ইনসাইড পলিটিক্স

খুনীর মন্ত্রিসভায় কেন গিয়েছিল বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রীরা?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭:০১ পিএম, ০৩ অগাস্ট, ২০২০


Thumbnail

১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট বাঙালির জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে শোকাবহ দিন। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল। কিন্তু এই হত্যাকাণ্ডের পর আওয়ামী লীগ যেমন প্রতিবাদ করতে পারেনি, আওয়ামী লীগ নিরব দর্শকের মতো তাকিয়ে ছিল, তাঁর থেকেও ভয়ঙ্কর দিক হলো বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভার মাত্র ৬ জন সদস্য ছাড়া প্রায় সব সদস্যই ঐ খুনী খন্দকার মোশতাক আহমেদের মন্ত্রিসভায় যোগদান করেছিল। ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর সর্বশেষ মন্ত্রিসভা গঠন করেছিলেন ১৯৭৫ সালের ২৬ জানুয়ারি। ঐ মন্ত্রিসভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন, সৈয়দ নজরুল ইসলাম ছিলেন উপরাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন ক্যাপ্টেন মো. মনসুর আলী। ৩০ সদস্যের এই মন্ত্রিসভায় যে মন্ত্রীরা ছিলেন তাঁরা হলেন-

১. শেখ মুজিবুর রহমান- রাষ্ট্রপতি

২. সৈয়দ নজরুল ইসলাম- উপরাষ্ট্রপতি

৩. মো. মনসুর আলী- প্রধানমন্ত্রী

৪. খন্দকার মোশতাক আহমেদ- বাণিজ্য মন্ত্রী

৫. এএইচ এম কামরুজ্জামান- শিল্প মন্ত্রী

৬. মোহাম্মদ উল্লাহ- ভুমি প্রশাসন, ভুমি সংস্কার মন্ত্রী

৭. আব্দুস সামাদ আজাদ- কৃষি মন্ত্রী

৮. অধ্যাপক ইউসুফ আলী- শ্রম ও সমাজ কল্যাণ মন্ত্রী

৯. শ্রী ফণী ভূষণ মজুমদার- এলজিআরডি মন্ত্রী

১০. ড. কামাল হোসেন- পররাষ্ট্রমন্ত্রী

১১. মো. সোহরাব হোসেন- পূর্ত, গৃহনির্মাণ মন্ত্রী

১২. আব্দুল মান্নান- স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রী

১৩. আব্দুর রব সেরনিয়াবাত- মৎস্য, বন, বন্যা এবং বিদ্যুত শক্তি মন্ত্রী

১৪. শ্রী মনোরঞ্জন ধর- আইন, বিচার, সংসদ মন্ত্রী

১৫. এড. আব্দুল মোমিন- খাদ্য ও পুনর্বাসন মন্ত্রী

১৬. আসাদুজ্জামান খান- পাট মন্ত্রী

১৭. এম কোরবান আলী- তথ্য, বেতার মন্ত্রী

১৮. ড. আজিজুর রহমান মল্লিক- অর্থ মন্ত্রী

১৯. ড. মুজাফফর আহমদ চৌধুরী- শিক্ষা, আনবিক শক্তি মন্ত্রী

২০. বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী- বন্দর ও জাহাজ দফতর মন্ত্রী

