নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০০ পিএম, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০
২০১৯ সালের জানুয়ারি মাস। আওয়ামী লীগে মহিলা সংসদ সদস্য মনোনয়ন নিয়ে তোড়জোর চলছে। ধানমন্ডি ৩ নম্বর, আওয়ামী লীগ সভাপতি কার্যালয় উৎসব মুখর। তারকাদের মনোনয়ন ফরম কেনার ভিড়। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা, দলের একজন তরুন নেতা, যিনি তার সঙ্গে কাজও করেন, তাকে ডাকলেন, একটি এলাকার নাম ধরে বললেন, যেখানে একজন সালমা আছে তাকো ডাকো। তরুন নেতা, ঐ এলাকায় যোগাযোগ করলেন। পেলেন তিনজন সালমাকে। কোন সালমাকে ডেকেছেন সভাপতি? এই প্রশ্নের উত্তর না খুঁজে, প্রধানমন্ত্রীর ঐ বিশেষ সহকারি ঐ এলাকায় যে ক’জন সালমা আছেন, তাদের সবাইকে ডাকালেন। তিন সালমাকে হাজির করা হলো গণভবনে। প্রধানমন্ত্রী তিনজনের সঙ্গেই কুশল বিনিময় করলেন। তাদের খোঁজ খবর নিয়ে বিদায় দিলেন।
এরপর আওয়ামী লীগের ঐ তরুণ নেতাকে এক সালমাকে চিনিয়ে দিয়ে বললেন, তাকে একটা মনোনয়ন ফরম দাও। গণভবন থেকেই তরুণ নেতা ফোন করলেন, সেই কাঙ্ক্ষিত সালমাকে। সালমাকে তার বাসায় যেতে বললেন। সেখানেই, নারী সংরক্ষিত আসনের মনোনয়ন ফরম দেয়া হলো সালমাকে। সালমা বিস্ময়ে হতবাক। তিনি স্বপ্ন দেখছেন কিনা, এ নিয়ে বিভ্রমে ছিলেন খানিকক্ষন। এরপর কেঁদে ফেললেন। সেই সালমা এখন মহিলা সংসদ সদস্য। সালমা নিজে কখনো ভাবেন নি, তিনি মহিলা সংসদ সদস্য হবেন। কিন্তু দলের জন্য তার অবদান, শেখ হাসিনা মনে রেখেছেন। সালমার অবদানের স্বীকৃতি দিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
এটাই হলো শেখ হাসিনার বৈশিষ্ট্য। প্রখর স্মৃতিশক্তি তাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার অন্যতম বাহন বলে মনে করেন, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রখর স্মৃতিশক্তি ছিলো। যে কোন মানুষের সঙ্গে একবার পরিচয় হলে, তাকে মনে রাখতে পারতেন। বহু বছর পর তার সঙ্গে দেখা হলে, তাকে নাম ধরে ডেকে, তাকে চিনতে পারতেন। ঘটনার দিন তারিখ মনে রাখতেন বিস্ময়কর ভাবে। এসব অসাধারণ গুনের জন্যই মানুষকে সহজে আপন করে নিতে পারতেন বঙ্গবন্ধু। শেখ হাসিনা পিতার এই গুনটি পেয়েছেন।
আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা হলেন আওয়ামী লীগের এনসাইক্লোপিডিয়া। কে, কখন কি করেছে- তা হুবহু মনে রাখার এক বিরল গুণ রয়েছে আওয়ামী লীগ সভাপতির। এ কারণেই কে পরীক্ষিত, কে ভেজাল- তা বিচার করতে গিয়ে অন্যের উপর নির্ভর করতে হয় না তার। ভালো কাজ করলে পুরস্কৃত হবেনই- এই রীতি চালু করেছেন। আর এখন ফরিদপুর অপারেশন, চট্টগ্রামের সিটি কর্পোরেশনে প্রশাসক নিয়োগ এবং পাবনা-৪ আসনের মনোনয়নের মাধ্যমে তিনি প্রমাণ করেছেন, তিনি দলের আসল কর্মীদের মূল্যায়ন করবেনই।
এ জন্যই কমিটি নিয়ে ব্যস্ত আওয়ামী লীগের তৃণমূল এখনো আশ্বস্ত। তারা জানে, শেখ হাসিনার কাছে সব খবর আছে। শেখ হাসিনা সব মনে রাখেন।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।