নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:৫৯ পিএম, ১৫ অগাস্ট, ২০২০
পাকিস্তানি চিন্তা আদর্শ ও স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্যই গঠিত হয়েছিল বিএনপি। পাকিস্তানের সংসদে আইএসআই এর সাবেক প্রধান এক জবানবন্দীতে বলেছিলেন, বিএনপির জন্য আইএসআই নিয়মিত টাকা দিতো। বিশেষ করে ২০০১ এর নির্বাচনে আইএসআই টাকা দিয়েছিলো এমন জবানবন্দী পাকিস্তানের পার্লামেন্টে রেকর্ড করা হয়েছে।
পঁচাত্তরের এর ১৫ আগস্টের ঘটনাটা ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধী এবং প্রতিক্রিয়াশীল চক্রের একটি ষড়যন্ত্র। এই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে পাকিস্তানের মদদ ছিল অনস্বীকার্য। পাকিস্তানের মূল লক্ষ্য ছিল একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের পরাজয়ের প্রতিশোধ গ্রহণ করা। এই প্রতিশোধ গ্রহণ করার জন্য তারা শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করে নাই, তারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হত্যা করেছিল এবং পাকিস্তানি ভাব ধারা বাংলাদেশে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেছিল। এই পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য তাদের একটি রাজনৈতিক দলের দরকার ছিল। কারণ পাকিস্তানপন্থী যে রাজনৈতিক দলগুলো মুসলিম লীগ বা জামাতে ইসলামের জনগ্রহণযোগ্যতা ছিল না। একাত্তরের ভূমিকার কারণে তারা জনধিকৃত এবং জনগণ কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত হয়েছিলেন।
এই বাস্তবতায় একটি মোডারেট গণতান্ত্রিক এবং ইসলামপন্থী খিচুড়ি রাজনৈতিক দল জন্ম দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এই রকম একটি খিচুড়ি রাজনৈতিক দল হল বিএনপি। আর এজন্যই বিএনপিতে শুরু থেকে দেখা গিয়েছিল স্বাধীনতাবিরোধী, পাকিস্তানপন্থী এবং পাকিস্তান ফেরতদের প্রাধান্য। বিএনপি যখন গঠিত হয় তখন শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে প্রায় ৭০ ভাগ ছিলেন রাজাকার, স্বাধীনতাবিরোধী এবং পাকিস্তানপন্থী। শাহ আজিজ, মাজিদুল হক, মোস্তাফিজুর রহমানের মতো ব্যক্তিরা শুরুতে বিএনপির নীতিনির্ধারক হয়েছিলেন, যারা ছিলেন পাকিস্তানপন্থী। এছাড়াও, বিএনপির শুরুতে ভারতবিরোধী মুক্তিযোদ্ধারাও জায়গা করে নিয়েছিলেন। যেমন- কর্নেল অলি আহমেদ, লেফটেন্যান্ট জেনারেল মীর শওকত আলী প্রমুখ। আর এই কারণেই শুরু থেকে বিএনপি পাকিস্তানী ভাবধারা, পাকিস্তানী মোড়কে বাংলাদেশ বাস্তবায়নের মিশনে ছিল। এ কারণেই তারা পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করে নাই। এই কারণেই তারা পঁচাত্তরের খুনীদের বিচারের প্রক্রিয়া করেনি। বরং খুণীদের লোভনীয় চাকরি দিয়ে বিদেশে প্রেরণ করেছে। এ কারণেই তারা ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করে নাই। এ কারণেই তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী পথে হেঁটেছিল।
কিন্তু বাংলাদেশে ১৯৮১ সালের পর শেখ হাসিনা ধাপে ধাপে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ নেন। চেতনা প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে তিনি সবচেয়ে বড় যে কাজটি করেছিলেন তাহলো জনগণের জাগরণ করা। বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের বার্তা পৌঁছে দেওয়া। আমাদের স্বাধীনতা প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরার ক্ষেত্রে শেখ হাসিনা একটি নিরলস দীর্ঘ কর্মপ্রয়াস গ্রহণ করেন। তার বাস্তবতায় বাংলাদেশে যে নতুন প্রজন্ম তৈরি হয়েছে, তারা স্বাধীনতাবিরোধীদের ঘৃণা করে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে এবং বঙ্গবন্ধু নিয়ে কোন রকম বিতর্ককে বরদাশত করে না। আর এই বাস্তবতায় যে বিএনপি এক সময় তারুণ্য নির্ভর দল ছিল। সেই বিএনপি তরুণদের কাছ থেকে বিচ্যুত হতে থাকে। সেইসাথে তরুণদের কাছ থেকে প্রত্যাখ্যাত হতে থাকে। এই বাস্তবতায় বিএনপির ভেতরে পাকিস্তানপন্থীরা আস্তে আস্তে কোণঠাঁসা হতে থাকে। বিএনপিতে যুগের চাহিদার সাথে তাল মিলিয়ে, তরুণ প্রজন্মের আশা আকাঙ্ক্ষা ধারণ করে নীতি কৌশলের পরিবর্তন হতে থাকে। বিএনপিতে এখন ভারতবিরোধী বক্তব্য খুব একটা দেওয়া হয় না। বিএনপিতে এবার ১৫ আগস্টে কেক কাটার উৎসবও হল না। এমনকি যুদ্ধাপরাধী, স্বাধীনতাবিরোধী পক্ষে যে প্রকাশ্য অবস্থান ১০ বছর আগে বিএনপি নিতো, এখন বিএনপি নেয় না। এই বাস্তবতায় প্রশ্ন উঠেছে যে, বিএনপিতে কি পাকিস্তানপন্থীরা কোণঠাঁসা হয়ে পড়েছে?