২১. নুরুল ইসলাম মঞ্জুর- প্রতিমন্ত্রী, যোগাযোগ মন্ত্রণালয়

২২. আব্দুল মোমিন তালুকদার- প্রতিমন্ত্রী, এলজিআরডি

২৩. দেওয়ান ফরিদ গাজী- প্রতিমন্ত্রী, বাণিজ্য, পাট, চা

২৪. অধ্যাপক নুরুল ইসলাম চৌধুরী- প্রতিমন্ত্রী, শিল্প মন্ত্রণালয়

২৫. তাহের উদ্দিন ঠাকুর- প্রতিমন্ত্রী, তথ্য ও বেতার

২৬. মোসলেম উদ্দিন খান- প্রতিমন্ত্রী, পাট মন্ত্রণালয়

২৭. কে এম ওবায়দুর রহমান— প্রতিমন্ত্রী, ডাক, তার, টেলিযোগাযোগ

২৮. ডা. ক্ষিতিশ চন্দ্র মন্ডল- প্রতিমন্ত্রী, সাহায্য ও পুনর্বাসন

২৯. রিয়াজ উদ্দিন আহমদ- প্রতিমন্ত্রী, বন, মৎস্য ও পশুপালন

৩০. সৈয়দ আলতাফ হোসেন- প্রতিমন্ত্রী।

বঙ্গবন্ধুর শেষ মন্ত্রিসভা

৭৫ এর ১৫ই আগস্ট যখন জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যার পর যে মন্ত্রিসভা গঠন করা হয় সেই মন্ত্রিসভায় রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন খুনী মোশতাক, উপরাষ্ট্রপতি ছিলেন মোহাম্মদ উল্লাহ এবং ঐ মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন-

১. খন্দকার মোশতাক আহমেদ- রাষ্ট্রপতি

২. মোহাম্মদ উল্লাহ- উপরাষ্ট্রপতি

৩. অধ্যাপক ইউসুফ আলী- মন্ত্রী, পরিকল্পনা দফতর

৪. শ্রী ফণী ভূষণ মজুমদার- মন্ত্রী, এলজিআরডি

৫. মো. সোহরাব হোসেন- মন্ত্রী, পূর্ত, গৃহনির্মাণ

৬. আব্দুল মান্নান- স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রী

৭. শ্রী মনোরঞ্জন ধর- আইন, বিচার, সংসদ মন্ত্রী

৮. আব্দুল মোমিন তালুকদার- মন্ত্রী, কৃষি দফতর, খাদ্য

৯. আসাদুজ্জামান খান- মন্ত্রী, বন্দর ও জাহাজ চলাচল

১০. ড. আজিজুর রহমান মল্লিক- অর্থমন্ত্রী

১১. ড. মুজাফফর আহমদ চৌধুরী- শিক্ষামন্ত্রী

১২. বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী- মন্ত্রী, পররাষ্ট্র দফতর

১৩.  শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন- প্রতিমন্ত্রী, বিমান ও পর্যটন

১৪. তাহের উদ্দিন ঠাকুর- প্রতিমন্ত্রী, তথ্য, বেতার, শ্রম

১৫. কে এম ওবায়দুর রহমান— প্রতিমন্ত্রী, ডাক ও তার

১৬. নুরুল ইসলাম মঞ্জুর- প্রতিমন্ত্রী, রেল ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়

১৭. দেওয়ান ফরিদ গাজী- প্রতিমন্ত্রী, বাণিজ্য, খনিজ সম্পদ

১৮. অধ্যাপক নুরুল ইসলাম চৌধুরী- প্রতিমন্ত্রী, শিল্প মন্ত্রণালয়

১৯. রিয়াজ উদ্দিন আহমদ- প্রতিমন্ত্রী, বন, মৎস্য ও পশুপালন

২০. মোসলেম উদ্দিন খান- প্রতিমন্ত্রী, পাট মন্ত্রণালয়

২১. মোমেন উদ্দিন আহমেদ- প্রতিমন্ত্রী, বন্যা, পানি বিদ্যুত

২২. ডা. ক্ষিতিশ চন্দ্র মন্ডল- প্রতিমন্ত্রী, সাহায্য ও পুনর্বাসন

২৩. সৈয়দ আলতাফ হোসেন- প্রতিমন্ত্রী, সড়ক যোগাযোগ।

খুনী মোশতাকের মন্ত্রিসভা

দুটি তালিকার তুলনা করলে দেখা যায় যে, মাত্র ৭ জন খুনী মোশতাকের মন্ত্রিসভায় অনুপস্থিত ছিলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল, মন্ত্রিসভার আরেক সদস্য আব্দুর রব সেরনিয়াবাতকেও নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। জানুয়ারির মন্ত্রিসভায় তিনি মৎস্য, বন, বন্যা এবং বিদ্যুৎ শক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন। এই মন্ত্রিসভা থেকে অন্যান্য যারা ঐ মন্ত্রিসভায় যোগদান করেননি তাঁদের মধ্যে ছিলেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম (উপরাষ্ট্রপতি), যিনি পরবর্তীতে ৩ নভেম্বর কারাগারে নির্মমভাবে শহীদ হন। ক্যাপ্টেন মসুর আলী (প্রধানমন্ত্রী), যিনিও ৩ নভেম্বর কারাগারে নির্মমভাবে শহীদ হয়েছিলেন। আব্দুস সামাদ আজাদ (কৃষিমন্ত্রী), ৭৫ এর পরপরই যাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ড. কামাল হোসেন (পররাষ্ট্র মন্ত্রী), যিনি ৭৫ এর ১৫ই আগস্ট দেশের বাইরে অবস্থান করছিলেন। এছাড়া সকলে কিভাবে খুনী মোশতাকের মন্ত্রিসভায় যোগ দিলেন সেটা একটি বড় প্রশ্ন। গবেষকরা মনে করেন যে, মূলত কিছু সুনির্দিষ্ট কারণে বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভার সদস্যরা খুনী মোশতাকের মন্ত্রিসভায় যোগ দিয়েছিল। এই কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে-

