নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৫৭ পিএম, ১১ জুলাই, ২০২০
আওয়ামী লীগের মধ্যে এখন তোলপাড় চলছে। আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারীরা কিভাবে ঢুকলো এবং ঢুকে দুর্নীতি ও অপকর্ম করছে সে ব্যাপারে মুখ খুলছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। আর এই সমস্ত মুখ খোলায় সমালোচনার মুখে পড়েছে আমলারা। যে সমস্ত আমলারা আওয়ামী লীগের দলীয় কর্মকাণ্ডে হস্তক্ষেপ করছে বা আমলা হওয়ার পরে যারা দলীয় বিভিন্ন ফোরামে জায়গা পাচ্ছে তাঁদের হাতেই আওয়ামী লীগের সর্বনাশ হয়েছে বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতৃবৃন্দ এবং পূর্ণকালীন রাজনীতিবিদরা।
আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন যে, একজন আমলা ওয়ান ইলেভেনের পরে জাঁকিয়ে বসেছিলেন এবং ২০০৯ সালে তিনি প্রায় উপ প্রধানমন্ত্রীর পদমর্যাদা গ্রহণ করেছিলেন। সেই আমলার দলের ভেতরের বর্তমান অবস্থা নড়বড়ে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আস্থাভাজন না হওয়ার পরেও দলের বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত এবং তাঁর হাত ধরে অনেক দুর্বৃত্তরা আওয়ামী লীগে প্রবেশ করছে। লক্ষ্মীপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র এমপি কাজী শহীদ ইসলাম পাপুলকে সমর্থন দেওয়ার পেছনে ঐ প্রাক্তন আমলার হাত রয়েছে বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের অনেক নেতারা।
আওয়ামী লীগের একটি সূত্র বলছে যে, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের আগে আমলাদের তৎপরতা এবং হস্তক্ষেপ ছিল নজিরবিহীন এবং তাঁরা বিভিন্ন জায়গায় তথাকথিত জরিপ করে জামালপুরের দীর্ঘদিনের ত্যাগী রাজনীতিবিদ এবং সাবেক ভূমিমন্ত্রী রেজাউল করিম হীরাকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। তাঁর বদলের একজন ব্যবসায়ীকে নেওয়া হয়েছিল। সে সময়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে থাকা একজন গুরুত্বপূর্ণ আমলা জামালপুরের রাজনীতিতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করেছিলেন এবং তাঁর পৃষ্ঠপোষকতায় সেই ভূয়া জরিপ করে রেজাউল করিম হীরাকে মনোনয়ন বঞ্চিত করা হয়েছিল। দীর্ঘদিনের ত্যাগী নেতাকে বাদ দিয়ে একজন ব্যবসায়ীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল স্রেফ এক ভূয়া জরিপের মাধ্যমে। এই নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে ক্ষোভ-অসন্তোষ প্রকাশ্যে কান পাতলেই শোনা যায়। ঐ আমলা শুধুমাত্র রেজাউল করিম হীরাকে বাদ দেয়নি। অনেক স্থানেই তিনি ব্যবসায়ীদের প্রতিস্থাপন করেছে এবং সেই ব্যবসায়ীর হাত ধরে প্রতারক সাহেদ দলে ঢুকেছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।
প্রতারক সাহেদকে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন বৈঠকে পাঠানোর ক্ষেত্রে ঐ আমলা সরাসরি টেলিফোন করতেন এমন তথ্যও এখন পাওয়া যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন যে, ঐ আমলা তাঁকে টেলিফোন করে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন কার্যক্রমে যুক্ত করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন এবং ঐ আমলার রুমেই দিনের অর্ধেক সময় থাকতেন প্রতারক সাহেদ। তাঁর মাধ্যমেই বিভিন্ন জায়গায় ডালপালা বিস্তার করেছিলেন সাহেদ এবং এই আমলার কারণেই আওয়ামী লীগের এমন বদনাম হয়েছে।
রাজশাহী অঞ্চলের আরেক আমলা যিনি একসময় ঢাকার ডিসি এবং ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার ছিলেন, তিনি রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের হর্তাকর্তা হয়ে উঠেছিলেন যখন তিনি সচিব ছিলেন। কে মনোনয়ন পাবে কে পাবেনা সেসব বিষয়ে তিনি নানারকম পরামর্শ দিতেন। তাঁর কারণে সেখানে স্বাধীনতাবিরোধী জামাতের অনেক নেতা আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ করেছে বলে এমন কথা রাজশাহীতে প্রকাশ্যে আলোচিত হয়। যদিও অবসর গ্রহণের পরে সেই আমলার রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এখন কমেছে।
স্বাস্থ্যখাতের আরেক দুর্বৃত্ত মিঠুর উত্থানের পেছনেও ঐ আমলার ভূমিকা রয়েছে এবং জনশ্রুতি আছে যে ঐ আমলাকে মিঠু কানাডায় একটি বাড়ি উপহার দিয়েছে। ঐ আমলা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে দীর্ঘদিন যাবত ছিলেন এবং সেসময় মিঠুর ইচ্ছেমতো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ডেস্কে লোক নেওয়া হতো। মিঠুর ইচ্ছা-অনিচ্ছায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের শেষ কথা হিসেবে বিবেচিত হতো।
বর্তমানে আরেকজন আমলার হাত ধরে সিরাজগঞ্জের রাজনীতিতে অশান্তি সৃষ্টি হচ্ছে বলে কথা এসেছে। সিরাজগঞ্জের রাজনীতিতে মোহাম্মদ নাসিম এবং ডা. মো. হাবিবে মিল্লাতের মধ্যে বিভক্তি করা এবং দুজনকে প্রতিপক্ষ তৈরি করার ক্ষেত্রে ঐ আমলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুর পর সিরাজগঞ্জে যে বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে সেই ঘটনার পেছনেও ওই আমলার হাত রয়েছে বলে সিরাজগঞ্জের একাধিক নেতা এবং এমপি অভিযোগ করেছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর কাছে।
এরকম বাস্তবতায় আমলারা কেন রাজনীতিতে নাক গলিয়ে রাজনীতিকে দূষিত করছেন এই প্রশ্ন আওয়ামী লীগের মধ্যে উঠেছে। আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলেছে যে, সরকারি কর্মকর্তারা সরকারি কর্মকর্তাদের জায়গায় থাকবে। সরকারি কর্মকর্তাদের অফিস কখনো আওয়ামী লীগ অফিস হতে দেওয়া যায় না এবং আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতা মনে করেন যে, আমলাদের অতি মাখামাখি এবং অতি আওয়ামী লীগার হয়ে যাওয়ার কারণে প্রশাসনের যেমন সর্বনাশ হচ্ছে, আওয়ামী লীগেরও তেমন ক্ষতি হচ্ছে।
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।
উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।