নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৫৮ পিএম, ১৫ অগাস্ট, ২০২০
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যাদেরকে নিজ হাতে গড়ে তুলেছিলেন তাঁর মধ্যে অন্যতম ড. কামাল হোসেন। মাত্র ৩২ বছর বয়সে ড. কামাল হোসেনকে আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব তুলে দিয়েছিলেন। এরপর বঙ্গবন্ধু তাঁকে দিয়েছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। কিন্তু জাতির পিতা হত্যাকাণ্ডের পর ড. কামাল হোসেনের কাছ থেকে যেমন ভূমিকা প্রত্যাশিত ছিল সেই ভূমিকা তিনি পালন করেননি। কেন তিনি পালন করেননি সেটা যেমন প্রশ্ন, তেমনি প্রশ্ন ৭৫ এর পর ১৯৮১ থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে শেখ হাসিনার কাজে বাঁধা দেওয়াই ছিল ড. কামাল হোসেনের প্রধান কাজ। শেখ হাসিনার রাজনৈতিক জীবনকে প্রতিকূল করার এজেন্ডা বাস্তবায়নে ড. কামাল হোসেন যেন ব্যস্ত ছিলেন। কেন তিনি এরকম কর্মকাণ্ডগুলো করেছেন- এটা রাজনৈতিক গবেষণার বিষয়।
ড. কামাল হোসেন কথায় কথায় জাতির পিতার কথা বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের কথা বলেন। এটা কি কেবলই একটি মুখোশ? নাকি বাস্তবে তিনি বঙ্গবন্ধুকে ধারণ করেন, বঙ্গবন্ধুতে বিশ্বাস করেন? ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট যখন জাতির পিতাকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় তখন ড. কামাল হোসেন ছিলেন বিদেশে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানাও তখন ব্রাসেলসে অবস্থান করছিলেন। যখন বাংলাদেশে ক্যু হয়েছে, বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হয়েছেন- এই খবরগুলো শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা জানতে পারলে তখন স্বাভাবিকভাবেই তাঁরা মুষড়ে পড়ে, তাঁরা নিকটজনের সহযোগিতা চান, দলের অন্যান্য যারা আছেন তাঁরা যেন এই হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে রুখে দাঁড়ায় সেরকম একটি প্রত্যাশা বুকে ধারণ করেছিলেন। এই প্রত্যাশা থেকেই ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে তাঁরা যোগাযোগ করেছিলেন। ড. কামাল হোসেনকে তাঁরা অনুরোধ করেছিলেন এই হত্যার প্রতিবাদ করতে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এই খুনী সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে। কিন্তু ড. কামাল হোসেন সেই সময় শেখ হাসিনা এবং তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানার এই আবেদন প্রত্যাখ্যান করেন এবং এক নিরব মৌনতা অবলম্বন করেছিলেন। কেন ড. কামাল হোসেন সেদিন এই ভূমিকা পালন করেছিলেন তা এখনো রহস্যময়। ড. কামাল হোসেনও এই প্রশ্নের উত্তর কখনো দেননি, এই ধরণের প্রশ্ন করা হলে তিনি সবসময় তা এড়িয়ে গেছেন।
প্রশ্ন হলো যে, ড. কামাল হোসেন কি কাপুরুষ ছিলেন? এইজন্যে তিনি সেইসময় খুনী মোস্তাকের ধৃষ্টতা এবং অসাংবিধানিক ক্ষমতা দখলের প্রতিবাদ করেননি? নাকি তিনি আসলে খলনায়ক ছিলেন, তিনি আসলে খুনীদের প্রচ্ছন্ন সমর্থন দিতেই নিরব ছিলেন? এই প্রশ্নের উত্তর বাংলাদেশের ইতিহাসের জন্য জরুরী। ড. কামাল হোসেনকে নিয়ে এই প্রশ্ন ওঠার প্রধান কারণ হলো পরবর্তীতে ড. কামাল হোসেনের ভূমিকা। ১৯৮১ সালে ১৭ মে দেশে ফেরেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। এরপর তাঁকে ঘরে-বাইরে এক প্রতিকূল পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। তিনি একদিকে যেমন স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের সংগ্রামের জন্যে জনগণকে প্রস্তুত করার চেষ্টা করেন, অন্যদিকে দলের ভেতর ষড়যন্ত্রকারী এবং নানা মত-পথের প্রতিবন্ধকতা তাঁকে মোকাবেলা করতে হয়েছে। এই সময় সবথেকে বড় প্রতিকূলতা দলের ভেতর তৈরি হয়েছিল তা হলো ড. কামাল হোসেন। ড. কামাল হোসেনরা সেই সময় পদে পদে শেখ হাসিনার কাজে বাঁধা দেওয়া, পদে পদে শেখ হাসিনার নীতি কৌশলকে চ্যালেঞ্জ করার নীতি গ্রহণ করেছিল। যদিও ১৯৮১ সালে জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পরে শেখ হাসিনা ড. কামাল হোসেনকে মনোনয়ন দিয়েছিলেন। কিন্তু চাচার প্রতি যে আস্থা শেখ হাসিনা রেখেছিলেন, সেই আস্থার প্রতিদান কখনো দিতে পারেননি ড. কামাল হোসেন। বরং সবসময় তিনি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডকে চ্যালেঞ্জ করেছেন এবং আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ রাখার ক্ষেত্রে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। ড. কামাল হোসেন আসলেই কি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক? নাকি একজন মুখোশধারী খলনায়ক নাকি কাপুরুষ? ইতিহাস অনুসন্ধানে এই প্রশ্নের উত্তরও অত্যন্ত জরুরী।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।