নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৫৯ পিএম, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০
ডাকসু’র সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর এবং ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুনসহ ৬ জনকে আসামি করে গত রবিবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর লালবাগ থানায় ধর্ষণের অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী। অপর চার আসামি হলেন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল হাসান ও মো. সাইফুল ইসলাম, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতি নাজমুল হুদা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ হিল বাকি।
এবার আসা যাক আসল ঘটনায়। করোনাকালীন এই সময়ে সারা দেশ জুড়ে বন্ধ রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বন্ধ রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও। কিন্তু হঠাৎ করেই অস্থিরতা দেখা দিল বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধ ক্যাম্পাসে। বিষয়টা অবাক করার মতো নয় কি? তার চেয়ে অবাক করার বিষয় হল, এই সময়ে ধর্ষণ মামলা কেন? আর এই মামলায় লাভটাই বা কার- তাহলে কি সবকিছুই সাজানো নাটক? অবশ্য নূরের উত্থানই নানা নাটকীয়তায় পূর্ণ, তার উত্থানের প্রতিটি পদে পদে রয়েছে অসংখ্য সাজানো নাটক।
সরকারের বিরুদ্ধে কিংবা দেশের প্রবীণ রাজনীতিকদের নিয়ে নূরের অভিযোগের যেন শেষ নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ডাকসু ভিপি নির্বাচিত হওয়ার পর নূর শিক্ষার্থীদের জন্য কোন কাজই করতে পারেনি। ডাকসু নির্বাচনের আগে তার প্যানেল থেকে দেওয়া ইশতেহারের কোন কিছুই বাস্তবায়ন করতে পারেনি নূর। বরং, ডাকসু ভিপির কাজই যেন সরকারের সমালোচনা করা- এই রকম একটা ধারণা তৈরি করেছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে। নানা অপপ্রচারণার মাধ্যমে নিজেকে ‘জাতীয় নেতা’ হিসেবে তুলে ধরেছেন। অবশ্য এর পেছনে অনেকেই মদদদাতা হিসেবে কাজ করছে বলে জানা যায়।
মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও দায়িত্ব না ছেড়ে ভিপি হিসেবে থাকতে চেয়েছিলেন নূর। আর এতে করে গণমাধ্যমও নূরের দূরঅভিসন্ধি বুঝতে পেরে যায়। ফলে অনেক দিন থেকেই গণমাধ্যমে নূরকে কোন আলোচনা ছিল না। কিন্তু সম্প্রতি মামলার এই ঘটনা কে কেন্দ্র করে আবার আলোচনায় চলে আসেন নূর। গণফোরামের পক্ষ থেকে তাকে আইনি সহায়তা দেওয়ার জন্য এগিয়ে এসেছে ড. কামাল হোসেন। কিন্তু এই মামলা আসলে কে করাল? এই রকম আলোচনা এখন সবার মুখে।
তবে মামলার পেছনে কে রয়েছে? তা বুঝতে পারা না গেলেও মামলা তে যে, নূরেরই লাভ- তা বুঝতে বাকি নেই কারো। এই বিষয়ে অনুসন্ধান করে জানা যায়, বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরেই নূরের কোন প্রচারণা ছিল না গণমাধ্যমে। কিন্তু সাম্প্রতিক এই মামলাকে কেন্দ্র করে সারা দেশেই নূরের পক্ষে মানববন্ধন করা হচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করেন, আসন্ন উপনির্বাচনে ঢাকার উত্তরা আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা জানিয়েছে নূর। আর এখানে একটা সস্তা প্রচারণা পেতেই এই রকমটা করে থাকতে পারে। কারণ এই ইস্যুটা গণমাধ্যমে অনেক দিন জিয়িয়ে রাখা যাবে।
সরকার এমনটা করেছে কিনা- এই বিষয়ে তাদের মতামত বেশ ইতিবাচক। তারা জানান, নূর এমন কেউ হয়ে যায়নি যে সরকার তাকে প্রতিপক্ষ মনে করবে। বরং ক্ষমতাসীন দল ও শেখ হাসিনা তরুণদের রাজনীতিতে আসার পক্ষে। আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠন তরুণদেরকে রাজনীতির দিকে উৎসাহিত করে। তাছাড়া, নূরকে প্রতিপক্ষ মনে করার মতো কিছু নেই। সরকার এখন নানাবিধ সমস্যার মধ্যে রয়েছে। দেশ গড়ার দিকেই তাদের এখন মনোযোগ।
বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতি নিয়ে কাজ করেন, এই রকম বেশ কয়েকজনের সাথে কথা বললে তারাও অনেকটা এই রকম মতামত দেন। তারা জানান, নূরের উত্থানের দিকে লক্ষ্য করলেই নানা নাটকীয়তা দেখা যায়। ফলে, এটা খুব সহজেই বুঝা যায় যে, রাজনীতিতে আলোচনায় আসার জন্য নূরই এই রকমটা করাচ্ছে। আর এবার মানুষ বুঝেও গেছে। ফলে, জনগণকে বোকা মনে করার কিছু নেই।
মন্তব্য করুন
বিএনপি গণ বহিষ্কার উপজেলা নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন রাজনীতি
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করুন
নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল বিএনপি। এবার সেই ঘোষণার বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, গত জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও উপজেলা নির্বাচনও যে একতরফা নির্বাচন, তা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় দলটি। এমন ভাবনা থেকে ইতোমধ্যে যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের প্রত্যাহার করতে হবে বলে দলের তৃণমূলকে বার্তা দিয়েছে বিএনপি। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনদের আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও সরে দাঁড়াননি অনেকে। এই নির্দেশনা দেয়ার পর প্রতিদিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুল কাদের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত ভাবেও তিনি একাধিক এমপির সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দলীয় নির্দেশনা অমান্য করেছেন। বিষয় বেশ অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে। গতকাল এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে কথা বাহাস চলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের।
দলীয় সিদ্ধান্ত মানেননি তৃণমূল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী। প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনার পরও নির্বাচনি মাঠ থেকে সরেননি স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। সোমবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও তারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। উল্টো নানা যুক্তি দেখিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিতরও এক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বিশেষ করে দলের দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যের ভূমিকা নিয়েও কেন্দ্রের মধ্যে অস্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কঠোর নির্দেশ দেয়ার পরও কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হলো না এই নিয়ে দলের মধ্যে চলছে নানা রকম আলাপ-আলোচনা।