নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৫৯ পিএম, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০
গত ১০ বছর বাংলাদেশে মার্কিন প্রভাব এবং আগ্রহ অপেক্ষাকৃত কম ছিল। স্বাধীনতার পরই বাংলাদেশ নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে প্রকাশ্য হস্তক্ষেপ এবং নজরদারি করত, সেটা ২০১০ সালের পর থেকে আস্তে আস্তে কমতে শুরু করে। এই সময়ে উপমহাদেশে মার্কিন নীতি এবং কৌশলের পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। বারাক ওবামা দায়িত্ব গ্রহণ করার পর, উপমহাদেশ নিয়ে মার্কিন কৌশলপত্র নূতন করে সাজানো হয়েছিল।
সে সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভারত নির্ভরতা বেড়েছে। ভারতের সাথে সমঝোতার ভিত্তিতেই, উপমহাদেশের সাথে সম্পর্ক রক্ষার কৌশল গ্রহণ করেছিলো যুক্তরাষ্ট্র। এ জন্য বাংলাদেশের বিষয়ে সার্বিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক ও অন্যান্য বিষয়ে নিষ্পত্তির বিষয়ে, ভারত নির্ভর হয়ে পড়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আর এই কারণেই, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলের ঘটনা প্রবাহের ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা হ্রাস পেয়েছিল। ভারত যেটা বলে, সেটা সমর্থন দেওয়াই ছিল মার্কিন নীতির একটি অংশ।
কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ নীতি পরিবর্তিত হচ্ছে। তারা আর ভারতের সঙ্গে মিলিয়ে বাংলাদেশ নীতি প্রণয়ন করতে চায় না। এ ক্ষেত্রে ভারত নির্ভরতা তারা কমাতে চায়। বরং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন বাংলাদেশের সঙ্গে সরাসরি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দেন-দরবার এবং সম্পর্ক করতে চায়। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, বাংলাদেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিপুল বিনিয়োগ। বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের যে বিপুল সুযোগ তৈরি হচ্ছে, সে সুযোগে মার্কিন হিৎসা ক্রমশ সংকীর্ণ হয়ে পড়ছে। এখানে চীনা আধিপত্য ব্যাপকভাবে বিস্তৃত হচ্ছে। বাংলাদেশের যে সমস্ত উন্নয়ন কর্মকাণ্ডগুলো হচ্ছে, সে সমস্ত উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে চীনা অংশগ্রহণ সবচেয়ে বেশি। মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলো সেখানে জায়গাই পাচ্ছে না। গত ৫/৬ বছরে বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলো কর্মকাণ্ড অনেক হ্রাস পেয়েছে, বলে মনে করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
বিশেষ করে মার্কিন যে আগ্রহের জায়গাগুলো তেল এবং জ্বালানী সে ক্ষেত্রে মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রমশ কোনঠাসা হয়ে পড়ছে। এই বাস্তবতায় মার্কিন নীতি পরিবর্তনের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে, মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট মিলার সরকারের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে আরও আগ্রাসী বাণিজ্যিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে চায়, এ রকম ইঙ্গিত দিয়েছেন।
উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশে গত এক দশক ধরে একটা উন্নয়নের উৎসব চলছে। সর্বক্ষেত্রে বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ড গুলো চলছে। একদিকে, যেমন পদ্মা সেতু হচ্ছে; অন্যদিকে কর্ণফুলী টানেল, রুপপুর পারমানবিক প্রকল্প, মেট্রোরেলসহ বড় বড় বেশ কিছু প্রকল্পের কাজ এখন বাংলাদেশে দৃশ্যমান। মজার ব্যাপার হলো, এ ধরনের বড় বড় কাজগুলোতে হয় চীন না হলে ভারত কাজ করছে। বড় বড় কাজগুলোতে হয় চীন না হয় ভারতের কোম্পানী অংশগ্রহণ করছে।
এখানে, মার্কিন ব্যবসা প্রসারে অনেক সুযোগ থাকার পরেও; সেই সুযোগকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কাজে লাগাতে পারে নাই- বলেই তারা আত্নসমালোচনা করছে। এই প্রেক্ষিতে এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মনে করছে, বাংলাদেশে তাদের ব্যবসার প্রসার করাতে হবে। একইসাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, বাংলাদেশে একটা বড় বাজার সৃষ্টি হয়েছে। এই বাজারে মার্কিন পণ্যের প্রবেশাধিকার বাড়ানো প্রয়োজন। ব্যবসায়িক সম্পর্কের সঙ্গে একটি রাজনৈতিক সম্পর্কের সমীকরণ রয়েছে। রাজনৈতিক বিষয়গুলোর দিকে নাক গলিয়ে ব্যবসায়িক প্রভাব বৃদ্ধি করা যায়। আর সে কারণেই বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয়ে, গত কিছুদিন ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যে নাক গলানো বন্ধ ছিলো- সেটি আবার নতুন করে শুরু হতে পারে।
তবে একাধিক মার্কিন কূটনীতিকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তারা আসলে ৩ নভেম্বর নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন। নির্বাচনের পর হয়তো বাংলাদেশের ব্যাপারে মার্কিন দৃষ্টিভঙ্গী, নীতি, কৌশল পরির্বতন হবে। তবে, ওই নির্বাচনের ফলাফল যাই হোক না কেন- বাংলাদেশের ব্যাপারে ভারত নির্ভরতা যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কমাবে, তা নিশ্চিত।
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক
পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনদের
মধ্যে যারা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেনি তাদের বিষয়ে সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দলীয়
নির্দেশনা অমান্য করলে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশনের ব্যাপারে চিন্তা করা হবে। সময়মতো অবশ্যই
এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আজ বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে ধানমন্ডিতে
আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, পার্টির যারা মন্ত্রী-এমপি
এমন পর্যায়ে আছেন তাদের জন্য নির্দেশনা রয়েছে, তাদের সন্তান ও স্বজনরা যেন উপজেলা নির্বাচনে
না আসে। প্রথম পর্যায়ের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় চলে গেছে। কেউ কেউ বলেছেন আমরা
বিষয়টি আরও আগে অবহিত হলে সিদ্ধান্ত নিতে আমাদের সুবিধা হতো। তারপরেও কেউ কেউ প্রত্যাহার
করেছেন, কেউ কেউ করেননি। আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচন কমিশনের যে সময়সীমা তারপরেও ইচ্ছা
করলে করতে পারবেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন,
‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও দলীয় সিদ্ধান্ত যারা অমান্য করেছে তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা
নেওয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাচনেও কিন্তু দলের সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয় আছে। দল যার যার
কর্মকাণ্ড বিচার করবে। চূড়ান্ত পর্যায় পর্যন্ত যারা প্রত্যাহার করবে না সময়মতো দল ব্যবস্থা
নেবে’।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি একতরফা কোনো
সমাবেশ করতে গেলে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিষয়টি এসে যায়। আওয়ামী লীগও একই সময়ে সমাবেশের
ডাক দেয়। তবে এটা পাল্টাপাল্টি নয়।
ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক
কার্যালয়ে হওয়া উক্ত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি
এম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, সুজিত
রায় নন্দী, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক
আমিনুল ইসলাম আমিন প্রমুখ।
মন্ত্রী-এমপি প্রার্থিতা প্রত্যাহার ওবায়দুল কাদের
মন্তব্য করুন
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায়
অভিযোগ গঠন শুনানির তারিখ পিছিয়ে আগামী ২৫ জুন ধার্য করেছেন আদালত।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক আলী হোসাইনের
আদালতে খালেদা জিয়ার অব্যাহতির বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য ছিল। কিন্তু খালেদা জিয়ার প্রধান
আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার দেশের বাইরে থাকায় অভিযোগ শুনানি পেছাতে সময়ের আবেদন
করা হয়। আদালত সময় আবেদন মঞ্জুর করে অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য নতুন করে এ তারিখ ধার্য
করেন। খালেদা জিয়ার আইনজীবী আব্দুল হান্নান ভূঁইয়া সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
জানা যায়, মামলাটিতে ১৫ জন আসামির মধ্যে ১৪ জনের অব্যাহতির বিষয়ে
শুনানি শেষ হয়েছে। গত ২৪ জানুয়ারি খালেদা জিয়ার অব্যাহতি চেয়ে শুনানি শুরু হয়।
২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর দুদকের উপপরিচালক মো. গোলাম শাহরিয়ার ১৩
জনের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে তেজগাঁও থানায় মামলাটি দায়ের করেন। ২০০৮ সালের ১৩ মে মামলাটি
তদন্ত করে জোট সরকারের প্রভাবশালী ৯ জন সাবেক মন্ত্রী ও উপমন্ত্রীসহ মোট ২৪ জনের বিরুদ্ধে
দুদকের উপপরিচালক মো. জহিরুল হুদা অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
২৪ আসামির মধ্যে সাবেক মন্ত্রী এম সাইফুর রহমান, আব্দুল মান্নান
ভুইয়া, সাবেক মন্ত্রী ও জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, খালেদা
জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো, এম কে আনোয়ার, সাবেক মন্ত্রী এম শামছুল ইসলাম, বন্দরের
প্রধান অর্থ ও হিসাবরক্ষক কর্মকর্তা আহমেদ আবুল কাশেমের মৃত্যুর পর মামলায় বর্তমানে
আসামির সংখ্যা ১৫ জন।
অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং সাবেক
বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান
কমোডর জুলফিকার আলী, সাবেক মন্ত্রী কর্নেল আকবর হোসেনের (প্রয়াত) স্ত্রী জাহানারা আকবর,
দুই ছেলে ইসমাইল হোসেন সায়মন এবং এ কে এম মুসা কাজল, এহসান ইউসুফ, সাবেক নৌ সচিব জুলফিকার
হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক সদস্য এ কে রশিদ উদ্দিন আহমেদ এবং
গ্লোবাল এগ্রোট্রেড প্রাইভেট লিমিটেডের (গ্যাটকো) পরিচালক শাহজাহান এম হাসিব, সাবেক
মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ
হোসেন।
মন্তব্য করুন
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনদের মধ্যে যারা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেনি তাদের বিষয়ে সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দলীয় নির্দেশনা অমান্য করলে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশনের ব্যাপারে চিন্তা করা হবে। সময়মতো অবশ্যই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।