১. আদর্শিক চেতনার অভাব

মন্ত্রিসভার সদস্যদের মধ্যে যে আদর্শিক চেতনা থাকা দরকার ছিল, সেই আদর্শিক চেতনা তাঁদের ছিলনা। যার ফলে তাঁরা খুনী মোশতাকের মন্ত্রিসভায় অংশ নিয়েছিলেন।

২. ভয় এবং আতঙ্ক

যেহেতু বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল, তাই তাঁরা ভীতু এবং কাপুরুষের মতো ঐ মন্ত্রিসভায় যোগদান করেছিলেন।

৩. ষড়যন্ত্রের অংশ

বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভার একটি বড় অংশই বঙ্গবন্ধু হত্যা প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত ছিল। যেমন তাহের উদ্দিন ঠাকুর, কে এম ওবায়দুর রহমান, নুরুল ইসলাম মঞ্জুরসহ বেশ কিছু লোককে পাওয়া যায় যারা এই চক্রান্তের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন। এইজন্যে তাঁরা মন্ত্রিসভায় যোগদান করেছিলেন।

আরেকটি বড় কারণ ছিল যে, তাঁরা হতবিহবল হয়ে পড়েছিলেন, তাঁদের কি করতে হবে কি করতে হবে না তা বুঝে উঠতে না পেরে মন্ত্রিসভায় যোগদান করেছিলেন।

৭৫ এর ১৫ই আগস্টে আওয়ামী লীগের এই হেভিওয়েট নেতাদের খুনী মোশতাকের মন্ত্রিসভায় যোগদানের মধ্যে দিয়ে একটি বিষয় স্পষ্ট যে, রাজনীতিতে আদর্শ, সাহস এবং সততা না থাকলে তাঁরা কঠিন সময়ে দাঁড়াতে পারে না। ৭৫ এর ১৫ই আগস্টের এই মন্ত্রিসভা আমাদের সেই শিক্ষাই দেয়।



মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগের আগাম কাউন্সিলের গুঞ্জন

প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষ হয়েছে। নতুন মন্ত্রিসভা গঠন হয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল কমেনি। কোন্দল ক্রমশ বেড়েই চলেছে। সামনে উপজেলা নির্বাচন, উপজেলা নির্বাচন নিয়ে সারা দেশে এখন আওয়ামী লীগ নানা ভাগ উপভাগে বিভক্ত। শুধুমাত্র সংঘাত হানাহানির উপলক্ষ খুঁজছে পরস্পরবিরোধী আওয়ামী লীগের শিবিরগুলো। এরকম বাস্তবতার দলের সঙ্কট নিরসনে এবং অভ্যন্তরীণ কোন্দল দূর করার জন্য আওয়ামী লীগ আগাম কাউন্সিল অধিবেশনে যেতে পারে বলে বিভিন্ন সূত্র ইঙ্গিত দিচ্ছে। 

আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র বলছে, একাধিক কারণে আওয়ামী লীগ এখন নতুন করে কাউন্সিলের বিষয়টি ভাবছে। চলতি বছরের শেষ দিকে অথবা আগামী বছরের শুরুতে কাউন্সিল করা যায় কিনা এ বিষয়টি নিয়ে দলের নীতি নির্ধারকদের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে বলেই একাধিক সূত্র আভাস দিয়েছে। 

