নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ৩০ মে, ২০২০
আগামীকাল থেকে সবকিছু খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং সরকার অর্থনীতিকে সচল রাখার জন্যে একটি ঝুঁকি নিয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে যখন করোনা সংক্রমণ উর্ধ্বমূখী তখন সরকার সবকিছু খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত কেন নিলো এই প্রশ্ন উঠেছে অনেকের মধ্যে। সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল মহল মনে করছে যে, বাংলাদেশের অর্থনীতি দীর্ঘদিন বন্ধ থাকলে তাঁর একটি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং করোনার ক্ষতির চেয়ে অর্থনৈতিক ক্ষতি ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। এই সমস্ত বাস্তবতা বিবেচনা করেই সরকার সবকিছু খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে ঝুঁকিপূর্ণ এই সিদ্ধান্ত হিতে বিপরীত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেক বিশ্লেষক। তাঁরা মনে করছেন, এই খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের ফলে সরকার আরো নতুন সঙ্কটে পড়তে পারে। এই নতুন সঙ্কটের ধরন-প্রকৃতিকে ৫ভাগে ভাগ করছেন বিশ্লেষকরা।
১. জনস্বাস্থ্যের সঙ্কট
করোনা শনাক্ত রোগী এভাবে বাড়তেই থাকলে তাহলে করোনায় মুমূর্ষূ রোগীর সংখ্যা বাড়বে, মৃত্যুহার বাড়বে, হাসপাতালগুলোতে জায়গা দেওয়া দুষ্কর হয়ে পড়বে। শুধু করোনা নয়, অন্যান্য চিকিৎসা প্রদানও কঠিন হয়ে পড়বে। ফলে এটা সরকারের উপর একটি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং সরকারকে জনস্বাস্থ্যের সঙ্কটে ফেলবে।
২. রাজনৈতিক সঙ্কট
সবকিছু খুলে দেওয়ার ফলে একটি নেতিবাচক মনোভাব এবং এক ধরণের অনাস্থা তৈরি হবে এবং এই সুযোগ কাজে লাগানোর চেষ্টা করবে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। তাঁরা সরকার জনবান্ধব নয়, সরকার জনগণের কথা চিন্তা করেনা ইত্যাদি কথাবার্তা বলতে শুরু করবে, যা ইতিমধ্যে বিএনপি বলতে শুরু করেছে। ফলে সরকারের উপর একটি রাজনৈতিক চাপ বাড়বে এবং করোনা সঙ্কটের পাশাপাশি এই সঙ্কটও মোকাবেলা করতে হবে সরকারকে।
৩. অর্থনৈতিক সঙ্কট
অর্থনীতিকে সচল রাখার জন্য সরকার সবকিছু খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে এই সিদ্ধান্তে অর্থনৈতিক সঙ্কটের মুখে পড়তে পারে সরকার। কারণ করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয়। কাজেই ব্যবসা-বাণিজ্য স্বাভাবিক হবেনা। আর এই কারণে ক্ষুদ্র-মাঝারি প্রতিষ্ঠানগুলো বড় ধরণের ছাঁটাই প্রক্রিয়া শুরু করবে। সীমিত আকারে অফিস-আদালত চালু করতে গিয়ে প্রচুর মানুষ কাজ হারাবে বলে অর্থনীতিবিদরা আশঙ্কা করছেন। সাথে সাথে ব্যবসা-বাণিজ্য স্বাভাবিক গতিতে না আসলে বা স্বাস্থ্যগত সমস্যা দেখা দিলে অর্থনীতির যে গতি সঞ্চারের আশা তা না হয়ে বিপরীত ধারা লক্ষ্য করা যেতে পারে। ফলে সবকিছু খুলে দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল তা হিতে বিপরীত হতে পারে বলে অনেকে ধারণা করছেন।
৪. বিদেশে বাংলাদেশের ইমেজ ক্ষুণ্ণ হতে পারে
বিদেশে বাংলাদেশের ইমেজ ক্ষুণ্ণ হওয়ার শঙ্কা দেখা দিতে পারে। কারণ করোনা সঙ্কট মোকাবেলার জন্য অন্যান্য দেশগুলো যে পথ এবং পদ্ধতি অনুসরণ করেছে, সেই পথ এবং পদ্ধতি বাংলাদেশের জন্য না করে সবকিছু খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের কারণে আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের ইমেজ ক্ষুণ্ণ হতে পারে। বিশেষ করে যদি দীর্ঘ সময় করোনা থাকে তাহলে বিদেশে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানি করার ক্ষেত্রে নিত্যনতুন নিষেধাজ্ঞার আশঙ্কা করা হচ্ছে এবং এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আন্তর্জাতিক মহলে নষ্ট হতা পারে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
৫. সরকারের সমন্বয়ের সঙ্কট
শেষ পর্যন্ত যদি করোনা সঙ্কট বাড়তে থাকে তাহলে রীতি অনুযায়ী আমলারা দ্বায় নেবে না, একে অন্যকে দোষারোপ করবে। কার কত ব্যর্থতা, দোষ ইত্যাদি খোঁজার প্রতিযোগিতা শুরু হবে এবং এর ফলে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং বিভাগের মধ্যে তীব্র সমন্বয়হীনতা দেখা যাবে। এর ফলে সরকারের কাজকর্মের গতি শ্লথ হয়ে যাবে, স্ববিরোধী সিদ্ধান্ত সৃষ্টি হবে। এর কারণে নতুন সঙ্কটে পড়তে পারে সরকার।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে, খুলে দেওয়ার পর আগামী ৭ থেকে ১০ দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে এই বিষয়গুলো দেখভাল করতে হবে। তাহলে যে উদ্দেশ্যে সরকার সবকিছু খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা সফল হবে।
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।