নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০০ পিএম, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০
টানা তৃতীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকার দায়িত্ব পালন করছে। কিন্তু প্রথম দুই মেয়াদে যেভাবে আওয়ামী লীগ যে রকম স্বস্তি ভাব নিয়ে দেশ পরিচালনা করেছে। কিন্তু তৃতীয় দফায় একের পর এক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হচ্ছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারকে। তৃতীয় মেয়াদে দায়িত্ব পালনের পর থেকেই বিভিন্ন রকম সমস্যা এবং সংকটকে নিয়েই সরকার পরিচালনা করতে হচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকারকে। এই চ্যালেঞ্জগুলো বেড়েছে, করোনা পরিস্থিতির পর থেকে আরও বেশি।
গত মার্চ থেকে বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ শুরু হয় এবং এই সময় থেকে একদিকে যেমন জনস্বাস্থ্যের চ্যালেঞ্জ অন্য দিকে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জসহ নানা পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতিগুলো মোকাবেলা করতে সরকারকে হিম শিম খেতে হচ্ছে। সরকারের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বলেছেন, কিছু কিছু চ্যালেঞ্জ যেগুলো অনুমিত, যে চ্যালেঞ্জ গুলোকে মোকাবেলা করে একটি সরকারকে দায়িত্ব পালন করতে হয়। কিন্তু কিছু কিছু চ্যালেঞ্জ আসছে হটাৎ করে, যেগুলো মোকাবেলা করার ক্ষেত্রে সরকারকে সমস্যায় পরতে হচ্ছে। সরকারের জন্য একই চ্যালেঞ্জ দীর্ঘদিন থাকছে না, নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জ সামনে চলে আসছে।
সাম্প্রতিক সময়ে সরকারের জন্য যে প্রধান ৫ টি চ্যালেঞ্জ রয়েছে, বলে সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা মনে করছেন, সেই চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে রয়েছে–
১। ভারতের সাথে সম্পর্ক
আওয়ামী লীগ সরকাররের জন্য এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ দেখা হচ্ছে, ভারতের সাথে সম্পর্ক নিয়ে। ভারতের সাথে টানাপোড়নের কথা আগে বলা হতো। এখন এটি প্রকাশ্য হচ্ছে। বিশেষ, করে পেঁয়াজ নিয়ে যেই ঘটনাটি ঘটেছে; সেটি দুই দেশের সম্পর্কে যে অস্বস্তি, তারই বহিঃপ্রকাশ বলে কেউ কেউ মনে করছেন। তাছাড়া, বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধি ভারত ভালো ভাবে দেখছে না। এই রকম কথা এখন প্রকাশ্যে হচ্ছে। আর ভারত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রতিবেশী। এই প্রতিবেশীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখাটা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য অত্যন্ত জরুরী, বলে মনে করে বিশ্লেষকরা। সে কারণেই ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক একটি ভারসাম্য পূর্ণ পর্যায়ে রাখা এবং এই সম্পর্ককে অটুট রেখেই চীনের সাথেই অর্থনৈতিক সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া- সরকারের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ, বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
২। পেঁয়াজসহ দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতি
করোনা সংকটের শুরু থেকেই সরকার অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলার জন্য কাজ করছে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেকটা সফলও হয়েছে। কিন্তু এর মধ্যেই জিনিস পত্রের মূল্য বৃদ্ধি জনগণের মধ্যে এক ধরনের অস্বস্তি, উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা তৈরি করেছে। বিশেষ করে, সাম্প্রতিক সময়ে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি এবং তার সঙ্গে মিলিয়ে চালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দামের উর্ধগতি মানুষের জন্য খুবই কষ্টদায়ক, বলে মনে করা হচ্ছে। এমনিতেই মানুষ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে রয়েছে। এর মধ্যে জিনিসপত্রের দাম তাদের এই সংকটকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এই জিনিসপত্রের দামকে সহনীয় পর্যায়ে রাখা একটি বড় চ্যালেঞ্জ, বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