আওয়ামী লীগের সর্বশেষ ২২ তম কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০২২২ সালের ২৪ ডিসেম্বর। সেই কাউন্সিলটি ছিল একটি রুটিন কাউন্সিল। এই কাউন্সিলে দু-একজনকে পদোন্নতি দেওয়া এবং দু-একজনের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বাদ দেওয়া ছাড়া তেমন কোন পরিবর্তনই হয়নি। সবকিছু আগের মতোই রেখে দেওয়া হয়েছিল। 

অনেকে মনে করেন যে, এটি ছিল নির্বাচনের আগে কমিটিকে নতুন জীবন দেওয়ার একটি সিদ্ধান্ত। আওয়ামী লীগের কাউন্সিল সাধারণত তিন বছর পর পর অনুষ্ঠিত হয়। ২১ তম কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০ থেকে ২১ ডিসেম্বর, ২০১৯ সালে। তার আগে ২০ তম কাউন্সিলের অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৬ সালের ২৩ এবং ২৩ অক্টোবর। কিন্তু নানা বাস্তবতার বিবেচনায় এবার আওয়ামী লীগ কাউন্সিল এগিয়ে আনতে পারে বলে ধারণা করছেন অনেকে। 

কাউন্সিল এগিয়ে আনার পিছনে যে যুক্তিগুলো রয়েছে, তার মধ্যে প্রথমত, অবশ্যই দলের কোন্দল নিরসন এবং দলকে আবার নতুন করে ঢেলে সাজানো এবং দলকে শৃঙ্খলার মধ্যে ফিরিয়ে আনা। 

দ্বিতীয়ত, এবার নির্বাচনের মাধ্যমে অনেক কেন্দ্রীয় নেতা আওয়ামী লীগের মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। যার ফলে কেন্দ্রীয় নেতাদের এখন সাংগঠনিক তৎপরতা অনেক কমে গেছে। ২০০৯ সাল থেকে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দল এবং সরকারকে আলাদা করে নীতি নিয়ে এগোচ্ছেন। সেই নীতির অংশ হিসেবেই তিনি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে যারা থাকেন, তাদেরকে মন্ত্রিসভার অন্তর্ভুক্ত করেন না। কিন্তু এবার অনেক কেন্দ্রীয় নেতা মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। এমনকি নারী সংসদ সদস্যদের মধ্যেও অনেক কেন্দ্রীয় নেতা আছেন যারা মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন। অন্যদিকে দলের জন্য কাজ করা বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নেতা মন্ত্রিসভাতেও নেই, দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেও নেই। এই সমস্ত নেতৃত্বরা সব কিছু থেকে দূরে যেয়ে হতাশাগ্রস্ত হচ্ছেন। এই কারণে দলের ভিতর নেতৃত্বে পরিবর্তন দরকার বলে আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকরা মনে করছেন।

তাছাড়া সবচেয়ে বড় বিষয় হলো আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে একটি গতি আনা দরকার এবং নতুন রক্ত প্রবাহ সঞ্চালন করা দরকার। যেটির কথা আওয়ামী লীগ সভাপতি বারবার বলছেন। এ সমস্ত কারণে আওয়ামী লীগ একটি নতুন কাউন্সিলের মাধ্যমে দলের ভিতর আবার গতি আনতে চায়, বিভক্তি দূর করতে চায় এবং দলে যারা সংগঠনের জন্য মনোযোগী, সংগঠনের কাজে যাদের আগ্রহ রয়েছে তাদেরকে সামনে আনতে চায়।

উল্লেখ্য, সামনে উপজেলা নির্বাচন এবং এর পর শোকের মাস। সব কিছু মিলিয়ে চলতি বছরের শেষ দিকে একটি কাউন্সিল করার ভাবনা আওয়ামী লীগের মধ্যে আছে। আর সেটি যদি সম্ভব না হয় তাহলে আগামী বছরের শুরুতে আওয়ামী লীগ কাউন্সিল করতে পারে বলে একাধিক সূত্র আভাস দিয়েছে।

আওয়ামী লীগ   আগাম কাউন্সিল   দলীয় কোন্দল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

যে কারণে খাবার নিয়ে দুশ্চিন্তা করছেন না এমভি আবদুল্লাহর নাবিকরা

প্রকাশ: ০৩:১৫ পিএম, ২৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

সোমালিয়ার উপকূলে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজের নাবিকরা আপাতত খাবার নিয়ে খুব একটা দুশ্চিন্তা করছেন। তবে জাহাজে বিশুদ্ধ পানি কমে যাওয়া নিয়ে নাবিকেরা কিছুটা দুশ্চিন্তায় আছেন। 

