নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ২৭ জুন, ২০২০
প্রখ্যাত পার্লামেন্টেরিয়ান ও সুবক্তা প্রয়াত জননেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ও অশালীন শব্দ প্রয়োগে বাকপটু যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদেরর মধ্যে বাকযুদ্ধ দিয়ে শুরু করা যাক।জাতীয় সংসদে একবার যুদ্ধাপরাধী সালাহউদ্দিন কাদের আওয়ামী লীগকে কটাক্ষ করে বলে যে, ‘আওয়ামী লীগ এমন একটা মেশিন, সে মেশিনে রাজাকারকে এ মাথা দিয়ে ঢুকালে ঐ মাথা দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা হয়ে বেরিয়ে যায়’।সাকার এই কথা শোনার পর খালেদাসহ বিএনপি নেতারা আনন্দের আতিশায্যে টেবিল চাপড়িয়ে হাত তালি দিয়ে উল্লাস প্রকাশ করতে থাকে।
এর পর ফ্লোর পান আওয়ামী লীগের সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। ফ্লোর পেয়েই সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত সালাহউদ্দিন কাদেরের কথার ক্ষুরধার পাল্টা জবাব দিতে থাকেন। তিনি প্রথমে বলেন, ‘সত্য কথা বলার জন্য আমি সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে ধন্যবাদ জানাতে চাই’। সাকাকে তিরস্কারের বদলে, ধন্যবাদ দিয়ে পুরস্কার করা দেখে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্যরা হতচকিত হয়ে গেলেও, খালেদাসহ বিএনপি নেতারা আরও খুশি হয়ে টেবিল চাপড়িয়ে উল্লাস প্রকাশ করতে লাগল। কিন্তু তারা বুঝতে পারে নাই যে, পার্লামেন্টেরিয়ান হিসাবে সুরঞ্জিত হচ্ছে ‘সাকা’র ওস্তাদ। সুরঞ্জিত এবার বলতে লাগল “তবে তিনি (সাকা) আরেকটি সত্য কথা বলেন নাই, আর সে সত্যটা হলো বিএনপি হলো এমন একটা মেশিন, যে মেশিনে মুক্তিযোদ্ধাকে এ মাথা দিয়ে ঢুকালে ঐ মাথা দিয়ে রাজাকার হয়ে বের হয়ে যায়। তার প্রমাণ এই সংসদেই আছে, ঐ দেখুন কর্ণেল অলি, মেজর হাফিজ, শাহজাহান ওমর, সাদেক খোকা প্রমূখ’।পরিশেষে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ হলো মুক্তিযোদ্ধা, দেশপ্রেমিক সৃষ্টির মেশিন আর বিএনপি হলো রাজাকার, বদর আর বেঈমান, দেশদ্রোহী সৃষ্টির মেশিন। কথায় আছে সৎ সঙ্গে স্বর্গ বাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ’।
এরশাদ ক্ষমতা দখল করার এক বছর পর ১৯৮৩ সালে সুরঞ্জিত কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে বায়তুল মোকাররম প্রাঙ্গণের জনসভায় বলেন “ভাইসব, গত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বলেছিলাম যে, ভোট পাইবো কামাল, (ড. কামাল) নির্বাচিত হইবো সাত্তার, (বিচারপতি সাত্তার) আর ক্ষমতায় যাইবো এরশাদ। আমার ভবিষ্যৎবাণী ঠিক অইছে কিনা?
