নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৫৮ পিএম, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০
পাবনা-৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী হয়েছিলেন কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব। ওই নির্বাচনে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। ৬ হাজারের কম ভোট পেয়েছেন তিনি।
যদিও ওই নির্বাচনে তিনি কারচুপির অভিযোগ করেছেন, কিন্তু স্থানীয় জনগণ বলছে, নির্বাচনে আদৌ কোনো কারচুপি হয়নি। বিএনপির ভোটাররাই ভোট দিত যাননি। ওই নির্বাচনের আগে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে একটি বারের মতো তার নির্বাচনী এলাকায় আসতে অনুরোধ করেছিলেন হাবিব। কিন্তু হাবিবের ডাকে সায় দেননি মির্জা ফখরুল। এমনকি বিএনপির ‘উচ্চ পদস্থ’ কোনো নেতাই পাবনায় গিয়ে হাবিবের পক্ষে প্রচারণায় অংশ নেননি।
হাবিব বিএনপি নেতাদের ওপর বেজায় চটেছেন। এক নেতাকে বলেছেন ‘হাত পা বেঁধে সাঁতার কাটতে বলছেন। কর্মীরা মনোবল হারা, তাদের চাঙ্গা করতে হলেও নেতাদের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেয়া উচিত ছিল।’ উপ-নির্বাচনগুলোতে বিএনপি অনেক সুবিধাজনক অবস্থানে আছে প্রচারণার ব্যাপারে। তাদের স্থায়ী কমিটির কোনো নেতাই এমপি নন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের উচ্চ পদস্থ সব নেতাই নির্বাচনী আইনের গ্যাড়াকলে প্রচারণায় অংশগ্রহণে অযোগ্য। অথচ বিএনপি এই ‘সুযোগ’টি কেন কাজে লাগাতে পারছেন না, এনিয়ে প্রশ্ন উঠেছে খোদ বিএনপিতেই।
শুধু পাবনা-৪ নয়, সামনে ঢাকা-৫ আসনের উপ-নির্বাচন। এই নির্বাচনে বিএনপির টিকিট দেয়া হয়েছে আরেক কেন্দ্রীয় নেতা সালাউদ্দিন আহমেদকে। নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর প্রাক্কালে সালাউদ্দিনও বিএনপি নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। কিন্তু প্রচারণায় অংশ নেয়ার ব্যাপারে বিএনপির কোনো নেতাই ‘ইতিবাচক’ মনোভাব দেখাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন সালাউদ্দিনের ঘনিষ্ঠরা। বিএনপির এমপি প্রার্থী সালাউদ্দিরে ঘনিষ্ঠ একজন বিএনপি নেতা বলেছেন ‘করোনা, অসুস্থতা ইত্যাদি নানা অজুহাতে বিএনপি নেতারা দায়িত্ব এড়াতে চাইছেন।’
বিএনপির একাধিক সূত্র বলছে, তারেক জিয়ার চাপিয়ে দেয়া এই নির্বাচনের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন বিএনপি অর্ধেকের বেশি স্থায়ী কমিটির সদস্য। তারা এই নির্বাচনকে অর্থহীন মনে করেন।’ আবার অনেক নেতাই মনে করেন নির্বাচনের মাঠে নামলে টাকা-পয়সা খরচ করতে হবে। এখন নিজের পকেট থেকে টাকা খরচ করতে চান না কোনো নেতাই। তবে, বিএনপির অনেক নেতাই বলছেন, নির্বাচনে অংশ নিলে ভালোভাবেই করা উচিত। কারণ, এভাবে নির্বাচনে শোচনীয় পরাজয় কর্মীদের আরো হতাশ করে, জয়-পরাজয় বড় কথা নয়, এই নির্বাচনগুলো সংগঠন গোছানোর বড় সুযোগ, বিএনপি সেই সুযোগও হেলায় নষ্ট করছে।
মন্তব্য করুন
খালেদা জিয়া বিএনপি আইনমন্ত্রী আনিসুল হক শামীম ইস্কান্দার
মন্তব্য করুন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি বাংলাদেশের নির্বাচন
মন্তব্য করুন
মেজর হাফিজ সাকিব আল হাসান কিংস পার্টি ড. মঈন খান বিএনপি
মন্তব্য করুন
মো. সিদ্দিকুর রহমান আওয়ামী লীগ বিপ্লব বড়ুয়া সুজিত রায় নন্দী
মন্তব্য করুন
আবদুল আউয়াল মিন্টু তারেক জিয়া বিএনপি ২৮ অক্টোবর আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী
