নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৫৯ পিএম, ২৪ মে, ২০২০
সারা দেশেই করোনা ছড়িয়ে পড়েছে। আর ঢাকা মহানগরীতে করোনা পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ। চট্টগ্রামে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা এবং ৬৪টি জেলায়ই সংক্রমিত হয়েছে কোভিড-১৯। কিন্তু এর মধ্যে দেখা যাচ্ছে যে, তিনটি জেলায় করোনা রোগীর সংখ্যা অনেক কম। প্রথমে পার্বত্য জেলাগুলোতে করোনা কম ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পার্বত্য জেলাগুলো তাদের অবস্থান ধরে রাখতে পারেনি। এখন সেই এলাকাগুলোতে করোনা পরিস্থিতি বাড়ছে।
বাংলাদেশে ২৩ মে পর্যন্ত আইইডিসিআর এর তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এ পর্যন্ত সবচেয়ে কম করোনায় আক্রান্ত হয়েছে সিরাজগঞ্জ। এখানে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৯ জন। দ্বিতীয় সর্বনিন্ম হল বাগেরহাটে, সেখানে ১৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এবং ভোলায় আক্রান্ত হয়েছে ১৪ জন।
আমরা এই তিনটি জেলাতে কেন আক্রান্তের সংখ্যা কম সেটা বিশ্লেষণ করতে যেয়ে দেখেছি, এই জেলাগুলোতে আমলাতান্ত্রিক নয় বরং জনপ্রতিনিধিদের উদ্যোগে রাজনৈতিকভাবে মানুষকে সচেতন করা হয়েছে। এবং জনগণকে ঘরে থাকা, লকডাউন করা বা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। রাজনৈতিক কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। এবং আমলাতান্ত্রিক বিধি ব্যবস্থা, নির্দেশনা এখানে কম গুরুত্ব পেয়েছে। আর এই কারণেই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কম বলে অনুসন্ধানে বিশ্লেষণ করে পাওয়া গেছে।
সিরাজগঞ্জ
সিরাজগঞ্জ জেলায় মোট নির্বাচনী আসন ছয়টি। এখানে আলোচিত এমপি মোট দুইজন। একজন হলেন আলোচিত মোঃ নাসিম, আরেকজন হলেন ডা. হাবিবে মিল্লাত। দুইজনই শুরু থেকে করোনা পরিস্থিতি সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। বিশেষ করে হাবিবে মিল্লাত একজন চিকিৎসক হওয়ার কারণে তিনি এলাকাবাসীর কাছে করোনা মোকাবেলার জন্য নানা রকম নির্দেশনা শুরু থেকেই দিচ্ছিলেন। অন্যদিকে আওয়ামীলীগের হেভিওয়েট নেতা মোঃ নাসিম জনগন যাতে ঘরে থাকে, একজন যাতে আরেকজনের সাথে মেলামেশা না করেন ইত্যাদি নির্দেশনা তার কর্মীদের মাধ্যমে নিয়মিত দিচ্ছিলেন। যার ফলে ঐ এলাকাগুলোতে লোকজন সচেতন হয়েছিলেন। এখনো পর্যন্ত সেখানে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রিত।
বাগেরহাট
বাংলাদেশে দ্বিতীয় কম সংক্রমিত জেলা বাগেরহাট। বাগেরহাটে মোট তিনটি নির্বাচনী আসন রয়েছে। এই তিনটি আসনের এমপি হলেন একটিতে শেখ হেলাল, অন্যটিতে তার ছেলে শেখ তন্ময় ও অন্যটিতে হাবিবুন নাহার উপমন্ত্রী, বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়। এবং এখানেও শুরু থেকে শেখ হেলাল এবং শেখ তন্ময় জনগণকে করোনায় সচেতন করার ব্যাপারে উদ্যোগ নিয়েছিলেন। লোকজন যাতে ঘর থেকে বের না হয় সেজন্য শেখ তন্ময় চিকিৎসক যাবে বাড়ি শিরোনামে একটি উদ্যোগ গ্রহণ করেন। অসুস্থদের চিকিৎসার জন্য ডাক চিকিৎসকরাই মানুষের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে যাচ্ছে। এছাড়াও যে কোন মানুষ বাইরে থেকে আসলে তারা যেন কোয়ারেন্টাইনে থাকেন, কারও অসুখ বিসুখ বা অসুস্থতা হলে, উপসর্গ দেখা দিলে তিনি যেন সেটি গোপন না করেন সেই নজরদারি এবং বাগেরহাট জুড়ে ছিল রাজনৈতিক উদ্যোগ। শেখ হেলাল ও শেখ তন্ময়ের নেতৃত্বে কর্মীরা এ ব্যাপারে মোটামুটি একটা জাগরণ তৈরি করেছিলেন। যার ফলে মানুষ সচেতন। বিদেশ থেকে আসা, বাইরে থেকে আসা ইচ্ছেমতো যেখানে সেখানে ঘুরতে পারছেন না। পুরো শহরে স্বাস্থ্যবিধি মানা এবং ঘরে থাকার বিষয়টি ভালোভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।
ভোলা
ভোলায় মোট আসন ৪টি এবং এই চারটি আসনের মধ্যে এখানে আওয়ামীলীগের হেভিওয়েট নেতা তোফায়েল আহমেদ, সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব এবং নুরুন্নবী চৌধুরী হলেন আলোচিত তিন এমপি মন্ত্রী। শুরু থেকেই ভোলা আলোচিত ছিল অন্য কারণে। তোফায়েল আহমেদের নেতৃত্বে ভোলার সব এমপিরা দুঃস্থ দুর্গত মানুষ যাতে কোন রকম খাবারের কষ্টে না থাকে তা নিশ্চিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। একই সঙ্গে সঙ্গে মানুষকে সচেতন করা স্বাস্থ্যবিধি যাতে মেনে কেউ বের না হয় সেদিকেও কঠোর নজড়দারি ছিল।
বিশ্লেষকরা বলছেন যখন একটা মানুষকে খাবারের জন্য বেরুতে হয় না, তার ঘরে যখন খাবার পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে তখন তিনি রোগ শোকের ঝুঁকি নিয়ে ঘর থেকে বেরুবেন কেন? আর এটিই ঘটেছে ভোলায়। প্রথমদিকে ভোলা ত্রান তৎপরতার দিকে এগিয়েছিল এখন দেখা যাচ্ছে সেখানে মাত্র ১৪ জন রোগী রয়েছে।
এই তিনটি জেলার উদাহরণ একটি বিষয় স্পষ্ট করে দেয় করোনার মতো সঙ্কটগুলো মোকাবেলায় রাজনৈতিক উদ্যোগ অত্যন্ত জরুরী। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় রাজনীতিকরা জনগণকে উদ্বুদ্ধ করত, তাহলে পরে মানুষ অনেক সচেতন হতো। আমলাতান্ত্রিক বিধি নিষেধ ও আইন নির্দেশনা দিয়ে বাঙালি জাতিকে ঘরে রাখা একটা দুঃশক্ত ব্যাপার। যেটি এবার করোনা মোকাবেলায় প্রমাণিত হয়েছে। বরং যোগ্য রাজনৈতিক নেতৃত্ব মানুষকে আস্থায় নিয়ে এই ধরণের নির্দেশনা দিলে সেটি ইতিবাচকভাবে ফল দিবে। এটিই তিনটি জেলার করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি দেখে আরও স্পষ্ট হল।
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।
উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।