নব্বইয়ের আন্দোলনে এরশাদের পতনের পর তখনও শাহ মোয়াজ্জেম জাতীয় পার্টির অন্যতম সিনিয়র নেতা। সে সময়কার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া জাতীয় পার্টি তথা এরশাদকে ‘পতিত স্বৈরাচার’ বলতে বেশি পছন্দ করতেন। তিনি বিভিন্ন জনসভায় আওয়ামী লীগকে খোঁটা দিয়ে বলতেন যে, “আওয়ামী লীগ পতিত স্বৈরাচারের সাথে মিলে ষড়যন্ত্র করছে ইত্যাদি।
তার জবাবে প্রেসক্লাবের সামনে এক সভায়, সে সময়কার জাতীয় পার্টির সিনিয়র নেতা শাহ মোয়াজ্জেম বলে যে, “আমরা স্বৈরাচার, আর তিনি আমের আচার’। তিনি খালেদাকে উদ্দেশ্য করে বলেন যে, “আমাদেরকে কথায় কথায় ‘পতিত, পতিত’ বলবেন না। আমরা ছিলাম পুঃলিঙ্গ সরকার। আপনার সরকার কিন্তু স্ত্রীলিঙ্গ। তাই মনে রাখবেন, আপনার পতনের পর লোকে কিন্তু ঐ শব্দের (পতিত) পাশে “আকার” (া) লাগিয়ে দিবে।
এরশাদবিরোধী আন্দোলনের তুঙ্গে মহাখালীতে আনাবিক শক্তি কেন্দ্রের রেস্টহাউজে দুই নেত্রী (হাসিনা, খালেদা) প্রথমবারের মত বৈঠকে বসল। এই বৈঠককে কটাক্ষ করে শাহ মোয়াজ্জেম প্রেসক্লাবে জাতীয় পার্টির নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্য বলল ‘ভয় নাই দুই নারীর মিলনে কিছু পয়দা হয় না।’ সেই শাহ মোয়াজ্জেম পরবর্তীতে খালেদার প্রিয় পা চাটা নেতা হয়েছেন।
চট্টগ্রামে বিএনপির আভ্যন্তরীণ কোন্দলে সালাহউদ্দিন প্রেসক্লাবে এক সভায় তার প্রতিদ্বন্দী আমির খসরু ও আব্দুল্লাহ নোমানের সমর্থক তারেক জিয়া ও সাদেক হোসেন খোকার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে বলল “আগে জানতাম কুকুরে (খালেদা) লেজ নাড়াতো, এখন দেখছি লেজই (তারেক) কুকুর নাড়ায়। এই সভায় সে রাখঢাক না রেখে প্রকাশ্য সাদেক হোসেন খোকাকে প্রমোদ বালক (সমকামী) ও হাইজ্যাকার হিসাবে আখ্যায়িত করে।
এ সমস্ত কথার পরিপ্রেক্ষিতে ‘সাকা’কে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়। এত অশালীন কথার পরও খালেদা ২০০১ সালের নির্বাচনের আগে ‘সাকা’কে রাউজান থেকে বিএনপির মনোনয়নে নির্বাচন করতে হাতেপায়ে ধরে। কথাটা চাউর হয়ে যাবার পর সাংবাদিকরা সালাহউদ্দিনকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করে যে, আপনি কি আবার বিএনপিতে ফিরে যাচ্ছেন? উত্তরে সালাহউদ্দিন কাদের বলেছিল- তালাক দেওয়া বিবির সাথে (খালেদা) ঘর করা হারাম।
যদিও পরবর্তীতে সে বিএনপির টিকেটে রাউজান থেকে নির্বাচন করে সন্ত্রাসের মাধ্যমে জিতেছিল এবং খালেদার সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা হিসাবে খালেদার পাশেই সে সবসময় বসত, এ দৃশ্য দুনিয়া দেখেছে।
বিএনপি`র এমপি সৈয়দা আশিফা আশরাফী পাপিয়াও অশালীন বক্তব্যের জন্য আলোচিত। সংসদে এবং সংসদের বাইরে বিরোধী দলের কাউকে নিয়ে কথা বলা মানেই তার অশালীন বক্তব্য। একটা সময় নিজ দলের নেতৃবৃন্দকে নিয়েও বলা শুরু করেছিল। তাই নিজ দল থেকেই বিতারিত হয়েছেন।
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।