জিম্মি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের বরাতে জাহাজটির মালিকপক্ষ ও নাবিকদের সংগঠন বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছে।

জানা গেছে, খাবার নিয়ে খুব একটা দুশ্চিন্তা নেই। কারণ, জলদস্যুরা জাহাজে দুম্বা ও ছাগল আনছে। তবে বিশুদ্ধ পানি নিয়ে দুশ্চিন্তা আছে। কারণ, জলদস্যুরা জাহাজে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে পারছে না। ফলে জাহাজে যা বিশুদ্ধ পানি আছে, তা রেশনিং করে চলতে হচ্ছে। সংকটের কারণে এখন সপ্তাহে দুই দিন এক ঘণ্টা করে জাহাজের বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করছেন নাবিকেরা। অর্থাৎ সপ্তাহে মাত্র দুই ঘণ্টা বিশুদ্ধ পানি পাচ্ছেন তারা।

এমভি আবদুল্লাহকে জিম্মি করার সময় জাহাজটিতে ২০০ টন বিশুদ্ধ পানি ছিল। এই পানি দিয়ে এক মাস পর্যন্ত চালানো যাবে বলে তখন নাবিকেরা জানিয়েছিলেন। 

উল্লেখ্য, ১২ মার্চ ভারত মহাসাগরে ২৩ জন বাংলাদেশি নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহকে জিম্মি করে সোমালিয়ার দস্যুরা। পরে তারা জাহাজটিকে সোমালিয়ার উপকূলের কাছে নিয়ে যায়। চট্টগ্রামের কবির গ্রুপের মালিকানাধীন জাহাজটি বর্তমানে সোমালিয়ার গদভজিরান জেলার জিফল উপকূল থেকে দেড় নটিক্যাল মাইল দূরে নোঙর করে আছে।

এর আগে প্রায় ১৩ বছর আগে ২০১০ সালের ৫ ডিসেম্বর এমভি জাহান মণি নামের একই গ্রুপের মালিকানাধীন একটি জাহাজ জিম্মি করেছিল সোমালিয়ার জলদস্যুরা। জাহাজটি ১০০ দিন পর সব নাবিকসহ উদ্ধার করা হয়েছিল। জিম্মি অবস্থায় জাহাজটির খাবার ফুরিয়ে গেলে জলদস্যুরা সপ্তাহে দুটি দুম্বা নিয়ে আসত।


এমভি আবদুল্লাহ   কবির গ্রুপ   সোমালিয়া উপকূল  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

এখনই ভারত বিরোধী কর্মসূচিতে যাবে না বিএনপি

প্রকাশ: ০২:০০ পিএম, ২৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপি ভারতীয় পণ্য বর্জন বা প্রকাশ্য ভারত বিরোধী কর্মসূচিতে এখনই যাবে না। দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে চূড়ান্তভাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দলের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। গতকাল লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া স্থায়ী কমিটির সদস্যদের এই বার্তা দিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, এখনই ভারত বিরোধী কর্মসূচি প্রয়োজন নেই। তবে বিভিন্ন স্থানে যারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভারতের বিরোধিতা করবে ভারতীয় পণ্য বর্জন করবে, তাদের ব্যাপারে বিএনপি নির্লিপ্ত থাকবে। এমনকি ভারতের যে সমস্ত আগ্রাসন বা পক্ষপাতমূলক আচরণ সে ব্যাপারে বিএনপির অবস্থান সুস্পষ্ট থাকবে। বিএনপি বাংলাদেশের স্বার্থের জন্য যে কোন দেশের সমালোচনা করবে। তবে কোন দেশের পণ্য বর্জনের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো কর্মসূচি নেবে না বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য যে, ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর থেকেই বিএনপির মধ্যে একধরনের ভারত বিরোধিতার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। বিএনপির অনেক নেতাই প্রকাশ্যে বলেন যে, আওয়ামী লীগকে ভারত ক্ষমতায় রেখেছে এবং ভারত একটি অগণতান্ত্রিক সরকারকে বাংলাদেশে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে। এ নিয়ে বিএনপির বেশ কিছু নেতা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রেখেছিলেন। তবে গত ২০ মার্চ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রকাশ্যে ভারতীয় পণ্য পুড়িয়ে ফেলে আলোচনায় আসেন। 

