নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৫৯ পিএম, ০৪ অগাস্ট, ২০২০
বাংলাদেশে করোনা সংকটের শুরু থেকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিন্ন কৌশল গ্রহণ করেছিলেন এবং ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে করোনা মোকাবেলার কর্মপন্থা নির্ধারণ করেছিলেন। সে সময় অনেকেই শেখ হাসিনার এই সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচনা করেছিলো। অনেকেই বলেছিলো এর ফলে বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ হয়তো অনেক বেড়ে যাবে। বাংলাদেশের অর্থনীতিও ধ্বংস হয়ে যাবে। বাংলাদেশ আবার ২০০১-০৬ সালের মতো একটি পরনির্ভর ভঙ্গুর অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে। এই সময়ে বিভিন্ন মহল থেকে বলা হচ্ছিলো যে, আমাদের সব চিন্তা বাদ দিয়ে আগে লকডাউন দিতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত করোনা সংক্রমণ হ্রাস না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত এই লকডাউন রেখে আমাদেরকে আগে জীবন বাঁচাতে হবে। তারপর জীবিকার দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সময়ে সম্পূর্ণ নতুন ও বাস্তবসম্মত কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। এখন ফিরে তাকালে দেখা যায় শেখ হাসিনার কৌশলই সঠিক প্রমাণিত হয়েছে। শেখ হাসিনার এই কৌশলের কারণে বাংলাদেশের করোনা থেকে যেমন ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ রয়েছে তেমনি অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবেও সামনে এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করতে পেরেছে। করোনা মোকাবেলার ক্ষেত্রে শেখ হাসিনার ৫ কৌশল এখন শুধু বাংলাদেশ নয় সারা বিশ্বে আলোচিত হচ্ছে। এই ৫ কৌশলগুলো কি ছিল?
১। লকডাউন নয় সাধারণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে ছুটি
শেখ হাসিনা কখনো সারাদেশ লকডাউন দেন নাই, তিনি ২৫ মার্চ সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছিলেন। সাধারণ ছুটিকে তিনি কয়েক দফা বাড়িয়েছিলেন। সাধারণ ছুটির মধ্যেই তিনি আস্তে আস্তে সীমিতভাবে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। বাংলাদেশে ৮ মার্চ প্রথম করোনা সংক্রমণ শুরু হয়। এই সময়ে লকডাউন দেওয়ার উপর গুরুত্ব দিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু শেখ হাসিনা লকডাউন শব্দটি ব্যবহার করেন নাই। তিনি লকডাউন না দিয়ে জনগণের উপর আস্থা রেখেছেন এবং সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এই সময়ে অনেকে ছুটি মানেনি। বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ বিস্তৃত হয়েছে এবং শেখ হাসিনার কৌশল নিয়ে সমালোচনাও কম হয়নি। কিন্তু অনেকেই হয়তো বুঝতে পারেনি যে, প্রায় ১৮ কোটি অধ্যুষিত মানুষের এই দেশে যে পরিমাণ লোক আক্রান্ত হয়েছে, তা অনেক সহনীয়। সেইসাথে বাংলাদেশে মৃত্যুহার কম ছিল। বরং করোনা প্রতিরোধ করার জন্য যেইটুকু সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার ছিল, সেইটুকু সতর্কতা অবলম্বন করেই তিনি কাজ করেছেন। শেখ হাসিনা স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্বের বিধি মেনে কর্মচাঞ্চল্য ও অর্থনৈতিক প্রাণপ্রবাহ সচল রাখার তত্ত্ব-ই আজ সারা বিশ্ব অনুসরণ করছে।
২। গরীব মানুষের জন্য সহায়তা
শেখ হাসিনা সম্ভবত বিশ্বের প্রথম প্রধানমন্ত্রী যিনি করোনা সংক্রমণের শুরুতেই প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেন এবং এই প্রণোদনার একটা বড় অংশ ছিল গরীব মানুষের জন্য আর্থিক সহায়তা। এর ফলে বাংলাদেশে এত দীর্ঘ করোনাকালেও কোন মানুষ না খেয়ে মারা যায়নি। মানুষের কাছে খাদ্য পৌঁছে দিতে তিনি সক্ষম হয়েছেন। যার ফলে আমাদের দেশে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। যেটি পাকিস্তান, ভারতসহ অনেক দেশেই হয়েছে।
৩। স্বাস্থ্যবিধির উপর গুরুত্ব দেওয়া
