নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:০০ পিএম, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২০
নুরকে নিয়ে নাটকের যেন কোন শেষ নেই। গত রবিবার ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুরসহ আরও বেশ কয়েকজনের নামে লালবাগ থানায় ধর্ষণ অভিযোগে মামলা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী। আর এই মামলার প্রতিবাদে গতকাল সোমবার বিক্ষোভ করেন ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতৃবৃন্দ। জানা যায়, বিক্ষোভ চলাকালে রাজধানীর মৎস্যভবন এলাকা থেকে নুরসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু আটকের দেড় ঘণ্টা পরই নুরকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এই সবই যেন নুর কে নিয়ে সাজানো নাটক। আর প্রশ্ন ঠিক এখানেই, নুরকে বারবার আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে আনছে কে? আর নুরকে ‘হিরো’ ইবা বানাচ্ছে কে? এই সব কিছুর পেছনে অদৃশ্যভাবে কেউ যেন কলকাঠি নাড়ছে।
ডাকসু ভিপি হিসেবে নুরের মেয়াদ শেষ হয়েছে বেশ কয়েক সপ্তাহ হতে চলেছে। করোনায় বন্ধ রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। সুতরাং মিডিয়াতে আসার মতো নুরের কাছে কিছু ছিলও না। কিন্তু করোনাকালীন এই স্থবিরতার মধ্যেও নতুন আলোচনার সৃষ্টি করেছে নুরের বিরুদ্ধে হওয়া ধর্ষণ মামলা। আলোচনায় আসার জন্য নুর নিজেই এই মামলা করিয়েছেন কিনা- তা নিয়েও যথেষ্ট সন্দেহ দেখা দিয়েছে। কারণ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার এই সময়ে একজন সাধারণ শিক্ষার্থী কেন এমন মামলা করবে। আবার সত্যি সত্যি কেউ নুরকে হয়রানির জন্য এমনটা করেছে কিনা, তাও ভাববার মতো বিষয়। তবে যাই হোক, এই মামলায় লাভটা নুরেরই। কারণ এতে করে নুর যেমন গণমাধ্যমকে বলার মতো কিছু গল্প সাজাতে পারবে। তেমনি করে গড়ে নিতে পারবে তার নতুন রাজনৈতিক ক্যারিয়ার।
নুরের উত্থান ২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে। সরকারি চাকরিতে ‘কোটা’র বাতিল চেয়ে আন্দোলনে নামে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। আন্দোলন পরিচালনার স্বার্থে সঙ্গবদ্ধ ও সংগঠিত করার জন্য আহ্বায়ক কমিটিও করা হয়। সরকার শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি মেনে নিয়েছে। সুতরাং সবকিছু এখানেই শেষ হয়ে যেতে পারত। কিন্তু না। রাজনীতি ও ক্ষমতার মোহ যে, মানুষকে কতটা নিচে নামাতে পারে তার এক প্রকৃষ্ট উদাহরণ হল নুর। যে ডাকসু নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে নুর ভিপি, সেই নির্বাচনকে অনেকেই হাসি-তামাশা ও বিতর্কিত বলে উল্লেখ করেছেন। সাধারণ শিক্ষার্থীদের অনেকেই এই নির্বাচনকে ‘সাজানো’ বলেও দাবি করেন। কিন্তু তাতে কি আসে যায়! নুর তো ভিপি হয়ে গেছে, তাই আর এসব নিয়ে প্রশ্ন তুলেননি তিনি। কিন্তু এই সকল বিষয়ে ছাত্র অধিকার পরিষদের মধ্যেও বিরোধ লক্ষ্য করা যায়।
তাছাড়া, মেয়াদ শেষ হওয়ায় সবাই যখন ডাকসু ভেঙে দেওয়ার কথা বলছে। নতুন নির্বাচন দিয়ে ডাকসুকে গতিশীল করার কথা। সেখানেও নুরের স্বার্থ কেন্দ্রিক আচরণ। নতুন কেউ নির্বাচিত না হওয়ার আগ পর্যন্ত দায়িত্বে থাকার ইচ্ছে পোষণ করেন তিনি। নুর কি ছাত্র রাজনীতিবিদ, ডাকসু ভিপি না জাতীয় রাজনীতির কেউ- এসব বিষয় ভাবতে গিয়ে মাঝে মধ্যে গোলক ধাঁধায় পড়তে হয়। কারণ ভিপি হওয়ার পর নুর সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি আদায়ে কিছু করতে পেরেছে, বলে মনে করেন না শিক্ষার্থীরা। এমনকি এতদিন দায়িত্ব পালন করার পরও কোন ইশতেহারই বাস্তবায়ন করতে পারেনি নুর। নুরের কাজ শুধু একটাই। প্রবীণ রাজনিতিকদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে, কিছুটা সরকার বিরোধী বক্তব্য দিয়ে নিজের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার তৈরি করা।
আর নুর সরকারের যে সকল সমালোচনা করে, এটাকে অনেকে ‘পারমিটেড প্রটেস্ট’ বলেই মনে করেন। তারা বলেন, নুর সরকারের বিরুদ্ধে এই রকম কি প্রতিবাদ করেছে যাতে করে ক্ষমতাসীন দল রুষ্ট। বরং সরকারের সাথে আঁতাত রক্ষা করেই কিছুটা সরকার বিরোধী মনোভাব পোষণ করাই নুরের কাজ বলে মনে করছেন তারা। ফলে, সবকিছু মিলিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে নুরকে ‘হিরো’ বানাচ্ছে কারা?
মন্তব্য করুন
ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি সভাপতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়া শামীম ইস্কান্দার
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য নতুন করে তৎপরতা শুরু করেছে তার পরিবারের সদস্যরা। বিশেষ করে বেগম জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার ইতোমধ্যে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার জন্য সরকারের বিভিন্ন মহলের সঙ্গে নতুন করে যোগাযোগ শুরু করেছেন। বেগম জিয়া আর ভবিষ্যতে রাজনীতি করবেন না, রাজনীতি থেকে অবসর নেবেন এ রকম একটি বক্তব্য সামনে নিয়ে আসছেন শামীম ইস্কান্দার।
আওয়ামী লীগের তৃণমূল ক্রমশ ভেঙ্গে পড়ছে। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের তৃণমূল সংগঠিত করা এবং বিভেদ-বিভক্তির দূর করার জন্য যে ডাক দেওয়া হয়েছিল তারপর একটু পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছিল বলে বটে। কিন্তু এখন আবার উপজেলা নির্বাচনের প্রাক্কালে সারাদেশে তৃণমূল বিভক্ত হয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগের তৃণমূলকে সামাল দেওয়াই এখন কঠিন হয়ে পড়ছে। একদিকে নির্বাচন কেন্দ্রীক বিরোধ অন্যদিকে দলের চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে যাওয়া আর কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তদারকির অভাবে তৃণমূলের আওয়ামী লীগ এখন সবচেয়ে সঙ্কটের মুখে পড়েছেন বলেই মনে করছেন আওয়ামী লীগের নেতারাই।