৩। অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো
গত কয়েক দিন ধরেই সৌদি প্রবাসীদের ফেরত পাঠানো নিয়ে অনেক রকম নাটক হয়ে গেল। শেষ পর্যন্ত সরকার অতন্ত্য দক্ষতার সঙ্গে এই বিষয়টি মীমাংসা করেছেন। এখনও বহু দেশের অভিবাসীরা করোনার কারণে বাংলাদেশে আটকা পড়ে আছেন, তারা বিদেশে যেতে চান। মনে রাখতে হবে যে, অভিবাসী শ্রমিকদের পাঠানো রেমিট্যান্স আমাদের অর্থনীতির একটি বড় শক্তি। কাজেই অভিবাসীদের নিয়ে যেন কোন সমস্যা না হয়। অভিবাসীরা যেন আবার ফিরে যেতে পারেন। বাংলাদেশ থেকে বিদেশে অভিবাসীদের যাওয়া যেন বন্ধ না হয়, সেটি দেখ-ভাল করা সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ এটি সরাসরি আমাদের অর্থনৈতিক সাচ্ছন্দের সঙ্গে সম্পর্কিত। কাজেই সাম্প্রতিক সময়ে সরকার এটিকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে।
৪। শিক্ষায় সংকট
মার্চ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ। যদিও এখন ডিজিটাল পদ্ধতিতে এখন কিছু ক্লাস হচ্ছে, সংসদ টেলিভিশনের মাধ্যমে ক্লাস হচ্ছে। কিন্তু এখন পরীক্ষাসহ পুরো প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য শিক্ষা এখন সংকটে পড়েছে। করোনার দ্বিতীয় টেউয়ের কথা বলা হচ্ছে; বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নভেম্বর থেকে আবার করোনা সংক্রমণ বাড়তে পারে। এ অবস্থায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো একটা দীর্ঘ ছুটির ফাঁদে পড়ছে। এই সংকটের ফলে বিপুল সংখ্যক শিশু, কিশোর এবং তরুণদের নিয়ে সরকার একটা সংকটের মধ্যে পড়েছে। এই শিক্ষা সংকট সামনের দিনগুলোতে আরও বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে সরকারের সামনে আসবে, বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
৫। নুরসহ উটকো ইস্যু
এই সমস্ত বিষয় নিয়ে যখন সরকার যখন ব্যতি-ব্যস্ত; সে সময় ডাকসু’র সাবেক ভিপি নুরসহ বিভিন্ন উটকো ইস্যু নিয়ে সরকারকে ব্যতি-ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে। এটি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষাঙ্গনে, নতুন করে অশান্তি তৈরি করার প্রয়াস নিচ্ছে কোন কোন মহল। এটিও সরকারের জন্য একটি মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে উঠছে।
সরকারের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বলেছেন, সরকার এখন অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করায় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই এখন সরকারের লক্ষ্য। কিন্তু তার সাথে সাথে এই চ্যালেঞ্জগুলোর দিকেও দৃষ্টি দিতে হচ্ছে। কারণ অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা এবং উন্নয়ন ব্যাহত হতে পারে, যদি এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার ক্ষেত্রে কোন রকম সমস্যা হয়।
মন্তব্য করুন
কিংস পার্টি সরকার শমসের মবিন চৌধুরী মেজর হাফিজ বিএনপি তৈমুর আলম খন্দকার
মন্তব্য করুন
বিএনপি কিংস পার্টি মেজর হাফিজ সাকিব আল হাসান নজরুল ইসলাম খান
মন্তব্য করুন
