নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৫৮ পিএম, ১২ অগাস্ট, ২০২০
ডা. দীপু মনি একাধারে চিকিৎসক এবং আইনজীবী। আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বরত মন্ত্রী। তাকে মনে করা হয়ে আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় প্রজন্মের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় উজ্জ্বল নারী নেত্রী। আওয়ামীলীগে জোহরা তাজউদ্দীন, সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী এবং মতিয়া চৌধুরীদের পর যে সমস্ত নারীরা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সম্ভাবনার স্বাক্ষর রাখছেন তাদের মধ্যে নিঃসন্দেহে দীপু মনি অন্যতম।
দীপু মনি আওয়ামী লীগের পাদপ্রদীপে আসেন ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় আইভি রহমানের মৃত্যুর পর। আইভি রহমানকে মনে করা হতো স্টাইলিশ নারী নেত্রী। তিনি আওয়ামী লীগের নারী নেতৃত্বের একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। তিনি একদিকে যেমন ছিলেন অসম্ভব আধুনিক তেমনি ছিলেন একজন একনিষ্ট কর্মী। নিজেকে কখনো নেতা ভাবতেন না। যেভাবে তার মৃত্যু হয়েছিল, সেই মৃত্যুর ঘটনাটি দেখলেও দেখা যায় ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার দিন তিনি মঞ্চে উঠেননি। তিনি তার কর্মীদেরকে নিয়ে রাস্তায় বসেছিলেন প্রিয় নেত্রীর বক্তৃতা শোনার জন্য। তার স্বামী আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা ছিলেন। এই অবস্থায় চাইলেই তিনি মঞ্চে বসতে পারতেন বা নিরাপদ দূরত্বে চেয়ারে বসে থাকতে পারতেন। কিন্তু তিনি একদম মঞ্চের সামনে রাজপথে বসেছিলেন।
আইভি রহমানের মৃত্যুর পর দীপু মনি মহিলা বিষয়ক সম্পাদক হন এবং পাদপ্রদীপে আসেন। অনেকেই দীপু মনির মধ্যে আইভি রহমানের ছায়া দেখতে পান। আইভি রহমানের যে স্টাইল বা আইভি রহমানের যে ব্যক্তিত্ব সেই ব্যক্তিত্বের কিছুটা হলেও প্রকাশ দীপু মনির মধ্যে পাওয়া যায়। আবার আওয়ামীলীগের নারী নেতৃত্বের আরেকটি ধারা হলেন বেগম মতিয়া চৌধুরী। যিনি পরিশ্রমী, কর্মঠ, সৎ এবং স্পষ্টবাদী। রাজনীতিতে আদর্শের সঙ্গে বিন্দুমাত্র আপোষ করেন না। দীপু মনির মধ্যে বেগম মতিয়া চৌধুরীরও প্রভাব দেখা যায়। বেগম মতিয়া চৌধুরী মন্ত্রী হিসেবে যেমন সফল মন্ত্রীদের অন্যতম। তার যেমন মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনে নূন্যতম বিচ্যুতি নেই, তেমনি তিনি আদর্শের সঙ্গে নূন্যতম আপোষ করেন না, আদর্শের বিষয়ে তিনি দৃঢ় অবস্থায় থাকেন, যেমন নিজ যোগ্যতায় আওয়ামী লীগে তার আসন পোক্ত করেছেন, দীপু মনি ঠিক তেমনি। সরকার পরিচালনায় অনেকে দীপু মনিকে মতিয়া চৌধুরীর ছায়া মনে করেন।
তবে দীপু মনি আসলে কারো মতোই নন। না আইভি রহমানের মতো না মতিয়া চৌধুরীর মতো। দীপু মনি দীপু মনির মতো। দীপু মনি নিজের জায়গা পোক্ত করেছেন তিল তিল করে। যদিও তাঁর পিতা আওয়ামী লীগের সর্বকালের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের মধ্যে একজন। বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর। কিন্তু সেই পরিচয় ছাপিয়ে দীপু মনি নিজ পরিচয়ে উদ্ভাসিত হয়েছেন। দীপু মনি যেমন আইভি রহমানের মতো স্টাইলিশ নেত্রী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেননি, তেমনি বেগম মতিয়া চৌধুরীর মতো রূঢ় রৌদ্র মূর্তিতেও তাকে দেখা যায়নি। বরং শান্ত, পরিশীলিত কিন্তু নিজের কথাটা স্পষ্টভাবে হাসতে হাসতে বলার এক অসাধারণ ক্ষমতা দীপু মনির মধ্যে পাওয়া যায়। আর সেই কারণেই আওয়ামী লীগ সভাপতি যেন নিজের হাতে গড়ে তুলেছেন এই নারী নেত্রীকে। আওয়ামী লীগে যেমন জোহরা তাজদ্দীন, সাজেদা চৌধুরী, আইভি রহমান বা মতিয়া চৌধুরীকে দেখে অনেকে রাজনীতিতে এসেছেন। তেমনি নূতন প্রজন্মের অনেক নারীর রাজনীতিতে আসার উৎসাহের অনেক বড় কারণ হলো ডা. দীপু মনি। শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগকে একটা ফুলের বাগানের মতো সাজাতে চান। একটা বাগানে যেমন ফুলের নানা রকম ফুলের সমারোহ থাকে ঠিক তেমনি তিনি নানা মাত্রিক নেতৃত্বের সমারোহ ঘটিয়েছেন আওয়ামী লীগে। দীপু মনি তেমনি একজন ভিন্ন ধারার নেতা। আদতে তিনি একজন শেখ হাসিনার কর্মী। যিনি আসলে তার নিজের মতো করেই বিকশিত হচ্ছেন।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।