নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৫৯ পিএম, ০৮ জুন, ২০২০
গত ২৫ মার্চ ছয়মাসের জন্য বিশেষ বিবেচনায় জামিন পেয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া। জামিন পাওয়ার পর তিনি তার গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় রয়েছেন। তাকে এখন পর্যন্ত কোন প্রকাশ্য রাজনৈতিক তৎপরতায় জড়াতে দেখা যায়নি। যদিও ঈদ উপলক্ষে তিনি দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং নাগরিক ঐক্যের নেতাদের সঙ্গে দেখা করেন। কিন্তু সে সমস্ত সাক্ষাতের কোন বিবৃতি প্রকাশিত হয়নি। তিনি দেশ এবং দেশের পরিস্থিতি নিয়ে কোন আনুষ্ঠানিক বক্তব্যও এখন পর্যন্ত রাখেননি।
বেগম জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, তিনি ভিসা নিয়ে ব্যস্ত এবং শারীরিকভাবে তিনি অসুস্থ। এখন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়ানোর কোন অভিপ্রায় তার নেই। তবে বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের সূত্রগুলো বলছে, তার দেশে যে চিকিৎসা হচ্ছে তা পর্যাপ্ত নয়। এই চিকিৎসায় তার সুস্থ হয়ে উঠার সম্ভাবনা আপাতত নেই। কিন্তু যখন তিনি মুক্তি পেয়েছেন তখন সারাবিশ্ব জর্জরিত থাকায় আন্তর্জাতিক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এখন আন্তর্জাতিক কিছু কিছু যোগাযোগ চালু হয়েছে। সেই চালু হওয়ার প্রেক্ষিতেই বেগম খালেদা জিয়াকে লন্ডনে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি চলছে বলে তার পরিবার সূত্রে জানা গেছে।
বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের একজন সদস্য বলেছেন, আমরা সরকারের কাছে বেগম জিয়ার উন্নত চিকিৎসার স্বার্থে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার জন্যই আবেদন করেছিলাম। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতেই সরকার ‘মহানুভবতার’ পরিচয় দিয়ে বেগম জিয়াকে মুক্ত করেছিলেন। কিন্তু সেই সময় পরিস্থিতি অনুকুল ছিলো না। এখন আমরা বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছি। জানা গেছে লন্ডনে এখন বিদেশিদের নেওয়া হলেও অনেক শর্ত সাপেক্ষে নেওয়া হচ্ছে। এ সমস্ত শর্তের মধ্যে রয়েছে করোনার নেগেটিভ রিপোর্ট এবং ওই দেশে গিয়ে নিজ দায়িত্বে নিজ খরচে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকা। আর এই শর্তগুলো পূরণ করেই বেগম খালেদা জিয়া বিদেশ যাবেন বলে জানা গেছে। কেবল লন্ডনের শর্ত পূরণ করলেই হবে না। যেহেতু বেগম জিয়া দুটি মামলায় দণ্ডিত এবং একাধিক মামলা রয়েছে। এজন্য তার বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে সরকারেরও শর্ত পূরণ করতে হবে।
সরকার যে জামিন দিয়েছে সেখানে বিদেশ যাওয়ার কোন উল্লেখ নেই। তবে এটা নিয়ে ভিন্নমত পাওয়া গেছে। অনেকে মনে করছেন যে, যেহেতু তিনি জামিন পেয়েছেন, সেহেতু তিনি চাইলে বিদেশ যেতে পারেন। আবার অনেক আইনজীবী বলছেন যে, বিদেশে যেতে হলে বেগম খালেদা জিয়াকে আবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আলাদা আবেদন করতে হবে এবং আবেদনের প্রেক্ষিতে যদি সরকার মনে করে যে তাঁর বিদেশ যাওয়া উচিত তখন তাঁকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে।
অবশ্য বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যরা বলছেন যে, বেগম খালেদা জিয়ার যে ব্যক্তিগত চিকিৎসক টিম রয়েছে তাঁরা গত ২৫শে মার্চ থেকেই নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করছেন এবং এখন তাঁর ডায়বেটিস, আর্থাইটিসের ব্যথাসহ আরো কিছু রোগের উপকার হচ্ছেনা। এই প্রেক্ষিতেই তাঁরা মনে করছেন যে, তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো উচিত। এই বিষয়টি তাঁরা সরকারকে জানিয়েছেন বলেও একটি সূত্র দাবি করেছে। সরকারের একাধিক সূত্র বলছে যে বেগম খালেদা জিয়াকে যদি লন্ডনে যেতে হয় তাহলে তাঁকে কতগুলো শর্ত পূরণ করে যেতে হবে এবং এখন পর্যন্ত বেগম খালেদা জিয়ার পরিবার আর সরকারের ভেতর এই শর্ত নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে বলেও একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। যে শর্তগুলোর সাপেক্ষে বেগম খালেদা জিয়া লন্ডনে যেতে পারবেন সেই শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে-
১. শুধু চিকিৎসাই নিতে যাবেন, চিকিৎসা শেষে আবার দেশে ফিরে আসবেন।
২. চিকিৎসা সম্পর্কে নিয়মিত রিপোর্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করতে হবে।
৩. কোন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে তিনি জড়াবেন না।
৪. বিদেশে কোন বক্তব্য/বিবৃতি দিবেন না; এমনকি কোন প্রকাশ্য সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।
৫. বিদ্যমান মামলা চলবে, তাঁর অনুপস্থিতিতেই বিচারকাজ অব্যহত থাকবে।
বেগম খালেদা জিয়ার পরিবার অবশ্য বলছেন যে, বেগম খালেদা জিয়া রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হোয়ার মতো মানসিক বা শারীরিক কোন অবস্থাই নেই। আর একারণেই বেগম খালেদা জিয়ার বোন বলেছেন যে, এখন তাঁদের লক্ষ্য একটাই। তা হলো বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা করা। আর এই সুচিকিৎসা দেশে সম্ভব হচ্ছেনা বলেই তাঁকে বিদেশ নিয়ে যেতে আগ্রহী।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক
পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনদের
মধ্যে যারা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেনি তাদের বিষয়ে সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দলীয়
নির্দেশনা অমান্য করলে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশনের ব্যাপারে চিন্তা করা হবে। সময়মতো অবশ্যই
এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আজ বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে ধানমন্ডিতে
আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, পার্টির যারা মন্ত্রী-এমপি
এমন পর্যায়ে আছেন তাদের জন্য নির্দেশনা রয়েছে, তাদের সন্তান ও স্বজনরা যেন উপজেলা নির্বাচনে
না আসে। প্রথম পর্যায়ের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় চলে গেছে। কেউ কেউ বলেছেন আমরা
বিষয়টি আরও আগে অবহিত হলে সিদ্ধান্ত নিতে আমাদের সুবিধা হতো। তারপরেও কেউ কেউ প্রত্যাহার
করেছেন, কেউ কেউ করেননি। আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচন কমিশনের যে সময়সীমা তারপরেও ইচ্ছা
করলে করতে পারবেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন,
‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও দলীয় সিদ্ধান্ত যারা অমান্য করেছে তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা
নেওয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাচনেও কিন্তু দলের সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয় আছে। দল যার যার
কর্মকাণ্ড বিচার করবে। চূড়ান্ত পর্যায় পর্যন্ত যারা প্রত্যাহার করবে না সময়মতো দল ব্যবস্থা
নেবে’।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি একতরফা কোনো
সমাবেশ করতে গেলে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিষয়টি এসে যায়। আওয়ামী লীগও একই সময়ে সমাবেশের
ডাক দেয়। তবে এটা পাল্টাপাল্টি নয়।
ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক
কার্যালয়ে হওয়া উক্ত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি
এম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, সুজিত
রায় নন্দী, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক
আমিনুল ইসলাম আমিন প্রমুখ।
মন্ত্রী-এমপি প্রার্থিতা প্রত্যাহার ওবায়দুল কাদের
মন্তব্য করুন
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায়
অভিযোগ গঠন শুনানির তারিখ পিছিয়ে আগামী ২৫ জুন ধার্য করেছেন আদালত।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক আলী হোসাইনের
আদালতে খালেদা জিয়ার অব্যাহতির বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য ছিল। কিন্তু খালেদা জিয়ার প্রধান
আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার দেশের বাইরে থাকায় অভিযোগ শুনানি পেছাতে সময়ের আবেদন
করা হয়। আদালত সময় আবেদন মঞ্জুর করে অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য নতুন করে এ তারিখ ধার্য
করেন। খালেদা জিয়ার আইনজীবী আব্দুল হান্নান ভূঁইয়া সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
জানা যায়, মামলাটিতে ১৫ জন আসামির মধ্যে ১৪ জনের অব্যাহতির বিষয়ে
শুনানি শেষ হয়েছে। গত ২৪ জানুয়ারি খালেদা জিয়ার অব্যাহতি চেয়ে শুনানি শুরু হয়।
২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর দুদকের উপপরিচালক মো. গোলাম শাহরিয়ার ১৩
জনের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে তেজগাঁও থানায় মামলাটি দায়ের করেন। ২০০৮ সালের ১৩ মে মামলাটি
তদন্ত করে জোট সরকারের প্রভাবশালী ৯ জন সাবেক মন্ত্রী ও উপমন্ত্রীসহ মোট ২৪ জনের বিরুদ্ধে
দুদকের উপপরিচালক মো. জহিরুল হুদা অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
২৪ আসামির মধ্যে সাবেক মন্ত্রী এম সাইফুর রহমান, আব্দুল মান্নান
ভুইয়া, সাবেক মন্ত্রী ও জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, খালেদা
জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো, এম কে আনোয়ার, সাবেক মন্ত্রী এম শামছুল ইসলাম, বন্দরের
প্রধান অর্থ ও হিসাবরক্ষক কর্মকর্তা আহমেদ আবুল কাশেমের মৃত্যুর পর মামলায় বর্তমানে
আসামির সংখ্যা ১৫ জন।
অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং সাবেক
বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান
কমোডর জুলফিকার আলী, সাবেক মন্ত্রী কর্নেল আকবর হোসেনের (প্রয়াত) স্ত্রী জাহানারা আকবর,
দুই ছেলে ইসমাইল হোসেন সায়মন এবং এ কে এম মুসা কাজল, এহসান ইউসুফ, সাবেক নৌ সচিব জুলফিকার
হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক সদস্য এ কে রশিদ উদ্দিন আহমেদ এবং
গ্লোবাল এগ্রোট্রেড প্রাইভেট লিমিটেডের (গ্যাটকো) পরিচালক শাহজাহান এম হাসিব, সাবেক
মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ
হোসেন।
মন্তব্য করুন
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনদের মধ্যে যারা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেনি তাদের বিষয়ে সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দলীয় নির্দেশনা অমান্য করলে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশনের ব্যাপারে চিন্তা করা হবে। সময়মতো অবশ্যই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।