মন্তব্য করুন
বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার জন্য নতুন করে আবেদন করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তার ভাই শামীম ইস্কান্দারের করা এই আবেদন এখন আইন মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন যে, সচিব তাকে ফাইলটি পাঠিয়েছেন। এটি তিনি দেখছেন। আগামীকাল তিনি এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। আইনমন্ত্রী এও বলেছেন যে, এ ব্যাপারে পূর্বের সিদ্ধান্ত থেকে তিনি খুব একটা সরে আসবেন না।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপিকে কি ধোঁকা দিয়েছে—এরকম একটি প্রশ্ন এখন বিএনপির মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। বিএনপি নেতারা নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনায় এই প্রসঙ্গটি বারবার আনছেন। বিএনপির একাধিক নেতা মনে করে, বিএনপি যে আগ্রাসী অবস্থান গ্রহণ করেছিল, সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে বিএনপি কর্মীদের মধ্যে যে তেজি ভাব এসেছিল, তার প্রধান কারণ ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব এবং আগ্রহ। তাছাড়া বিভিন্ন সময় মার্কিন রাষ্ট্রদূত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা কূটনীতিকরা বিএনপি নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যে ভাষায় যে ভাবে কথা বলেছেন তাতে বিএনপির নেতাদের মধ্যে স্থির বিশ্বাস জন্মগ্রহণ করেছিল যে, তারা আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখতে চায় না। আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম এজেন্ডা। আর এ কারণেই বিএনপি নেতারা এই বক্তব্যটিকে তাদের কর্মীদের কাছে সঞ্চারিত করেছিল এবং কর্মীরা উৎসাহিত হয়েছিল।
টানা ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় রয়েছে। ১৬ বছরে পা দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করা আওয়ামী লীগ। টানা ক্ষমতায় থাকলেও আওয়ামী লীগের মধ্যে ক্ষমতার কেন্দ্রে একটা ভারসাম্য লক্ষ্য করা যায়। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রীদেরকে বিভিন্ন সময় পরিবর্তন করে একেক মেয়াদে একেক জনকে মন্ত্রী করেন এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে পরিবর্তন করে নেতাদের যেমন যোগ্যতা পরিমাপ করেন, ঠিক তেমনি তাদেরকে ক্ষমতাবান করেন।
নির্বাচনের আগে বিএনপি নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টু সরকারের বিভিন্ন মহল থেকে একশ কোটি টাকার বেশি উৎকোচ গ্রহণ করেছেন। সরকারের সঙ্গে দেন দরবার করছেন। কাকে কাকে আটক করতে হবে এবং কারা কারা বিএনপিতে বড় ধরনের আন্দোলন করতে চায়, সরকারের জন্য বিপজ্জনক সেই নামের তালিকা সরবরাহ করেছেন। কাদেরকে বাইরে রাখলে কোন সমস্যা নেই সে নামও জানিয়েছেন সরকারি দলের লোকজনকে। নির্বাচনের ক্ষেত্রে যেন বিএনপি কোনো বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করতে পারে সেজন্য আশ্বাসও দিয়েছেন। তার এই আশ্বাসের কারণেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ অনেকটা নির্ভর অবস্থায় নির্বাচন করেছে এবং বিএনপি যথারীতি নির্বাচন প্রতিরোধে কোন বড় ধরনের সহিংসতা বা নাশকতা করতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত এই নির্বাচন আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য হয়েছে।