নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০৪ পিএম, ২৮ মে, ২০২০
এটা এখন স্পষ্ট যে, করোনার সঙ্গে বসবাস এবং করোনাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বেঁচে থাকার সিদ্ধান্তটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারই। প্রধানমন্ত্রী একজন দুরদর্শী রাজনীতিবিদ। তিনি শুধু দেশের নেতা নন, বিশ্বনেতাও বটে। কাজেই তিনি নিশ্চয়ই সবকিছু ভেবেচিন্তে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং জীবন-জীবিকার দোটানার মধ্যে তিনি জীবিকাকেই বেঁছে নিয়েছেন। অবশ্য প্রধানমন্ত্রী যে, করোনাকে অস্বীকার করে সবকিছু স্বাভাবিক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ব্যাপারটি তেমন নয়। বরং তিনি ‘আপনার সুরক্ষা আপনার হাতে’- এই নীতিতে জনগণকে কিছু দায়িত্ব দিয়েছেন। জনগণের বেঁচে থাকার জন্য যেমন তাঁর অর্থনৈতিক গতি দরকার, কাজ দরকার, দিনের পর দিন যেমন তাঁর ঘরে বসে থাকা সম্ভব নয়, তেমনি তাঁর নিজের সুরক্ষাও তাঁর নিজের। আর এজন্য শেখ হাসিনা সবকিছু খুলে দেওয়ার একটি নতুন মডেল উপস্থাপন করেছেন জাতির সামনে। আর এই মডেল সফল করার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র সরকারের ভূমিকা নয়, জনগণের ভূমিকাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা জানি যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি শান্তির দর্শন রয়েছে যেটা জনগণের ক্ষমতায়ন। এই জনগণের ক্ষমতায়ন সর্বসম্মতিক্রমে জাতির সামনে গৃহীত হয়েছিল।
আমরা যদি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জীবন বিশ্লেষণ করি তাহলে দেখা যাবে যে, তিনি জনগণকে সঙ্গে নিয়েই সবকিছু করেছেন। এবারও যে সবকিছু খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত তাতে একটি বড় অনুষঙ্গ জনগণ। কারণ জনগণ যদি সচেতন থাকে, জনগণ যদি সঠিকভাবে তাঁদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে, নিজেদের সুরক্ষার বিষয়টা যদি প্রতিপালন করে তাহলে হয়তো বাংলাদেশে করোনা যে তাণ্ডব, সেই তাণ্ডব থেকে আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারবো এবং স্বাভাবিক জীবনে থেকেও করোনা আমাদের জন্য বড় ধরণের কোন হুমকি তৈরি করতে পারবে না। আর যদি আমরা স্বাস্থ্যবিধি না মানি, আমরা যদি নিজেদের সুরক্ষার ব্যবস্থা নিজেরাই না করি, আমরা যদি সচেতন না থাকি তাহলে বাংলাদেশের জন্য বড় সঙ্কট অপেক্ষা করছে। কাজেই শেখ হাসিনা এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে কার্যত জনগণের হাতেই ক্ষমতা তুলে দিলেন এবং জনগণকেই তাঁর সিদ্ধান্ত গ্রহণের কেন্দ্রবিন্দুতে আনলেন এবং এর ফলে প্রশ্ন উঠেছে যে, শেখ হাসিনা কি বেশি ঝুঁকি নিলেন? সরকারের পক্ষ থেকে আজ যে প্রজ্ঞাপনটি জারি করা হয়েছে, তাতে স্বাস্থ্যবিধি মানার করণীয় ব্যাপারগুলো উল্লেখ করা হয়েছে। প্রশ্ন হলো যে, এই কাজগুলো করতে হবে জনগণকে। জনগণ এই কাজগুলো করার জন্য কতটা প্রস্তুত, কতটা দায়িত্ববান, কতটা সচেতন? আমরা এর আগেও দেখেছি যে গত ২৬শে মার্চ যখন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হলো তখন আমরা দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেইনি, আমরা সচেতনতার পরিচয় দেইনি। বরং এই ছুটিকে আমরা এক ধরণের বিনোদন হিসেবে গ্রহণ করেছি। আমরা বাজারে গেছি, কেনাকাটা করেছি, ব্যাংকে গিয়েছি, এখানে-সেখানে ঘোরাঘুরি করেছি। এখন আমরা যখন দ্বিতীয় পর্যায়ে গেলাম, যখন সরকার সবকিছু খুলে দিল, তখন আমরা কতটুকু দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে পারবো সেটাই দেখার বিষয়।
সরকার জনগণের উপর এতবড় দায়িত্ব দিয়ে কি বেশি ঝুঁকি নিয়ে ফেললো? কারণ জনগন যদি দায়িত্বশীল- সচেতন না হয়, স্বাস্থ্যবিধি না মানে তাহলে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের যে প্রজ্ঞাপন তা ব্যার্থ হেতে বাধ্য। সামাজিক সংক্রমণ দ্রুত বেড়ে যেতে বাধ্য। আর আমরা যদি সচেতন থাকি, দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেই, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি তাহলে করোনা আমাদের খুব বড় ধরণের সমস্যা তৈরী করবে না বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। সেই জন্যই শেখ হাসিনা প্রত্যেকটি মানুষকে দায়িত্ববান করলেন, প্রত্যেকটি মানুষের হাতে দেশের সুরক্ষার দায়িত্ব তুলে দিলেন, এটি কি তিনি ঝুঁকি নিয়ে ফেললেন? বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো দেশে, যেখানে মানুষ এখনো সচেতন নয়, যে দেশের মানুষ এখনো করোনার মহামারি কতটা ভয়ঙ্কর সে সম্পর্কে জানে না।
আমরা লক্ষ্য করেছি যে, এই করোনার শুরু থেকেই শেখ হাসিনা কঠিন কঠোর পথে যাননি। তিনি অন্যান্য দেশগুলোর মতো কারফিউ-লক ডাউন করেননি, তিনি পুলিশ দিয়ে পিটিয়ে মানুষকে ঘরে তোলার পদ্বতি গ্রহণ করেননি। তার প্রতিটি পদক্ষেপের দুটি দিক ছিলো; একটি হলো, জনগন নিজেরা বুঝে কাজটি করুক। দ্বিতীয়, মানুষের যেন রুটি রুজির পথ বন্ধ না হয়ে যায় সেদিকে খেয়াল রাখা। এটি করতে গিয়ে সম্ভবত শেখ হাসিনা এই ঝুঁকিটি নিয়েছেন।
শেখ হাসিনা যে সিদ্ধান্তটা নিয়েছেন সেটা সফল করা একা সরকারের কাজ না। একা সরকারের পক্ষে সম্ভবও না। এই সিদ্ধান্তটি একটি পার্টনারশিপ। যেখানে জনগন এবং সরকারের যৌথ অংশগ্রহণ প্রয়োজন। সরকার তার কাজ করলেও জনগণ যদি তার কাজটুকু না করে, স্বাস্থ্যবিধি না মানে, মাস্ক ব্যবহার না করে নিজের সুরক্ষা না করে- তাহলে যে কোন অঘটন ঘটতে পারে। কাজেই জনগনের সঙ্গে যৌথভাবে দায়িত্ব বন্টনের যে সিদ্ধান্তটি নেওয়া হলো, তা কি বেশি ঝুঁকি হলো না? শেখ হাসিনা কি বেশি ঝুঁকি নিয়ে ফেললেন না? এই প্রশ্ন উঠতেই পারে।
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।
উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।