বিএনপিতে এখন যারা নীতিনির্ধারক রয়েছেন, তাদের মধ্যে ভারতপন্থী বা প্রাক্তন বিভ্রান্ত বামদের প্রাধান্য বেশি। নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মতো চৈনিক বামরা এখন বিএনপিতে প্রাধান্য বিস্তার করছেন। বিএনপি’র অর্থ প্রবাহের উৎসে যারা আছেন। যেমন- আবদুল আওয়াল মিন্টুরা তারাও ভারতপন্থী হিসেবে পরিচিত। এই বাস্তবতায় বিএনপিতে পাকিস্তানপন্থীরা কি কোণঠাঁসা হয়ে পড়েছেন? আর এই কারণেই কি বিএনপির নীতি কৌশলের পরিবর্তন হয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা তেমনটি মনে করছেন না। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিএনপিতে পাকিস্তানপন্থীদের প্রধান হোতা তারেক জিয়া। তারেক জিয়া শুধু পাকিস্তানী এজেন্ট নয়, পাকিস্তানপন্থীদের সৃষ্টি। এখন বিএনপির রাজনীতি পরিচালিত হয় তারেক জিয়ার নির্দেশেই। কাজেই বিএনপিতে পাকিস্তানপন্থীরা কোণঠাসা হয়েছেন এমনটি ভাবার কোণ কারণ নেই। বরং পাকিস্তানীদের কৌশল বাস্তবায়নের অংশ হিসাবেই বিএনপি হয়তো এখন এই সব বিষয়ে নমনীয় অবস্থানে আছে। সুযোগ পেলে তারা খোলস পাল্টে ফেলবে এবং পঁচাত্তরের সময় তাদের দলের প্রতিষ্ঠাতার যে ভূমিকা ছিল, সেই রকম ভূমিকা গ্রহণ করার ক্ষেত্রে এতোটুকু পিছপা হবে না।
মন্তব্য করুন
খন্দকার মোশাররফ হোসেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জন বিএনপি উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়া থেকে পিছু
হটল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটির যেসব নেতা নির্বাচনের প্রস্তুতিতে ছিলেন, এরই
মধ্যে তাদের প্রার্থী না হতে বারণ করা হয়েছে। জামায়াতের নীতিনির্ধারণী পর্ষদ কেন্দ্রীয়
নির্বাহী পরিষদের বৈঠকে আলোচনার পর উপজেলা নির্বাচনে না যাওয়ার এ সিদ্ধান্ত হয়। কেন্দ্রের
এ সিদ্ধান্ত স্থানীয় দায়িত্বশীল নেতারা তৃণমূলে জানিয়ে দিয়েছেন। সেইসঙ্গে যারা মনোনয়নপত্র
জমা দিয়েছেন, তাদের প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে।
তবে এ বিষয়ে জামায়াত কোনো আনুষ্ঠানিক
ঘোষণা দেয়নি। দলীয় সিদ্ধান্ত না থাকলেও দেশের বিভিন্ন এলাকায় জামায়াতের অনেক নেতা স্বতন্ত্র
প্রার্থী হিসেবে উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সম্ভাব্য
প্রার্থীরা স্থানীয়ভাবে নানারকম প্রচার ও গণসংযোগও করছিলেন। বিশেষ করে রোজার মধ্যে
এবং ঈদুল ফিতরে তারা ব্যাপক গণসংযোগ করেছেন।
দলটির নেতারা বলছেন, মূলত বেশকিছু কারণে
বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্বাচনে যাচ্ছে না জামায়াত। তার মধ্যে মোটাদাগে চারটি কারণের
কথা বলছেন নেতারা।
কারণগুলো হচ্ছে…
১। মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগে ক্ষমতাসীনদের
‘হস্তক্ষেপ’
২। বর্তমান নির্বাচনী ব্যবস্থা ও পরিবেশের
প্রতি জনগণের ‘আস্থার সংকট’
৩। গণতন্ত্র না থাকা এবং
৪। উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিয়ে ‘অবৈধ
সরকার’কে বৈধতা না দেওয়া
এদিকে, উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপের
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখের (সোমবার) আগেই সিদ্ধান্ত বদল করায় জামায়াতের তৃণমূলে
অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। মাঠপর্যায়ে পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, গাইবান্ধা, যশোর, সাতক্ষীরা,
চুয়াডাঙ্গাসহ বেশকিছু উপজেলায় জামায়াতের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা সম্ভাব্য প্রার্থী
হিসেবে নির্বাচনী তৎপরতা শুরু করেছিলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকটি উপজেলার
সম্ভাব্য প্রার্থীরা বলেন, নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত এমন সময় এলো, যখন তারা ব্যাপকভাবে
গণসংযোগ করছিলেন। এতে তৃণমূল নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মাঝে নেতিবাচক বার্তা যায়।
নির্বাচনে গেলে কী লাভ আর কী ক্ষতি—এটা ভেবে অনেক আগেই সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন দলের
নীতিনির্ধারকরা। তবে সার্বিক পরিস্থিতিতে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতারা যে সিদ্ধান্ত
নিয়েছেন, সেটাকেও সম্মান জানাতে চান তারা।
গতকাল মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) জামায়াতে
ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল হালিম বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি
বিবেচনায় উপজেলা নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জামায়াত। এরই মধ্যে সারা দেশে দলীয়
সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কেউ মনোনয়ন জমা দিলে তা প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে।
দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, বিএনপি-জামায়াতসহ
প্রায় ৬৩টি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ সরকারের অধীন গত ৭ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচন
বর্জন করেছে। বিএনপিও এ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। ইসলামী দলগুলোর অন্যতম চরমোনাই
পীরের ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশও সংসদ নির্বাচনের মতো উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে না যাওয়ার
সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সবমিলিয়ে জামায়াতকেও শেষ পর্যন্ত উপজেলা নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত
নিতে হলো।
এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের
বিষয়ে শুরুর দিকে কিছুটা নমনীয় ছিল জামায়াত। জয়ের সম্ভাবনা আছে এবং স্থানীয়ভাবে প্রভাব
আছে—এমন উপজেলাগুলোতে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ব্যাপারে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত
নিয়েছিল দলটি। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য এবং প্রার্থী মনোনয়নের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট
উপজেলা ও জেলা কমিটির দায়িত্বশীল নেতাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। সে মোতাবেক সম্ভাব্য
প্রার্থীরা প্রস্তুতিও নিচ্ছিলেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশের চলামান রাজনৈতিক
ও সার্বিক পরিস্থিতিতে ঈদের আগে দলের নীতিনির্ধারণী পর্ষদ কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের
বৈঠক ডাকে জামায়াতে ইসলামী। সেখানে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা
হয়। একপর্যায়ে উপজেলা নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ঈদুল ফিতরের পরপরই গত
শনিবার উপজেলা নির্বাচন না করার বিষয়ে জেলা ও উপজেলার দায়িত্বশীল নেতাদের মাধ্যমে তৃণমূলে
মৌখিকভাবে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে।
সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের ব্যাপারে জামায়াতের
নেতারা বলছেন, তারা পর্যালোচনা করে দেখেছেন যে, দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো
পরিবেশ নেই। জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারছে না। নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে ভূমিকা
রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে। যার সর্বশেষ প্রমাণ গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন।
দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ অসংখ্য
রাজনৈতিক দল এ সরকারের অধীনে নির্বাচন বর্জন করেছে। এ অবস্থায় জামায়াতে ইসলামী উপজেলা
নির্বাচনে অংশ নিয়ে ‘অবৈধ সরকার’কে বৈধতা দেওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। তা ছাড়া নির্বাচনের
আগেই বিভিন্ন স্থানে জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থীদের হুমকি দিয়ে ভয় দেখানো হচ্ছে। এসব
বিষয়কে বিবেচনা করে উপজেলা নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জামায়াত।
গতকাল জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি
জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী শুধু নয়, বাংলাদেশের কোনো গণতান্ত্রিক
দল উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। কারণ, গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে দেশের
জনগণ ভোট দিতে যায়নি। তারা একতরফা নির্বাচন বর্জন করেছে। সেই জনরোষ এখনো আছে। সুতরাং
যেসব কারণে আমরা জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করেছি, সেসব কারণেই উপজেলা নির্বাচনে যাচ্ছি
না। তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী জনগণের জন্য রাজনীতি করে। জনগণের প্রতি জামায়াতের দায়বদ্ধতা
আছে। দায়িত্বশীল দল হিসেবে জামায়াত জনমতকে উপেক্ষা করে নির্বাচনে যেতে পারে না’।
প্রসঙ্গত, সর্বশেষ ২০১৪ সালের জাতীয়
সংসদ নির্বাচনের পরপর অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিয়ে জামায়াতের শতাধিক প্রার্থী
উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলাসহ) হন। ২০০৯ সালের নির্বাচনে ২৪টি উপজেলায়
চেয়ারম্যানসহ ৩৯ জন ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলাসহ) নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১৯ সালে দলীয়
প্রতীকে অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচন বর্জন করে জামায়াত। দলের নিবন্ধন না থাকলেও স্বতন্ত্র
প্রার্থী হওয়ার সুযোগ ছিল জামায়াত নেতাদের। কিন্তু দলীয় সিদ্ধান্তে সেবার কেউ নির্বাচনে
অংশ নেননি।
উপজেলা নির্বাচন জামায়াত বিএনপি
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-কে বিজয়কে সুসংহত করার পথে
প্রতিবন্ধকতা উল্লেখ করে সন্ত্রাসী এ অশুভ শক্তিকে প্রতিহত করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
আজ বুধবার (১৭ এপ্রিল) ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে ধানমন্ডি
৩২ নম্বরে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন।
কাদের বলেন, বিজয়কে সুসংহত করার পথে প্রতিবন্ধকতা হলো বিএনপির
মতো সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসী অশুভ শক্তি। এ শক্তিকে প্রতিহত করতে হবে। আজকের এ দিনে
বিএনপিসহ স্বাধীনতাবিরোধী সন্ত্রাসী শক্তি সব অপশক্তিকে, যারা আমাদের বিজয়কে সংহত
করার প্রতিবন্ধক, এদের আমরা পরাজিত করব, পরাভূত করব, প্রতিহত করব। আমাদের লড়াইকে আমরা
এগিয়ে নিয়ে যাব।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমি তো কোনো দাবিকে বিচ্ছিন্নভাবে
কিছু বলতে পারি না। মন্ত্রিসভা আছে, প্রধানমন্ত্রী আছেন। তারা এত বছর পর দাবিটা তুলছেন,
কেন তুলছেন এটাও জানার দরকার আছে।
তিনি আরও বলেন, আজকের এই দিনে আমরা শপথ নেব মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়
বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে ধারাবাহিক
লড়াইয়ে আমরা এগিয়ে যাব। উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে বয়ে নিয়ে
যাব, এটাই হোক আমাদের শপথ।
এর আগে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ
মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পুষ্পস্তবক অর্পণের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাধীনতার স্থপতি
বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। প্রধানমন্ত্রীর
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে আওয়ামী লীগের অঙ্গ-সহযোগী ও ভাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধুর
প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
বিএনপি মুজিবনগর দিবস ওবায়দুল কাদের
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছে যে, মন্ত্রী এবং এমপিরা উপজেলা নির্বাচনে কোন প্রার্থীকে সমর্থন করতে পারবে না। তাদেরকে নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকতে হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও একই রকম বার্তা দিয়েছেন। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে লিখিত নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। কিন্তু এই সমস্ত নির্দেশনা উপেক্ষা করে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা উপজেলা নির্বাচনে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে বিজয়ী করাতে মাঠে নেমেছেন। এমনকি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের নির্বাচনী এলাকাতেই এমপিরা প্রার্থীর নাম ঘোষণা করছেন।
উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়া থেকে পিছু হটল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটির যেসব নেতা নির্বাচনের প্রস্তুতিতে ছিলেন, এরই মধ্যে তাদের প্রার্থী না হতে বারণ করা হয়েছে। জামায়াতের নীতিনির্ধারণী পর্ষদ কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের বৈঠকে আলোচনার পর উপজেলা নির্বাচনে না যাওয়ার এ সিদ্ধান্ত হয়। কেন্দ্রের এ সিদ্ধান্ত স্থানীয় দায়িত্বশীল নেতারা তৃণমূলে জানিয়ে দিয়েছেন। সেইসঙ্গে যারা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন, তাদের প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে।