্বাচনে আমি জনগণের চাপে পড়ে প্রার্থী হয়েছি। দলীয় সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, জনগণের
ভালোবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব। আমি টানা ১৯ বছর
বয়ড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করেছি। যার ফলে পুরো উপজেলায় আমার
একটা অবস্থান রয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা ও দোয়া
নিয়েই আমি আগামীতে পথ চলতে চাই। আশা করি, এ নির্বাচনে আপামর জনগণ আমার পাশে থাকবে এবং
নির্বাচনে ভালো কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপিপন্থি ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সদস্য
ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন মুসাকে একাধিকবার মুঠোফোনে
কল দিলেও রিসিভ হয়নি।
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি যেকোনো উপায়ে ক্ষমতায় আসার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাদের নেতারা হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খানের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। বিবৃতিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিবৃতির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি।