নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০
গণফোরামের ‘বিদ্রোহী’রা আওয়ামী লীগে ফিরতে চান। আর এ নিয়েই দলটি ভাঙনের চুড়ান্ত ধাপে। আগামী রোববার দলের একাংশ জাতীয় প্রেসক্লাবে বর্ধিত সভা ডেকেছেন। এই বর্ধিত সভা আহ্বান কারীদের মূল উদ্যোক্তরা হলেন অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, মোস্তফা মোহসীন মন্টু এবং এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী। এরা সকলেই এক সময় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
ড. কামাল হোসেন এবং রেজা কিবরিয়ার ‘কতৃত্ববাদী’ আচরণ এবং সংগঠন বিরোধি আচরণের কারণেই এই বর্ধিত সভা ডাকা হয়েছে, বলে সুব্রত চৌধুরী জানিয়েছেন। অবশ্য ড. কামাল হোসেন এবং রেজা কিবরিয়া দু’জনই বর্ধিত সভাকে গঠনতন্ত্র বিরোধি বলে অভিহিত করেছেন। তারা এটাও বলেছেন, এ ধরনের বৈঠক ডাকার কোন এখতিয়ার তাদের নেই। গণফোরামের একাধিক নেতা বলেছেন, এই বর্ধিত সভার মাধ্যমে গণফোরামের ভাঙ্গন প্রক্রিয়া চুড়ান্ত হবে। তবে, পদ ভাগাভাগি এবং নেতৃত্বের লড়াইয়ের আড়ালে এই বিভক্তির পেছনে অন্য কারণ রয়েছে, বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
৯১ সালে আওয়ামী লীগ ভেঙ্গে গণফোরাম গঠিত হয়েছিল। ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে এই দলটিতে আওয়ামী লীগের কিছু কামালপন্থীরাই যোগ দিয়েছিলো। কিন্তু গণফোরাম একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে কখনোই সম্ভাবনা জাগাতে পারেনি। বরং ড. কামাল হোসেনের ‘ব্রিফকেস সংগঠন’ হিসেবেই এটি পরিচিতি পায়।
২০১৮ ‘র ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের আগে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের মাধ্যমে প্রথম আলোচনায় আসে গণফোরাম। ড. কামাল হোসেন ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক হলে এবং বিএনপি তাতে যোগ দিলে গণফোরামের পালে বাতাস লাগে। এ সময় অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, ড: রেজা কিবরিয়া সহ কয়েক জন গণফোরামে যোগদেন।
কিন্তু নির্বাচনের পর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ‘পর্বতের মূষিক প্রসবে’ মোহ ভঙ্গ ঘটে অনেক গণফোরাম নেতার। এ সময় গণফোরামের একাংশের আওয়ামী লীগে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছে জাগে। এখান থেকেই বিরোধের সূত্রপাত বলে জানিয়েছেন, গণফোরামের বেশ ক’জন নেতা। এ সময় সুব্রত চৌধুরী এবং অধ্যাপক আবু সাইয়িদ আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করেন, বলেও জানা গেছে। এই অংশ মনে করেন গণফোরামে কিছু হবে না। তাই আওয়ামী লীগের ফেরত যাওয়াই শ্রেয় এ রকম চিন্তা দলে ছড়াতে থাকেন।
এ রকম প্রেক্ষাপটেই, ড. কামাল, এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী এর মোস্তফা মোহসীন মন্টুর বদলে রেজা কিবরিয়াকে নেতৃত্বে আনেন। এর ফলে গণফোরামে বিভক্তি চুড়ান্ত হয়। তবে, গণফোরামের এই নেতাদের ব্যাপারে আগ্রহ নেই আওয়ামী লীগের। আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন, ‘এরা নেত্রীকে অনেক জ্বালিয়েছে, আর নয়। দুষ্ট গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভালো’।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।