নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ২৭ মে, ২০২০
করোনা সঙ্কটে আওয়ামী লীগকে পর্যদুস্ত করার এক কৌশল নিয়েছে বিএনপি। বিশেষ করে করোনার সংক্রমণ বাড়ার সাথে সাথে বিএনপির নেতারা সরকারের সমালোচনা করছেন প্রতিদিনই। বিএনপি নেতারা বিশেষজ্ঞদের মতো সরকারকে আক্রমণ করছে এবং সরকারকে ব্যর্থ হিসেবে চিহ্নিত করার জন্য যারপরনাই চেষ্টা করছে। এর প্রতিবাদে আওয়ামী লীগের নেতারা বিক্ষিপ্তভাবে কিছু কথাবার্তা বললেও আওয়ামী লীগের এই সমস্ত কথাবার্তায় কোন ছন্দ ছিল না, কেবল ছিল আত্মরক্ষার কৌশল। অথচ গত ১২ বছর ধরেই আওয়ামী লীগ আক্রমণাত্মক অবস্থায় ছিল এবং আওয়ামী লীগ জোটবদ্ধ অবস্থায় থাকার কারণে বিএনপিকে প্রায় পর্যদুস্ত করে রেখেছিল। বিএনপি দৃশ্যত জনবিচ্ছিন্ন এক রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছিল। করোনা সঙ্কটের সময় বিএনপি যেমন আগের থেকে চাঙ্গা হয়েছে তেমনি প্রতি পদে পদে সরকারের সমালোচনা করছে। এই সমালোচনার জবাবে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে যা বলা হচ্ছে তা স্রেফ আত্মরক্ষামূলক। ওবায়দুল কাদের বলছেন এখন আমাদের সমালোচনা করার সময় নয়, কাঁদা ছোড়াছুঁড়ির সময় নয়, এখন রাজনৈতিক বিরোধের সময় নয় ইত্যাদি কথা। এসমস্ত কথায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হতে পারছে না, এই সমস্ত কথাবার্তায় আওয়ামী লীগের দূর্বলতাই প্রকাশ পাচ্ছে। আর এই পরিস্থিতির এখন অবসান হতে যাচ্ছে বলেই আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলেছেন এবং আওয়ামী লীগকে সচল করার জন্য উদ্যোগ নিয়েছেন, ফলে আওয়ামী লীগের নেতারা মাঠে নামছেন। একাধিক বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, করোনার শুরু থেকেই আওয়ামী লীগ মাঠে রয়েছে, তবে তাতে ইতিবাচক ঘটনাগুলো যত না প্রকাশ পেয়েছে, নেতিবাচক ঘটনাগুলো তাঁর থেকে বেশি সামনে এসেছে। আর এই কারণেই এখন আওয়ামী লীগ দৃশ্যমানভাবে মাঠে নামার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, খুব শীঘ্রই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বা সীমিত আকারে হলেও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। প্রেসিডিয়াম কমিটির পক্ষ থেকে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এই বৈঠকের মাধ্যমে সারাদেশের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যেন করোনা মোকাবেলায় কাজ করে সেজন্য গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দেওয়া হবে। আওয়ামী লীগের সূত্রে জানা গেছে যে, মূলত তিন ভাবে আওয়ামী লীগ মাঠে থাকবে এবং কাজ করবে।
প্রথমত, করোনা মোকাবেলায় মানুষদের সচেতন করা এবং মানুষ যেন পরীক্ষা করায়, কারো উপসর্গ থাকলে তাঁরা যেন গোপন না করে এবং পরীক্ষা করানোর ক্ষেত্রে যেন জটিলতা না তৈরি হয়, অসুস্থ মানুষ যেন চিকিৎসা পায়- এজন্য আওয়ামী লীগ অনেকটা স্বেচ্ছা শ্রমের মাধ্যমে মানুষের পাশে দাঁড়াবে। ইতিমধ্যে বিক্ষিপ্তভাবে জানানো হলেও সামনের দিনগুলোতে আওয়ামী লীগ দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সাংগঠনিকভাবে কাজগুলো করবে। দূর্গত মানুষের জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের পাশাপাশি সমন্বিতভাবে ত্রাণ বিতরণ কাজ করবে। এভাবে আওয়ামী লীগের ত্রাণ কমিটি গঠিত হয়েছে। কিন্তু এই ব্যাপারে কাজগুলো সমন্বিতভাবে হচ্ছেনা বলে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা মনে করেন। এই কাজ সমন্বিত করার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে এবং তারা এলাকায় যেন দলগতভাবে যায়, মূল সংগঠন ছাড়া অন্যান্য অংগসহযোগী সংগঠনগুলোও যেন একসাথে কাজ করে একটি কর্মকৌশল নিয়ে আওয়ামী লীগ সে পথে এগোচ্ছে।
দ্বিতীয়ত, প্রতিপক্ষকে মোকাবেলা করা। এই করোনা সঙ্কটের সময় নানা রকম ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আওয়ামী লীগের সমালোচনা হচ্ছে। এই সমালোচনার জবাব নয়, বিএনপি যে করোনার সময়ে পাশে নেই এবং শুধুমাত্র টেলিভিশন এবং গণমাধ্যমের মাধ্যমে আহাজারি করছে সেই বিষয়টি জনগণের মাঝে জানানোর উদ্যোগ নিয়েছে আওয়ামী লীগ। মূলত আওয়ামী লীগের অঙ্গসহযোগী সংগঠনগুলোকে এই কর্মসূচীর ভেতরে অন্তর্ভূক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
সর্বশেষ আওয়ামী লীগের যারা মিত্র রাজনৈতিক দল আছে। যেমন ১৪ দল, মহাজোট তাঁদেরকে নিয়ে আওয়ামী লীগ যেন ঐক্যবদ্ধভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য খুব শীঘ্রই রাজনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ করবে বলে জানা গেছে।
এভাবে আওয়ামী লীগ খোলস ছেড়ে বেরোতে চায় এবং করোনা সঙ্কটের সময় আওয়ামী লীগ যে ব্যাকফুটে গিয়েছিল সেখান থেকে আওয়ামী লীগ বেরিয়ে দ্রুতই রাজনৈতিক মাঠে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চায় বলে জানা গেছে।
বাংলা ইনসাইডার
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।