প্রথম থেকেই শেখ হাসিনা লকডাউন বা বিচ্ছিন্নতার বদলে স্বাস্থ্যবিধিকে সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়েছেন। স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে সচেতনতা তৈরির কাজটিতে তিনি প্রাধান্য দিয়েছেন। এটি করতে গিয়ে তিনি মাস্ক ব্যবহার করা, সামাজিক দূরত্বের বিধি মেনে চলা, গণপরিবহনে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা ইত্যাদির উপর জোর দেন। যদিও প্রথমদিকে এগুলো বাস্তবায়ন করতে গিয়ে প্রতিবন্ধকতা এসেছিল। সেই সময় বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন, বাংলাদেশে করোনার মহামারী তৈরি হবে। কিন্তু আস্তে আস্তে জনগণ নিজেরাই সচেতন হয়েছে, নিজেরাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেছে। যার ফলে বাংলাদেশে এখন করোনার প্রকোপ কমতে শুরু করেছে। এর ফলে স্বাস্থ্যবিধি মানার সুফল বাংলাদেশ এখন ভোগ করছে।
৪। যে কোন মূল্যে অর্থনীতিকে সচল রাখা
করোনাকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি বড় কৌশল ছিল যে কোন মূল্যে অর্থনীতিকে সচল রাখা। এক্ষেত্রে প্রথম চ্যালেঞ্জ যেটি মোকাবেলা করেছেন তা হল বোরো ধান কাঁটা। এই বোরো ধান কাঁটা শেখ হাসিনার একক উৎসাহ এবং আগ্রহের কারণেই সম্ভব হয়েছে। বাংলাদেশ বোরোতে বাম্পার ফলন ফলিয়েছে। যার ফলে খাদ্যের একটা সন্তোষজনক মজুত আমরা নিশ্চিত করতে পেরেছি। এটাকে বিশ্ব খাদ্য সংস্থা খুবই ইতিবাচক বলে মন্তব্য করেছে। এর পাশাপাশি অন্যান্য অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড যেমন গার্মেন্টস, ক্ষুদ্র মাঝারি শিল্প কারখানাগুলো খুলে যেন কাজ করা হয় তা তিনি করেছেন। এর ফলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ধাক্কা যত প্রকট আকার ধারণ করার কথা ছিল, সেই রকম হয়নি।
৫। ভ্যাকসিন নিশ্চিত করা
প্রথম থেকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন করোনা থেকে বাঁচতে গেলে আমাদের সতর্ক হতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত ভ্যাকসিন না আসে ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের করোনার সাথেই বসবাস করতে হবে। আর এই জন্য সরকার প্রথম থেকে ভ্যাকসিন যেন বাংলাদেশ আবিস্কার হলেই প্রথমদিকে পায় তা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এখন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যেভাবে কাজ করে যাচ্ছে তাতে মোটামুটি নিশ্চিত প্রথম যে দেশই ভ্যাকসিন আনুক না তা পেতে বাংলাদেশ বঞ্চিত হবে না।
আর শেখ হাসিনার এই কৌশলের কারণেই বাংলাদেশ করোনার মধ্যেও ঘুরে দাঁড়িয়েছে। করোনাকালীন এই সময়ে এখনো যে দেশগুলো অর্থনৈতিক শক্তি ও প্রাণহানি কম রেখে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে বলীয়ান, সেই দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।
মন্তব্য করুন
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে বিরত
থাকা বিএনপি, ইসলামী আন্দোলন, সিপিবিসহ ১৪টি নিবন্ধিত দল উপজেলা নির্বাচনেও অংশ নিচ্ছে
না। দেশের নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থানে তেমন কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না। আর সংসদ
নির্বাচনে ভোটের মাঠে থাকা বেশিরভাগ দলই থাকছে উপজেলায়। এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে
অংশ নেওয়ার সুযোগ থাকলেও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ তা ব্যবহার করছে না। তাদের পথেই হাঁটছে
১৪ দলীয় জোটের শরিক গণতন্ত্রী পার্টি।
তবে দলীয় প্রতীকেই উপজেলা নির্বাচনে
প্রার্থী দিতে চায় সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টিসহ ১১টি নিবন্ধিত দল। আর দলীয়ভাবে
প্রার্থী দেওয়া হবে কি না—তপশিল ঘোষণার পরও এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি পাঁচটি রাজনৈতিক
দল। অবশ্য আওয়ামী লীগ প্রার্থিতা উন্মুক্ত করে দেওয়ায় এবারের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থীর
সংখ্যা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়বে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
তাদের মতে, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের
মতো এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে লড়াই হবে মূলত স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে।
দেশে মোট উপজেলা ৪৯৫টি। আগামী ৮ মে
প্রথম ধাপে ১৫২টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইসি ঘোষিত তপশিল অনুযায়ী, প্রথম
ধাপের উপজেলা নির্বাচনের জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে
১৫ এপ্রিল পর্যন্ত। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ১৭ এপ্রিল ও প্রত্যাহারের শেষ সময় ২২ এপ্রিল।