এর আগে বিদেশে পলাতক সাইবার সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত পিনাকী ভট্টাচার্য তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়ে যাচ্ছিলেন। তার এই পণ্য বর্জনের ডাকে তেমন কোন সাড়া না পড়লেও পিনাকীর পদাঙ্ক অনুসরণ করে এবং পিনাকীর নেতৃত্ব মেনে রুহুল কবির রিজভীর এই ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক রাজনৈতিক অঙ্গনে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। বিএনপির মধ্যে এই নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।

বিষয়টি নিয়ে বিএনপি নেতাদের অনেকেই বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়েন। যেদিন রিজভী ভারতীয় পণ্য পুড়ানোর নাটক করেন তার ঠিক চারদিন পর ২৪ মার্চ বিএনপি ওয়েস্টিন হোটেলে বিদেশি কূটনৈতিকদের সম্মানে ইফতার পার্টির আয়োজন করে। সেই ইফতার অনুষ্ঠানে ভারতীয় ডেপুটি হাই কমিশনারও উপস্থিত ছিলেন এবং এটি বিএনপির অনেক জন্য একটি বিব্রতকর পরিস্থিতি বলেই উল্লেখ করা হয়।

বিষয়টি দলের স্থায়ী কমিটির সভা পর্যন্ত গড়ায় এবং এখানে অনেকেই এই সিদ্ধান্ত বিএনপি নিয়েছে কি না সেই প্রশ্ন উত্থাপন করেন। অবশ্য দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তখন রিজভীর পক্ষেই অবস্থান নেন। তিনি জানান, যে রিজভী যেটা করেছেন সেটি তিনি ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি ব্যক্তিগত অবস্থান থেকে এটি করেছে। এটি দলীয় অবস্থান নয়।

তবে এরপরে বিএনপির মধ্যে অনেক সিনিয়র নেতা প্রশ্ন করেন যে, একজন গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা ব্যক্তি দলীয় অবস্থানের বাইরে গিয়ে ব্যক্তিগত অবস্থান নিতে পারেন কি না? এই বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে ওই স্থায়ী কমিটির বৈঠকে জানানো হয়েছিল। পরবর্তীতে গতকাল রাতে লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জানিয়ে দেন যে, তারা আপাতত কোন প্রকাশ্য কর্মসূচিতে যাবে না। তবে ব্যক্তিগতভাবে যদি কেউ ভারত বিরোধিতা করে বা ভারতের অবস্থানের সমালোচনা করে সেগুলো নিয়ে বিএনপি নীরব থাকবে। দলগতভাবে ভারতীয় পণ্য বর্জনের কোনো ডাক বিএনপির পক্ষ থেকে দেওয়া হবে না বলেও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে- সীমান্ত হত্যা, ভারতের ভুল নীতি বা বাংলাদেশের ব্যাপারে ভারতের আগ্রাসন ইত্যাদি ব্যাপারে বিএনপির অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি। বিএনপি এই সমস্ত বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী, সার্বভৌমত্ব বিরোধী প্রতিটি পদক্ষেপের বিরুদ্ধে অবস্থান অতীতে নিয়েছে, ভবিষ্যতেও নেবে। তবে ভারতের পণ্য বর্জন বা ইন্ডিয়া আউটের মতো কোনও কর্মসূচিতে বিএনপি আপাতত যাবে না।

তাহলে বিএনপি নেতারা কী ভারতীয় পণ্য পুড়িয়ে ফেলবে এমন প্রশ্নের উত্তরে স্থায়ী কমিটির ওই সদস্য বলেন, আমরা কোন দেশের পণ্য পুড়ানো বা কোন দেশের পণ্য বর্জনের কর্মসূচি ঘোষণা করিনি। এ ধরনের কর্মসূচিতে বিএনপি যাচ্ছে না।

ভারত বিরোধী   বিএনপি   রুহুল কবির রিজভী  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

‘বিএনপি নেতাদের কথা শুনলে জিয়াউর রহমানও লজ্জা পেয়ে যেতেন’

