নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৫৮ পিএম, ২৮ মে, ২০২০
বাংলাদেশের মন্ত্রিসভায় রদবদলের গুঞ্জন ছিল এবং অনেকেই যারা দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ ছিলেন তাঁদেরকে সরিয়ে দিয়ে মন্ত্রিসভায় যোগ্য এবং দায়িত্ব পালনে সক্ষম ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করার গুঞ্জন ছিল। কিন্তু একটি সঙ্কটকালীন সময়, এরপর রমজান এবং ঈদের কারণে কোন পরিবর্তন হয়নি। তবে সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র ইঙ্গিত দিয়েছে যে, মন্ত্রিসভায় একটি বড় ধরণের রদবদল এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেকোন সময় মন্ত্রিসভায় রদবদল করতে পারেন।
আগামী ১১ই জুন বাজেট পেশ করা হবে সংসদে, বাজেটের আগে নাকি বাজেটের পরে মন্ত্রিসভায় রদবদল হবে তা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, প্রধানমন্ত্রী অর্থনীতিকে যেভাবে গুরুত্ব দিয়েছেন এবং করোনাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে করোনার সাথে বসবাসের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা বাস্তবায়নের জন্য একটি দক্ষ, অভিজ্ঞ এবং দায়িত্ব পালনে সক্ষম মন্ত্রিসভা দরকার এবং এটাই শেখ হাসিনা করবেন বলে জানা গেছে। শেখ হাসিনা একটি সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা নিয়েছেন এবং সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই সবকিছু খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আর তা বাস্তবায়নের জন্যই মন্ত্রিসভায় রদবদল হতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো উদাহরণ টেনে বলছে যে, ২০১৪ সালে যখন বিএনপি-জামায়াতের তাণ্ডব শুরু হয়েছিল, তখন শেখ হাসিনা মন্ত্রিসভায় রদবদল করে হেভিওয়েটদের মন্ত্রিসভায় স্থান দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। সে সময় তোফায়েল আহমেদ, হাসানুল হক ইনু, আমির হোসেন আমুদের মন্ত্রিসভায় যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। যদিও সেই মন্ত্রিসভায় হাসানুল হক ইনু বাদে বাকি দুইজন মন্ত্রিসভায় যোগদান করেননি। কিন্তু ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর গঠিত মন্ত্রিসভায় তোফায়েল আহমেদ, আমির হোসেন আমু, মোহাম্মদ নাসিমের মতো হেভিওয়েটরা স্থান পেয়েছিলেন। এখন সরকার ত্রিমূখী সঙ্কটে রয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। প্রথম সঙ্কট হচ্ছে, করোনা পরিস্থিতি কতটা ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করবে তা আমাদের অজানা, যদি সেরকম পরিস্থিতি হয় তাহলে সেটাকে মোকাবেলা করার জন্য রাজনৈতিক প্রজ্ঞান ব্যক্তিদের দরকার।
দ্বিতীয়ত, অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবেলা করা। গত দুই মাস সবকিছু বন্ধ থাকার ফলে এমনিই বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সঙ্কটে পড়েছে। অভিবাসন খাতে একটি বড় ধরণের ধ্বস নেমেছে। এর ফলে বিদেশি রেমিটেন্স আসা উদ্বেগজনকভাবে কমে গেছে। এছাড়া আমাদের রপ্তানি আয়ের উপর একটি নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। কাজেই এইসময়ে এমন লোকদের দরকার যারা অভিজ্ঞ এবং আন্তর্জাতিক দেনদরবারে প্রজ্ঞার পরিচয় দিতে পারবেন।
আর তৃতীয়ত, এই সঙ্কটকে কাজে লাগিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করবে। একারণে রাজনৈতিক মাঠ যেন বিরোধী দল দখল করতে না পারে সেজন্য হেভিওয়েট নেতাদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া প্রয়োজন। এই বাস্তবতা থেকেই আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন ছক কষছেন বলে আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। নতুন মন্ত্রিসভায় অনেক চমক আসতে পারে, গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পেতে পারেন অনেক হেভিওয়েটরা, পাশাপাশি রাজনৈতিকভাবে যারা অবদান রাখতে পারবেন এবং রাজনৈতিকভাবে যারা গুরুত্ব বহন করে এরকম কিছু ব্যক্তিদেরকেও মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে।
একটি সূত্র ইঙ্গিত দিয়েছে যে, মন্ত্রিসভার আকৃতি বড় হতে পারে এবং প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে একজন মন্ত্রীর সঙ্গে একজন প্রতিমন্ত্রী দেওয়া হতে পারে। যেন একজন ব্যর্থ হলে অন্যজন দায়িত্ব সচল রাখতে পারে। সাম্প্রতিক সময়ের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে যে, যে মন্ত্রণালয়গুলোতে প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রী নেই, সেই মন্ত্রণালয়গুলোতেই কাজের গতি অপেক্ষাকৃত কম। প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রী থাকলে মন্ত্রণালয়ে প্রতিযোগিতা হচ্ছে এবং কাজ ভালো হচ্ছে। এই বাস্তবতায় গুরুত্বপূর্ণ কিছু মন্ত্রণালয় ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। তবে আওয়ামী লীগের একটি দায়িত্বশীল সূত্র বলেছে যে, মন্ত্রিসভার রদবদলটা সম্পূর্ণভাবে প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব এখতিয়ার এবং তাঁর একক সাংবিধানিক অধিকার। তাই তিনি কখন, কিভাবে মন্ত্রিসভার রদবদল করবেন তা তাঁর একান্তই নিজস্ব ব্যাপার।
তবে একাধিক সূত্র বলছে, ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভার রদবদলের প্রাথমিক কাজ শুরু করেছেন। এখন দেখার বিষয় কিভাবে, কখন এই মন্ত্রিসভার রদবদল হয় এবং কারা মন্ত্রিসভার নতুন সদস্য হিসেবে যোগদান করেন বা কারা বাদ পড়েন।
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।