এরপর আগামী ২৩ মে দ্বিতীয়, ২৯ মে তৃতীয় ও ৫ জুন শেষ ধাপের ভোট অনুষ্ঠিত হবে।
উপজেলা নির্বাচনে কার স্বাক্ষরে প্রার্থী
নির্ধারিত হবে, তা বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) মধ্যে লিখিতভাবে জানাতে ইতোমধ্যে রাজনৈতিক
দলগুলোকে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
ইসি সূত্র জানায়, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন
সামনে রেখে নির্বাচন ও আচরণ বিধিমালায় ব্যাপক সংশোধন আনা হয়েছে। নির্বাচনে অংশগ্রহণের
জন্য দলীয় ও স্বতন্ত্র দুই ধরনের সুযোগই রাখা হয়েছে। তবে এ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি
বাড়াতে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ছাড় দিয়ে ব্যাপকভাবে উৎসাহিত করা হয়েছে। নির্বাচনে যাতে
অধিকসংখ্যক স্বতন্ত্র প্রার্থী অংশ নিতে পারেন, সেজন্য প্রার্থীর মনোনয়নপত্রের সঙ্গে
২৫০ ভোটারের সমর্থন সূচক স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা সংযুক্তির বিষয়টি বাতিল করা হয়েছে। এ
ছাড়া নির্বাচনী পোস্টার, নির্বাচনী প্রচারণা এবং প্রার্থীদের জামানতসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ
বিষয়ে বড় ধরনের সংশোধন আনা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণে নিবন্ধিত
৪৪টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে বিএনপিসহ ১০টি দল। দলীয় প্রতীকে
অংশ নেবে ১১টি দল। প্রতীক ছাড়া অংশ নেওয়ার পক্ষে দুটি। এখনো নির্বাচনে অংশ গ্রহণ বিষয়ে
সিদ্ধান্তহীনতায় পাঁচটি রাজনৈতিক দল। সব মিলিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পথেই নিবন্ধিত
বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল। তারা ইতোমধ্যে উপজেলাসহ স্থানীয় সরকারের সব পর্যায়ের নির্বাচনে
অংশ নিতে প্রার্থীও ঠিক করতে শুরু করেছে।
জানা গেছে, বিএনপির নেতৃত্বাধীন যুগপৎ
আন্দোলনে থাকা দলগুলোর মধ্যে ছয়টি নিবন্ধিত। এসব দলের শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন, তারা
উপজেলা নির্বাচনও বর্জন করবেন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলে আটটি নিবন্ধিত
দল। একটি ছাড়া সবগুলোই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক। এ ছাড়া সংসদের প্রধান
বিরোধী দল জাতীয় পার্টি দলীয় প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা জানিয়েছে।
জাপার দপ্তর সম্পাদক রাজ্জাক খান জানিয়েছেন,
দলীয় প্রতীকে তারা স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। ইতোমধ্যে দুই সিটিতেও
তারা প্রার্থী দিয়েছেন। রংপুর সদর উপজেলা পরিষদে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে বলেও জানান
তিনি।
জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে
অংশ নেওয়া নিবন্ধিত দলগুলোর বেশিরভাগই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। আবার সিদ্ধান্তহীনতায়
রয়েছে কোনো কোনো দল।
এর আগে ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে
অংশ না নিলেও বিএনপি পরে উপজেলার ভোটে অংশ নিয়েছিল। যদিও তখন পর্যন্ত স্থানীয় সংসদ
নির্বাচনে দলীয় প্রতীক দেওয়ার বিধান চালু হয়নি। পরে ২০১৯ সালে উপজেলায় দলীয় প্রতীকে
নির্বাচন হলেও বিএনপি সেখানে প্রার্থী দেয়নি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন বর্জন করার পর এবার
স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও অংশ না নেওয়ার দলীয় সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে রেখেছেন তারা।
তবে নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক
তৃণমূল বিএনপি। দলটির চেয়ারপারসন শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, ‘দল হিসেবে উপজেলা নির্বাচনে
অংশ নেওয়ার একটা মনোভাব আছে। যারা অংশ নিতে চায় তাদের আমরা উৎসাহিত করছি। তবে দলীয়ভাবে
এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। মহাসচিব দেশের বাইরে রয়েছেন। ঈদের পর দেশে ফিরলে তখন চূড়ান্ত
সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাপারে এখনো কোনো
সিদ্ধান্ত নেয়নি আরেক নতুন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম)।
এ তথ্য জানিয়ে দলটির মহাসচিব ড. মো.
শাহজাহান বলেন, ‘আসন্ন উপজেলা নির্বাচনও বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো হলে, সেখানে
অংশ নেওয়ার কোনো অর্থ হয় না। তবে আমরা এখন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। শিগগির এ ব্যাপারে
দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে
যাওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত হলে দলীয় প্রতীকে, নাকি প্রতীক ছাড়া যাব, তখন সে
সিদ্ধান্তও হবে।’
কল্যাণ পার্টিও নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাপারে
ইতিবাচক বলে জানা গেছে। জানতে চাইলে দলটির চেয়ারম্যান সংসদ সদস্য সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম
বলেন, ‘কল্যাণ পার্টি নির্বাচনমুখী দল। শিগগির উপজেলা নির্বাচনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত
নেওয়া হবে।’
প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে
গেলে দলীয় হাতঘড়ি প্রতীকে ভোট করবেন তাদের প্রার্থীরা।’
বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (কাঁঠাল প্রতীক)
মহাসচিব জাফর আহমেদ জয় বলেন, ‘তারা দলীয় প্রতীকে উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন।’
তবে চেয়ারম্যান পদে ১ লাখ টাকা জামানত
নির্ধারণ সঠিক হয়নি মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচনে আগে জামানত ছিল ১০ হাজার
টাকা। তাই জামানতের টাকা আগের অবস্থায় নেওয়ার জন্য শিগগির রিট করা হবে।’
ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান
শেখ ছালাউদ্দিন ছালু বলেন, তারা আনুষ্ঠানিকভাবে উপজেলা নির্বাচনে যাবেন না। তবে দলের
কোনো প্রার্থী চাইলে তিনি নির্বাচন করতে পারবেন, কোনো বাধা থাকবে না।’
দলীয় ‘একতারা’ প্রতীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ
করবে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি)। অন্যদিকে বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল) নির্বাচনের
বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।
এদিকে উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণের
ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি বাংলাদেশ কংগ্রেস। ডাব প্রতীকের দলটির চেয়ারম্যান কাজী
রেজাউল হোসেন কালবেলাকে বলেন, ‘আমরা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত
জানাব।’
তবে ১৪ দলের শরিক সাম্যবাদী দলের সাধারণ
সম্পাদক দীলিপ বড়ুয়া জানিয়েছেন, তিনি এ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেননি।
দলীয় প্রতীক ছাড়া অংশ নেবে গণতন্ত্রী
পার্টি। দলটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. শহীদুল্লাহ সিকদার বলেন, ‘স্থানীয় সরকার নির্বাচন
দলীয় প্রতীক ছাড়াই হওয়া উচিত।’
ওয়ার্কার্স পার্টি উপজেলা নির্বাচন
করবে দলীয় হাতুড়ি প্রতীক নিয়ে। একই অবস্থানে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলও (জাসদ)।
নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত
নিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি সিপিবিসহ পাঁচ দলের সমন্বয়ে গঠিত বাম গণতান্ত্রিক
জোট। জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘পরিবেশ না থাকায় আমরা উপজেলা
নির্বাচনেও অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত
নিয়েছে ড. কামাল হোসেনের দল গণফোরাম। দলটির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা
নির্বাচনে যাচ্ছি না।’
দলীয় প্রতীকে নির্বাচনে যেতে চায় কৃষক
শ্রমিক জনতা লীগ। একই পথে হাঁটছে তরীকত ফেডারেশন। দলটির চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর
মাইজভান্ডারী বলেন, ‘আমাদের কেউ নির্বাচনে আগ্রহী হলে সুযোগ দেওয়া হবে।’
উপজেলা নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর
এমন অবস্থানের বিষয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী নূরুল আমিন ব্যাপারী বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করছি