প্রকাশ: ০১:৩৯ পিএম, ২৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপি নেতারা জিয়াউর রহমানকে নিয়ে যেসব কথা বলে তা শুনলে জিয়াউর রহমানও কবরে শুয়ে লজ্জা পেয়ে যেতেন বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) রাজধানীর প্রেসক্লাবে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। এ সময় তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান জীবদ্দশায় কখনো শুনেননি তিনি স্বাধীনতার ঘোষক।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, স্কুল ঘণ্টা যেমন দপ্তরি বাজায়, তেমনি জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেছিলেন বঙ্গবন্ধুর পক্ষে। আজকে বিএনপি নেতা আব্দুল মঈন খান অনেক কথা বলেন। মঈন খানের বাবা আব্দুল মোমেন খান ৭৪ সালে খাদ্য সচিব ছিলেন। তিনি ষড়যন্ত্র করে মার্কিন খাদ্যবাহী জাহাজ ফেরত পাঠিয়েছিলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমান আব্দুল মোমেন খানকে মন্ত্রী বানিয়েছিল। মঈন খান নিজেও সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছিল, দরকার পড়লে দেশ বিক্রি করে দেব।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দেশ সমৃদ্ধির দিকে যখনই এগিয়ে যাচ্ছিল তখনই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। বিএনপি জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক বানানোর জন্য যেভাবে দাবি করে জিয়াও সেভাবে কখনো দাবি করেনি। জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের ছত্রছায়া পাকিস্তানিদের পক্ষে কাজ করেছে। জিয়াউর রহমান আওয়ামী লীগের অধীনেই মুক্তিযুদ্ধের সময় বেতন ভুক্ত কর্মচারী ছিলেন।

তিনি বলেন, বিএনপি নেতাদের কথা হাস্যরসের সৃষ্টি করে। বিএনপির নেতা মঈন খানের বক্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, যার বাবার জন্য এদেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছে তার মুখে এসব কথা মানায় না। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর থেকে ইতিহাস বিকৃতি করে বিএনপি নেতারা বিশদকার বিষোদগার করছে কিন্তু এখন সঠিক ইতিহাস জনগনের সামনে আসার পর তাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। বিএনপির ইতিহাস বিকৃতির পাশাপাশি দেশের জনগণকেও বিভ্রান্তি করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।


বিএনপি   ড. হাছান মাহমুদ   আওয়ামী লীগ  


মন্তব্য করুন


ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপি ইফতার পার্টিতেও মিথ্যাচার করছে: কাদের

প্রকাশ: ০১:০০ পিএম, ২৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

বিএনপি ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করে, অপপ্রচার করে, মিথ্যাচার করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। শুক্রবার (২৯ মার্চ) আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ-কমিটির উদ্যোগে ইফতার ও ঈদসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ নেত্রী নির্দেশ দিয়েছেন ইফতার পার্টি না করে, সাধারণ মানুষের মাঝে ইফতার বিতরণ করতে। আর বিএনপি বড় বড় হোটেলে ইফতার পার্টির আয়োজন করে। আর সেই ইফতার পার্টিতে তারা আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করে, অপপ্রচার করে, মিথ্যাচার করে।

তিনি বলেন, বিএনপি নেতারা বলে দিল্লির শাসন মেনে নেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ পাকিস্তানে সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। আসলে বিএনপির হৃদয়ে এবং চেতনায় পাকিস্তান। আওয়ামী লীগের চেতনা এবং হৃদয়ে বাংলাদেশ, কোনো বিদেশিদের দাসত্ব নয়।

তিনি বলেন, বিএনপির চারদিকে অন্ধকার, শেখ হাসিনার জনকল্যাণমুখী বিচক্ষণ রাজনীতি বিএনপিকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিয়েছে। বিএনপি নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করেছিল। ব্যর্থ হয়ে এখনো অসংলগ্ন কথা বলছে। আশি ভাগ বিএনপি নেতাকর্মীকে দমন-পীড়ন করা হচ্ছে বলে তারা মিথ্যাচার করছে।

এসময় মির্জা ফখরুলকে মিথ্যাচার করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, তাদের মিথ্যাচারের রাজনীতি কেউ গ্রহণ করছে না বলেই তারা সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে। বিশ্ব সংকটের প্রভাবের পরও শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্বের কারণে অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশের মানুষ এখনো ভালো আছে।


ওবায়দুল কাদের   রাজনীতি   সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন