নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:০১ পিএম, ০৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০
আওয়ামী লীগের নাম ব্যবহার করে জালিয়াত চক্রের অন্যতম নেতা সাহেদের ইস্যু শেষ না হতেই দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউওনও) ওয়াহিদা খানম ও তাঁর বাবা ওমর আলী শেখের ওপর হামলার ঘটনায় একাধিক যুবলীগ নেতাসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙ্গুল উঠেছে। পত্রিকার খবর বেরিয়েছে যে, দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার যুবলীগের সভাপতি ১০ লাখ টাকা পদ বাণিজ্যের মাধ্যমে নেতা হয়েছে। যুব লীগের এসব নেতাদের অনেকের বিরুদ্ধে মাদক সেবন, বিক্রি সহ জঘন্য অপরাধের ফিরিস্তি দিয়েছেন স্থানীয় সাংসদ ও পৌর মেয়র। এরা অনেকেই অনুপ্রবেশকারী।
এদিকে কুষ্টিয়া জেলা যুবলীগের আহবায়কের নেতৃত্বে এনআইডি জালিয়াতির মাধ্যমে নিরীহ মানুষের শত কোটি টাকার জমির আংশিক বিক্রি ও বাকী অংশ বিক্রির চেষ্টার অভিযোগের প্রমাণ সহ ৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে একটি টেলিভিশনের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে ভয়াবহ প্রতারণার খবর প্রচারিত হয়েছে। কুষ্টিয়া জেলা যুবলীগের আহবায়কের বিরুদ্ধে শিবির ছাত্রদল, বিএনপি হয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে জেলা যুবলীগের আহবায়কের পদ কেনার অভিযোগ উঠেছে। তিনি কিছুদিন আগে র্যাবের হাতে গ্রেফতার হবার পরে জেল থেকে ফিরলেও তার দলীয় পদ বহাল আছে। অভিযোগ উঠেছে যে, যুবলীগের বিগত কমিটির সময় মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে সারা দেশে বহু জেলা-উপজেলায় যুবলীগের কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
যুবলীগ, ছাত্রলীগ, সেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লিগ, যুব মহিলা লীগ সহ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের জেলা উপজেলা, ইউনিয়ন মহল্লা কমিটিতে ব্যাপক পদ ও কিমিটি বাণিজ্যের ঢালাও অভিযোগ আসার পরে যুব মহিলা লীগ বাদে আওয়ামী লীগের অধিকাংশ সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। কিন্তু যারা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে পদ পদবী বা কমিটি অনুমোদন নেওয়ার পরে টাকা উসুল করতে এরা নানা অপরাধ ও অপকর্মে জড়িত হয়ে পড়েছে সারা দেশ জুড়ে। এরা ক্যাসিনোর কেলেংকারীর হোতা বা পাপিয়া, সাহেদদের মত স্থানীয় মিডিয়া কর্মীদের অধিকাংশকে হয় টাকার বিনিময়ে অথবা ভয় ভীতি দেখিয়ে এসব অপকর্মের খবর প্রকাশ হতে দেয় না। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি কিছুই জানতে পারে না। ফলে সব দোষ এসে পড়ে আওয়ামী লীগের উপর।
সারা দেশের সাধারণ মানুষের মুখে মুখে একটা কথা ইদানীং চাউর হয়ে গেছে যে, শেখ হাসিনা বাদে প্রায় সবাইকেই টাকা দিয়ে সবাইকে কেনে যায়। তাই পদ ও কমিটি বাণিজ্যের মাধ্যমে নেতা হওয়া অনুপ্রবেশকারীরা তাদের আর্থিক স্বার্থের ব্যাঘাত হলেই মাঝে মাঝে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। অতি সম্প্রতি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের কর্মী ও সাংসদের ফুফাতো ভাই হাসিনুর রহমান খুনের সঙ্গে অনুপ্রবেশকারী ও দলের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা মোশতাক প্রকৃতির মানুষ জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন নেতা–কর্মীরা। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে দৌলতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের আয়োজিত শোকসভায় বক্তারা এ মন্তব্য করেন। বক্তাদের দাবি, দলের মধ্যে খন্দকার মোশতাক প্রকৃতির লোকজন ভিড়ে গেছেন। তারাই হাসিনুরের মতো নেতাদের খুন করছেন। দলকে দুর্বল করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। তাদের দূর করতে না পারলে হাসিনুরের মতো আরও নেতাদের প্রাণ দিতে হতে পারে। এ জন্য দলের পক্ষ থেকে হাসিনুর হত্যার বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের দাবিও জানানো হয়।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সহ কেন্দ্রীয় নেতাগন এমন কী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী নিজেও অপরাধীর রাজনৈতিক পরিচয় অপরাধীর আত্মরক্ষার ঢাল হতে পারে না বলে মন্তব্য করার পরেও রাজনৈতিক পরিচয়ে অপরাধ হচ্ছে দেশ জুড়ে। এমতাবস্থায় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা মূল দল ও সহযোগী সংগঠনের নবগঠিত কেন্দ্রীয় কমিটি, জেলা উপজেলা কমিটির শূন্য পদ ত্যাগি নেতা কর্মী সমর্থকদের দিয়ে অতি সত্বর পূরন করার জন্য ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। এটা নিয়ে সারা দেশে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টির পাশাপাশি টাকা পয়সা নিয়ে দলের বিভিন্ন পদ পদবী কেনা বেচার বাজার বসেছে। দেশী বিদেশী ডেভিড, ক্রেডিট কার্ড সহ টাকায় লেনদেনের জন্য অনুপ্রবেশকারীরা মুখিয়ে অস্থির পদচারণা চালিয়ে যাচ্ছে জেলা ও কেন্দ্রে চুপিসারে অস্থির পদচারণা চালিয়ে যাচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকগণের ধারণা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নবগঠিত কেন্দ্রীয় কমিটি, জেলা-উপজেলা কমিটির শূন্য পদ অতি সত্বর পূরন করতে গিয়ে যেন পালে পালে নষ্ট অনুপ্রবেশকারীরা দলে ঢুকে না যায় সেই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
ব্রিটিশ হাইকমিশনার বিএনপি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী শামা ওবায়েদ সারাহ কুক
মন্তব্য করুন
উপজেলা নির্বাচন মন্ত্রী-এমপি আওয়ামী লীগ
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে একটি কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন। আজ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ সভাপতির এই নির্দেশনাটি জারি করেছেন। তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপি পরিবারের সদস্য স্বজনরা প্রার্থী হতে পারবেন না। এটি আওয়ামী লীগ সভাপতির একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে। তৃণমূল পর্যন্ত যে পরিবারতন্ত্র ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছিল এবং বিভিন্ন জায়গায় যে জমিদারি প্রথা তৈরির শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছিল সেটা প্রতিরোধের জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতির এই উদ্যোগ তৃণমূলের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।