সংসদ নির্বাচনে যেভাবে দলগুলোর অবস্থান ছিল উপজেলা নির্বাচনেও সে রকমই আছে। অর্থাৎ
যারা সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল তারা এবারের নির্বাচনেও শরিক হচ্ছে। তবে নির্দলীয়
নির্বাচন করতে আওয়ামী লীগ যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এতে হয়তো প্রার্থী কিছুটা বাড়তে পারে।
বিএনপিসহ সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো থেকে অনেকেই স্বতন্ত্র হয়ে অংশ নিতে পারেন।’
নির্বাচন কমিশন ইসি বিএনপি আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
বিএনপি মেজর হাফিজ উদ্দিন কর্নেল অলি আহমেদ মাহমুদুর রহমান মান্না
মন্তব্য করুন
১৪ দল আওয়ামী লীগ ভারতীয় পণ্য বর্জন
মন্তব্য করুন
সরকার বিরোধী জিএম কাদের জাতীয় পার্টি
মন্তব্য করুন
বিএনপি ভারত বিরোধী ভারতীয় পণ্য বর্জন
মন্তব্য করুন
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে বিরত থাকা বিএনপি, ইসলামী আন্দোলন, সিপিবিসহ ১৪টি নিবন্ধিত দল উপজেলা নির্বাচনেও অংশ নিচ্ছে না। দেশের নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থানে তেমন কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না। আর সংসদ নির্বাচনে ভোটের মাঠে থাকা বেশিরভাগ দলই থাকছে উপজেলায়। এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে অংশ নেওয়ার সুযোগ থাকলেও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ তা ব্যবহার করছে না। তাদের পথেই হাঁটছে ১৪ দলীয় জোটের শরিক গণতন্ত্রী পার্টি।
বিএনপি এখন দলে এবং তাদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করছে এমন অনেক নেতাকেই বিশ্বাস করে না। বিএনপির নীতিনির্ধারকদের কাছে এ রকম তথ্য উপাত্ত আছে যে, তারা আসলে সরকারের সঙ্গে গোপনে আঁতাত করেছে এবং বিএনপির সঙ্গে থেকে আন্দোলনকে দুর্বল করেছে বা বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। এই সমস্ত নেতাদের কেউ কেউ বিএনপির দলের আবার কেউ কেউ দলের বাইরে।
বিএনপির ভারত বিরোধী কর্মসূচির পাল্টা হিসেবে আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৪ দলকে আবার নতুন করে সাজানো এবং সক্রিয় করার জন্য দলটির সমন্বয়ক আমির হোসেন আমুকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। আগামী ঈদের পরপরই ১৪ দলের বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাবে এবং দলটির ভিতর যে মান অভিমান, ক্ষোভ, হতাশা ইত্যাদি দূর করে দলকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে কাজ শুরু করা হবে বলে একাধিক সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে নিশ্চিত করেছে।
জিএম কাদের এখন ঘরে বাইরে প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছেন। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে তার দলের ভরাডুবি হয়েছে। গত নির্বাচনের চেয়ে তিনি উল্লেখযোগ্য কম আসন পেয়েছেন। দলের ভিতরে তার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। জাতীয় পার্টি একটা বড় ধরণের ভাঙনের মুখে পড়েছে। রওশন এরশাদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির একটি বড় অংশ আলাদা জাতীয় পার্টি গঠন করছে। এত কিছুর পর দলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা জিএম কাদের এখন একটা বড় সমস্যা। কিন্তু তারপরও জিএম কাদের তাদের সরকার বিরোধিতাকে আঁকড়ে ধরে থাকতে চাইছেন।
মুখে ভারত বন্দনা আর ভিতরে ভিতরে ভারত বিরোধিতাকে উস্কে দেওয়া- বিএনপির এই পুরনো কৌশল আবার নতুন করে চালু করতে যাচ্ছে। ভারতকে চাপে রাখার কৌশল গ্রহণ করেছে দীর্ঘ ১৭ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটি। বিএনপি গতকাল তাদের দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক করেছে। এই বৈঠকে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে এবং এই আলোচনা থেকে একটা বিষয় স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়েছে, তা হল বিএনপি এখন ভারতকে চাপে রাখতে চায়।