নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৫৯ পিএম, ১৪ জুলাই, ২০২০
বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত রিভা গাঙ্গুলি দাস শীঘ্রই চলে যাচ্ছেন। তার বদলে আগামী সেপ্টেম্বরে আসছেন নতুন রাষ্ট্রদূত বিক্রম দোরাইস্বামী। এটা কি নিছক আনুষ্ঠানিকতা, রুটিন পরিবর্তন? নাকি এর পেছনে দু- দেশের সম্পর্কের নতুন মেরুকরণের ইঙ্গিত রয়েছে? এই প্রশ্নটি উঠেছে কূটনৈতিক অঙ্গনে।
বাংলাদেশ- ভারত সম্পর্ক গত এক দশক ধরে একটা ভিন্ন মাত্রায় উপনীত হয়েছে। দুই দেশ পারস্পরিক আস্থা এবং বিশ্বাসের সম্পর্কে অটল রয়েছে। এই সম্পর্কের কারণেই দুই দেশের মধ্যে অনেকগুলো অমীমাংসীত বিষয়ের সুরাহা হয়েছে। যদিও এখনো দুই দেশের মধ্যে আরো কিছু বিষয় ফয়সালা করার রয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময় ভারত- বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে নানা রকম কথা শোনা যাচ্ছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের উষ্ণতা ভারতের কোন কোন মহলের মধ্যে দুশ্চিন্তার বলিরেখা তৈরী করেছে বলেও একাধিক কূটনৈতিক সূত্র মনে করছে। আর এ কারণে বাংলাদেশকে চাপে ফেলার কৌশল ভারত নিয়েছে কিনা সে প্রশ্নও কূটনৈতিক মহলে হরহামেশাই শোনা যায়। যদিও ভারত এবং বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সবসময় বলা হচ্ছে, দুই দেশের সম্পর্ক অত্যন্ত ভালো, দুই দেশের সম্পর্ক প্রতিদিনই উন্নতি হচ্ছে।
কিন্তু করোনা সংকটের গত চারমাসে ভারত বাংলাদেশ সম্পর্কের কোন নৈকট্যের গল্প শোনা যায়নি। এই সময় বাংলাদেশ- ভারত সম্পর্কে এক ধরণের স্থবিরতাই লক্ষ্য করা যায়। বরং এ্ করোনা সংকটের সময় বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের যে নৈকট্য এবং বন্ধুত্ব তা প্রগার হয়ে ধরা দিয়েছে। করোনা সংকটের শুরু থেকেই চীন বাংলাদেশের পাশে ছিলো। বাংলাদেশকে অনেক সাহায্য সহযোগিতা করেছে চীনের একটি চিকিৎসক দল। বাংলাদেশে চীনের চিকিৎসক এসে অবস্থান করেছে, তারা বিভিন্ন বিষয় পরামর্শ দিয়েছে। এ সময় চীন বাংলাদেশকে বেশকিছু সামগ্রী উপহার হিসেবে দিয়েছে। চীন নি:সন্দেহে বাংলাদেশের প্রধান ব্যবসায়ীক অংশীদার। বাংলাদেশের প্রায় সবগুলো উন্নয়ন প্রকল্পেই চীনের সম্পৃক্ততা রয়েছে। এই বাস্তবতায় বাংলাদেশ- চীনের যে অর্থনৈতিক ঘনিষ্ঠতা এটা ভারতের ঈর্শার কারণ কিনা এ নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। অবশ্য বাংলাদেশ একসঙ্গে ভারত এবং চীনকে মিলিয়ে কাজ করার নীতি গ্রহণ করেছিল। দুই দেশের সঙ্গেই বাংলাদেশ একটি সু- সম্পর্ক বজায় রেখেই চলছিলো। কিন্তু সাম্প্রতিক সময় চীন- ভারত টানাপোড়েনের ফলে এই মানিয়ে চলা নতুন সংকটের পড়েছে বলেও বিভিন্ন কূটনৈতিক মহল মনে করছেন। বিশেষ করে করোনা সংকটের সময় চীন এবং ভারতের যে দ্বন্দ্ব তাতে ভারত কিছুটা হলেও কোনঠাসা হয়ে পড়েছে চীনের কাছে। এই অবস্থায় চীনকে একহাত দেখিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে ভারত অন্যান্য দেশগুলো যারা চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করার কৌশল নেয় কিনা সেটা নিয়ে অনেকে আশংকা প্রকাশ করছেন। আর সে রকম চাপ সৃষ্টির কৌশল নিলে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের মেরুকরণ ঘটা অসম্ভব নয় বলেও অনেকে মনে করছেন। আর এ কারণেই বিক্রম দোরাইস্বামী নতুন রাষ্ট্রদূত আসছেন কিনা সেই প্রশ্ন উঠেছে।