সংযমের এই রমজান মাসে ইফতার পার্টির নামে বিএনপি গিবত পার্টি করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ শ্রমিক লীগ এবং কৃষক লীগের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের সঙ্গে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপির সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বর্তমানে বিএনপির নেতারা ক্লান্ত, কর্মীরা হতাশ। এ অবস্থায় গালিগালাজ করা ছাড়া তাদের করার কিছু নেই। দলটি এখন ইফতার পার্টির নামে সরকারের অন্ধ সমালোচনা করছে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি ইফতার পার্টি করে, এটাকে ইফতার পার্টি বলবো নাকি গিবত পার্টি বলবো। আওয়ামী লীগের গিবত করার জন্যই ইফতার পার্টি। স্রষ্টার প্রশংসার জন্য নয়, ইফতার পার্টির নামে ঢালাওভাবে সরকারের সমালোচনা করে।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খানসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ওবায়দুল কাদের রাজনীতি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী
মন্তব্য করুন
বিএনএম সাকিব আল হাসান মেজর হাফিজ
মন্তব্য করুন
সদ্যই রাজনীতিতে প্রবেশ করেছেন দেশসেরা অলরাউন্ডার, বাংলাদেশ ক্রিকেটের রত্ন সাকিব আল হাসান। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নমিনেশন নিয়ে হয়েছেন মাগুরা-১ আসনের এমপি। তবে এরই মাঝে ভিন্ন এক সমালোচনার জন্ম নিয়েছে সাকিব আল হাসানকে নিয়ে।
গুঞ্জন উঠেছে, দ্বাদশ নির্বাচনের পূর্বে ‘কিংস পার্টি’ খ্যাত বিএনএমে যোগ দিয়েছিলেন। সম্প্রতি গণমাধ্যমে এমন একটি ছবিও প্রকাশিত হয়েছে। সাবিকের এমন কাণ্ডে দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) রাজধানীর ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউর দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাকিব আওয়ামী লীগের টিকিটে মাগুরা থেকে নির্বাচন করে জয় লাভ করেছে। এর আগে সে কোনো দল করেছে কি না সেটা আওয়ামী লীগের কাছে বিবেচ্য নয়।
কাদের আরও বলেন, নমিনেশন চাওয়ার আগে সাকিব আমাদের পার্টির কেউ ছিল না। নমিনেশন যখন নেয় তাকে প্রাইমারি সদস্য পদ নিতে হয়। সে শর্ত পূরণ করা দরকার সেটা সে করেছে।
তিনি বলেন, সরকারি দল কিংস পার্টি করতে যাবে কেন? নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনীতিতে অনেক ফুল ফোটে। কোনটা কিংস পার্টি, কোনটা প্রজা পার্টি এটা সম্পর্কে আমার জানা নেই।
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, আমাদের গণতন্ত্র ঠিক আছে। আমাদের নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচন ছাড়া সরকারে কেউ ক্ষমতা বসাতে পারবে না।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দপ্তর সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী, আনিসুল ইসলামসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন
অনেকেই মনে করে যে, সরকারের পৃষ্টপোষকতায় কিংস পার্টিগুলো গঠিত হয়েছিল। তৃণমূল বিএনপি এবং বিএনএম গঠনের পিছনে সরকারের মদদ এবং সমর্থন ছিল বলে বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন। কিন্তু সেই মদদ এবং সমর্থন শেষ পর্যন্ত টেকেনি। কিংস পার্টি গঠনের ব্যাপারে শুরুতে সরকারের লোকজন যেভাবে আগ্রহী ছিল, পরবর্তীতে তাদের মধ্যে সে আগ্রহ থাকেনি। বিএনএম এবং তৃণমূল বিএনপির অনেক নেতাই ব্যক্তিগত আলাপ চারিতায় বলেছে, সরকার গাছে তুলে মই সরিয়ে নিয়েছে।
মেজর হাফিজ এবং সাকিব আল হাসানের ভাইরাল ছবির মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে নির্বাচনের আগে বিএনপির অনেকেই নির্বাচনে যাওয়ার জন্য উদগ্রীব ছিল। তারা বিএনএম বা কিংস পার্টি গঠনেও তৎপর ছিলেন। মেজর হাফিজ সুবিধা করতে না পেরে শেষ পর্যন্ত বিএনএমে যোগ দেননি। এখন তিনি আবার সাচ্চা বিএনপির সাজার একটি নাটক করছেন। তবে সুযোগ সুবিধা পেলে কে কি করতে পারে তার একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রকাশিত হয়েছে সাম্প্রতিক সময়ে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে মেজর অবসরপ্রাপ্ত হাফিজ উদ্দিনের ছবিতে।