নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:৫৮ পিএম, ০৭ অগাস্ট, ২০২০
গত ২৫ মার্চ আকস্মিকভাবেই বেগম খালেদা জিয়া কারামুক্ত হন। এর আগের দিন আইনমন্ত্রী ঘোষণা করেন যে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বিশেষ বিবেচনায় ফৌজদারি কার্যবিধির ধারা অনুযায়ী বেগম খালেদা জিয়ার সাজা ৬ মাসের জন্যে স্থগিত করা হয়েছে এবং এই সময়ে তিনি তাঁর বাড়িতে চিকিৎসা নিবেন। এরপরপরই বেগম খালেদা জিয়া মুক্ত হন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে যে, বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারে দুইজন সদস্য তাঁর বোন সেলিনা ইসলাম এবং ভাই শামীম এস্কান্দার এর আগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গণভবনে সাক্ষাত করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সময় বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কথা যেমন তুলে ধরেন, তেমনি অতীতের ভুলভ্রান্তির জন্যেও ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তাঁরা প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেন যে, বেগম খালেদা জিয়া জেল থেকে বের হয়ে কোন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়াবেন না এবং রাজনীতির প্রতি তাঁর অনাগ্রহ রয়েছে। এর পরপরই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আইন মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। ২৫ মাস কারাভোগ করার পরে বেগম খালেদা জিয়া মুক্ত হন। এখন নতুন করে বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
তবে দলের নেতারা বা আইনজীবীরা এই ব্যাপারে গণমাধ্যমে কথা বললেও তাঁর পরিবারের সদস্যরা বলছেন যে, তাঁরা আইনজীবী বা বিএনপির কোন নেতৃবৃন্দকে এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়াতে আগ্রহী নন। বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের একজন সদস্য বলেছেন যে, আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আগে সাক্ষাত করবো, প্রধানমন্ত্রী যেভাবে পরামর্শ দিবেন সেভাবেই আমরা জামিনের আবেদন করবো।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের জন্যে তাঁরা প্রক্রিয়া শুরু করেছে। ১৫ আগস্টের পর যেকোন দিন হয়তো তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করতে পারবেন বলে আশা করছেন। যদিও এখন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের এরকম কোন কর্মসূচী প্রধানমন্ত্রীর কর্মতালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের একজন সদস্য বলেছেন যে, ১৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়টি প্রধানমন্ত্রীর জন্যে অত্যন্ত বেদনাময় এবং আবেগতাড়িত সময়। এইজন্যে তাঁরা ১৫ আগস্টের পরে এইরকম একটি সাক্ষাতের অনুমতি চাইবেন এবং তাঁরা আশা করছেন যে, সাক্ষাত করতে পারবেন।
বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের ওই সদস্য বলছেন যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বেগম খালেদা জিয়া কিছু সুনির্দিষ্ট বার্তা পৌঁছে দেবেন এবং এই বার্তাগুলো বেগম খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়ার জন্যে অনুরোধ করেছেন। ওই সদস্য বলেন যে, প্রথমেই বেগম খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তাঁকে জামিন দেওয়ার জন্যে এবং এটাতে তিনি মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন।
উল্লেখ্য, ২০১৮ এর ৭ ফেব্রুয়ারি জিয়া এতিমখানা দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হয়ে বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে যান এবং এরপরে জিয়া চ্যারিটেবল দুর্নীতি মামলাতেও তাঁর ৭ বছরের দণ্ড হয়। মোট ১৭ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত বেগম খালেদা জিয়া আপিল বিভাগেও জামিন বঞ্চিত হয়েছেন। আর তাই শেখ হাসিনার করুণা ভিক্ষা ছাড়া তাঁদের সামনে আর কোন পথ ছিলনা। কিন্তু শেখ হাসিনা জামিনের অনুমোদন দিয়ে যে মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছেন এজন্যে বেগম খালেদা জিয়া পরিবারের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন বলেও পরিবারের একজন সদস্য জানিয়েছেন। এই কৃতজ্ঞতার বার্তাটি তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দিতে চান।
দ্বিতীয়ত, বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতা থাকাকালীন সময়ে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতাকর্মীদের সঙ্গে যে ধরনের ঘটনাগুলো ঘটেছে, বিশেষ করে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা, ১৫ আগস্টে কেক কেটে জন্মদিন পালনের মতো বিভিন্ন ঘটনাগুলোকে অনভিপ্রেত এবং অনিচ্ছাকৃত বলে মন্তব্য করেছেন এবং এগুলোর জন্যে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন। বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যরা যখন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন তখন বেগম খালেদা জিয়ার এই দুঃখ প্রকাশের বার্তাটিও প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দেবেন বলে তাঁরা জানিয়েছেন।
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।
উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।