তবে দুই দেশের কূটনৈতিকরা বলছেন, বাংলাদেশে ভারতের সম্পর্ক পারস্পরিক নির্ভরশীল। বিশেষ করে বাংলাদেশ যতটা ভারতের ওপর নির্ভরশীল, তার চেয়ে ভারত বাংলাদেশের ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল। কারণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার গত ১০ বছরে যে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করেছেন, তা হলো বাংলাদেশে ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আশ্রয় প্রশ্রয় সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছে। আর এর ফলে ভারতে যে বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আন্দোলন, উস্কানি এবং সহিংসতা তা অনেকাংশে কমে গেছে। এ কথা ভারতের সকল রাজনীতিবিদরাই স্বীকার করেন। আর একারণেই ভারত ইচ্ছে হলেও এখন বাংলাদেশের সঙ্গে ঝগড়া বাধাতে চাইবে না। যে কারণেই বিজেপির মতো চরম কট্টরপন্থী সরকারও আওয়ামী লীগের মতো উদারতান্ত্রীক গণতন্ত্রের রাজনৈতিক দলের সঙ্গে একটা সমঝোতার সম্পর্কেই এগিয়ে চলছে। আর এ কারণেই বাংলাদেশ- ভারতের সম্পর্কে নতুন কোন সমীকরণ হওয়ার সম্ভাবনাকে একেবারেই উড়িয়ে দিচ্ছে কূটনৈতিক মহল।
মন্তব্য করুন
জামায়াত বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
বিএনপি তারেক জিয়া উপজেলা নির্বাচন রাজনীতির খবর
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন বিএনপি তারেক জিয়া বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
জামায়াতে ইসলামও কী বিএনপিকে ধোঁকা দিল? বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট এই রাজনৈতিক দলটি ঘোষণা করেছে যে, তারা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। নিবন্ধনহীন রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা না দিলেও প্রথম পর্বে যে সমস্ত উপজেলা নির্বাচনের মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ হয়েছে সেখানে জামায়াতের ২৩ জন সদস্যের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে।
বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারছেন না বিএনপিতে কী ঘটছে। কিন্তু দলের ভিতর যারা রয়েছেন তারা বলছেন, দলের ভিতরে এক প্রকার দম বন্ধ এবং শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা বিরাজ করছে। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে প্রশ্ন উঠেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। দলের ভিতর বিভক্তি, অনৈক্য হতাশা এখন প্রকাশ্য।
আওয়ামী লীগে উত্তরাধিকারের রাজনীতি নতুন নয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা এবং মন্ত্রীরা উত্তরাধিকার সূত্রেই রাজনীতিতে এসেছেন। বর্তমান মন্ত্রিসভায় একাধিক সদস্য রয়েছেন যারা রাজনীতিতে এসেছেন পারিবারিক ঐতিহ্য থেকে, পিতার হাত ধরে, অথবা তাদের নিকট আত্মীয়দের উৎসাহ উদ্দীপনায়। বর্তমান মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য আছেন, যাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন সেই সূত্রে তারা রাজনীতিবিদ।
আওয়ামী লীগ দলগতভাবে উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট এবং কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলায় মন্ত্রী, এমপি বা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাই ব্রাদার বা স্বজনদেরকে প্রার্থী করা যাবে না। যারা ইতিমধ্যে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।