নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:৫৯ পিএম, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০
ঢাকা-৫ আসনের মনোনয়ন নিয়ে বিতর্ক যেন থামছেই না। এই আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সালাউদ্দিন আহমেদ, আর মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহ সভাপতি নবীউল্লাহ নবী। এই আসনটি নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে এই কারণে যে, ঢাকা-৫ এর এই আসনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছিলেন নবীউল্লাহ নবী। এবার সেই আসনেরই উপনির্বাচনে নবীকে বাদ দিয়ে সালাউদ্দিনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। যদিও সালাউদ্দিন আহমেদ বলেছেন যে, ঢাকা-৫ আসনটি মূলত তাঁর নির্বাচনী আসন। গতবার নির্বাচনের সময়ে কৌশলগত কারণে তাকে ঢাকা-৪ এ মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু এবার তাঁর আসন তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু নবীউল্লাহ নবী এই মনোনয়ন নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন এবং তিনি বলেছেন যে, তিনি দলের জন্যে ত্যাগ স্বীকার করেছেন, গত নির্বাচনের পর থেকে সংগঠনকে গোছানোর জন্য তিনি রাতদিন পরিশ্রম করেছেন, আর সেই পরিশ্রমের পরেও তাকে মনোনয়ন না দিয়ে শুধু তাকে নয়, বরং দলের আপামর কর্মীদের অপমান করা হয়েছে। নবীউল্লাহ নবী মনোনয়নের জন্যে লন্ডনে পলাতক তারেক জিয়ার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছিলেন। এই কথোপকথনের ভাষ্য এখন বিএনপির নেতাদের মুখে মুখে। কি কথা হয়েছিল নবীউল্লাহ নবীর সঙ্গে তারেক জিয়ার?
নবীউল্লাহ নবীই দলের কর্মীদের এই টেলিআলাপের রেকর্ড বাজিয়ে শোনাচ্ছেন বলেও বিএনপির একাধিক নেতা দাবি করেছেন। যারা এই টেলিআলাপের কথা শুনেছেন তারা স্পষ্টতই বুঝেছেন যে নবীউল্লাহ নবীর সঙ্গে টাকার লেনদেনে বনিবনা হয়নি বলেই তাকে মনোনয়ন থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, নবীউল্লাহ নবী মনোনয়ন ফরম কেনার পরেই লন্ডন থেকে তারেক জিয়া তাকে ফোন করেন এবং প্রথমে নবীউল্লাহ নবী ফোন ধরেননি, এটা তাঁর অপরাধ। এরপর নবীউল্লাহ নবীকে ফোন করেন বিএনপির অন্য একজন নেতা এবং তিনি বলেন যে, ‘ভাইয়া’ তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চাচ্ছেন, তিনি যেন ফোনটি ধরেন। এরপর নবীউল্লাহ নবীর সঙ্গে তারেকের প্রায় ১২ মিনিট কথোপকথন হয়। এই আলাপের প্রথমেই নবীউল্লাহ নবীকে কুশলাদি জিজ্ঞাসা করেন এবং তিনি নির্বাচনের জন্যে প্রস্তুত কিনা তা জানতে চান তারেক জিয়া। নবীউল্লাহ নবী যখন বলেন যে তিনি নির্বাচনের জন্যে প্রস্তুত তখন তারেক জিয়া জানতে চান যে, নির্বাচনের জন্যে প্রয়োজনীয় টাকা-পয়সা আছে কিনা। নবীউল্লাহ নবী বলেন যে, গত নির্বাচনও তিনি করেছেন, এবারও নির্বাচন তিনি করবেন। নির্বাচনের খরচ তিনি আল্লাহর রহমতে যোগাড় করতে পারবেন। তারেক জিয়া তাকে বলেন যে, নির্বাচনের খরচ তো যোগাড় করবেন, কিন্তু দলের খরচ দেবেন কত? নবীউল্লাহ নবী তখন বলেন যে, গত নির্বাচনেই তো আপনাকে ৫ কোটি টাকা দিয়েছি ভাইয়া, এটা তো উপনির্বাচন। সাধারণত যিনি মূল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন তিনিই উপনির্বাচনে মনোনয়ন পান, এখানে আবার নতুন করে কেন টাকাপয়সা লেনদেনের হিসেব আসছে?
তখন তারেক জিয়া বলেন যে, লেনদেনের বিষয়টি আসবে এই কারণে যে এটা আরেকটা নির্বাচন। কাজেই এই নির্বাচনের জন্যে আলাদা অর্থ লাগবে। এটা নবীউল্লাহ নবীকে একটু অবাক করে। নবীউল্লাহ নবী তখন বলেন যে, ভাইয়া এইভাবে টাকা দেওয়া তো এখন অনেক কঠিন ব্যাপার। আপনি দেখেছেন যে, আমি সংগঠন চালাচ্ছি এবং একাদশ নির্বাচনের পর থেকে সংগঠন গোছানোর জন্যে আমি সবকিছুই করছি এবং এলাকায় কর্মীদের মধ্যে একটি চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। কিন্তু নাছোড় তারেক জিয়া বলেন যে, তুমি কি দিতে পারবে আমাকে জানিও। কিন্তু নবীউল্লাহ নবী আর পরবর্তীতে জানাননি যে কি দিতে পারবেন।
নবীউল্লাহ নবীর ঘনিষ্ঠরা বলছেন যে, নবী ভেবেছিলেন যেহেতু গত নির্বাচনে তিনি পাঁচ কোটি টাকা দিয়েছিলেন এবং ওই নির্বাচনের ধারাবাহিকতায় উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে মাত্র দেড় বছরের জন্যে, তাই তারেক জিয়াকে নতুন করে মনোনয়ন দিতে হবে না। আর এবার সালাউদ্দিন আহমেদ জানতেন যে, কি করলে নির্বাচনের মনোনয়ন পাওয়া যাবে এবং এজন্যে তিনি আগে থেকেই তারেকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন এবং টাকা-পয়সার লেনদেন দফারফা করে রেখছিলেন, গতবারের ভুল তিনি করেননি।
উল্লেখ্য যে, বিএনপির মনোনয়ন বোর্ডের সভায় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নেন স্থায়ী কমিটির সদস্যরা এবং তারপর মনোনয়নের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা তারেক জিয়ার কাছে অর্পণ করেন। আর তারেক জিয়া যে বেশি অর্থ দিতে সম্মত হন তাকেই মনোনয়ন দেন। উল্লেখ্য যে, নওগাঁ-৬ আসনে যাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে তিনিও একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি।
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া তারেক জিয়া বিএনপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল
মন্তব্য করুন
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জাহাঙ্গীর কবির নানক
মন্তব্য করুন
তীব্র গরম মির্জা আব্বাস বিএনপি
মন্তব্য করুন
বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বহিষ্কার
মন্তব্য করুন
ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন শাজাহান খান
মন্তব্য করুন
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুজনই দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাদের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকরা বিএনপি পরামর্শ দিয়ে আসছেন এমন গুঞ্জন দীর্ঘদিনের। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কখনও মুখ খুলেননি বিএনপির কেউই। তবে এবার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। তিনি জানিয়েছেন বিএনপি থেকে বেগম জিয়া এবং তারেক জিয়াকে বাদ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে দল ভাবছে। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে দলের এমন ভাবনার কথা জানান বিএনপির এই নেতা।
উপজেলা নির্বাচন থেকে কঠোর অবস্থান থেকে ইউটার্ন নিলো বিএনপি। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আপাতত যারা উপজেলা নির্বাচন করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে সব কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। যারা পরাজিত হবে তাদের ওপর নেমে আসবে শাস্তির খড়গ। আর যারা বিজয়ী হবেন তাদের বিষয়টি উপেক্ষা করা হবে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে ফেঁসে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান। তবে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেও নীতিমালার কারণে বেঁচে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং যারা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।